আজই সেই দিন। এই দিনই গত দু’বছর যাবত আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।এই দিনটাকে যতই এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করি ততই এটি আমাকে যেন আরও আঁকড়ে ধরে। বার বার এই দিনটাকে ভুলে যাবার চেষ্টা করি কিন্তু,তবুও যেন এটি আমাকে ছাড়তে চায় না।
আজই ধ্রুবের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী। দু’বছর আগেও আমরা একে অপরের পরিপূরক ভাবতাম।একজন মরে গেলে আরেকজনও মরে যাব -এমন প্রতিজ্ঞাও করেছিলাম। কিন্তু,তা বাস্তবায়ন আমি করতে পারি নি।কারণ ছিল শুধুই অর্ক! অর্কর কারণেই আমি বেঁচে থাকার একটা আলাদা মানে পেয়েছিলাম।
ধ্রুব যেদিন আমাকে ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমালো সেদিন ওর হাতটা আচমকা আমার হাত থেকে ফসকে যায়। আর সেই হাত ধরা হয়ে ওঠে নি আমার। সেই হাতের মধ্যে আলাদা একটা আবেগমাখা ছিল যা আমি ধরলেই টের পেতাম। সেদিন সকালে আমি আর ধ্রুব যখন পাহাড়ের কোল ঘেসে গল্প করতে করতে হাটছিলাম তখন একটুর জন্যও আমার মনে হয়নি আমাদের এ সুখ চিরস্থায়ী নয়! এটি যে নিমেষের মধ্যে তলিয়ে যাবে তাও মনে হয়নি। ও যখন পা পিছলে পড়ে গেছিলো,পড়ার কয়েক মিলি – সেকেন্ড আগে ওর মুখ আমি শেষবারের মতো দেখেছিলাম। সে মুখে ছিল একচিলতে হাসি,যার মর্মউদ্ধার হবে না কখোনা। ও পড়ে যাবার পর আমি গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে কাউকে ডাকতে পারি নি। ওখানেই বসে পড়ি। তখন আমার মাথায়ও পাহাড়ি খাদে লাফিয়ে পড়ার চিন্তা আসে কিন্তু,ধ্রুব যে আমাকে আগেই প্রতিজ্ঞা করিয়েছিল যে, ওর কিছু হলে যেন আমিই অর্কর দেখা – শুনা করি। আমি তখন এ কথা বলার কারণ জিজ্ঞেস করলে ও শুধু রহস্যময় একটা হাসি উপহার দিয়েছিল। হয়তো ও বুঝতে পেরেছিলো ওর মৃত্যু আসন্ন। তখন, আমি ছিলাম ছ’মাসের অন্তঃসত্তা। এর দু’মাস পর অর্কর জন্ম হয়।অর্ক কতো দুর্ভাগা,বাবা কত বড় মনের মানুষ ছিলো তা সে দেখতে পারল না।











