স্কুল ফর রবিনসন্স: ০১. তবে আর বলছি কি

স্কুল ফর রবিনসন্স: ০১. তবে আর বলছি কি

০১. তবে আর বলছি কি

…হ্যাঁরে ভাই, তবে আর বলছি কি! এবার নিলামে তুলেছি একটা দ্বীপ! সত্যিকার দ্বীপ আস্ত একটা দ্বীপ! নাটকীয় ভঙ্গিতে ঘোষণা করল নিলামদার উী ফেলপর্গ। হে-হে-হে, ফেলুন কড়ি মাখুন তেল! সবচেয়ে বেশি দামটা হাঁকুন, নগদ টাকায় আপনার কাছেই বেচা হবে দ্বীপটা। যার পকেট গরম তিনিই এই দ্বীপ কিনতে পারবেন।

অকশন হাউসে তিল ধারণের জায়গা নেই এরকম একটা অদ্ভুত বেচা-কেনা দেখতে দলে দলে, ভিড় করেছে মানুষ। ভিড় হলে হৈ-হট্টগোলও হবে, হচ্ছেও তাই–যাকে বলে নরক একেবারে গুলজার! এত শোরগোলের মধ্যে বৃত্তাকার মঞ্চে দাঁড়িয়ে গলা ফাটাচ্ছে জিনগ্রাস। জিনগ্রাস ফেলপর্গের সহকারী। হৈ-হট্টগোলের শব্দকে ছাপিয়ে তার গলা অকশন হাউসের প্রতিটি কোণ থেকে পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে। দাম হাঁকুন, ভাই, দাম হাঁকুন। চিকন গলা জিনগ্রাসের, এত তীক্ষ্ণ যে কানের পর্দা না ফুটো হয়ে যায়। তার চিৎকার শুনে দশ নম্বর স্যাক্রামেনটো স্ট্রীটের অকশন হাউসে আরও লোকজন ভিড় করছে। আস্ত একটা দ্বীপ নিলামে চড়েছে। গেল গেল গেল, এই বুঝি বিক্রি হয়ে গেল! দেরি করলে ঠকবেন, তাড়াতাড়ি নিলামে যোগ দিন। পকেট গরম থাকলে আপনার ভাগ্যেও শিকে ছিড়তে পারে! আস্ত দ্বীপ, ভাই, আস্ত একটা দ্বীপ!

নিলাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী সানফ্রান্সিসকোয়। লিমা, সান্টিয়াগো, ভালপারাইসো-এই তিন বন্দর নগরীকে পিছনে ফেলে ইদানীং সানফ্রান্সিসকোই শহর ও বন্দর হিসেবে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। নিলামে যারা যোগ দিয়েছে তাদের মধ্যে উটাহ, অরেগন আর ক্যালিফোর্নিয়ার লোকজনই বেশি। মেক্সিকো আর চীনের কিছু লোকও আছে। উপকূল থেকে এসেছে দুএকজন কানুক, ট্রিনিটি নদীর তীর থেকে এক-আধজন ব্ল্যাক-ফ্লিট। এমন কি গ্রসভেনট্রেস আর ফ্ল্যাটহেড থেকেও দুএকটা নমুনা হাজির। সব মিলিয়ে যত লোক ভিড় করেছে, তার ছয়ভাগের একভাগ হলো ফরাসী।

দিনটা আজ পনেরোই মে। সময়টা এখনও হাড় কাঁপানো শীত। কিন্তু অকশন হাউসের ভিড় দেখে শীত লেজ তুলে পালিয়েছে, গরমে হাঁসফাঁস করছে সবাই। লোকজন ভিড় করেছে ঠিকই, কিন্তু সবাই তারা নিলামে অংশ নিতে আসেনি। আসলে প্রায় সব লোকই এসেছে মজা দেখতে। মানুষের মনে কৌতূহল জাগা স্বাভাবিক। এরকম কথা কেউ কখনও শুনেছে যে একটা দ্বীপ নিলাম হবে! আর নিলামে চড়লেই যে প্রশান্ত মহাসাগরের একটা দ্বীপ কেউ কিনতে চাইবে, এমন পাগল কে আছে? টাকার প্রশ্নটাই মুখ্য নয়, টাকা তো অনেক লোকেরই আছে। কিন্তু সরকার খেপেছে বলে কি টাকাঅলারাও খেপবে? লোকে বলাবলি করছে, সবচেয়ে কম দাম যেটা ধরা হয়েছে তা-ও ওঠে কিনা সন্দেহ। দ্বীপটা কিনতে তেমন কেউ আগ্রহী হবে না বলেই নিলামদার এত হাঁকডাক ছাড়ছে। লোকের ধারণাই সত্যি হলো। নিলামদারের কথা শুনে হাসাহাসি করছে সবাই। তাদের মধ্যে একজনকেও দ্বীপ কিনতে উৎসাহী বলে মনে হলো না।

গেল গেল গেল, এই বুঝি বিক্রি হয়ে গেল! পানির দরে, ভাই রে, পানির দরে। মস্ত একটা দ্বীপ! আস্ত একটা দ্বীপ! জীবনে এরকম সুযোগ একবারই আসে। এই সুযোগ হেলায় হারাবেন না। আবার গলা ফাটাচ্ছে জিনগ্রাস।

গেল গেল করছে বটে, কিন্তু যাচ্ছে না, ব্যঙ্গ করল এক আইরিশ। লোকটার পকেটে দ্বীপ কেনার টাকা তো দূরের কথা, একটা নুড়ি পাথর কেনার পয়সাও আছে কিনা সন্দেহ।

সস্তা, সস্তা, একেবারে পানির দর, চিৎকার করছে নিলামদার। এক একরের দাম পড়বে ছয় ডলারেরও কম…

কিনলে ঠকে ভূত হতে হবে, প্রকান্ডদেহী এক চাষী বলল। জমিজমার দরদাম সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখে সে। ওই জমি থেকে কেনা দামের আটভাগের একভাগও তোলা যাবে না।

শুনুন, ভাই, শুনুন! মন দিয়ে শুনুন! লোভনীয় এই দ্বীপের আয়তন কমবেশি চৌষট্টি বর্গমাইল, সব মিলিয়ে দুশো পঁচিশ হাজার একর জমি পাচ্ছেন…

সে জমির ভেতরটা কেমন, তাই বলো! শক্ত, নাকি নড়বড়ে? এবার জানতে চাইল একজন মেক্সিকান। মদের দোকানে নিয়মিত আসা-যাওয়া আছে তার। দ্বীপটা নড়বড়ে কিনা জানতে চাইছে, অথচ এই মুহূর্তে তার নিজের ভেতরটাই নড়বড় করছে।

সবুজ গাছপালায় ভরা ভারী সুন্দর একটা দ্বীপ। ঘাসে মোড়া জমি, পাহাড়, ঝরনা-কী নেই!

দ্বীপটা টিকবে তো? একজন ফরাসী জানতে চাইল।

বাহ্, কেন টিকবে না, একশো বার টিকবে! হাসিমুখেই জবাব দিল ফেলপর্গ। দীর্ঘকাল নিলাম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সে, যে যতই ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করুক, আজকাল আর ভুরু কোঁচকায় না।

তাহলে বলুন, কতদিন টিকবে? খুব বেশি হলে দুবছর, তাই না?

যদি বলি দুকোটি বছর টিকবে, তা-ও সঠিক উত্তর হয় না। বলা উচিত এই পৃথিবী যতদিন আছে, দ্বীপটাও ততদিন থাকবে।

আচ্ছা!

এমন দ্বীপটি কোথাও তুমি পাবে না কো খুঁজে। কি, ঠিক বলিনি, জিনগ্রাস? জিনগ্রাস মাথা ঝাকাল। এ এমন একটা দ্বীপ যেখানে কোন মাংসখোর জন্তু নেই। নেই কোন বুনো জানোয়ার বা সরীসৃপ…

কিন্তু পাখি? পাখিও নেই? জানতে চাইল ভবঘুরে এক বাউন্ডুলে।

আরেকজন গলা লম্বা করে বলল, আমি পোকা সম্পর্কে জানতে চাই। দ্বীপটায় কি পোকামাকড়ও নেই?

যার পকেট গরম, এই দ্বীপ তার কপালেই জুটবে, আবার প্রথম থেকে শুরু করল ডীন ফেলপর্গ। আসুন, ভাই, আসুন। পকেটের অবস্থা বুঝে সামনে পা বাড়ান। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে প্রকৃতির নিজের হাতে সাজানো একটা মনকাড়া দ্বীপ। কোন ঝামেলা নেই, মেরামত দরকার হয় না, অত্যন্ত উর্বর। এই দ্বীপ আগে কেউ কখনও ব্যবহার করেনি। এক কথায়, সম্ভাবনাময় দ্বীপটার ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। গেল গেল গেল, এই বুঝি বিক্রি হয়ে গেল! পানির দাম, ভাই, পানির দাম! এগারো লাখ ডলার দাম ধরা হয়েছে! এরচেয়ে সস্তা আর কি আশা করেন! এগিয়ে এসে হাত তুলুন, ভাই, হাত তুলুন! কিনতে চাইলে হাঁকুন দাম। প্রথমে কে দাম বলবেন…আপনি? আপনি? নাকি আপনি? ওই কোণে বসে মাথা ঝাকাচ্ছেন- ও ভাই, ভয় কি, সাহস করে বলে ফেলুন একটা দাম। ভুলে যাবেন না, আপনি একটা দ্বীপের গর্বিত মালিক হতে যাচ্ছেন! আস্ত একটা দ্বীপ, ভাই!

নাহয় কিনবই, বলল এক লোক, কিন্তু জিনিসটা না দেখেই কিনে ফেলব? আপনার দ্বীপটা একবার আমার হাতে দিন না, নেড়েচেড়ে দেখি! সে যেন একটা ফুলদানি কিনতে চাইছে।

লোকটার কথা শুনে ঘর ভর্তি লোক গলা ছেড়ে হেসে উঠল। এখনও কিন্তু কেউ কোন দাম হাঁকেনি।

নেড়েচেড়ে দেখার জন্যে দ্বীপটা কারও হাতে তুলে দেয়া গেল ঠিকই, তবে কৌতুহলী খদ্দেরের জন্যে দ্বীপের একটা মানচিত্র রাখা হয়েছে। সেটার ভাজ খোলা হতেই লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়ল।

ক্যালিফোর্নিয়ায় দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক ছাড়াও সাময়িকপত্রের সংখ্যা এত বেশি যে গুনে শেষ করা যাবে না। সেসব পত্র-পত্রিকায় গত কয়েক মাস ধরেই দ্বীপটা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ছাপা হচ্ছে। এই দ্বীপের নাম স্পেনসার আইল্যান্ড। অবস্থান সানফ্রান্সিসকো উপসাগরের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, ক্যালিফোর্নিয়া উপকূল থেকে কমবেশি চারশো ষাট মাইল দূরে-৩২°১৫ উত্তর অক্ষাংশ, ১৪৫°১৮ পশ্চিম দ্রাঘিমায়। দ্বীপটা নিঃসঙ্গ, আশপাশে অন্য কোন দ্বীপ বা ডাঙা নেই। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, স্পেনসার আইল্যান্ডের আশপাশ দিয়ে কোন জাহাজই আসা-যাওয়া করে না। অথচ খুব বেশি দূরে নয় ওটা, যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে কাছেই বলতে হবে। তাহলে কি কারণে জাহাজের ক্যাপটেনরা স্পেনসার আইল্যান্ডকে এড়িয়ে যান? কারণ হলো, ওদিকের সাগরে বিপজ্জনক ধরনের পরস্পরবিরোধী তীব্র স্রোত আছে, স্রোতগুলো প্রায় সারাক্ষণই ভীষণ ঘূর্ণি সৃষ্টি করে। ওই ঘূর্ণাবর্তে পড়লে কোন জাহাজকে আর বেরিয়ে আসতে হবে না, সোজা নেমে যেতে হবে সাগরের অতল গহ্বরে। তবে কথা হলো, কেউ যদি জাগতিক কোলাহল আর লোকজনের ভিড় অপছন্দ করে, তার জন্যে এই দ্বীপ আদর্শ জায়গা।

প্রশ্ন উঠতে পারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বীপটা বিক্রি করতে চাইছে কেন? উত্তরে অনেক কথা বলতে হয়। সাধারণত যে জলপথ ধরে জাহাজগুলো চলাচল করে সেই পথ থেকে অনেকটা দূরে স্পেনসার আইল্যান্ড, ফলে দীর্ঘ বহু বছর ধরে পতিত পড়ে আছে। ওটা, কোন কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তেমন সুযোগ-সুবিধেও নেই যে ওখানে উপনিবেশ গড়ে তোলা যাবে। সামরিক দিক থেকেও দ্বীপটা কোন গুরুত্ব বহন করে না। মূল ভূখন্ড থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় নির্বাসনের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদীদেরও ওখানে পাঠাতে আগ্রহী নয় বিচারবিভাগ। এ-সব কারণেই আজ পর্যন্ত দ্বীপটাকে কোন কাজে লাগানো যায়নি। মার্কিন কংগ্রেসে ব্যবসায়িক মনোভাবাপন্ন সদস্যরাই সংখ্যায় বেশি, তাই এবার তাঁরা দ্বীপটাকে বিক্রি করার জন্যে উঠেপড়ে লেগেছেন। তাঁদের দেয়া একটা শর্ত হলো ক্রেতাকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে। বিক্রি করা হবে ঠিকই, কিন্তু যে-কোন দামে নয়। সবচেয়ে কম দাম ধরা হয়েছে এগারো লাখ ডলার। যে-সব প্রতিষ্ঠান জমি কেনা-বেচা করে তাদের কাছে এগারো লাখ ডলার কোন টাকাই নয়। কিন্তু তারা বিনিয়োগ করে শুধু যেখানে লাভের সম্ভাবনা আছে। কোন দুঃখে তারা স্পেনসার আইল্যান্ড কিনতে যাবে? এখানে টাকা ঢালা মানেই তো লোকসান দেয়া। কেনা দ্বীপ ভাগ ভাগ করে তারা যদি জমি বেচতে চায়, কে তাদের সেই জমি কিনবে? কেউ না! কাজেই জানা কথা যে যাদের সামান্য হলেও কান্ডজ্ঞান বা বৈষয়িক বুদ্ধি আছে তারা কেউ এই নিলামে অংশ নিচ্ছে না। অথচ মার্কিন কংগ্রেস জেদ ধরে বসে আছে, এগারো লাখ ডলারের এক পয়সা কমেও স্পেন্সর আইল্যান্ড বিক্রি করা যাবে না। অর্থাৎ জানা কথা, এই দ্বীপ বিক্রি হচ্ছে না। এমন গাধা কেউ নেই যে এত টাকা পানিতে ফেলতে রাজি হবে।

শর্ত অবশ্য আরও একটা আছে। দ্বীপটা যে-ই কিনুন, নিজেকে তিনি স্পেনসার আইল্যান্ডের রাজা বলে ঘোষণা করতে পারবেন না। তিনি যদি দ্বীপটাকে একটি প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রশাসক হতে চান, তাতে অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি থাকবে না। রাজা হওয়া যাবে না, এই কথা শুনে অনেক কোটিপতিই হতাশ হয়ে পিছিয়ে গেছেন। প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই, মার্কেসাস প্রভৃতি দ্বীপে রাজা আছে, সেকথা মনে রেখে অনেক ধনকুবেরই মনে মনে স্বপ্ন দেখেছিলেন স্পেনসার আইল্যান্ড কিনে সেখানকার রাজা হয়ে বসবেন, কিন্তু এই শর্তের কথা শুনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা।

চেঁচাতে চেঁচাতে বেচারি জিনগ্রাসের গলাটাই বুঝি ভেঙে গেল। ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দ্বীপটার কত প্রশংসাই না করছে সে, কিন্তু আগ্রহী ক্রেতা হিসেবে একজনও এগিয়ে আসছে না। মজা দেখতে আসা লোকজন এখনও হাসিঠাট্টা করছে। একজন বলল, আমার সম্বল দুই ডলার। দলিল তৈরির খরচ সহ দ্বীপটা যদি এই দুই ডলারে কেনা যায় তো আমি আছি।

তার কথা শুনে আরেকজন বলল, তোমার ওই দুই ডলারই পানিতে যাবে। যে-ই কিনুক, তার ইহকাল ও পরকাল ঝরঝরে। দ্বীপটা যদি সরকার আমাকে বিনে পয়সায় দেয়, তা-ও আমি নেব না। তবে দ্বীপের সঙ্গে যদি মোটা অঙ্কের টাকা দেয়, তাহলে নেব কিনা চিন্তা করে দেখতে পারি।

ঘরভর্তি লোক, সবাই কিছু না কিছু বলছে। আর তারই মধ্যে গলা ফাটাচ্ছে জিনগ্রাস, ফেলুন কড়ি মাখুন তেল, দ্বীপটা কিনে দেখান খেল!

নেই! কোন খদ্দের নেই।

মার্চেন্ট স্ট্রীটে মনোহারী দোকান আছে স্ট্রাম্পি-র, সে জিজ্ঞেস করল, ওই দ্বীপে কি মালভূমি আছে?

কিংবা আগ্নেয়গিরি? কী, একটাও আগ্নেয়গিরি নেই? কৃত্রিম হতাশায় মুষড়ে পড়ার ভান করল এক শুঁড়িখানার মালিক।

আরেক দফা হাসিতে ফেটে পড়ল সবাই।

গেল গেল গেল, এই বুঝি বিক্রি হয়ে গেল। আস্ত একটা দ্বীপ রে ভাই, আস্ত একটা দ্বীপ! নির্দিষ্ট দামের চেয়ে এক সেন্ট বেশি বলুন, দ্বীপটা সঙ্গে সঙ্গে আপনার হয়ে যাবে।

অবস্থার কোন পরিবর্তন নেই। জিনগ্রাসের আহ্বানে কেউ সাড়া দিচ্ছে না।

অবশেষে, এতক্ষণে, হার মানতে যাচ্ছে জিনগ্রাস। সে বলল, কেউ যদি কোন দাম না-ই বলেন, এই নিলাম বন্ধ ঘোষণা ছাড়া আর কিছু করার নেই আমাদের। তিন পর্যন্ত গোণার সঙ্গে সঙ্গে নিলাম বাতিল বলে গণ্য হবে। এক…দুই…

বারে লাখ ডলার! অকস্মাৎ যেন ঘরের ভেতর বোমা পড়ল।

না, বোমা পড়লেও কেউ এরকম চমকে উঠত না। ঘরভর্তি লোকজন একেবারে যেন পাথর হয়ে গেল। সংবিৎ ফিরে পেতে সময় নিল সবাই। হতভম্ব হয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে তারা। কে দাম হাকল? কার এত দুঃসাহস? লোকটা কি ছাগল, না পাগল?

না, তিনি পাগল বা ছাগল কোনটাই নন। তিনি একজন ধনকুবের। পরিচয়, সানফ্রান্সিসকোর উইলিয়াম ডব্লিউ কোল্ডেরুপ।

গল্পের বিষয়:
অনুবাদ
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত