রহস্যের দ্বীপ: ০৪. বিকেল নাগাদ নদীর জল কমে গিয়ে

রহস্যের দ্বীপ: ০৪. বিকেল নাগাদ নদীর জল কমে গিয়ে

০৪. বিকেল নাগাদ নদীর জল কমে গিয়ে

বিকেল নাগাদ নদীর জল কমে গিয়ে হাঁটু পানিতে এসে ঠেকল। সকালের ভয়ঙ্কর খরস্রোতা নদীটাকে খালই বলা চলে এখন। হেঁটেই নদী পার হয়ে গেল অভিযাত্রীরা। ওপরে উঠেই নেব যেপথে গিয়েছিল সে পথে রওনা দিলেন স্পিলেট। যাবার আগে বলে গেলেন, নেবের খোঁজে যাচ্ছি আমি। খাবার, আর রাতে মাথা গোঁজার একটা জায়গা ঠিক করে রেখো।

স্পিলেট চলে যেতেই হার্বার্ট আর পেনক্র্যাফটও হাঁটতে শুরু করল। একটু পর খুদে গ্রানাইট পাহাড়গুলোর পাশ কাটিয়ে এসে দাঁড়াল একটা অপেক্ষাকৃত বড় পাহাড়ের পাদদেশে। পেনক্র্যাফট বলল, খাবার খোঁজার আগে চারপাশটা একবার দেখে নেয়া দরকার। নইলে হয়তো নিজেরাই কারও খাবার হয়ে যাব। চলো, পাহাড়ে উঠি।

পাহাড়ে উঠতে গিয়ে বহু পাখি দেখল দুজনে। ওরা কাছ দিয়ে গেলেও উড়ে পালাল না পাখিগুলো। মানুষকে ভয় পাঁচ্ছে না ওরা। তার মানে কখনও মানুষ দেখেনি। তাহলে পাখি দিয়েই রাতের আহারটা সারা যাবে, ভাবল পেনক্র্যাফট। কিন্তু ধরবে কি করে ওগুলোকে? খালি হাতেই একবার চেষ্টা করে দেখল পেনক্র্যাফট কিন্তু আগে মানুষ না দেখে থাকলেও বোকা নয় পাখিগুলো, পেনক্র্যাফট ধরার চেষ্টা করতেই উড়ে পালাল ওরা। আরও কিছুটা উপরে উঠতেই দুরে গাছের সারি দেখা গেল। মনটা খুশি হয়ে উঠল হার্বার্টের। গাছপালা আছে যখন দ্বীপে, খাবারও নিশ্চয়ই আছে। তাহলে না খেয়ে মরতে হচ্ছে না আর।

পাহাড় বেয়ে নামার সময় চোখে পড়ল মস্ত গুহাটা, চিমনির মত গড়ন বলে ওরা গুহাটার নাম দিল—চিমনি গুহা। রাত কাটানোর উপযুক্ত জায়গা পেয়ে গিয়ে খুশি হয়ে উঠল দুজনে। সূর্য ডুবতে বেশি দেরি নেই আর। গুহাটা একবার দেখে নিয়ে খাবার যোগাড়ে বেরোবে ভেবে গুহার ভেতরে ঢুকল ওরা। খাবারের জন্য বেরোতে হলো না আর। গুহার ভেতরেই পাওয়া গেল অনেকগুলো সাগরের ঝিনুক। পেনক্র্যাফট নাবিক। দেখেই বুঝল জোয়ারের সময় সাগরের পানি গুহাতেও এসে ঢোকে।

ঝিনুকগুলোর দিকে আর একবার চাইল পেনক্র্যাফট। এই ঝিনুক আগুনে ঝলসে নিলে খেতে দারুণ লাগবে এবার চাই খাবার পানি।

গুহা থেকে বেরিয়ে এসে পানির খোঁজে নিচে নামতে গিয়ে আরও খাবার পেয়ে গেল পেনক্র্যাফট। পাখির ডিম। পাহাড়ের খাঁজে বাসা বানিয়ে ডিম পেড়েছে পাহাড়ী পায়রা। খুশির ঠেলায় ধেই ধেই করে নাচতে নাচতে বলল হার্বার্ট, তোফা! তোফা! এ যে একেবারে শাহী আয়োজন হয়ে গেল দেখছি!

কিন্তু পেনক্র্যাফট ভাবছে অন্য কথা। পানি। খাবার পানি কোথায়? পানি ছাড়া তো বাঁচা যাবে না।

নিচে নামতে নামতে দেখল, ওদিকের পাহাড়ের পাশ ঘেঁষে এগিয়ে আসছে দুজন লোক। নেব আর স্পিলেট।

আগের পর্ব :
০১. ওপরে কি উঠছি আমরা
০২. গৃহযুদ্ধের তান্ডবলীলা চলছে
০৩. কোথায় গেলেন ক্যাপ্টেন
পরের পর্ব :
০৫. চেঁচিয়ে বললেন স্পিলেট
০৬. বেলুন থেকে নামার পর
০৭. সকাল থেকে কোথাও পাওয়া গেল না নেবকে
০৮. ওরা ঢুকলেও ফিরে চাইল না নেব
০৯. হতবুদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়ে রইল পেনক্র্যাফট
১০. ধোঁয়া, মানে আগুন
১১. ভোর হলো
১২. পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই
১৩. পরদিন সকালে খাওয়া-দাওয়ার পর
১৪. মাপজোকের কাজ শুরু করলেন ক্যাপ্টেন
১৫. গহ্বরের মুখ
১৬. জুনের শুরুতেই শীত নামল
১৭. যেন ভূত দেখছে এমন ভাবে
১৮. জাহাজডুবি হয়ে সত্যিই কেউ দ্বীপে উঠেছে কিনা
১৯. দ্বীপের দক্ষিণ তীর ঘেঁষে চলা শুরু হলো
২০. একটু দূরে জঙ্গলের ধারে
২১. মার্চের আরম্ভেই শুরু হলো ঝড় বৃষ্টি
২২. আবার এল শীত
২৩. এখনও কি বাধা দেবেন
২৪. মার্সি নদীর মুখে এসে
২৫. জঙ্গলে আর ফিরে গেল না আগন্তুক
২৬. ভোর হতেই খোঁয়াড়ের দিকে রওনা দিল
২৭. এখনও প্রায় বিশ মাইল দূরে জাহাজটা
২৮. চোখের সামনে ভোজবাজীর মত
২৯. আস্তে আস্তে সেরে উঠতে লাগল হার্বার্ট
৩০. ফ্রাঙ্কলিন হিলের কোন গুহায়
৩১. জাহাজের খোল তৈরির কাজ
৩২. ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকালেন ক্যাপ্টেন নিমো
৩৩. সুড়ঙ্গ মুখে পৌঁছতে পৌঁছতে

গল্পের বিষয়:
অনুবাদ
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত