স্ত্রী যখন বান্ধবী: ২৫. সমস্ত কাজে উৎসাহী হয়ে উঠুন

স্ত্রী যখন বান্ধবী: ২৫. সমস্ত কাজে উৎসাহী হয়ে উঠুন

২৫. সমস্ত কাজে উৎসাহী হয়ে উঠুন

একজন যোগ্য সহধর্মিণী হওয়ার তৃতীয় পন্থা হল এই যে, শুধু প্রতিদিনের গৃহস্থালির কাজে নিবিষ্ট না থেকে বিভিন্ন রকম কাজে অংশ নেওয়া। সংসারের কাজ সামলে কিছু সময় চিত্তবিনোদনে অতিবাহিত করা সব মেয়েদের ক্ষেত্রেই উচিত। এতে দারুণ উৎসাহ পাওয়া যায়। এক নাগাড়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে গেলে অবসাদ আসতে পারে। নিয়ম মাফিক কাজকর্ম থেকে কিছু সময় দূরে থাকলে আর তারপর কাজে মন ঢাললে শুধু যে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করা যায় তাই নয়, প্রতিটি কাজই তাতে সুষ্ঠু আর নিখুঁতভাবেই শেষ করা যায়।

শুধু কাজের দায়িত্বভার বেশি হলেই যে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি তা নয় আসলে কাজের একঘেয়েমি আর বৈচিত্র্যহীনতাই আমাদের আবসাদগ্রস্ত করে তোলে। কাজকর্মে বৈচিত্র্য এলেই মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই সতেজ প্রফুল্ল আর উদ্যোগী হয়ে ওঠে।

একই ধরনের কাজে আবদ্ধ হয়ে থাকলে স্বাভাবতই দেহ আর মনের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া জন্ম নেয়। নিঃসঙ্গতার অবসাদ থেকে বাঁচাতে হলে নানা কাজে অংশ নেওয়া খুবই সুন্দর ফলদায়ক অভ্যাস। এর মধ্যে ক্রেতা প্রশিক্ষণ পাঠমালা, সঙ্গীত শিখার আসর বা প্রতি সপ্তাহে কোনো সেবামূলক সামাজিক প্রতিষ্ঠানে কিছু সময় কাজ করলে যে কোনো মহিলাই তার চিত্তবিনোদনের সুন্দর সুযোগ পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই চিত্তবিনোদনের সাথে সাথে আরও অনেক উপকার পাওয়া যাবে, যেমন, তার জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিধি দারুণভাবে বেড়ে যাবে, আর এর ফলে ব্যক্তিত্ব সুন্দর আর প্রখর হয়ে উঠবে। টেক্সাসের সান অ্যান্টিনিয়োর অধিবাসী মিসেস ওয়ান্টার জি, ফ্রাংকবিনার তার ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়াশুনা শুরু করার পর অবসর কাটানোর উদ্দেশ্যে শুক্রবার এবং সমস্ত ছুটির দিন সেন্ট লুইস গির্জার স্কুলে যোগদান করেন। তিনি শিক্ষয়িত্রীর কাজ নেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে, শিশুদের সঙ্গে তিনি চমৎকার মানিয়ে নিতে পারেন। তাছাড়া অবসর সময়ে বিভিন্ন কাজকর্মে অংশ নেওয়ার পর নানা রকম আলাপ আলোচনায় তিনি যেন অভিনবত্ব খুঁজে পান।

তিনি বলেন, বাইরের কাজকর্মগুলো আমার মূল্যবোধের ও উন্নতির বিকাশ ঘটিয়েছে। আগে যে সব নগণ্য ব্যাপারে আমার রাগ হতে চাইতো বর্তমানে নগণ্য বলে সেগুলোর প্রতি কোনো মনোযোগ না দিয়ে আমাদের ঘরকে কীভাবে সকলের জন্য প্রেম ও শান্তির সখের স্বর্গে পরিণত করা যায়, সেই ধরনের অপেক্ষাকৃত বড় ধরনের চিন্তায় মনোনিবেশ করতে পারি।

কোন্ ধরনের কাজ আপনার উপযুক্ত সেটা আসলে নির্ভর করে আপনার প্রতিভার বিশেষ দিক আর অভিরুচির উপর। ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি নিউইয়র্ক শহরে শেক্সপীয়ার ক্লাবে যোগদান করে আমি প্রচুর প্রশান্তি আর আনন্দ পেয়েছিলাম। এই ক্লাবকে আমি বরাবর পছন্দ করে এসেছি। সেখানে নান বিষয় নিয়ে আলোচনা হত। চারশ’ বছরের প্রাচীন পৃথিবীতে পদচারণা করতে গিয়ে আমি আমার বিংশ শতাব্দীর পৃথিবীর সমস্যাকে নতুন পরিপ্রেক্ষিতেই দেখার সুযোগ পেতাম। প্রেসিডেন্ট লিঙ্কন সম্পর্কে আমার স্বামীর উৎসাহ অপরিসীম। অন্যদিকে আবার সে শেপীয়ারেরও বড় ভক্ত। আমরা একে অপরের কাজ থেকে নিজের নিজের মানসিকতা সম্বন্ধে প্রচুর আলোচনা আর সমালোচনা করেছি। আমরা বিভিন্ন ধরনের যুক্তিতর্কেরও অবতারণা করি। এছাড়া নানারকম রঙ-তামাশাতেও আমরা সময় কাটাই।

এটা খুবই সত্যি যে, বিয়ের ফলে স্বামী-স্ত্রী এতই কাছাকাছি এসে পড়ে যে সব কিছুই একসাথে করার চেষ্টা করার একটা চমৎকার মানসিকতা গড়ে ওঠে। একটা ভিন্ন প্রবৃত্তি বৈচিত্রের অবকাশ ঘটায় আর বিবাহিত জীবনকে স্বাভাবিক এবং সজীব রাখতে সহায়তা করে।

আপনারা যদি মনে করেন যে, আপনাদের বিবাহিত জীবনের কোথাও কোনো রকম অসঙ্গতি থেকে গেছে তাহলে আপনাদের জীবনের বিভিন্ন দিক বিচার করে দেখা প্রয়োজন। অনুধাবন করার চেষ্টা করতে হবে যে, আপনি আপনার স্বামীর যথাযযাগ্য বা উপযুক্ত সহধর্মিণী বা জীবনসাথী হতে পেরেছেন কি না।

বাইশ, তেইশ, চব্বিশ, পঁচিশ পাঠের সূত্র ক’টি মেনে চলার চেষ্টা করুন:

১। সব সময় মনে আনন্দ রাখার চেষ্টা করবেন।

২। আপনি আপনার স্বামীর কিছু কিছু খেয়াল বা অভিরুচির অংশীদার হয়ে উঠুন।

৩। আপনার স্বামীকে তার নিজস্ব শখ মেটাতে দিন আর এ জন্য তাকে কিছু সময় একা থাকতে দিন।

৪। স্ত্রী হিসেবে আপনিও বাইরের কাজের শরিক হয়ে উঠুন।

গল্পের বিষয়:
অনুবাদ
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত