স্ত্রী যখন বান্ধবী: ২২. স্বামীকে সুখী করার চেষ্টা করুন

স্ত্রী যখন বান্ধবী: ২২. স্বামীকে সুখী করার চেষ্টা করুন

২২. স্বামীকে সুখী করার চেষ্টা করুন

যে সমস্ত স্ত্রী সম্প্রদায়িনী তাদের বিশেষ কিছু গুণ অবশ্যই থাকে। স্বামীকেও তার মধ্যে বাদ দেওয়া উচিত নয়। যে সব স্ত্রী স্বামীদের মনোহারিণী তাদের স্বামীরা কাজে সব সময় সাফল্য লাভ করেন।

অনেক সময় দেখা যায়, অনেক মহিলা অন্তর দিয়ে তাদের ভালবাসে কিন্তু কিছুতেই তাদের স্বামীদের সন্তুষ্ট করতে পারে না। এর কারণ হল তারা সব কিছু তলিয়ে না দেখেই কাজ করতে চান। তাই ক্রটি অবশ্য শুধরে নেওয়া যায়। সামান্য চেষ্টা, যত্ন আর আশাতীত রকম কম সময়েই যে কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে পারে যদি সে একটি আগ্রহী হয়। কেননা, কোনো মানুষকে সন্তুষ্ট করা এমন কিছু কঠিন কাজ নয়। অনেকের ভুল ধারণা হল রূপ-যৌবন আর সৌন্দর্যের মাধ্যমেই বোধ হয় মানুষকে সন্তুষ্ট করা যায়। কিন্তু তা কখনোই নয়, সৌন্দর্য ক্ষণিক আনন্দ দান করতে পারে, চিরকালীন নয়। আসলে ভালবাসার সঙ্গে সৌন্দর্যের কোনো যোগ নেই। দৈহিক সৌন্দর্যের কোন যোগ নেই দৈহিক সৌন্দর্য কখনোই ভালবাসা বা সুখের পক্ষে একান্ত অপরিহার্য বস্তু নয়। বহু নারীই তাদের স্বামীদের মনোরঞ্জন করার জন্য তাদের সৌন্দর্য কাজে লাগান নি। এমন কী বহু বিখ্যাত মহিলা সুন্দরী ছিলেন না। প্রতিটি প্রাইভেট সেক্রেটারী জানেন কীভাবে তাদের বসকে সন্তুষ্ট করতে হয়। এই ধরনের কাজ যারা করেন তারা যে সবসময় অপরূপ সুন্দরী হন তা মোটেই নয়। তাদের গুণ মনোরঞ্জন আর কর্তব্যনিষ্ঠা এবং দক্ষতায় নির্ভরশীল।

এই ধরনের সেক্রেটারী কেমন করে হতে হয় বই থেকে বহু শিক্ষা আমরা গ্রহণ করতে পারি। এই কাজে যারা দক্ষতা অর্জন করেছে তারা বেশ সহজেই বসদের মতো স্বামীরও মনোরঞ্জন অবশ্যই করতে পারবে। পারিবারিক শান্তি কিন্তু স্ত্রীদের সুন্দর চিন্তা, শিক্ষা আর করণীয় কাজের মধ্যে দিয়েই আসে।

একজন মহিলার প্রাথমিক দায়িত্ব হওয়া উচিত যে সব ছোট ছোট কাজ অন্যদের খুশি করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া। লর্ড চেস্টারফিল্ডের মত হল এই সব কাজের গুরুত্ব অনেক। ভালো ব্যবহার ছোট ছোট উৎসর্গ থেকেই আসে। সুখী দাম্পত্য জীবনের গোপন রহস্যটি হল এটাই। যে সব স্ত্রীরা এই সব ব্যাপারে মনোযোগী তারাই এই ক্ষুদ্র উৎসর্গের পুরস্কার পান।

এই রকমই পুরস্কার পেয়েছিলেন নিউইয়র্ক শহরের মিসেস ওলগা। তিনি থাকেন হাথ ওয়েস্ট ৮১ এম. টি. ষ্ট্রীট, নিউইয়র্কে। ওলগা ছিলেন রাওল ক্যাপাব্ল্যাঙ্কার বিধবা স্ত্রী। ক্যাপাব্ল্যাঙ্কার ছিলেন কুবানের একজন কুটনীতিজ্ঞ আর আন্তর্জাতিক দাবা চ্যাম্পিয়ন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রতিভাধর, জনপ্রিয় আর জোরালো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। বিয়ের পর থেকেই ওলগা তার স্বামীর নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী চলার ব্যাপারে সহায়তা করে চলতেন।

এই আশ্চর্য ব্যাপারটি ওলগার জীবনে ঘটে সেই ছোট ছোট উৎসর্গ থেকে। ওলগা তার স্বামীকে কখনোই বিরক্ত করতেন না যখন তিনি কোনো ভাবনার গভীরে ডুবে থাকতেন। ওলগা পার্টিতে যেতে ভালবাসলেও স্বামীর ইচ্ছায় তিনি বেশির ভাগই বাড়িতেই থেকে যেতেন।

ক্যাপাব্ল্যাঙ্কার ছিলেন চিন্তাবিদ। তিনি দর্শনশাস্ত্র আর ইতিহাসের অধ্যাপনা করতেন। কিন্তু ওলগা পড়তে ভালবাসতে হালকা উপন্যাস। স্বামীর মনোরঞ্জনের আর কথোপকথনের আনন্দ পাওয়ার জন্য ওলগা নিজে মনোযোগ দিয়ে দর্শন আর ইতিহাস পড়তে শুরু করেন।

এটা স্বতঃসিদ্ধ যে, যে স্ত্রীরা স্বামীদের সুখী করতে পারেন তারা নিজেরাও তারই সঙ্গে সুখী হন। তারা অতি সহজেই বলতে পারেন যে স্বামীর সহযোগিতায় আমাদের জীবন কানায় কানায় পূর্ণ।

কোনো মানুষকে সুখী করে তার জীবনে আরাম আর সুখে পূর্ণ করলে তার কাজের মানসিকতারও পরিবর্তন আনা সম্ভবপর। একজনের কর্তব্য আর সহযোগিতার মধ্যে দিয়েই অন্য জনের ব্যক্তিত্ব আর কর্মক্ষমতা প্রসারিত করা যায়। তাই একজন মানুষকে সুখী করে তাকে পৃথিবীতে সাফল্যের পথে এগিয়ে দেওয়া যায়।

গল্পের বিষয়:
অনুবাদ
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত