২৭. পরদিন সকালে যা ঘটল
পরদিন সকালে যা ঘটল, তার জন্য একটুও প্রস্তুত ছিল না বন্ড। অবশ্য ঘটনা ঘটছে সকালে নয়, আগের বাতেই।
প্রোপ্রাইটার ছুটে এসে জানাল–দারুণ অ্যাক্সিডেন্ট, মাদাম—
তার হাতে একটা খাম। পরিচারিকার চিৎকার শোনা যাচ্ছে।
বন্ড লাফিয়ে উঠে ভেসপারের ঘরে ছুটল।
ভেসপারের ঘরের দরজা খোলা। ভেসপার ইহজগতে নেই।
টেবিলে খালি গেলাস। চারপাশে সাদা সাদা ওডে। স্লিপিং পিলের বোতলটা সম্পূর্ণ খালি। সেটা মাটিতে গড়াচ্ছে।
প্রোপ্রাইটারের হাতেব খাম সমেত চিঠিটা নিয়ে নিজের ঘরে এল বন্ড। চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করল।
–ডার্লিং জেমস।
আমি তোমায় ভীষণ ভালোবেসেছি। সেই ভালোবাসা নিয়েই বিদায় নিলাম। কাবণ আমার জন্য তোমার ভালোবাসাও নিঃশেষে মুছে যাবে, যখন তুমি আসল সত্য জানতে পাববে। আমি এম ডব্লিউ ডি এ এজেন্ট। হ্যাঁ, ডাবল এজেন্ট আমি। আর এ এফ এল এক পোল্যান্ডবাসীর সঙ্গে আমার ভালোবাসা ছিল। সেই থেকে ওদের হয়েই কাজ কবছি। আমার সেই লোকই আমাকে চিঠি লিখত, বা ফোন করত। কাবণ, আমার সঙ্গে তার মেলা মেশা কর্তাবা বাবণ করে দিয়েছিল। হ্যাঁ, এম তাকে ট্রেনিং দিয়ে পোল্যান্ডে পাঠিযেছিল। আমি বাশিনদেব হয়ে কাজ কবছিলাম এখন। আমার ডিউটি ছিল ব্যালে তোমার কাজকর্ম দেখে ওদের খবর দেওয়া। সুতরাং, আসলে আমি তোমার শত্রু।
কিন্তু তোমায় কেন আমি ভালোবেসে ফেললাম। আমার সব পরিকল্পনা গোলমাল হয়ে গেল। তোমার সঙ্গে আমার এই ভালোবাসার সম্পর্ক ওরা বুঝতে পেরে গেল। এবার ওরা পোল্যান্ডে আমার প্রেমিককে মারবে, আমাকেও মারবে।
কিন্তু আমার কিছু করার নেই। আমি তোমার কেনো ক্ষতি করতে পারব না। আমার সব কিছু তোমায় উজাড় করে দিয়ে বসে আছি। আমার আর ঐ দলে ফিরে যাবার পথ নেই।
ভেবেছিলাম, তোমায় নিয়ে পালিয়ে যাব। কোথায়?
আমেরিকায় যেতে পারতাম। বিয়ে করতাম। নতুন একটা সংসার পাততাম।
কিন্তু ওরা আমার পিছু ছাড়েনি। ঠিক এখানে এসে গেল।
এবার আমার কাছে তিনটে পথ। অপেক্ষা করা, তবে স্মার্শ আমায় খুন করবে। কবে, তোমাকে আমার জন্য মৃত্যুর মুখে পড়তে হবে আবার। অথবা–
অথবা–আত্মহত্যা!
বিদায় নিচ্ছি তাই।
প্যারিসের ওই ফোন নম্বর, আঁভালিদ ৫৫২০০।
তোমাকে বলিনি। তাহলে তুমি তোমার জীবন বিপন্ন করে আমার প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করবে।
যাই, বিদায়, প্রিয়।
নিজেকে সামলে নিল বন্ড।
কে এই ভেসপার?
সে শুধু বস্তের শত্রুপক্ষের গুপ্তচর মাত্র। ভালোবাসা নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় নেই।
ভেসপার এক বিশ্বাসঘাতক!
এখন যেটা চিন্তার ব্যাপার, সেটা হল স্মার্শ আবার কখন আঘাত হানবে।
ভেসপারের আত্মহত্যায় বন্ডের বিপদ কিছুমাত্র কমেনি। এমন আত্মহত্যা কতই ঘটে! কাজের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা ঢুকলে মরতেই হবে।
বন্ড-ও মরত।
এখন লড়াই চলবে : স্মার্শ বনাম জেমস্ বন্ড।
লন্ডন অফিস থেকে ফোন এল।
বন্ড বলল : আমি ০০৭ বলছি। একটাই খবর। ওই ৩০৩০ মেয়েটা ডাবল এজেন্ট ছিল। কাল রাতে সুইসাইড করেছে। ও. কে.!….
আগের পর্ব :
০১. সারারাত ধরে জুয়া খেলা চলেছে
০২. দুসপ্তাহ কেটে গেল
০৩. রুশ বিরোধী বিষয়
০৪. হোটেল বিছানায় শুয়ে
০৫. বন্ড হোটেল থেকে বেরোল
০৬. ফুটপাত ধবে হাঁটছিল বন্ড
০৭. জুয়া শেষ হতে ভোর
০৮. আবার সাবধানী পর্যবেক্ষণ
০৯. কথাবার্তা জমে উঠেছে
১০. খেলা শুরু
১১. ল্য শিফের চোখের দৃষ্টি সাদা
১২. এখন কী করণীয়
১৩. ঘোষণা হল
১৪. ছোটো নাইট ক্লাব
১৫. চিঠিটা জাল
১৬. বন্ড গাড়ি থামায়নি
১৭. এই ঘরটা বিরাট
১৮. চেতনাহীন হয়ে পড়েছিল প্রায় বন্ড
১৯. ঘুমের মধ্যে স্বপ্নের প্রকৃতি
২০. ক্রমশ সুস্থ হচ্ছে বন্ড
২১. ভেসপার রোজই নার্সিংহোমে আসত
২২. বন্ড এখন প্রায় পুরো সুস্থ
২৩. বন্ড ও ভেসপারের ঘরের মাঝখানে বাথরুম
২৪. সমুদ্রে স্নান
২৫. এখন হোটেল অন্ধকার
২৬. আরও তিনটে দিন