ক্যাসিনো রয়্যাল: ১২. এখন কী করণীয়

ক্যাসিনো রয়্যাল: ১২. এখন কী করণীয়

১২. এখন কী করণীয়

এখন কী করণীয়?

রুটিন কাজ— হোটেলে ফেরা, শয্যাগ্রহণ, লন্ডনে ফোন, পরের দিন প্লেন ধরা। ট্যাক্সিতে রিজেন্ট পার্ক। সিঁড়ি দিয়ে উঠে এম-এর সামনে। কর্তাদের কৃত্রিম সান্ত্বনা বাক্য।

অলরাইট! নেক্সট টাইম—

নেক্সট টাইম আর আসবে না— সেটা ভালোই জানে বন্ড।

উঠে দাঁড়িয়ে সে আশ্চর্য হয়ে দেখল ভেসপার লিন্ডের হাসিমুখ। হাসি! আশ্চর্য! একটা মোটা খাম সে নীচু হয়ে এগিয়ে দিল। বেশ মোটা খাম— ডিকশনারির মতো। মুখটা আঠা দিয়ে আঁটা।

টাকা!

কে পাঠাল? টুকরো কাগজে লেখা–মার্শাল এন্ড। তিন কোটি কুড়ি লক্ষ ফ্রাঁ! শুভেচ্ছা, আমেরিকার পক্ষ থেকে।

বন্ড নিজের চোখ-কানকেও বিশ্বাস করতে পারছে না।

ভেসপারের পাশে ফেলিক্স দাঁড়িয়ে। তার মুখেও হাসি।

আবার দান শুরু হচ্ছে। পরের রাউন্ড। ক্যাসিনোর প্রাপ্য টাকা কেটে নিচ্ছে ক্রুপিয়ার।

দ্য শিফ টেবিলে রয়েছে।

এখন এসপার-ওসপার। হয় জয়, নয় মৃত্যু।

পুরো তিনকোটি কুড়ি লক্ষ ফ্ৰাঁ টেবিলে। সব টাকার উপর বাজি ধরা। ক্রুপিয়ার সংখ্যাটা ঘোষণা করতেই সকলে চমকে উঠল।

বাকারার ইতিহাসে এতটাকার বাজি রেকর্ড করল। শোনা যায়, একবার ১৯৫০ সালে দোভিলে এমন কাণ্ড নাকি হয়েছিল।

সংখ্যাটা সত্যি কেন, সেটা শেফ দ্য পার্টি একবার বাজিয়ে নিল। তাবপর টাকাটা গুনে দেখা হল। গোনা শেষ হতে বন্ড টের পেল তার মেরুদণ্ডের নীচে শক্ত কী যেন স্পর্শ করল। তার ডান দিক থেকে চাপা গলায় কেউ বলল–মঁসিয়ে, এটা রিভলবার। সাইলেন্সার দেওয়া আছে, তাই কোনো শব্দ হবে না। আপনার শিরদাঁড়া উড়ে যাবে। লোক মনে করবে, আপনি উত্তেজনায় জ্ঞান হাবিয়েছেন। তোক ডাকলেই গুলি চালাব। আমার কথা, আমি দশ গোনা শেষ করার আগেই বাজি ফিরিয়ে নিন।

আসলে সেই মোটা ছড়িব ভেতর এই অস্ত্র ছিল। বন্ড এও জানে–এরা যা বলে তাই করে।

লোকটা গোনা শুরু করেছে— এক, দুই, তিন…

ল্য শিফ বন্ডের দিকে তাকিয়ে।

–চার, পাঁচ, ছয়—

আঃ, ভেসপার এবং ফেলিক্স দূরে নিশ্চিত মনে কথা বলছে। কিছু বুঝতে পারেনি ওরা।

–সাত, আট, নয়—

সমস্ত শক্তি দিয়ে এবার পেছনে ধাক্কা মারল বন্ড। বেতের ছড়িধারী রিভলবারওয়ালা ছিটকে পড়ল। একটা ভল্ট খেয়ে পেছনে দাঁড়ালো ভল্ট। চেয়ারটা মট করে ভেঙে গেল। মেঝেতে পড়ে গিয়েছিল সে। সকলের সাহায্যে উঠে দাঁড়াল। এমন কি শেফ দ পার্টিও সাহায্য করল। অভিনয়

অবশ্য!

কপালের ঘাম মুছে বন্ড বলল–হঠাৎ মাথাটা ঘুরে গিয়েছিল, উঃ কী গরম।

–ডাক্তার ডাকা হোক।

–না, না, দরকার নেই। প্লিজ, আই অ্যাম সো সরি!

পরিচারক ছড়িটা তুলে পরীক্ষা করছে।

বন্ড বলল–ওটা মি. ফেলিক্সের এক বন্ধুর। ওর হাতে দিন।

ছড়ির মালিক উধাও। একজন বডিগার্ডকেও এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না।

কী ঘটল আসলে কেউ-ই সেটা বুঝল না। অবশ্য যে বা যারা বোঝবার তার বুঝেছে।

আঙুল দিয়ে টেবিলে জোরে টোকা মারল বন্ড।

অর্থাৎ, খেলা আবার শুরু হোক। সে প্রস্তুত।

আগের পর্ব :

০১. সারারাত ধরে জুয়া খেলা চলেছে
০২. দুসপ্তাহ কেটে গেল
০৩. রুশ বিরোধী বিষয়
০৪. হোটেল বিছানায় শুয়ে
০৫. বন্ড হোটেল থেকে বেরোল
০৬. ফুটপাত ধবে হাঁটছিল বন্ড
০৭. জুয়া শেষ হতে ভোর
০৮. আবার সাবধানী পর্যবেক্ষণ
০৯. কথাবার্তা জমে উঠেছে
১০. খেলা শুরু
১১. ল্য শিফের চোখের দৃষ্টি সাদা

পরের পর্ব :

১৩. ঘোষণা হল
১৪. ছোটো নাইট ক্লাব
১৫. চিঠিটা জাল
১৬. বন্ড গাড়ি থামায়নি
১৭. এই ঘরটা বিরাট
১৮. চেতনাহীন হয়ে পড়েছিল প্রায় বন্ড
১৯. ঘুমের মধ্যে স্বপ্নের প্রকৃতি
২০. ক্রমশ সুস্থ হচ্ছে বন্ড
২১. ভেসপার রোজই নার্সিংহোমে আসত
২২. বন্ড এখন প্রায় পুরো সুস্থ
২৩. বন্ড ও ভেসপারের ঘরের মাঝখানে বাথরুম
২৪. সমুদ্রে স্নান
২৫. এখন হোটেল অন্ধকার
২৬. আরও তিনটে দিন
২৭. পরদিন সকালে যা ঘটল

গল্পের বিষয়:
অনুবাদ
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত