ক্যাসিনো রয়্যাল : ০৮. আবার সাবধানী পর্যবেক্ষণ

ক্যাসিনো রয়্যাল : ০৮. আবার সাবধানী পর্যবেক্ষণ

০৮. আবার সাবধানী পর্যবেক্ষণ

নিজের ঘরে এসে আবার সাবধানী পর্যবেক্ষণ সারল বন্ড। তারপরে যথারীতি শাওয়ারবাথ, এবং শয্যায় টান হয়ে শোওয়া। চিন্তার পর্দায় ছবি উঠছে—ম্যাথুস, লিটার আর মিস লিন্ড। কার কী ভূমিকা, সেটা বোঝা যাবে ঠিক সময়েই।

এখন নটা কুড়ি। ল্য শিফের সঙ্গে লড়াই তো আরম্ভ হয়ে গেছে।

পোশাক পরতে পরতে আয়নায় নিজের চেহারাটাও ভালো করে দেখল বন্ড। ডানগালের কাটা দাগটার জন্য মুখটা একটু ভিলেন টাইপের হয়ে গেছে বটে, কিন্তু সব মিলিয়ে চেহারাটা বেশ আকর্ষণীয় আছে।

হিপ পকেটে সিগারেট কেস নিয়ে সে আবার পরীক্ষা করল লাইটারে গ্যাস আছে কিনা। পকেটে এক বান্ডিল দশ হাজারর নোট, তারপর সেফটি ক্যাচ লাগিয়ে লোডেড ২৫ অটোমেটিক রিভলবারটাও নিল। গায়ে চড়াল একটা প্রিন্টেড জ্যাকেট।

হঠাৎ লিফট খোলার শব্দ।

–গুড ইভিনিং।

মিস লিন্ড! বন্ড সামান্য উত্তেজিত। মিস লিন্ড লিফটের কাছেই দাঁড়িয়ে। কালো ভেলভেটের ড্রেস, গলায় সরু হিরের নেকলেস। বুকের কাছটা V শেপে কাটা, সেখানেই লকেটটা।

–বাঃ, ইউ আর লুকিং ফাইন।

সোজাসুজি বন্ডের হাত ধরে মিস লিন্ড বলল–চলুন আগে খেয়ে নিই। আপত্তি নেই তো?

সামান্য হাসি-ঠাট্টা! ততক্ষণের খাদ্যের সঙ্গে সামান্য পানীয়ও এসে গেছে। এই রেস্টুরেন্টের একটা অংশ জাহাজের মতো বাগানের দিকে ঢুকে গেছে। এই জায়গাটা বেশ জাঁকজমকপূর্ণ।

মিস লিন্ড অবশ্য তার পছন্দমতো পানীয়ের অর্ডার দিল।

বন্ড বলল— আজকে আপনার পোশাক মুগ্ধ করার মতো। এবার আপনার নামটা বলুন।

–ভেসপার। ভেসপার লিন্ড! আমার জন্ম এক ঝড়ের সন্ধ্যায়। তাই নিজের নামের তাৎপর্য। ব্যাখ্যা করতে হয় অনেক সময়। নামটা কারুর ভালো লাগে, কারুর লাগে না।

–আমার ভালো লেগেছে।

কিছু হালকা সুন্দর কথাবার্তা।

বন্ড বলল— এবার খাবারের অর্ডার দিই?

-হ্যাঁ, লাখোপতির উপযুক্ত আইটেম চাই।

–বুঝিয়ে দিন।

–যেমন, ক্যাভিয়ার দিয়ে শুরু হোক। তারপর গ্রিলড় রোভোন দ্য ভো। সঙ্গে পোম্ সুফল। তারপর ফেজ দ্য বোয়া ক্রিম! …ইস, খুব নির্লজ্জের মতো কথা বলছি। তাইনা?

–নট অ্যাট অল! তবে প্রচুর টোস্ট চাই। নইলে খাবারটা জুতসই হবে না।

এরপর আরও কিছুক্ষণ পানীয় বিশেষজ্ঞের ভূমিকা পালন করল বন্ড। টর্নেডো, সঙ্গে বার্নিস স। স্ট্রবেরি, আভাকাভো পেয়ার সঙ্গে ফ্রেঞ্চ ড্রেসিং।

এরপরেই শেষ নেই। শেষরাতে দুজনেই শ্যাম্পেন খাওয়ার পরিকল্পনা করল।

বাটলারও কমতি নয়। সে সুপারিশ করল–-ব্লা দ্য ব্লা ব্রাট ১৯৪৩! বলল–এটাকেই বলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শ্যাম্পেন।

বন্ড বলল— অবিবাহিতদের দোষ সব কিছু খুঁচিয়ে দেখা।

–আমারও সেই অভ্যাস। তবে আমাকে বোধহয় মানায় না।

গেলাস তুলে বলল–আজ রাতে কথাবার্তা ঠিক হবে মনে হয়।

বন্ড চুপ করে শুনছে।

ভেসপার বলল–হ্যাঁ, ভালো কথা। ম্যাথুস খবর পাঠিয়েছে ওই বোমাবিস্ফোরণ সম্বন্ধে। খবরটা অদ্ভুত, গল্পের মতো।

আগের পর্ব :

০১. সারারাত ধরে জুয়া খেলা চলেছে
০২. দুসপ্তাহ কেটে গেল
০৩. রুশ বিরোধী বিষয়
০৪. হোটেল বিছানায় শুয়ে
০৫. বন্ড হোটেল থেকে বেরোল
০৬. ফুটপাত ধবে হাঁটছিল বন্ড
০৭. জুয়া শেষ হতে ভোর

পরের পর্ব :

০৮. আবার সাবধানী পর্যবেক্ষণ
০৯. কথাবার্তা জমে উঠেছে
১০. খেলা শুরু
১১. ল্য শিফের চোখের দৃষ্টি সাদা
১২. এখন কী করণীয়
১৩. ঘোষণা হল
১৪. ছোটো নাইট ক্লাব
১৫. চিঠিটা জাল
১৬. বন্ড গাড়ি থামায়নি
১৭. এই ঘরটা বিরাট
১৮. চেতনাহীন হয়ে পড়েছিল প্রায় বন্ড
১৯. ঘুমের মধ্যে স্বপ্নের প্রকৃতি
২০. ক্রমশ সুস্থ হচ্ছে বন্ড
২১. ভেসপার রোজই নার্সিংহোমে আসত
২২. বন্ড এখন প্রায় পুরো সুস্থ
২৩. বন্ড ও ভেসপারের ঘরের মাঝখানে বাথরুম
২৪. সমুদ্রে স্নান
২৫. এখন হোটেল অন্ধকার
২৬. আরও তিনটে দিন
২৭. পরদিন সকালে যা ঘটল

গল্পের বিষয়:
অনুবাদ
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত