সালামী শহরে যাওয়ার পথে দুই পথিকের দেখা হল।পরস্পর কুশল বিনিময় করে তারা একসাথে সালামী’র পথে রওয়ানা হল।
ঠিক মধ্য দুপুরে তারা এক প্রশস্ত নদীর পাড়ে এসে উপস্থিত হল। নদী পারাপারের জন্য সেখানে কোন সেতু ছিল না।
সাঁতরে নদী পার হওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ নেই-কেননা বিকল্প কোন পথ তাদের জানা নেই।
প্রথম জন বলল, নদীটা তেমন প্রশস্ত না। চল, আমরা সাঁতরে পার হয়ে যাই।এই বলে প্রথম জন নদীর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
তার দেখাদেখি দ্বিতীয় পথিকও নদীতে লাফ দিল।
প্রথম পথিক তার সারা জীবন কাটিয়েছে নদীর পাড়ে। কিন্তু মাঝ নদীতে এসে হঠাৎ সে তাল হারিয়ে ফেলল,
ভেসে যেতে শুরু করল প্রচণ্ড স্রোতের সাথে।
দ্বিতীয় পথিক জীবনে কখনো পানিতে নামেনি। অথচ সে সহজেই সাঁতরে পার হয়ে গেল।
পাড়ে উঠে দেখল প্রথম পথিক ভেসে যাচ্ছে স্রোতের তোড়ে।
সহযাত্রীকে বাঁচানোর জন্য বিন্দুমাত্র দেরি না করে সে ঝাঁপিয়ে পরল নদীর বুকে।
একটু পর দুজনেই পাড়ে উঠে এলো। প্রথম পথিক বলল, তুমি যে বললে জীবনে কখনো পানিতে নামোনি।
তাহলে নদী পার হলে কিভাবে? আমিতো নদী পাড়ের মানুষ হয়েও পারলাম না।
শুনে দ্বিতীয় পথিক জবাব দিল, বন্ধু তুমি কি আমার কোমরে বেল্টের সাথে আটকে থাকা এই থলেটাকে দেখতে পাচ্ছ?
এই থলেটা সোনায় ভর্তি- এই সোনা আমার সারা জীবনের কামাই। এই সোনা আমি কামিয়েছি আমার স্ত্রী-পুত্র-কন্যা’র জন্য।
এই সোনাভর্তি বেল্টই আমি তুমি আমরা আমাকে নদী পার করিয়েছে যাতে আমি নিজের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারি।
আজ শুধু আমি নদী পার হইনি, সাথে আমার কাঁধে বসে আমার পরিবারও এই নদী পার হয়েছে।