অনেক দিন আগের কথা….
এক ছিল রাজকন্যা। তার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল। সে চাইলেই প্রকৃতির যেকোনো জীবকে তার বশে আনতে পারতো। কিন্তু সে নিজেও জানতো না যে তার এত ক্ষমতা!এ কথা যেন রাজ্যের বাইরে না যেতে পারে,সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি ছিল। আর তাই,তাকে রাজ্যের বাইরে যেতে দিত না। কিন্তু সে তাতে অসন্তুষ্ট ছিল।সে মনে মনে ভাবতো কি করে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে রাজ্যের বাইরে যাওয়া যায়! তার রাজ্যের বাইরের জগতটাকে স্বচক্ষে দেখার ভীষন ইচ্ছা।
একদিন সে শুনতে পেল,কদিন পরেই পূর্ণিমা। আর এ ও শুনতে পেল যে,এই রাতে তাকে যেন আরো চোখে-চোখে রাখা হয়।সে এসব শুনে আর নিজেকে বোঝাতে পারছিল না,কেন তার সাথে এমন হচ্ছে,কেবল কি সে রাজকন্যা বলে,নাকি অন্য কোনো কারন আছে এর পেছনে? সে জানতো পূর্ণিমা রাতের সৌন্দর্যের কথা। তাই তা দেখার আগ্রহ সে হারাতেই পারছিল না। পূর্ণিমার আগের দিন পর্যন্ত অনেক ভেবে সে ঠিক করলো,এই রাতেই সে রাজ্যের বাইরে যাবে এবং অবশ্যই সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে,আবার ফিরেও আসবে কেউ জানার আগেই।
অবশেষে সেই পূর্ণিমা রাত;রাজকন্যা তার পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সবার চোখে ধূলা দিয়ে সফলভাবেই রাজ্য থেকে বের হল। কিন্তু সে রাজ্যের বাইরের কিছুই চিনতো না। তাই সে অনেক ভেবে মনে করার চেষ্টা করলো,রাজ্যের দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত এক সমুদ্র আছে,যেটা সে রাজ্যের অঙ্কিতচিত্রে দেখেছিল। আর সেখানে ফিবছর এ সময়েই ভিনদেশীয়দের বাণিজ্য বসে।
অতঃপর,সে হাঁটতে-হাঁটতে রাজ্যের দক্ষিণে সেই সমুদ্রের দিকে গেল এবং দেখলো সেখানে সত্যিই বাণিজ্য বসেছে। সৃষ্টিকর্তা তাকে এমন জ্ঞান ই দান করেছেন,সে আসার আগেই তার রাজকন্যার সাজটা পাল্টে এক সাধারন মেয়ের সাজে নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছিল। ফলে এ ভরা জনতার মাঝে কেউ তাকে চিনতেই পারেনি! সে অনেক দোকান ঘুরে দেখলো এবং কিছু খাবার কিনলো।যেতে-যেতে বাণিজ্যের শেষ প্রান্তে পৌঁছলো,দেখতে পেল ঐ দূর সমুদ্রে একটা বিশাল থালা আকৃতির কি যেন বেশ আলো ছড়াচ্ছে।তার আর বুঝতে দেরী হল না যে,সেটাই পূর্ণিমার চাঁদ! তার খুব ইচ্ছে হল,সেই চাঁদটা আরো কাছ থেকে দেখার।সে দেখলো পারে অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ আর ছোট-ছোট ডিঙি বাঁধা। সাহস করে সে একটা ছোট ডিঙিতে চড়ে বসলো। কিন্তু সে জানেনা কি করে এটা ঐ চাঁদের কাছে যাবে! অনেক্ষন পর খেয়াল করলো,সে পার ছেড়ে অনেকটা দূরে চলে এসেছে।