গত চারদিন ধরে নাফিস ভয়াবহ মানসিক টেনশানে ভুগছে। খেতে বসলে খেতে পারেনা। খাবার গলা দিয়ে নামেনা! পড়তে বসলে পড়তে পারেনা। পড়ার মাঝে থাকেনা সে। একটা ভয়ের…!! প্রচণ্ড ভয় আর লজ্জার পৃথিবীতে চলে যায় সে! যেখানে সবসময় তাকে মাথা নিচু করে হাঁটতে হবে!! তাকে…তার মা কে…তার বাবাকে…!! মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে নিজেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে। কোথাওগিয়ে মরে পড়ে থাকতে!! এত লজ্জার বোঝা সে কেমন করে বইবে!! পড়ার টেবিলে বসে হটাৎ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আনমনেই বলে উঠল সে- ‘’জীবনটা এখানে থেমে গেলেই বুঝি ভালো হত!!’’ নাফিস আবরার।
একটা মোটামুটি মানের বেসরকারী স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র । আর ছাত্র হিসেবে তার মান ‘’ মোটামুটি’’ ও নয়!সোজাসাপ্টা ভাষায় তাকে খারাপ ছাত্রই বলা যায়। আড়ালে আবডালে যাকে মানুষ খারাপ ছেলেও ডাকে! যেই ছেলে ঠিকমত স্কুলে যায়না, পড়াশোনায় মনযোগ নেই, যার পড়ার টেবিলের ওপর এক ইঞ্চি পুরু ধুলার স্তর পড়ে আছে দীর্ঘদিন অযত্ন অবহেলার কারনে তাকেঅবশ্য কেউ খারাপ ছেলে বললেও কোন প্রতিবাদ করার মত কোন সুযোগ থাকেনা। যার মা কে প্রতিদিন পাড়া প্রতিবেশীর টিটকারি শুনতে হয় এমন ছেলের জন্য, যার বাবা কখনো মানুষের সামনে মাথা উঁচু করে নিজেরছেলের কথা বলতে পারেনা, যার প্রতিদিনের রুটিন সকাল-সন্ধ্যা ফুটবল-ক্রিকেট খেলা, আর রাত হলে পড়ার সময়গল্পের বই নিয়ে পড়ে থাকা! তাকে তো খারাপ ছেলে বলাই যায়!!! আর এই হল এলাকায় ‘’খারাপ ছেলে’’ হিসেবে পরিচিত নাফিসের পরিচয়।
এভাবেই মানুষের লাঞ্ছনা-গঞ্জনা শুনে দিন কাটতেলাগলো নাফিসের। কিন্তু এসব নিয়ে তার কোন মাথাব্যাথাইযেন নেই!! সে আছে তার খেলাখুলা নিয়ে! এক্কেবারে টেনশানলেস! আস্তে আস্তে তার টেস্ট পরীক্ষা শুরু হল। নাফিসপরীক্ষা টা দিল কোন রকমে! আসলে পরীক্ষা না দিয়ে অনেকটা হল থেকে ঘুরে আসলো-ই বলা যায়!! রেসাল্টও হল সেরকম! চার সাবজেক্টে ডাব্বা! যার ফলাফল হল- তাকে আর এসএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হবেনা!! কিন্তু নাফিস রেজাল্ট দেখে অবাকই হল!! কারণ সে যতখারাপ ছাত্রই হোকনা কেন ! টেনেটুনে পাশ করার মত যোগ্যতা তার আছে!!! যাই হোক সে সাথে সাথে গিয়ে স্যার দের সাথে কথা বলল। আর তা থেকে জানতে পারল যে- তার মত একটা ছেলেকে কিছুতেই পরীক্ষা দিতে দেয়া হবেনা! নাফিস চিন্তিত মনে বাসায় চলে এল। এসে অনেক ভয়ে ভয়ে মা কে সব খুলে বলল। ওর কথা শুনে মা কিছু বলল না।
শুধু কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল! নাফিস মায়ের কান্নাটা সহ্য করতে পারলনা। পরের দিন আবার স্কুলের দিকে রওনা দিল সে । যে করেই হোক…স্যার দের হাতে পায়ে ধরে হলেও তাকে এবছর এসএসসি পরিক্ষা দিতেই হবে!! নাহলে বাবা-মায়ের আর অপমানের অন্ত থাকবেনা!! ভেবেই নাফিসের গা টা শিউরে উঠলো!! যাওয়ার পথে রাস্তায় রেদওয়ানের সঙ্গে দেখা হল। নাফিস দের বাসার কাছেই ওদের বাসা । আর রেদওয়ান ওদের ক্লাসের থার্ড বয়। এবার টেস্টে 4.50 পয়েন্টপেয়েছে বলে অহঙ্কারে মাটিতে পা পড়ছেনা! রাস্তায় নাফিসকে পেয়ে রেদওয়ান আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা দূর থেকে ওকে ‘ফেল্টুশ’ বলে বলে অপমান করল! আজ প্রথমবার অপমান কি জিনিস বুঝতে পারল ও! বুঝতে পারল মানুষের টিটকারি শুনে ওর বাবা-মায়ের কেমন লাগে! স্কুলে পৌঁছেই আবার স্যারদের সেই কথাই শুনতে হল। শূন্য হাতেই ফিরতে হল ওকে! কিন্তু সে হাল ছাড়ল না। দিনের পর দিন স্যারদের কাছে গিয়ে ভিখারীর মত ধর্না দিতে থাকল! কিন্তু কিছুতেই কিছু হলনা। একবুক হতাশা, শূন্যতা আর অভিমান নিয়ে তৃতীয় দিন সে স্কুল থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে এল স্কুল থেকে।
চোখের সামনে ভাসছিল শুধু মায়ের কান্নারত চেহারাটা , বাবার মাথা হেঁট করে হাঁটার ভঙ্গীটা! নাফিসের পায়ের নিচের মাটি যেন সরে যাচ্ছিল! মনে হচ্ছিল এখনই একটা গাড়ির নিচে লাফ দিয়ে মরে যেতে! কিন্তু পারল না! তাতে তো মা বাবার কষ্ট আরও বাড়বে!! এভাবে আনমনে হাঁটতে হাঁটতে হঠাত একটা পাথরের সাথেহোঁচট খেয়ে পড়ে গেল নাফিস! খুব বাজে ভাবে ব্যাথা পেল! হাঁটু ছিলে রক্ত বেরোচ্ছে! এতটা ব্যাথা যে- পায়ে কোন অনুভুতিই হচ্ছেনা! ওর মনে হচ্ছে যেন আর উঠে দাড়াতেই পারবেনা ও! নাফিসের মোবাইল টা পকেট থেকে বেরিয়ে রাস্তায় পড়ে ছিল! হঠাৎ কোথা থেকে কি যেন হয়ে গেল! একটা চোর এসে রাস্তা থেকে মোবাইল টা তুলে নিয়ে দৌড় দিল! অনেক প্রিয় মোবাইল ছিল নাফিসের! বড় মামা বিদেশ থেকে পাঠিয়েছিল! হঠাত করেই নাফিস ব্যাথার কথা ভুলে গেল!! কোন মতে রাস্তা থেকে নিজেকে টেনে তুলে চোরের পিছে ছুটতে লাগলো! ছুটতে গিয়ে যেন অসুরের শক্তি এসে গেল ওর শরীরে! ব্যাথার কথা বেমালুম ভুলেই গেল! পাড়া বেড়ানো ছেলে নাফিস! সারাদিন খেলাধুলা করে। প্রতিবছর দৌড়ে ফার্স্ট হয়! তাই ছ্যাকড়া চোরটাকে ধরে ফেলতে বেশীক্ষণ লাগলোনা ওর! কলার ধরে দুটো থাপ্পড় দিতেই মোবাইলটা ফেরত দিয়ে পালালো! ওটা হাতে পেয়েই নাফিস আবার দুর্বল হয়ে পড়ল! পায়ের ব্যাথাটা চিনচিন করে বাড়ছে । সেদিনের মত ঘরে চলে এলো ও।
বিছনায় শুয়ে শুয়ে নাফিস আজকের ঘটনাটার কথা ভাবতে লাগলো! হোঁচট খেয়ে তো মুখ থুবড়ে পড়েছিল ও! কিন্তু চোরটার পিছু নেয়ার জন্য যদি উঠে না দাঁড়াত তাহলে কি কখনও ফেরত পেত ওর জিনিসটা!! হঠাত বুঝতে পারল সে- আজকের এই ঘটনার সাথে তার নিজের জীবনেরও মিল আছে!! হোঁচট খেয়ে তো সবাই পড়ে! কিন্তু দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে আবার উঠে দাড়াতে হয়!! সফল হতে হলে ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়েও লড়ে যেতে হয়! সে মনে মনে তখনই ভেবে নিল! এভাবে হেরে গেলে চলবেনা! তাকে উঠে দাঁড়াতে হবে!! হ্যাঁ-সে আবার উঠে দাঁড়াবে! তাকে দাঁড়াতেই হবে!!! পরদিন নাফিস তার মা কে নিয়ে স্কুলে হেডস্যারের রুমেগেল। তখন ওখানে স্কুলের প্রায় সব স্যারই একটা মিটিং-এ বসেছিল ওই স্কুলের এ+ এর হার কম বলে! গত চার বছরে মাত্র ১০ জন ছেলে এ+ পেয়েছে এই স্কুল থেকে! নাফিস স্যারের অনুমতি চাইল ভেতরে ঢুকার । নাফিসের মা কে দেখে হেডস্যার ভেতরে আসতে বললেন। নাফিস বলল-‘’স্যার আমি পরীক্ষা দিতে চাই। আমি জানি আপনারা রাজি হবেন না। কারণ একটা ছেলে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করলে স্কুলের বদনাম হবে। আর আপনারা এটা চান না। কিন্তু স্যার- আমি আজ আপনাদের এটা বলতে এসেছি যে , আমাকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখুন। আমি এই স্কুল থেকে এ+ পেয়ে দেখাবো। প্লিজ স্যার একটা সুযোগ দিন আমাকে!! প্লিজ!! নাহলে আজ আমার মা কে এখান থেকে অপমানের বোঝা মাথায় নিয়ে বের হতে হবে ‘’ কথাগুলো বলতে বলতে নাফিস ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল।
হেডস্যার তাকিয়ে দেখলেন , নাফিসের মায়ের চোখেও পানি! স্যার খুব আবেগী হয়ে গেলেন কেন জানি! অন্য স্যারদের সাথে পরামর্শ করে নাফিসকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিলেন। ওদিন ওই মুহূর্তে নাফিসের চেয়ে খুশী বোধহয় কেউ হয়নি। হেডস্যারকে সালাম করে চলে আসল। স্যার শুধু নাফিসের পিঠে হাত বুলিয়ে একটা কথা বললেন-‘’বাবা রে, তোর মাকে যেন আর কাঁদতে না হয়’’। স্যারের কথা শুনে নাফিস কান্না চেপে চলে আসলো ওখান থেকে। আসতে আসতে নাফিস প্রতিজ্ঞা করল যে – হ্যাঁ! নাফিস ওর মাকে কাঁদাবে। কিন্তু সেটা হবে সুখের কান্না। হ্যাঁ!! এটা ওর প্রতিজ্ঞা। একটা এক্সামে ফেল করা খারাপ ছেলের প্রতিজ্ঞা! দিন কেটে যায় ধীরে ধীরে। এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে আজ। সকাল থেকে বাসায় বসে আছে নাফিস। কেউই ওকে বাইরে দেখেনি। কেউ আর ওর খবরও নেয়নি! ফেলু ছেলে ফেলই করবে! এ আর এমন কি ! রাত ন’টা বাজে। রেদওয়ানের মা নাফিসদের বাসায় এলো মিষ্টি নিয়ে। আসলে যতটা না নিজের ছেলের পাশ করার খুশিতে এলো , তার চেয়ে বেশী খুশী লাগছে নাফিসের পরীক্ষায় ফেল করার কথা ভেবে! আর সে নাফিসের মা কে কিছু ঠেস মারা কথা বলতে পারবে সেই কথা ভেবে !!
এসেই উনি বলল- ‘’ভাবি!! আপনাদের দোয়ায় রেদওয়ান তো এ+ পেয়েছে!! এই নেন! মিষ্টি খান !! ‘’ হঠাৎ ঠোঁটের কোণে হাসি চেপে রেদওয়ানের মা বলল যে- ‘’আপনার ছেলেটা কই ??? দেখছিনা যে !! রেজাল্ট কি ওর?? ফেল করেছে বুঝি !!!! কি ছেলে যে জন্ম দিলেন ভাবী! আপনাদের মান সম্মান তো ধুলোয় মিশিয়ে দিল একদম !! এখন কি করবেন ??? এক কাজ করেন ভাবী , আমার এক পরিচিত লোক আছে! শহরে বড় দোকান আছে উনার! ওখানে সেলস ম্যানের কাজে ঢুকিয়ে দিন! অন্তত ব্যাবসা হলেও শিখুক! জীবনে একটা কিছু করে খেতে পারবে। অন্তত আপনাদের ঘাড়ের বোজা তো হবেনা !!হেহেহে’’ নাফিস সবই পাশের রুমে বসে শুনছিল ! রাগে পিত্তি জ্বলে যাচ্ছিল ওর ! কিন্তু ও শুধু আজকের দিনটার অপেক্ষায় ছিল !!! ওর মায়ের চোখে সুখের জল দেখার অপেক্ষায় ! রেদওয়ানের মা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল ! এমন সময় নাফিস এল ওই রুমে ! দাঁতে দাঁত চেপে বলল- ‘’শুনুন খালাম্মা , আমি গোল্ডেন এ+ পেয়েছি ! আমাদের স্কুলের ইতিহাসের প্রথম গোল্ডেন এ+’’নাফিসের কথা শুনে রেদওয়ানের মা ভূত দেখার মত অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল ! অনেক অপমান লাগলো উনার ! কিন্তু কথায় আছে ‘কয়লা ধুলে ময়লা যায়না’।
তাই সেও হাল ছাড়লনা ! নাফিসকে অপদস্ত করতে চাইল টেস্টের রেজাল্টের কথা বলে ! বলল যে-‘তুমি না টেস্ট তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে নাফিসই বুক ফুলিয়ে বলে দিল- ‘’হ্যাঁ ! আমি টেস্টে ফেল করেছি ! তো কি হয়েছে ???’’ ওর মুখে হঠাৎ এমন শুনে রেদওয়ানের মা আর থাকতে পারল না। প্রচণ্ড অপমানিত হয়ে , মুখ কালো করে চলে গেল। নাফিস তার মায়ের মুখের দিকে তাকাল। মা কাঁদছে । সুখের কান্না ! সন্তানের প্রাপ্তিতে খুশীর কান্না ! নাফিস গিয়ে মা কে জড়িয়ে ধরল । নাফিসও কাঁদছে। বিজয়ের কান্না !! মা কাঁদতে কাঁদতে বলল – ‘’তুই একদিন অনেক বড় হবি বাবা। অনেক বড় মানুষ হবি তুই’’ সেদিন বোধহয় কেউ একজন সৃষ্টির অন্তরালে বসে মা ছেলের এই আবেগের কান্না দেখেছিলেন , মায়ের সেই দোয়া শুনেছিলেন !! পরিশিষ্টঃ- কিছুদিন পর জানা গেল নাফিস নাকি ওই বোর্ডে চতুর্থ হয়েছে ! পুরো স্কুলে আর আদিখ্যেতার অন্ত রইলনা ওর জন্য ! স্যাররা মাথায় তুলে নাচে মতন অবস্থা ! রেদওয়ানের মাকে আর কখনও নাফিসের মায়ের মুখোমুখি হতে দেখা যায়নি । আর আসেননি তিনি ওদের বাসায় ! বোধহয় ওদিন নাফিসের ঝাটকি টা বেশীই হয়ে গেছিল ! হাহাহা!! নাফিসের মা-বাবা এখন অনেক সুখে আছে।
মা তো সবার কাছে ছেলের একের পর এক অর্জনের কথা বলতে বলতেই হয়রান হয়ে যায়। বাবা এখন মাথা উঁচু করে হাঁটে ! রাস্তায় পরিচিত কেউ দেখলে বলে- ‘’ওই দেখো ! নাফিসের বাবা যায় !’’ নাফিস এখন অনেক বড়। শুনলাম বুয়েট থেকে পাশ করে পিএইচডি করতে লন্ডনে গেছে কিছুদিন আগে। দেশে যখন ছিল তখন কেউ যদি ওর শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা জিজ্ঞেস করত তখন নাকি বুক ফুলিয়ে বলত- ‘ক্লাস টেনে টেস্ট এক্সামে ফেল’ !! এই টেস্ট এক্সমে ফেল করে ছেলেটা আর কিছু শিখুক অথবা না শিখুক , একটা জিনিস ঠিকই শিখেছে- জীবনে অনেক ধাক্কা খাবে , হোঁচট খাবে , পড়ে যাবে , শরীর ক্ষতবিক্ষত হবে , সবাই আঘাত করতে থাকবে তোমাকে ! কিন্তু হেরে গেলে চলবে না ! আবার উঠে দাঁড়াতে হবে । ব্যাথা,দুঃখকে সঙ্গী করেই দৌড়াতে হবে। পৃথিবী সোনার চামচ মুখে নেয়া ননীর পুতুলদের চায় না। পৃথিবী গোবরের মাঝে পদ্মফুল খুজে বেড়ায়।
পৃথিবী অমিতাভ বচ্চনের ছেলে অভিষেক বচ্চনকে ‘হিরো’ বলতে কুণ্ঠাবোধ করে ! কিন্তু সামান্য বাসের হেল্পার থেকে উঠে আসা রজনী কান্তকে নির্দ্বিধায় ‘সুপারহিরো’ বলে ! পৃথিবী সামনের সারিতে বসে থাকা বিড়ালদের চায় না। পৃথিবী তাদেরই চায় যারা সকল প্রতিকূলতাকে তুচ্ছ করে বাঘের মত পেছনের সারি থেকে সামনে উঠে আসে ! কজ,দ্যা ওয়ার্ল্ড ইজ অনলি ফর ফিটেস্ট এন্ড ফাইটারস ! আত্মতৃপ্তি বড় জিনিস ! স্রোতের প্রতিকূলে নৌকা চালিয়ে সবার আগে নদী পার হওয়ার মজাই আলাদা ! তখন ওই আত্মতৃপ্তির সুখ টার সাথে পৃথিবীর কোন সুখেরই তুলনা হয়না ! নাফিস আবরার সেটা করে দেখিয়েছে ! স্রোতের প্রতিকূলে নৌকা চালিয়ে সবার আগে নদী পার হয়ে দেখিয়েছে !! একটা ফেল করা ছেলে সবচেয়ে সফল হয়ে দেখিয়েছে !
আমার কথাঃ- এই গল্পটা তাদের জন্য যারা জীবন যুদ্ধে পরাজিত ভাবছে নিজেকে । যারা ভাবছে তাদের সব শেষ হয়ে গেছে ! যারা নিজ নিজ অবস্থানে একবুক হতাশা আর শুন্যতা নিয়ে ‘খারাপ ছেলে’র তকমা নিয়ে ঘুরছে ! যারা মা বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে প্রতিদিন , প্রতি মুহূর্তে মরছে! না ! সব শেষ হয়নি !! জীবন তো মাত্র শুরু !! খুজে দ্যাখ না !! হয়তো তোর মধ্যেও খুঁজে পাবি কোন ঘুমন্ত নাফিস আবরার কে !