সূর্যদ্বয়ের আর মাত্র চার ঘন্টা বাকি।বিদ্যুতের কোনো দরকার নেই আপনার এখন।সকালেই মিস্ত্রী এসে ঠিক করে দিতে পারবে।রাত এগারোটায় বিদ্যুৎ গিয়েছিলো।আপই তখন বিছানায় শুয়ে,ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ভাবছেন সময়টা কেনো দ্রুত চলতে পারে না।কম্বল মুড়ি দেয়া অবস্থাতেই আপনি আজব ধরনের একটা আওয়াজ শুনতে পেলেন।দরজা নক করার বা কোনো কিছু আঁচড়ানোর আওয়াজ নয়,অন্য কিছু।আপনি
নিজেকে বোঝালেন যে এটা হয়তো বাতাস,কিন্তু আপনি জানেন এটা বাতাস নয়। ডাইস ম্যান নামের ভয়ঙ্কর খুনির ব্যাপারে একটা গুজব প্রচলিত আছে। সে কয়েকদিন আগেই জেল থেকে পালিয়েছে আর আশ্রয় নিয়েছে আপনার এলাকায়।আপনার মোবাইল আপনার কাছেই আছে।আপনি ফোন হাতে নিয়ে দেখলেন,চার্জ শেষ।বন্ধ হয়ে আছে যন্ত্রটা।কিন্তু চার্জ দেয়া সম্ভব নয় কারণ কয়েক মাইলের মধ্যে বিদ্যুত নেই।খুনির আসার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত সময়।
আপনি আপনার ঘড়িটা আরেকবার দেখলেন, দুটা সাতান্ন বাজে,তিনটা প্রায় বেজেই গেছে।তখনই আপনার মনে পড়লো তিনটার সময় থেকেই শুরু হয় আদিভৌতিক সব ব্যাপার।আপনি সাড়া শরীর কম্বল দিয়ে ঢেকে নিলেন।নিজেকে নিরাপদ মনে হলেও এ ভাবনা বাদ দিতে পারছেন না যে কেও আপনাকে দেখছে।আপনি এক গ্লাস দুধ খাওয়ার উদ্দেশ্যে বিছানা থেকে নেমে নিচে অন্ধকার রান্না ঘরটায় চলে গেলেন।এক গ্লাস দুধ
নিয়ে যখনই আপনি উপরে যেতে লাগলেন ঠিক তখনই আপনি আবার সেই আওাজটা শুনতে পেলেন।এবার আরও স্পষ্ট।আপনার সম্পুর্ন শরীর ঠান্ডা হয়ে যেতে লাগলো আর আপনি নিজেকে যতটা সম্ভব আধারে লুকিয়ে ফেলতে চাইলেন।তখনই আপনি আধারে একটা অবয়ব দেখতে পেলেন,অবয়বটা আপনার দিকেই এগিয়ে আসছে।আপনার হৃদপিন্ডটা জোরে জোরে পাম্প করছে।আপনি দর দর করে ঘামছেন।
অবয়বটা আপনার সামনে এসে থামলো।আপনার সামনে একটা বোর্ড ধরে অবয়বটা বললো, “ ছক্কাটা ঘোরাও।” আপনি ভয় পেতে লাগলেন।অবয়বটা এবার আরো জোড়ে বললো, “ছক্কাটা ঘোরাও বলছি। ছক্কা পড়লে তুমি জিতে গেলে।আর না পড়লে আজই হবে তোমার শেষ রাত”। আপনার শিরা উপশিরায় রক্ত
চলাচল যেনো বেড়ে গিয়েছে। আপনি ধীরে ধীরে ছক্কাটি তুললেন আর বোর্ডে ছুড়ে মারলেন।আপনি নিশ্বাস বন্ধ করে সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা করছেন যেনো ছক্কা পড়ে। অল্প একটু সময়টা আপনার কাছে মহাকালের চেয়েও বেশী মনে হতে লাগলো।অন্ধকারেও আপনি অবিশ্বাস্য জিনিসটা দেখতে পেলেন,ছক্কা পড়েছে! আপনি হাফ ছেড়ে বাচলেন।
অবয়বটা তখনও চুপ করে দাড়িয়ে। আপনি তার নিশ্বাসের শব্দটা শুনতে পাচ্ছেন। অবশেষে অবয়বটা বলে উঠলো, “অভিনন্দন। কিন্তু লুডুর নিয়ম নিশ্চই ভুলে যাওনি। ছক্কা পড়লে তোমাকে আরেক দান খেলতেই হবে।”
****************************************সমাপ্ত**************************************