দ্য অ্যাবসেন্স অভ এমিলি

দ্য অ্যাবসেন্স অভ এমিলি

আমার দ্বিতীয় স্ত্রী এমিলিকে বিয়ে করার পর ঠিক করলাম উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় এমিলির বাড়িটাতেই থাকব। ছোট শহরটার কিছুটা বাইরে চারপাশে বিশাল জায়গা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটা। এমিলির বাড়ির পাশের বাড়িটার কথা বলতে গেলেও ঠিক একই বর্ণনা দিতে হবে। তবে সেটার মালিকানা এমিলির বোন মিলিসেন্টের।

মিলিসেন্ট আর এমিলি। দুই বোন। অথচ চেহারায় বা স্বভাবে পুরোপুরি বিপরীত। মিলিসেন্ট লম্বা আর শুকনা ধাঁচের। সেই সাথে খুবই কঠোর প্রকৃতির। আশেপাশের সবাইকে চায় নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে এমনকি এমিলিকেও। যখন আমি এমিলিকে তার প্রভাব থেকে টেনে নিলাম তখন সে আমার প্রতি মোটেও খুশি হয়নি।

এমিলি বরং কিছুটা খাটো, আর….- সত্যি বলতে কিছুটা মোটা। তার মতে তার শরীরে এগার থেকে বার কেজি বেশি ওজন রয়েছে। তাকে খুব একটা চালাক বলা যায় না এবং সাধারণত আর দশজন মানুষ যেভাবে থাকতে পছন্দ করে এমিলিও সেভাবেই থাকতে ভালবাসে। যদিও ব্যাপারটা সবসময়ের জন্য সত্যি না।

তিন সপ্তাহ যাবৎ এমিলি বাসায় নেই। কিন্তু কোন এক অদ্ভূত কারনে মিলিসেন্ট আমাকে নিবিরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সে তখন আমার সাথেই আমাদের বসার ঘরে চা পান করছিল। হঠাৎ টেলিফোন বেজে উঠল। যথারীতি ফোনটা ধরলাম।

‘হ্যাঁ বলুন।’
‘হ্যালো, ডিয়ার। এমিলি বলছি।’
‘এমিলি- আহ -আপনার শেষের নামটুকু কী?’
‘আহা আমি এমিলি। তোমার স্ত্রী।’
‘আমি দুঃখিত। আপনি সম্ভবত ভুল নাম্বারে ফোন করেছেন।’ আমি টেলিফোন রেখে দিলাম।
মিলিসেন্ট তীক্ষ্মচোখে দেখছিল আমাকে। ‘তোমাকে কাগজের মত সাদা দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে তুমি ভাল ভয় পেয়েছ। ফোন করেছিল কে?’
‘রং নাম্বার ছিল।’

মিলিসেন্ট কফিতে ছোট একটা চুমুক দিল। ‘ওহ অ্যালবার্ট আমি গতকালকে শহরে মনে হল এমিলিকে দেখলাম। কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়।’
‘অবশ্যই সম্ভব নয়। এমিলি স্যান ফ্রান্সিসকোতে।’
‘হ্যাঁ তা ঠিক। কিন্তু স্যান ফ্রান্সিসকোর কোথায়?
‘সে এ বিষয়ে কিছু বলেনি। শুধু বলেছে সে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেছে।’
‘স্যান ফ্রান্সিসকোতে এমিলির কোন বন্ধু নেই। আমি তার সব বন্ধুদেরই চিনি। কবে ফিরবে ও?’
‘এ ব্যাপারে পুরোপুরি শিওর না ও।’

‘অ্যালবার্ট আমি শুনেছি তোমার প্রথম স্ত্রী নৌ দুর্ঘটনায় মারা গেছে। সে নাকি বোট থেকে পড়ে গিয়েছিল এবং পানিতে পড়ে মারা গেছে?’
‘তুমি ঠিকই শুনেছ। সে সাঁতার জানত না।’
‘এবং সেই দুর্ঘটনার একমাত্র স্বাক্ষী ছিলে তুমি।’
‘আমি তাই বিশ্বাস করি। তখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসে নি।’
‘সে কী তোমার জন্য কোন সম্পত্তি রেখে গেছে, অ্যালবার্ট?’
‘এই বিষয়ে তোমার মাথা ঘামানোর কথা না।, মিলিসেন্ট।’

সত্যি কথা বলতে সিন্থিয়ার পঞ্চাশ হাজার ডলারের লাইফ ইন্সুরেন্স আর একটা পাল তোলা নৌকা ছিল। বেচারী সিন্থিয়া। সেদিন সে একাই তার বোটটা নিয়ে নেমে পড়ে। আমি বোট রাখার জায়গাটা থেকে স্পষ্ট দুর্ঘটনাটা দেখতে পাই। এবং যতদ্রুত সম্ভব আরেকটা বোট নিয়ে একটানে চলে যাই ঘটনাস্থলে। কিন্তু খুব দেরি হয়ে গিয়েছিল। বাঁচাতে পারি নি তাকে।

মিলিসেন্ট তার কফি শেষ করে চলে গিয়েছিল। সে চলে যাবার পরে আমি বাড়ির পিছনের ছোট বনটায় চলে গেলাম। গাছপালার ফাঁক দিয়ে একটা ছোট নদী প্রবাহিত হয়ে গেছে। সেখানে একটু খোলা জায়গা আছে। আমি সেখানটায় হেঁটে গেলাম। আহ্ এখানটা কী শান্ত। যেন বিশ্রামের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে জায়গাটা। আমি গত কিছুদিন যাবৎ নিয়মিত এখানটায় আসি।
নদীর পাশে একটা ভাঙা গাছের গুড়ি পড়ে ছিল। আমি সেখানটায় বসে এমিলি আর মিলিসেন্টকে নিয়ে চিন্তা শুরু করে দিলাম। তাদের দুইজনেরই বাসা এবং জমি এতটাই মিলসম্পন্ন যে আপনি ভাববেন তারা উভয়েই একইরকম ধনী। কিন্তু বিয়ের পরে আমি আবিষ্কার করলাম ব্যাপারটা একদমই সত্য নয়। এমিলি শুধুমাত্র তার বাড়িটা আর তার আশেপাশের জায়গাটুকুরই মালিক। কিন্তু সেগুলো দেখাশোনা করারা জন্য লোক রাখা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।

অন্যদিকে মিলিসেন্ট তার বাড়িতে বেশ ভাল সংখ্যক কাজের লোক রাখার পাশাপাশি তার অর্থসম্পত্তি দেখাশোনা করার জন্য একজন আইনজীবীও রেখেছে। অন্ততপক্ষে কোটি টাকার মালিক সে হবেই।
মঙ্গলবার বিকেলে আমি সাধারণত শহরের সুপারমার্কেটে যাই। তখন আমি ছিলাম কার পার্কিংয়ে। হঠাৎ দেখলাম মোটামুটি খাটো আর কিছুটা মোটা এক মহিলা রাস্তা পার হচ্ছে। তার পরনে একটা বেগুনী পোশাক আর মাথায় ছিল একটা বাদামী হ্যাট। আমি গত দশদিনে এই নিয়ে তাকে চারবার দেখে ফেলেছি। আমি দ্রুত এগিয়ে গেলাম রাস্তার দিকে। সে কোণার দিকে সরে গেল আর আমিও দৌড় লাগালাম। যখন কোণায় পৌছলাম তাকে আর কোথাও দেখা গেল না।

আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম। আমার পাশে হঠাৎই একটা গাড়ি এসে থামল। গাড়িটা মিলিসেন্টের। ‘অ্যালবার্টের এখানে কী করছ তুমি? তোমাকে দৌড়াতে দেখলাম। এর আগে কখনও তোমাকে দৌড়াতে দেখি নি।’
‘ওহ আমি এই একটু হালকা ব্যায়াম করছিলাম।’
সুপারমার্কেটে ফেরার সময়ও আমি রীতিমত জোরে শ্বাস নিচ্ছিলাম।

পরের দিন সকালে নদীতীরের ভ্রমণ থেকে ফিরে দেখি মিলিসেন্ট বসার ঘরে বসে আছে। সে নিজের জন্য কফি ঢালছিল। ‘আমি এমিলির কাপড়চোপড় দেখার জন্য বেডরুমে গিয়েছিলাম’, মিলিসেন্ট বলল। ‘আমি একটা কাপড়ও দেখি নি যেটা নিরুদ্দেশ।’

‘কোন কাপড় হারাবে কেন? ঘরে কী কোন চোর আছে নাকি?’
‘আমাকে বলো না যে এমিলি বন্ধুর সাথে স্যান ফ্রান্সিসকোতে লাগেজ ছাড়াই থাকতে গেছে।’
‘তার সাথে লাগেজ আছে। যদিও তাতে তেমন কিছুই নেই।’
‘যাওয়ার সময় ওর পরনে কি ছিল?’
‘আমার ঠিক মনে নেই’, আমি বললাম।

সেই রাতে শোবার আগে এমিলির আলমারীতে একটু ঢু মারলাম। তার কাপড়গুলো দিয়ে কী করা যায়? আমার মনে হয় বেশিরভাগই ফেলে দেয়া উচিৎ।

ভোররাত দুইটার দিকে হঠাৎ জেগে উঠলাম। উজ্জ্বল চন্দ্রালোক আমার মুখে পড়ে চকচক করছিল। আমি সময় নিয়ে কাপড় পাল্টালাম এবং বাগানের ছোট কুঁড়েঘরটায় চলে গেলাম। আমার গর্ত খোড়ার মত কিছু একটার দরকার ছিল। আমি লম্বা হাতলের একটা কোদাল বেছে নিলাম। কোদালটা কাঁধে নিয়ে বনের ছোট নদীটার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে দিলাম।

নদীটার প্রায় কাছাকাছি পৌছে থেমে গেলাম। আমি ধীরে ধীরে মাথা নাড়লাম এবং আবার বাগানের কুঁড়েঘরটায় ফিরে আসলাম। কোদালটা ফেলে দিয়ে শুয়ে পড়লাম আরামদায়ক বিছানায়।
পরদিন সকালের নাস্তা খাবার সময় মিলিসেন্ট আসল আমাকে দেখতে। সে সকালের ডাকও নিয়ে এসেছে। সম্ভবত চিঠিটা মাত্রই এসেছে। একটা নীলরঙা খাম দেখতে পেলাম আমার কাছেই এসেছে। উপরের হাতের লেখাটা খুব পরিচিত। আর পোস্টমার্কটা আমাদের শহরেরই।
খামটা খুলে চিঠিটা বের করলাম। একটা পাতলা কাগজে লেখা,

প্রিয় অ্যালবার্ট,
আমি তোমাকে প্রচন্ড মিস করছি। আমি খুব শিঘ্রই ফিরছি অ্যালবার্ট। খুব শিঘ্রই।
এমিলি
চিঠিসুদ্ধ খামটা আমি আমার পকেটে ঢুকিয়ে ফেললাম।

‘আচ্ছা?’ মিলিসেন্ট জিজ্ঞেস করল। ‘আমার মনে হল খামে এমিলির হাতের লেখা দেখলাম। সে কবে ফিরবে কিছু বলেছে?’

‘ওটা এমিলির লেখা না। আমার শিকাগোর এক আন্টির চিঠি।’
‘আমি জানতাম না শিকাগোতে তোমার একজন আন্টি আছে।’
‘চিন্তার কিছু নেই মিলিসেন্ট। শিকাগোতে আমার একজন আন্টি আছেন।’

রাতে বিছানায় শুয়ে ছিলাম তবে ঘুম আসে নি তখনো। হঠাৎ বিছানার পাশে রাখা টেলিফোনটা বেজে উঠল।
‘হ্যালো, বাবু। এমিলি বলছি।’
‘তুমি এমিলি না। তুমি অন্য কেউ।’
‘অ্যালবার্ট পাগলামী করো না। অবশ্যই এটা আমি, এমিলি।’
‘তুমি কোনভাবেই এমিলি হতে পার না। আমি জানি সে কোথায় আছে। এই রাতে ও সে-ই জায়গা থেকে ফোন করতে পারবে না।’

‘তুমি ভাবছ আমি কোথায় আছি সেটা তুমি জান? না, আমি সেখানে নেই। স্বাচ্ছন্দবোধ করছিলাম না সেখানটায়। সে জায়গা আমি ত্যাগ করেছি, অ্যালবার্ট।

আমি বিছানা ছেড়ে কাপড় পাল্টালাম। নিচতলায় গিয়ে নিজের জন্য একটা ড্রিংক তৈরি করলাম। এরপর ধীরে সুস্থ্যে পান করলাম। ঘড়িতে মাঝরাত প্রায় একটা। আমি আবার বাগানের কুঁড়েঘরটায় গিয়ে কোদালটা তুলে নিলাম। এইবার পুরোটা পথই চললাম গাছপালার ফাঁকফোকর দিয়ে। একদম সবচেয়ে বড় গাছটার কাছে গিয়ে থামলাম।
গুণে গুণে বড় পদক্ষেপ নেয়া শুরু করলাম। ‘এক, দুই, তিন, চার…..’ ষোল পর্যন্ত এসে থেমে গেলাম। এরপর শুরু করলাম খোড়া। পাক্কা পাঁচ মিনিট খোড়ার পর একটা চিৎকার শুনে থেমে গেলাম। হঠাৎ করেই ঘটল সবকিছু। আমার চারপাশে অনেকগুলো মানুষ জড়ো হয়ে গেল। সবার হাতেই টর্চ, আর সেগুলোর আলো ফেলা হয়েছিল আমার মুখে। আমি মিলিসেন্টের হয়ে কাজ করে এমন কয়েকজনকে চিনলাম। তার মধ্যে তার উকিলও আছেন।

এরপর মিলিসেন্ট নিজেই সামনে এগিয়ে আসল। ‘তো অ্যালবার্ট, তুমি নিশ্চয়ই নিশ্চিত হতে এসেছ যে সে আসলেই মারা গেছে কিনা! আর সেটা বোঝার একমাত্র উপায় হল যেখানে তাকে পুঁতে ফেলেছ সেখানে ফিরে আসা।’

‘আমি শুধুমাত্র একটা পুরানো ইন্ডিয়ান ছুরি খুঁজছিলাম’, আমি বললাম। ‘একটা বিশ্বাস আছে যে চন্দ্রালোকে যদি একটা ইন্ডিয়ান ছুরি পাওয়া যায় সেটা নাকি সৌভাগ্য বয়ে আনে।’
মিলিসেন্ট আমার কথা পাত্তাই দিল না। সে আমার অচেনা কিছু মানুষের দিকে আঙ্গুল তুলে দেখাল। ‘এরা ব্যক্তিগত গোয়েন্দা’, সে বলল। ‘যখনই আমি বুঝে ফেললাম এমিলির ভাগ্যে কি ঘটেছে তখন থেকেই এরা তোমার উপর চব্বিশ ঘন্টা নজরদারি করছে।’ এরপর সে ছোটখাট এক মহিলার দিকে ইঙ্গিত করল। ‘উনি মিসেস ম্যাকমিলান। উনিই বেগুনী পোশাকের মহিলা সেই সাথে এমিলির হাতের লিখা নকলকারী। আর ইনি হচ্ছেন মিস পিটার্স। উনি গলা নকল করায় ওস্তাদ। টেলিফোনে এমিলির যে গলা শুনেছ সেটা ছিল তারই।’

সেখানে আরও দুজন গোয়েন্দা ছিল যারা তাদের সাথে কোদাল নিয়ে এসেছিল। এবার তারা আমার সৃষ্ট গর্তটির আকার বৃদ্ধির জন্য রীতিমত তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করল।
‘আমরা জানি অ্যালবার্ট তুমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছ’, মিলিসেন্ট বলল। ‘তুমি গতরাতে খুড়ে তাকে বের করেই ফেলতে, ঠিক না? কিন্তু শেষ মুহুর্তে তুমি তোমার মত পরিবর্তন করে ফেলেছিলে। ব্যাপারটা এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছে। কারন গতরাতে তোমাকে দেখার জন্য এত সাক্ষী ছিল না। আজ রাতে আমরা একদম প্রস্তুত হয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’

‘গোয়েন্দারা প্রায় পনের মিনিট যাবৎ খোড়াখুড়ি চালিয়ে বিশ্রামের জন্য একটু থামল।
‘জমিটা খুবই শক্ত’, একজন বলল।
গর্তটা দুই মিটার গভীর না হওয়া পর্যন্ত তারা খোড়াখুড়ি চালিয়ে গেল।
‘এখানে কিছুই মাটি চাপা দেয়া হয়নি!’ আরেকজন বলল।
‘আমরা শুধুমাত্র একটা পুরানো ইন্ডিয়ান ছুরি ছাড়া আর কিছুই পাইনি।’
আমি মিলিসেন্টের দিকে তাকিয়ে হাসলাম। ‘তুমি কেন চিন্তা করলে যে এমিলিকে আমি পুঁতে ফেলেছি?’
এরপর আমি জায়গা ত্যাগ করে বাসায় ফিরে আসলাম।
আমি প্রথম থেকেই সন্দেহ করেছিলাম মিথ্যা ‘এমিলি’ সম্পর্কিত যাবতীয় কান্ডকারখানার জন্য মিলিসেন্টই দায়ী। সবই ছিল তার পরিকল্পণার অংশ। আচ্ছা তার লক্ষ্য কি ছিল? সে বিশ্বাস করত আমি তার বোনকে খুন করেছি। তাই সে চাইছিল আমাকে ভয় দেখাতে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি ভেঙে পড়ি আর বলি যে ‘হ্যাঁ, আমিই খুন করেছি এমিলিকে!’

খেলোয়াড় মিলিসেন্ট একা নয়। আমিও খেলোয়াড় হিসেবে খুব একটা খারাপ না। আমিও একটা খেলা খেলছিলাম। আমি মিলিসেন্টকে ভাবতে বাধ্য করেছি যে আমি রীতিমত ভীত। এবং অবশ্যই এটাও ভাবতে বাধ্য করেছি যে তাকে আমি বনের মধ্যে মাটি চাপা দিয়েছি।

এখন আমি বেশ শক্ত অবস্থানে। সে ইতোমধ্যেই অতগুলো মানুষের সামনে আমাকে খুনী বলে সম্বোধন করেছে। আমি ইচ্ছা করলেই ব্যাপারটা কোর্টে তুলতে পারি। সেই সাথে তার কাছে ভাল পরিমাণ অর্থও দাবী করতে করতে পারি। কিন্ত সে ভালভাবেই তার বোকামী বুঝতে পেরেছে। সে সাক্ষীদেরকে চুপ রাখার জন্য কিছু অর্থ খরচ করাটাই ভাল মনে করবে। সেটা কী সম্ভব? অবশ্যই না। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি নিজে বলছি সে আসলে কিছুই করেনি।

এবং আমি মিলিসেন্টের জন্য তাই করব। তবে মিলিসেন্টকে অর্থ ছাড়তে হবে- বেশ বড় অংকের অর্থ।
সপ্তাহের শেষের দিকে আমার টেলিফোনটা বেজে উঠল।
‘এমিলি বলছি। আমি ফিরে আসছি ডিয়ার।’
‘ওহ দারুণ।’
‘কেউ কী আমাকে মিস করেছে?’
‘তারা অবশ্যই তোমাকে মিস করেছে।’
‘তুমি নিশ্চয়ই কাউকে কিছু বলনি যে গত চার সপ্তাহে কোথায় ছিলাম, ঠিক না অ্যালবার্ট? বিশেষত মিলিসেন্টকে?’
‘আমি তাকে বলেছি যে তুমি স্যান ফ্রান্সিসকোতে তোমার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গিয়েছ।’
‘ওহ ডিয়ার। আমি স্যান ফ্রান্সিসকোতে কাউকেই তো চিনি না। সে কী তোমার কথা বিশ্বাস করেছিল?’
‘অবশ্যই না।’

‘আসলে আমি ওকে বলতে পারছিলাম না যে আমি ওজন কমানোর জন্য হেলথ ফার্মে যাচ্ছিলাম। সত্যি বলতে ভীষণ লজ্জা লাগছিল। এছাড়া আমার মনে হচ্ছিল না যে আমি ব্যাপারটা ম্যানেজ করতে পারব। কিন্তু অ্যালবার্ট আমি করেছি। আমি চৌদ্দ কিলো ওজন কমিয়েছি। আমার ফিগার এখন সিন্থিয়ার মতই আকর্ষনীয়।’
‘চমৎকার এমিলি! দারুণ দেখিয়েছ!’

আচ্ছা এমিলি আমার প্রথম স্ত্রীর প্রতি ঈর্ষান্বিত কেন? তাদের দুইজনের জন্যই আমার হৃদয়ে আলাদা জায়গা বরাদ্দ আছে।

‘হ্যাঁ…. কিন্তু আমার কোন কাপড়ই এখন আর আমার গায়ে লাগবে না আমার অনেকগুলো নতুন কাপড় কিনতে হবে। অ্যালবার্ট, তোমার কী মনে হয় আমরা খরচ কুলাতে পারব?’
‘আহ, এখন আমরা পারব এমিলি। মিলিসেন্ট আমাদের সাহায্য করবে!’

……………………………………………………………সমাপ্ত……………………………………………………………

গল্পের বিষয়:
অনুবাদ
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত