ঘটনাটি রংপুর জেলা ও বদরগঞ্জ উপজেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের। সেই গ্রামে রহমত হোসেন নামে একজন ব্যক্তি ছিলেন। যিনি পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। কিন্তু অন্যান্য কৃষকদের মত সংসারে তার অভাব অনটন ছিল না। কেননা তিনি তার বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন। আর তার বাবার রেখে যাওয়া 147 বিঘা জমির একমাত্র ওয়ারিশ ছিলেন। তাই কোন দিকেই তার অপূর্ণতা ছিল না। শুধু একটাই অপূর্ণতা ছিল, যে তার কোন সন্তান ছিল না। তবে সন্তান যে ছিল না তা নয়, তার দুটি সন্তান ছিল। কিন্তু দুটি সন্তানেই পুকুরে ডুবে মারা যায়। প্রথম সন্তানটি সাত বছর বয়সে আর দ্বিতীয় সন্তানটি বার বছর বয়সে মারা যায়। কিন্তু অবাক করা বিষয় এই যে, রহমত চাচার দুই সন্তানেই সাঁতার জানতো। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, পুকুরে ডুবে মারা গেল কিভাবে.?
আর আজকের ঘটনাটি সেই পুকুরকে নিয়েই।
যাইহোক এবার ঘটনায় আসি, রহমত চাচার বাড়ির পূর্ব দিকে আনুমানিক চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ফিট দূরত্বে এই পুকুরটির অবস্থান ছিল। যেটি 1987 সালের দিকে খনন করা হয়। আর পুকুরটির আয়তন ছিল আড়াই থেকে তিন বিঘার মত। এমনকি গভীরতাও ছিল বিশ থেকে পঁচিশ ফিটের মত। এই পুকুরের চারদিকে বাঁশঝাড় থাকায় পুকুরের কিছু অংশে বাঁশ হেলে পড়েছে। আর এখানে বাঁশসহ ছোট বড় অনেক কড়ই গাছের উপস্থিতিও ছিল। দিনের বেলাতেও পুকুরের চারপাশটা নীরবতায় আচ্ছন্ন থাকতো।
এখন রহমত চাচা বেঁচে নেই। মারা গেছেন তিন বছর আগে। তার স্ত্রী আমেনা চাচীর কাছে জানা যায়, যখন গভীর রাতে তিনি বাথরুমে যেতেন তখন প্রায় সময় দেখতেন পুকুর পাড়ের পাশ দিয়ে কেউ হাঁটাহাটি করছে। আর মাঝ রাতে অনেক আর্তনাদের শব্দ শুনতে পেতেন.!
একদিন রহমত চাচা স্বপ্নে দেখলেন, কেউ একজন তাকে বলছে… “আমার জায়গা আমাকে ফিরিয়ে দে, না হলে তোর বংশ এই পুকুরেই শেষ করবো”।
পরে রহমত চাচা এই কথাকে আর পাত্তা দেননি কিন্তু তার দুই সন্তানের মৃত্যুর পর অনেক দুশ্চিন্তার পরে যান। তারপর চাচীকে সব কিছু খুলে বলেন।
আর বাড়িতে হুজুর ডাকেন…
হুজুর সাহেব বাড়িতে এসে বলেন…রহমত মিঞা তোমার পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাট কর। না হলে আরও ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন…তোমার এই পুকুরে মৃত্যু মানুষের লাশ দাফন করা ছিল আর পুকুর কাটায় এই সমস্যাগুলো হচ্ছে।
পরে আরও জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে এখানে শ্মশান ছিল আর শ্মশানে মানুষ পোড়ানোর পর পোড়ানো মাটি এখানে পুঁতে রাখা হতো।।