প্রেতাত্মা বা অভিশপ্ত কোনকিছু আমরা আজকাল বিশ্বাস করি না। আসলে বিশ্বাস করার কোন যৌক্তিকতাও নেই। তবুও কিছু ব্যাপার
থাকে কিভাবে জানি একটা রহস্যের মোড়কে থাকে। আজ আমি এমন একটা ঘটনা শেয়ার করবো যেটার ইতিহাস আসলেই ভয়ংকর
এবং কষ্টের। অনেকেই বলে এটা সত্য আবার অনেকেই স্রেফ গুজব বলে উড়িয়ে দেয়।
আমারিকার লুসিয়ানা রাজ্যের বাটন রাগ নামক একটা জায়াগায় একটি প্ল্যান্টেশন আছে যার নাম মার্টেলস প্ল্যান্টেশন। ২০০ বছর
ধরে এই ১০ একরের
জায়গাটি মানুষের বাড়ি হিসেবে থাকলেও এখন সেটা একটি টুরিষ্ট আকর্ষন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কিসের
জন্য জানেন? ভুতুড়ে কাজ-কারবারের জন্য। প্রতিদিন রাত ৩ টায় এই ম্যানসনে ১৫টি ভুত নাকি একসাথে নেমে আসে খেলার জন্য।
তার মধ্যে ৪টি ভুত নাকি একটি দুঃখজনক ইতিহাস থেকে আসে –
উডরাফ পরিবার এবং তার তরুন কৃতদাস ক্লোয়ি। ১৮৫৭ সালে, সারাহ মিথিলডা এই জায়গাটি উত্তরাধিকার সুত্রে পায়। পরে এই
মহিলা তার স্বামী আর তিন সন্তান সহ এখানে বসবাস করা শুরু করে। তার স্বামীর নাম ছিল ক্লাক উডরাফ। এই জায়গায় বসবাস শুরু
করার পর ক্লাক সিদ্ধান্ত নেই সে তার নিজ শহর থেকে একজন কৃতদাস
নিয়ে আসবে যার নাম ক্লোয়ি।
একদিন ক্লাক এই কৃতদাস মহিলার কান কেটে ফেলে কোন একটা ঘটনার জের ধরে। ব্যাপারটা একটা অত্যাচারের মত ছিল। সম্ভবত
ক্লোয়ি কিছু একটা চুরি করার চেষ্টা করেছিল। এরপর থেকে ক্লোয়ি একটা সবুজ রংয়ের টারবাইন টুপি পরে নিজের কানকে ঢেকে
রাখত। নিজের মালিকের বিশ্বাস আবার অর্জন করার জন্য ক্লোয়ি একটা প্ল্যান করে। ক্লার্কের ছোট মেয়ের জন্মদিনের জন্য সে বড়
একটি কেক বানায় কিন্তু ভুল বসত এই কেকে সে ওলেন্ডার
নামের একটি পাতা ব্যবহার করে যা ঐ প্ল্যান্টেশনে জন্মাত এবং যা ছিল সাংঘাতিক বিষাক্ত। কিন্তু ক্লোয়ি সেটা জানত না। কেক
খাওয়ার পরে বাচ্চারা তাদের মা-বাবা সহ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বিষক্রিয়ার কারনে ক্লার্কের বৌ সারাহ আর দুই সন্তান মারা যায়।
ক্লোয়ি কিন্তু পরে ব্যাপারটা জানতে পারে যে তার ভুলের কারনেই এই ঘটনা ঘটে কিন্তু সে প্রথমে কাউকে বলেনি।
সবার সেবা করে সে বিশ্বাস অর্জন করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটাও হয়নি আর। পরে বিবেকের তাড়নায় এই
ঘটনা সে অন্যান্য কৃতদাসের কাছে বণর্না করে। ক্লোয়ি মনে করেছিল দোস স্বীকার করলে অন্যান্য কৃতদাসরা তাকে আশ্রয় দিবে
কিন্তু তা না করে তারা তাকে ঝুলিয়ে দেয় ফাসি কাষ্ঠে আর তার দেহাবশেষকে ছুড়ে ফেলে দেয় মিসিসিপি নদীতে। আসল গল্প কিন্তু
এখনও শুরু হয়নি।
ইতিহাস মতে আমেরিকার দক্ষিনের একটা পুরোন সংস্কার আছে – তা হলো, কোন পরিবারের কোন সদস্য
যদি মারা যায় তাহলে সেই ঘরের সমস্ত
আয়না ঢেকে ফেলতে হয় যাতে করে মৃত ব্যাক্তির
আত্মা যেন শান্তিতে পরলোকে যেতে পারে।
তা না হলে সেই আত্মা নাকি আয়নার মাঝে আটকে থাকে এবং আত্মা মুক্তি পায়না। কিন্তু, ক্লাকের বাড়ীতে সেদিন সব আয়না ঢাকা
থাকলেও একটি আয়না ভুলবশত ঢাকা পড়েনি। এবং যা হবার তাই হয়েছে। এখন এখানে যারা বেড়াতে আসে তারা নাকি এখনও সেই
আয়নায় সবুজ রংয়ের টুপি পড়া মহিলা আর ছোটছোট বাচ্চা দেখতে পান। এবং এই অভিজ্ঞতা নিতেই নাকি এই ভুতের বাড়ীতে
পর্যটকরা আসেন এখনও এবং অনেকে দেখেনও! এই বাড়ীর দেয়ালে নানা রকমের ছায়া বা হাতের ছাপ দেখতে পাওয়া যায় মাঝে
মাঝে।