ভয়ংকর রাতের অভিজ্ঞতা

ভয়ংকর রাতের অভিজ্ঞতা

আমি তাশরিফ (১৮) ।আমার মন আজ খুব একটা ভালো নেই । তাই একা একা বাড়ির ছাদে বসে আছি।বেলা তখন গরিয়ে সন্ধ্যে হচ্ছে।আমি কখন যে কিসের মধ্যে মগ্ন হয়ে হারিয়ে গেছি কিছুই বুঝে উঠতে পারি নাই।আমি তো ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম।রাত তখন ১২:০০ টা বাজে।

আসলে আমি বাড়ি থেকে আসার সময় কাওকে জানিয়ে আসি নাই।ওরা হয়তো খুব খোজাখূজি করেছে।কিন্তু কোথাও না পেয়ে এদিকে তো আসার কথা ছিল কিন্তু আসলো না কেন??

আমার চোখ তো একটুও বন্ধ হয় নাই তাহলে এত সময় কাটলো কিভাবে?

এরকম অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক করছিল, আমি তখন সোজা সিড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম।ওখানে গিয়ে তো আমি একদম ঘাবড়ে গেলাম ।সিড়ির দরজা তালা দেওয়া(মানে বন্ধ) এটা কিভাবে সম্ভব আমাকে এখানে রেখে দাড়য়ান চাচা তালা লাগিয়ে দিল কেমনে।।

আমি এখন কি করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না।

তারপর………………………

 

পার্ট ২

এখন আর কি করা আমাকে তো এখান থেকে চিল্লাচিল্লিও করা যাবে না।ফ্লাটে অনেক ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে আছে ওরা ভয় পেতে পারে।কিন্তু কি করবো তাহলে মোবাইল ফোন ও তো নিয়ে আসি নাই…।আমি অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম সাড়ারাত এখানে এভাবেই কাটিয়ে দিব।

মনে মনে অবশ্য খুশিই হলাম, কারণ ছোট থেকেই আমি একা একা থাকাটা একটু বেশি পছন্দ করি।কিন্তু বাড়ির সবার কথা মনে হলে একটু খারাপ লাগছে। কিন্তু আমার তো কিছু করার নাই।

আচ্ছা দারওয়ানকে দিয়ে তো সিড়ির এখানটা খুলে দেখেও নিতে পারতো কিন্তু তা করলো না কেন???

এরকম আবারও অনেক প্রশ্ন মাথায় আসতে লাগলো। অবশেষে আমি গিয়ে পূর্বের মতোই সুন্দর নিরিবিলি একটা জায়গায় গিয়ে বসলাম।আমি অনেক শুনেছি আমাদের এই ছাদে নাকি অনেক মানুষের আর্তনাদ মিশে আছে।

অনেক দিন আগে নাকি যখন এই ছাদের ঢালাইয়ের কাজ হয় তখন যারা এটার কাজ করছিল তারা কাজ শেষ করে এখানেই কোথাও বসেছিল। তারপর ………

 

পার্ট ৩

তারা যে ক্রেন দিয়ে ঢালাই নিচে থেকে তুলছিল । ওটা তাদের গায়ের ওপর হঠাৎই আছরে পরে এবং তাদের বেশ কয়েক  জনের মৃত্য হয়। এবং তারপর থেকে নাকি রাত্রে বেলা এখানে কিছু মানুষের গলার আওয়াজ শোনা যায়। আর এই জন্যেই সবার পরামর্শ অনুযায়ী এই সিড়ির দরজা রাতে বন্ধ রাখা হয়।

আমার আবার এসব বিষয়ে খুব একটা ভয় নাই।  আমি তো খুব নিশ্চিন্তে বসে আছি এদিকে তাকিয়ে দেখি বেলা আর এগুচ্ছেনা।কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তাই নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিলাম একটা কিছু গবেষণা করতে থাকি …আমি কিছু লেখা লেখি করার জন্য ভাবছিলাম তখন আমি আকাশের দিকে তাকালাম …আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি বিশাল একটা ছায়া মানবের আকৃতিতে বসে আছে। আমি তো অবাক আমি যেভাবে বসেছিলাম ওই ছায়াটাও ঠিক সেভাবেই বসে ছিল।

আমি ঘাবড়ে গেলাম। আমি ওখান থেকে সরে গিয়ে অন্য যায়গাতে বসলাম।দেখি ছায়াটাও অন্য যায়গাতে সরে বসলো। আসলে ছায়াতো এভাবে কাজ করে না।আর আমি কি দেখলাম এটা পুরাই বাস্তবের মানুষের আকৃতি।একদম 3D প্রদর্শন ছিল।

আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।তখন আমি ছায়াটাকে কিছু প্রশ্ন করলাম???

১। আপনি কে???

তারপর ও যা বলল;;;

পার্ট ৪

আমি হলাম তুমি ।

এটা আবার কেমন উত্তর হলো আমি তো আমিই । আমি আবার তুমি হতে যাব কেন?

আমাকে বলল তুমি যেমন রাতে একা থাকা পছন্দ করো আমিও তেমন রাতে একা থাকা পছন্দ করি। তুমি যেমন ছেলে মানুষি করো আমিও তেমন ছেলে মানুষি করি।

আমি বললাম এটা আবার কেমন ব্যাপার  আমি আবার কিসের ছেলে মানুষি করলাম শুনি?

এই যে তুমি যে পশু পাখিকে তাদের বাসা থেকে সরিয়ে দিলে আনন্দ পাও আমিও তেমন আনন্দ পাই।এই যে সেদিন তুমি পূর্ব দিকে কলা বাগানে বড় কলাগাছের উপর থাকা পাখির বাসাটা তুমি নিচে নামিয়ে দিলে।? এইরকম তো তুমি মাঝে মাঝেই করো। তাই তোমাকে আমি শিক্ষা দিতেই এখানে এসেছি। এটা বলতে বলতেই ও আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। আমি তখন ভয় পেয়ে গেলাম।আমি জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি করতে চাচ্ছ?

ও বলল আমি তোমাকে নিচে ফেলে দিয়ে তোমার পাপের শাস্তি দেব। আমি বললাম এমন করো না ।আমি আর এই পাপ কখনই করবো না।। আমার তো কোনো কথাই শুনলো না ও আমাকে ধরেই ফেলল ফেলে দেওয়ার জন্য।আমি জোড়ে একটা চিৎকার দিলাম। বোধহয় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম……

তারপর………

 

পার্ট ৫

আমি জ্ঞান ফিরতেই দেখি অনেক লোক আমাকে ঘিরে দারিয়ে আছে । আমি তাকিয়ে দেখি আমি পুরা ৫তলার নিচে শুয়ে আছি। আমার গায়ে তখন কোনো প্রকার আঘাতের চিহ্ন পেলাম না। তারমানে ছায়ামানব আমাকে ফেলে দেয় নাই।আমাকে নিচে রেখেই চলে গেছে।

যাইহোক সবাই আমাকে নিয়ে বাসায় চলে এল । আমি তখন বললাম ।দারওয়ান চাচা আমাকে রেখে বন্ধ করেছিল কেন ?

সবাই বলল দারওয়ান তো ছাদে তোকে দেখেছিল না।তাই আটকিয়েছিল। তা তোমরাও তো দেখতে পারতে? আমরাও গিয়েছিলাম কিন্তু তোকে তো দেখলাম না। আমি বুঝতে পারলাম হয়তো এটা ওই ছায়ামানবের ই কাজ আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্যেই তার যত ব্যবস্থা।।

আমি তো সেদিনের পর থেকেই ভালো হয়ে গেলাম ।আর আমি কখনো অন্যায় কাজ করি নাই।আর রাতে তো ছাদে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।আমি তো যাই না অন্য কাওকেও যেতে দেই না।

এটাও আমার চরম একটা অভিজ্ঞতার রাত ছিল।

গল্পের বিষয়:
রহস্য
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত