মুখোশের আড়ালে

মুখোশের আড়ালে

রোদেলা মা কান্না করে না।।সবাইকে একদিন এই পৃথিবী ছেরে যেতে হবে।।জানি না তোর মা কেনো এমন করল।।আর কাঁদিস না মা(বলে উঠল পাশের বাড়ির আন্টি)

কিন্তু রোদেলার সেদিকে খেয়াল নেই।।সে কেঁদেই চলেছে তার মায়ের জন্য।।দরজার এক পাশে দাড়িয়ে আছে ছোট্ট ইমন তার পিছনে দাড়িয়ে আছে সাদিকা।।সাদিকাও

কান্না করছে আর ছোট্ট ইমন এখনও বুঝে উঠতে পারে নাি তাদের বাড়িতে কি হচ্ছে।।কিন্তু এটা বুঝতে পারছে খারাপ কিছু একটা হয়েছে।।তাই সেও মাঝে মাঝে কান্না

করে উঠছে।ইমন সারা বাড়ি ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।অবাক হচ্ছে এতো মানুষজন দেখে।বিকেলের দিকে রোদেলার মাকে কবর দেওয়া হল।।
,
রোদেলা কান্না করছে তার মা মারা যাওয়ায়।।কিন্তু তার মায়ের মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবে হয় নাই।।রোদেলার মা আত্মহত্যা করেছে।।রোদেলা,সাদিকা­ বা ইমন কেউ জানে না

তার মা এমন টা কেনো করল।।কি কারনে ফাঁস লাগিয়েছে তাদের মা।।তাদের বাবা অফিসের কারনে বাইরে গেছে কয়েক দিন হল আর এর মধ্যেই তার মা এমন একটা

কাজ করল।।তাদের বাবা যদি এই কথা শুনে তাহলে নিশ্চিত সেও হার্ট এ্যাটাক করবে।।কারন রোদেলার বাবা রোদেলার মা কে খুব ভালোবাসে।।তারা ছোট থেকে দেখে

আসছে তার মাকে কোনো দিন কষ্ট পেতে দেয় নাই তাদের বাবা।।তারা কি করবে বুঝতে পারে না।মা,বাবার ভিতরে কোনো অশান্তিও তারা দেখে নি,তবে আজ আত্মহত্যা করলো কেনো মা!
,
আস্তে আস্তে বাড়ির লোক জন সবাই চলে গেলো।।রোদেলার বুঝার মতো বয়স হয়েছে।।তাই সে তার বাবাকে হারাতে চায় না মায়ের মতো।।কিন্তু সে কি করবে কিছু

বুঝে উঠতে পারছে না।।ইমন তো কেঁদেই চলেছে মায়ের কাছে যাবে বলে।। সাদিকা কোনো মতে তাকে শান্ত করে রাখছে।।সাদিকাও সব কিছুই বুঝে তাই সে তার

ভাইয়ের ভালো করেই খেয়াল রাখছে যেনো মায়ের কাছে যেতে না চায়।।এদিকে রোদেলা ভেবে পাচ্ছে না তার বাবাকে কি করে এই খবর দিবে।।কয়েক দিন বাদেই তার বাবা বাড়িতে ফিরবে।। যখন তার বাবা এসে দেখবে যে মা নেই তখন তো খুব বিপদ হয়ে যাবে।।
,
পরের দিন সাদিকা কলেজে যায়।।রোদেলা যায় না তার ভাই ইমন একা বাড়িতে আছে বলে।।রাতে যখন খেতে বসেছে তারা ভাই বোন তোখন সাদিকা বলে উঠল,
—আপু আর পাঁচ দিন পর বাবা ফিরবে কি হবে তোখন?
–আমিও ভাবছিরে সেই কথা বাবা কি মেনে নিতে পারবে মায়ের মৃত্যু টাকে।।নাকি আমরা আবার বাবাকেও হারিয়ে ফেলব?
–আপু আমি একটা কথা বলি শোনো মাকে আবার ফিরিয়ে আনি আমরা চল।।
–কি যাতা বলছিস তুই।। মা মারা গিয়েছে মাকে কি ভাবে ফিরাবো আমরা?
–আপু আমি শুনেছি যে,যারা আত্মহত্যা করে তাদের আত্মা নাকি দুনিয়াতেই আটকে থাকে।।আর তাদের কে অন্য শরীরের ভিতর ঢুকিয়ে আবার বাঁচানো যায়।।আমরা হয় তো মায়ের শরীর পাবো না কিন্তু মায়ের আত্মা তো থাকবেই আমাদের সাথে আর বাবাকে বুঝিয়ে বললে বাবা ঠিক বুঝবে।।
–কিন্তু কি ভাবে করবি এসব আর তুই কিভাবে জানলি এই বিষয়?
–আমার ফ্রেন্ডের এক চাচ্চু এই বিষয় নিয়ে জানে সে আত্মাদের ডেকে এনে অন্য শরীরে ঢুকাতে পারে।। আমি ওকে আর ওর চাচাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসব আর সেই আমাদের মাকে ফিরিয়ে দিবে।।
–আচ্ছা তাহলে কালকে আসতে বলিস।।
–হুম এটা নাকি রাতে ছাড়া হয় না তাই আমি তাদের রাত্রেই আসতে বলব।।
-আচ্ছা ঠিক আছে।।
,
এর পরের দিনটা তাদের চলে যায় বিভিন্ন কাজ করে।।রাত আট টায় সাদিকার বন্ধু সিফাত আর তার চাচা মিজানুর আসে তাদের বাসায়।।এসেই মিজানুর চাচা বলে,

–আমরা যেটা করব তার নাম প্ল্যানচেট।। আর আত্মাটাকে যে অন্য শরীরে ঢুকাব তাকে বলে দেহ বদল।।প্রথমে প্ল্যানচেট এর মাধ্যমে জেনে নিব তোমাদের মা এখানে আছে কি না যদি থাকে তাহলে তাকে অন্যের মৃত শরীরে ঢুকতে বলব।।
–কিন্তু চাচা মায়ের আত্মা যেই শরীর টাতে ঢুকাব সেই শরীর কোথায় পাবো?(সাদিকা)
–শরীর আমি ব্যাবস্তা করে ফেলেছি একটু পরেই নিয়ে আসবে আমার লোক।।তার আগে আমাদের সব তৈরি করতে হবে মানে প্ল্যানচেট করার সব কিছু।।
–হুম চল চাচা আমরা সব কিছু রেডি করে নেই(সিফাত)
,
এই বলে সিফাত,রোদেলা,সাদিকা আর সিফাতের চাচা মিলে প্ল্যানচেট করার সব কিছু তৈরি করতে লাগল।।একটা বোর্ড টেবিলের উপরে রাখল চার পাশে মোমবাতি

জ্বালিয়ে দিল।।এর মধ্যেই দরজায় কলিংবেলের শব্দ শুনা গেল।।সিফাত আর সাদিকা দরজা খুলল।। দেখল কিছু লোক একটা বস্তা করে কি নিয়ে এসেছে । সিফাত বলল,
–হ্যা নিয়ে আসুন।।
বলেই সিফাত সেই ঘরে নিয়ে গেলো যেই ঘরে তারা প্ল্যানচেট করবে।।লোক গুলো চলে গেলো।।এরপর তারা সবাই অপেক্ষা করতে লাগল মধ্যরাতের জন্য।।এই

সময়ের মধ্যে তার সেই দেহ টাকে ভালো করে সাজিয়ে দিয়েছে মানে ভালো কাপড় পরিয়ে দিয়ে শুইয়ে রেখেছে ভালো করে।।
,
–সাদিকা আমার খুব ভয় করছে যদি খারাপ কিছু হয়?(রোদেলা)
–আরে আপু কিছু হবে না দেখ।।আমরা আমাদের মাকে ফিরে পাব।। (সাদিকা)
–ইমন ওই ঘরে একা শুয়ে আছে ও যদি জেগে যায় ভয় পাবে খুব(রোদেলা)
–না কিছু হবে না তুমি চুপ চাপ দেখে যাও আর চাচা কি বলছে দেখ।।
,
রাত ১২ টা বাজে।।মিজানুর চাচা বলল,
চাচা:-আমাদের সময় হয়ে গেছে।।তোমরা টেবিলের চারপাশে বসে পর।।আর সবাই চোখ বন্ধ করে রাখবে।। কোনো অবস্তাতেই যেনো চোখ না খুলে কেউ আমি বলার

আগে,এরপর সবাই যখন চোখ বন্ধ করে তখন মিজানুর চাচা বলল কেউ আছেন এই ঘরে থাকলে আমাদের সাড়া দিন..!

কেউ কি আছেন এই ঘরে থাকলে সাড়া দিন।।তিন চারবার ডাকার পরেও কোনো সাড়া পেল না তারা।।আবার ডাকতে লাগল মিজানুর চাচা।।এই ঘরে কেউ থাকলে সাড়া দিন আমাদের।।
এবার ঘরের বাতি গুলো কাঁপতে শুরু করেছে।।আলমারি সহ ঘরের যাবতীয় জিনিস কাঁপতে শুরু করেছে।।আয়না ভেঙে ঝন ঝন করে আওয়াজ হচ্ছে।জোরালো

বাতাসে এদিক ওদিক উড়ছে জানালার পর্দা।বাতাসে পুরো রুমের ভিতর কাগজপত্র উড়ছে। আর তারপরই কোথা থেকে যেনো একটা অষ্পট ভাঙা গলার আওয়াজ আসলো,
–কেনো ডেকেছো আমায়?
–আপনি দয়া করে আমাদের কে আপনার পরিচয় টা বলুন(মিজানুর চাচা)
–আমি সাদিকার মা ।
–চাচা আমার মা কথা বলছে..! (রোদেলা)
–আহা চুপ কর রোদেলা(মিজানুর)
–আমরা আপনাকে আবার ফিরে পেতে চাই আপনি দয়া করে এই দেহে প্রবেশ করুন(মিজানুর চাচা)
–ঠিক আছে।
বলেই যখন রোদেলার মায়ের আত্মাটা প্রবেশ করবে সেই মৃত নারীর শরীরে ঠিক তখনি অন্য ঘর থেকে ইমন ছুটে চলে আসে কান্না করতে করতে আর ওর কান্নার শব্দে

চমকে গিয়ে রোদেলা চোখ খুলে নেয়।।আর সাথে সাথে সেই মৃতদেহ টা হাওয়ায় ভেসে উঠে সেইটা দেখে রোদেলা চমকে উঠে চিৎকার দেয়।।এদিকে সেই আত্মা

গোজ্ঞানির শব্দে বলে উঠল কাউকে ছাড়বো না, কাউকে না।।একবার দেহে প্রবেশ করতে পারলে কাউকে ছাড়বো না আমাকে মারার প্রতিশোধ নিয়ে ছাড়বো।।হাসানের

বংশের কাউকে ছাড়বো না।।লাইট গুলো নিভছে জ্বলছে এমন করতে করতে ফেটে গেলো লাইট গুলো।।ঘরকাঁপতে লাগল আর সেই কন্ঠ টা ভয়ানক রুপ ধারন

করল।।সেই চিৎকারে মনে হচ্ছে কান ফেটে যাচ্ছে সবার।।চার দিক থেকে বাতাস বইছে।।জানালা গুলো জোরে জোরে শব্দে লেগে যাচ্ছে আর খুলে যাচ্ছে বাতাসের

কারনে।।

মিজানুর চাচা আর সিফাত ভয়ে চলে যেতে লাগল আর যাওয়ার আগে মিজানুর চাচা বলে উঠল এটা অন্য একটা আত্মা চলে এসেছে আমাদের ডাকে।।আর শুনলেই

তো কি বলল হাসানের বংশের কাউকেই ছাড়বে না।।মানে তোমাদের বাবার বংশের।। বাঁচতে চাইলে পালাও এখান থেকে।।কিন্তু রোদেলা সাদিকা গেলো না।।তারা

দাড়িয়েই থাকলো সেখানে।ঠিক কি করবে তা বুঝছে না ওরা।হতবাক হয়ে দেখছে সব।
,
তারা সারা রাত জেগে কাটিয়ে দিলো।।মাঝে মাঝে কিছু একটা শব্দ করে উঠছে।।সেই দেহ টা তাদের সামনেই পরে আছে।।কি করবে তারা বুঝতে পারছে না।।রোদেলা বলল,
আমাদের এই দেহটাকে সরিয়ে ফেলতে হবে।।কেউ দেখে নিলে সমস্যা।।তাই তারা ভোর হওয়ার আগে আগে বাড়ির পিছনে নিয়ে গেলো সেই দেহ টাকে।।দুই বোন

মিলে গর্ত খুড়তে লাগল দেহ টাকে এক পাশে রেখে।।অনেক্ষন পর তাদের গর্ত খুড়া শেষ হয় আর দেহ টাকে গর্তে রাখার জন্য যখন যাবে ঠিক তখনি তারা ভয় পেয়ে যায় কারন দেহ টা তখন হঠাৎ উধাও হয়ে যায়।
–সাদিকা দেহ টা কথায় গেছে এখানেই তো ছিল?
–আমি কি করে বলব আমিও তো তোর সাথে গর্ত খুরছিলাম।।
–জানি না কি হচ্ছে এসব। চল বাসায় যাই।।
–আমার খুব ভয় করছে আপু।।
–ভয় করে কি হবে যা হবার তা তো হয়েছেই।।
,

এই বলে তারা বাসার ভিতরে গেলো।।সকাল হয়ে গেছে।।কারো খাওয়া দাওয়ার খবর নাই।।ইমন খাওয়ার জন্য রোদেলার কাছে আসলে রোদেলা সাদিকাকে বলে ইমন

কে খাওয়াতে।।তারা কাউকে কিছু বলতেও পারছে না নিজেরাও কিছু করতে পারছে না।।দেখতে দেখতে দিন টা কেটে গেলো কেমন করে যেনো।।রাতে সবাই যখন

খেতে বসেছে তখন হঠাৎ করে সাদিকা দেখল তার বোন রোদেলার পিছনে কে যেনো দারিয়ে আছে।।
–আপু তোর পিছনে কে যেনো।।
রোদেলা পিছনে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেল না।।
–কই কেউ নাই তো !
–আমি দেখলাম কে যেনো দাড়িয়ে আছে।।
–আরে তুই ভুল দেখেছিস তাড়াতারি খেয়ে নে।
,
এর পর সবাই খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাতে গেলো।।সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও রোদেলা ঘুমায় নাই সে শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকে তার মায়ের মৃত্যু নিয়ে আর বাবাকে কি করে

বুঝাবে সেই নিয়ে।।হঠাৎ রোদেলা দেখল একটা ছায়া দরজার সামনে দিয়ে গেলো।।রোদেলা কে কে বলে উঠে গেলো দরজার পাশে।।রোদেলা দেখল কেউ একজন

সিড়ি বেয়ে নিচে নামছে।।রোদেলা ভাবল চোর হবে তাই সেও পিছু নিল।।যখন রোদেলা নিচে নামল তখন কাউকেই দেখতে পেল না।।সে আবার ঘরে যাওয়ার জন্য

যখন পিছু ফিরল সাথে সাথেই চিৎকার দিয়ে উঠল।।রোদেলার চিৎকারে সাদিকা জেগে গেলো সে দৌড়ে নিচে নামল আর বলল,
–কি হয়েছে আপু।।
–সেই দেহ টা এসেছে এখানে।।কেমন রক্ত।মাখা মুখে আমার সামনে এলো।।ভয়ে আমি চিৎকার দিলাম।।
,
বলা শেষ হতে না হতেই ঘর থেকে ইমনের চিৎকার শুনা গেলো।।দুই বোন তাড়াতারি করে ঘরে গেলো।।ঘরে গিয়ে তারা যা দেখল তা দেখে দুই বোন ইমন বলে চিৎকার

দিল।।তারা দেখল সেই দেহ টা ইমনের পেটে হাত ঢুকিয়ে সব বের করে নিয়েছে।।মুখে তার রক্ত ভরা।।কেমন ভয়ংকর ভাবে হাসছে।।রোদেলা কাছে যেতে চাইলে

সাদিকা তাকে যেতে দেয় না।।একটু পর সেই দেহ টা তাদের দিকে এগুতে থাকে।।আর তারা পিছনে যেতে থাকে।। যেতে যেতে হটাৎ তারা পিছনে ধাক্কা খেল কিছু

একটার সাথে।।পিছনে ফিরেই দুই বোন দেখল সেই দেহ টা তাদের পিছনে।।তারা আবার সামনের দিকে তাকাল দেখল সেখানে নেই।।ভয়ে দুজনে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।।
,
যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখল তারা বিছানায় শুয়ে আছে পাশে তাদের বাবা।।বাবাকে দেখেই দুজনে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।।আর সব খুলে বলে।। তার বাবাও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে,তাদের কে শান্ত হতে বলে।।ইমনের মৃত্যুটা তাতের আরেক বড় শোক দিয়েছে।
–বাবা তোমার তো আরো দুইদিন পর ফেরার কথা।
–কাজ শেষ হয়ে গেছে তাই রাতেই চলে এসেছি।।এসেই দেখি তোরা পড়ে আছিস বারান্দায়।। আর ফোন করে তো বলতে পারতি একবার।।তোর মা কে হারিয়ে কষ্ট হচ্ছে কিন্তু এটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নাই।।কিন্তু তোর মা এমন টা কেনো করল আমার জানা নাই।।
,
এরপর রোদেলার বাবা তাদের কে বলে এটা তাদের মনের ভুল।।হয় তো বেশি ভয় পেয়ে গেছে।।প্ল্যানচেট এর সেই দৃশ্য দেখে।।
,
তারপর ইমনের ঘরে গিয়ে তারা কোথাও খুজে পেলো না ইমনের দেহটা।হয়তো আত্মাটা তাকে টেনে নিয়ে গেছে।আবারো কান্নায় ভেঙে পড়লো।
অপরদিকে হাসান সাহেবের চোখদুটো অসম্ভব শান্ত।তার যেনো কোনো শোক নেই।
,
রাতে আবার তারা খেয়ে যখন ঘুমাতে যাবে ঠিক তখনি সেই দেহ টা তাদের সামনে আসে।।আর বলে,
–এসেছিস তাহলে তুই।।তোকে আমি ছাড়বো না।।তোদের সবাইকে মেরে ফেলবো।।
–কে কে তুমি?আর কেনই বা আমাদের পিছনে লেগেছ?
–হাহাহা আমাকে চিনতে পারছো না আমার সম্পত্তি ভোগ করে তো ভালোই আছ।।
–নীলা তুমি??
–হ্যা আমি।।কেনো করলে এমন টা।।তোমার সম্পত্তি লাগলে আমাকে বলতে সব দিয়ে দিতাম।ভালোবাসার অভিনয় করে আমাকে মারলে কেনো তুমি।।আমার সন্তানের থেকে দুরে সরিয়ে দিলে কেনো।।
–বাবা কি বলছে এই আত্মাটা?(সাদিকা)
–সাদিকা?মা আমি তোর মা।।তোর বাবা আমাকে মেরে ফেলে শুধু মাত্র আমার সম্পত্তির জন্য।।পরে ও ওর ভালোবাসাকে বিয়ে করে।।ছলনা করে আমার সাথে।।

সেদিন তোদের ওই প্লানচেট এর মাধ্যমে আমি আবার আসতে পেরেছি এই দুনিয়ায়।।এতো দিন বন্দি অবস্তায় ছিলাম।। আজ আমি আমার হত্যার প্রতিশোধ নিব।।
–না মা এমন টা কর না।।বাবা দোষ করেছে তার জন্য তুমি ইমন কে কেনো মারলে।।
–ইমন যে ওর রক্তের।।ওর বংশ কে নির্বংশ করব।।না হলে তারাও এমন করবে।।
–না মা এমন টা করবে না।।আমাকে মেয়ে ভাবলে আমার কথা শুন তুমি ফিরে যাও।।বাবা তার ভুল বুঝতে পারছে।।
–হ্যা নীলা আমাকে ক্ষমা করে দেও।।
–আমার মেয়ের কথা ভেবে তোমাকে ছেড়ে দিলাম।।কিন্তু সে আসবে আর সেদিন এই মেয়েই তোমাকে মারতে বলবে।।
–কে কে আসবে?সাদিকা আর রোদেলা বলে উঠে।।
–রোদেলার মা।।ওকেও তোর বাবা মেরেছে।।আত্মহত্যা করে নাই সে ও,আমারি মতো তাকেও খুন করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিলো,তারপর তোদের কাছে সব চেপে গেছে।বলেই সাদিকার মা চলে যায়।।
রোদেলা ডাকলেও আর সাড়া দেয় না।।
–বাবা।মা কি বলে গেলো।।
–আরে মা সব মিথ্যা আমি মারি নাই তোর মাকে।।সাদিকার মাকেও না।
-বাবা!সাদিকার মা মানে?আমার মা কে?সাদিকা,ইমন আমার ভাইবোন না?
বাবা মাথা নিচু করে বসে রইলেন,তারপর মৃদুস্বরে বললো,নাহ..তোর মা তোর জন্মের পাঁচমাস পরে হঠাৎ আত্মহত্যা করেছিলো।তারপর সাদিকার মা কে বিয়ে করি আমি।সাদিকার মা আমার কলিগ ছিলো,একসাথে চাকরি করতাম।
কথাগুলো শুনে রোদেলার মাথার ভিতর ঘুরছে,সে কোনোদিনই জানতে পারে নি যে তার মা মারা গেছে।বাবা কথাটা কেনো চেপে গেছে?
তবেকি সাদিকার মায়ের আত্মা যা বলে গেলো তা ঠিক..?
–ঠিকাছে আমি আবার প্লানচেট করব আর ডাকব রোদেলা আপু আর আমার মাকে কি বলে তারা..!(সাদিকা)
–হ্যা আর আজ রাতেই করবো।দুই মায়ের মৃত্যুর কারনটা জানা লাগবে।(রোদেলা)
,
বলেই তারা ঘরের দিকে যেতে লাগল।।কিন্তু দুই পা না যেতেই দুই বোন বুঝতে পারল তাদের পিঠ দিয়ে কিছু একটা ঢুকানো হয়েছে।।ফিরে তাকিয়ে দেখল তাদের বাবা

এক কুৎসিত হাসি দিচ্ছে আর দুই হাতে দুইটা ছুরি।।তারা শুধু বাবা বলেই পড়ে গেলো মাটিতে।।আর সে হাসতে লাগল।।হঠাৎ অনুভব করল হাসান যে সে হাওয়ায়

ভাসছে।।চার পাশে তাকিয়ে দেখল হাসান, রোদেলা,সাদিকা,নীলা আর রোদেলার মা।।সে ভয় পেয়ে গেলো।।আর তাদের সব আত্মা একসাথে মিলে এক ভয়ংকর রুপ

নিয়ে হাসানের শরীরে আঘাত করলো,আর খুজে পাওয়া যাবে না মুখোশধারী হাসানকে।নিজের পাপের কারনে আজ সে অস্তিত্বহীন হবে।
,
,
………………………………………………….সমাপ্ত…………………………………………….

গল্পের বিষয়:
রহস্য
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত