একটা কোর্স করার জন্য, তখন গাজীপুর থাকতাম!” অনেক কষ্ট করে একটা বাড়িতে উঠলাম!” খুব পুরনো একটা বাসা, পুরো ভবন টা দো-তলা আমি
থাকতাম “-দো-তলাতে”ই একটা রুমে।বাসাটা খুব নির্জন একটা ‘স্থানে আসে-পাশে, গাছ ছিল! এই বাসা তে উঠার পর থেকে মহল্লার লোকজন ‘চা’দোকানের
লোকজন অদ্ভুদ ধরনের কথা জানাল সেই বাসার ব্যাপারে। কিন্তু আমি কানে তুলি নি! তারপর শুরু হয়” এখানে আসার ৩-৪ দিন পরে থেকেই এরকম
শুনতাম বাসার ছাধের উপর বাচ্ছার কান্নাঁর আওয়াজ।”” তার উপর এই বাসাতে” আসার পর থেকে এক’ই স্বপ্ন প্রতি রাতে দেখি! তবে সে খুব রহস্যময় বা
ভয়ানক স্বপ্ন বলতে পারেন! মানুষ সচারাচার এক’ই স্বপ্ন ৩-৪ দিন দেখে , কিন্তু আমি সেই স্বপ্ন একটানা ১০ দিন দেখেছি! যখন স্বপ্নটা “ভেঙে যায় তখন
আমার ঘুম ও “ভেঙে যেত!’ সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপার হল, আমার স্বপ্নটা রাত অবদি মনে থাকত, পরে আর মনে করতে পারতাম না।” কিন্তু আমি স্বপ্নটা
কারো কাছে সেয়ার করতে পারতাম না! কারণ আমার পুরো স্বপ্নের কথা- চিত্র মনে থাকত না!
অর্ধেক এর মত মনে থাকত।
.
তো সেদিন রাতে আবার সেই ভয়ানক স্বপ্নটা দেখলাম! যতটুকু মনে পরে স্বপ্নটা ছিল এরকম: – যে কিছু অদ্ভুদ মানুষ দেখতে কালো, কপালে লাল রঙ
মাখানো- আমাকে দৌর করায়- আর আমি দৌরাতে দৌরাতে আমি আমার রুমে চলে আসি!” কিন্তু স্বপ্নে রুমটা তখন অন্য রকম লাগে – যেমন:- রুমে
অনেক রকমের চিত্র আকাঁ থাকত পূজা বা মূর্তি এরকম কিছু টাইপের দেয়ালে আকাঁবুকি থাকত! কিন্ত বাস্তবে বাসাটা দেখতে সাদা সিদে! ” স্বপ্নে যখন
তারা খেয়ে দৌরে যখন বাসায় আসতাম তখন একটা মেয়ের ভয়ানক হাসির শব্দ শুনতে পেতাম!! ” কিন্তু মেয়েটাকে দেখতে পেতাম না।” আর মেয়েটা
অন্য কিছু বলত ও না।’ যখন ঘুম ভেঙে যেত তারপর আর আমার পুরো স্বপ্নটা মনে থাকত না!
.
তো একদিন এক’ই স্বপ্ন দেখার পর যখন ঘুম ভেঙে যায়! তখন ঘুম থেকে উঠে দেখি রাত ২:০০ টার মত! তো এত রাতে ঘুম ভাঙার কারণে এখন আর ঘুম
আসছে না!
তাই ভাবলাম ছাধে যায়! একটা বই আর মোমবাতি নিয়ে ছাদে বসে বই পরছি!” কিন্তু, কেন যেন বই পরা ভালো লাগছিল না! তাই গান গাইতে শুরু করলাম!”
হঠাৎ ছোট একটা মেয়ের কান্নাঁর আওয়াজ শুনলাম ছাধে! কিছুটা হতভাগ হলাম কারণ এ বাসায় কোন ছোট ছেলে মেয়ে নেই।- বাড়িওয়ালা-তার বিবি আর
একজন কাজের লোক। তাহলে তো ছোট বাচ্ছার কান্নাঁর আওয়াজ পাওয়ার তো কথা নয়! কিন্তু, আমি কাউকে দেখতে পেলাম না! হতভাগ হয়ে খুজতে
লাগলাম কিন্তু কিছুই দেখতে পেলুম না।” কিছু সময় যাওয়ার পর হঠাৎ কান্না থেমে গেল!” আমি কিছুটা ভয় আর চিন্তিত মনে রুমে চলে গেলাম! পরে
সকালবেলা বাড়ি ওয়ালার কাছে কথাটা বলার পর ওনার মুখ কালো হয়ে গেল ‘ তিনি বললেন কোথায়? আমরা তো এমন কিছু শুনতে পায় নি! এতদিন ধরে
আছি-! আরো শাসিয়ে দিলেন রাতে যেন ছাধে না যায়!-!
‘সেখানে আমি আর কিছু জানতেও পারলাম না!!
আর বাড়তি কিছু বলতেও পারলাম না। … তখন অসহায়!
এটা খুব’ই পূরানো বাসা দেখলে মনে হবে পৃথিবীতে হয়তো এই বাসায় প্রথম তৈরি করা হয়েছে! এত পুরানো ছিল- কিন্তু ভিতরটা খুবই সুন্দর ছিল- আর সে
সময় এই সাইটে বাসা নেওয়া মানে এভারেস্ট জয় করা! তাই বাড়িওয়ালার সাথে তর্কে গেলাম না! এরকম কান্নাঁর আওয়াজ প্রতিদিন’ ই পেতাম! কিন্তু, কঠর
ভাবে নিষেধ- আছে ছাধে না যাওয়ার জন্য তাই এভাবে চালিয়ে দিচ্ছি!
.
কয়েকদিন যাওয়ার পর এক ছেলের সাথে দেখা হল- তার একটা থাকার জায়গা ধরকার! কিন্তু কোথাও পাচ্ছে না ব্যাচেলর রুম- সে আমার ব্যাপারে
জানার পর- খুবই রিকুয়েস্ট করেছে যেন থাকে রুমমেট হিসেবে রাখি! কি আর করব!” আমার ও রাতে যেহুতু প্রবলেম” হয় একজন সাথে নিলে
উপকার হয়! তো বিপুল নামে’ নতুন রুমমেট কে সাথে নিলাম!!!
আমি বিপুল কে কিছু বলি নি! ভাবলাম – শুধু আমিই শুনতে পায় নাকি আরো অন্যরাও পায়! তাই যাচায় করতে বিপুলকে না বলা!!
সে কয়েকদিনে দু’জনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়!
.
একদিন রাতে বিপুল আমাকে বলছে-:
– রেদুয়ান- আমি বাড়িটা আমার কাছে ‘গড়বর লাগছে রাতে কেমন, যেন বাচ্চা” কান্নাঁ “আওয়াজ শুনি!
তুমি পাও না?
– পায় কিন্তু আমি ভাবতাম যে শুধু আমিই শুনি তাই তুমাকে কিছু বলি নি!!!
সমস্যা নেই একদিন তার রহস্য বেত করবোই!
-ঠিক আছে!!
এভাবেই চলল আরো কিছুদিন-
কিন্তু স্বপ্নটা কনটিনিউ দেখতাম শুধু আমি একায়।”
হঠাৎ একদিন কান্নাঁর আওয়াজ শুনতে পেলাম- সেদিন দুজনই ঠিক কররাম কে সে উপরে কাদেঁ? গেলাম বাসার ছাধে আর! …
গিয়ে দেখি একটা অদ্ভুদ একটা বাচ্ছা মেয়ে কাঠের’ পুতুল নিয়ে খেলছে- পুতুলটা কান্নাঁ করছে, মেয়েটা সেই কাঠেঁর পুতুলের উপর চাবুক এরকম ধরনের
একটা কিছু দিয়ে মারছে! আর কাঠেঁর পুতুলটা কাঁদছে!
তা দেখে দুজন পুরো থমকে গেলাম ভয়ে…
আমরা যে সেখানে মেয়েটার কান্ডকারখানা”দেখছি- তৎকালিন মেয়েটা আমাদের দেখে ভয়ংকর একটা হাসি দিল! যা দেখে ভয় পেয়ে তৎকালিন সেখান
থেকে দু’জনই দৌরে নিচ তলায় বাড়িওয়ালার রুমে গেলাম!
.
তাদের কে সব কথা খুলে বললাম -বাড়ি ওয়ালা এমন ভাব করল – মনে হয় এটা রোজকার ব্যাপাার রিএক্ট না করে এমন ভাবে যখন ছাধে আসে সেখানে
কিছুই দেখেনি তারা! তাদের মন্তব্য!
.
তারপরদিন ‘ই আমাদের দু’জন এর ভীষন জ্বর বাড়িওয়ালা হুজুর আনলেন তিনি তার মত চিকিৎসা করেন! সেদিন ই বিপুল চলে যায়! তার গন্তব্য স্থানে!
বিপুল একটু বেশেই ভয় পেয়ে যায়।
আমি তার পরেরদিন চলে যাবো… মোটামোটি সুস্ত হয়।কোর্স শেষ যেদিন চলে যাবো- সেদিন বাড়িওয়ালা এসে বললেন -.. শুন বাবা যেহুতু তুমি চলে যাচ্ছ
তাই বলছি- আসলে এটা একটা হিন্দু ব্যাক্তির বাড়ি ছিল- তার কাছ থেকে আমার বাবা কিনে ছিলেন! বাবার মুখ থেকে শুনেছিলাম – এটা একসময় একটা
হিন্দু – সনাতন নামে একজন ব্যাক্তির বাড়ি ছিল! হিন্দু সনাতন এর একটা মেয়ে ছিল! একদিন সনাতনের বউ – তাদের মেয়ে কে রাগের মাথায় চাবুক দিয়ে
বারি মেরে দিয়েছিলেন আর সে চাবুকের আঘাত বাচ্ছা সহ্য করতে পারে নি! এবং মেয়েটা মারা যায়- কে জানত যে চাবুকের আঘাতে মেয়ে মরে যাবে!!!
তারপর এই দুঃখে মেয়ের মা “টা গলায় ধরি দিয়ে মরে যায়- আর সনাতন এই বাড়ি আমার বাবার কাছে বিক্রি করে ইন্ডিয়াই চলে যান! তারপর থেকে ই
এরকম কিছু উপস্তিতি বুঝাতো.. কিন্তু কোন ক্ষতি করতো না! আমরা অভ্যস্ত তোমাদের সাথে এরকম ঘটবে জানতাম না!
সেই কারণে দুঃখিত!
.
বাড়িওয়ালার কাছ থেকে কাহিনিটা শুনে কিছুটা খারাপ লাগল- আবার আনন্দ বোধ ও করছি কারণ আজকের পর থেকে আর কান্নাঁর আওয়াজ শুনতে
হবে না!
.
বাড়িওয়ালার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসি সেই ভূতুরে বাড়ি থেকে!!!!
.
কিন্তু স্বপ্নের শেষ কি এখানেই?????
অবশ্য নিজের বাড়িতে আসার পর আর এরকম কিছু স্বপ্ন দেখি নি- কান্নাঁর আওয়াজ ও শুনি নি!-
……………………………………সমাপ্ত…………………………………