–মূলত আমার কাছে যারা আসে তারা এইসব বিদেশী পানীয় পান করার উদ্দেশ্যেই আসে।
হুইস্কির বোতল থেকে তরল পানীয়গুলো গ্লাসে ঢালতে ঢালতে কথাটি বল্লেন আসাদ সাহেব। আমি একবার আসাদ
সাহেবের দিকে তাকাচ্ছি তো আরেকবার গ্লাসের তরল গুলোর দিকে তাকাচ্ছি। আমার তাকানোর ভঙ্গি দেখে নিয়ে
আসাদ সাহেব আবার জিজ্ঞেস করলেন ..
–কি খালিদ সাহেব ..কি ভাবছেন? আপনিও কি এই তরলগুলো ভক্ষণের উদ্দেশ্যেই এসেছেন? নাকি অন্য কোন উদ্দেশ্য?
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম। কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না। আসলে আমি কি উদ্দেশ্যে এসেছি আমি নিজেও জানিনা।
কেনো যেনো খুব ইচ্ছে করছিলো এই লোকটার সম্পর্কে জানার। অবশ্য লোকটার সম্পর্কে জেনেও আমার কোনো লাভ নেই।
তারপরও কেনো যেনো খুব জানতে ইচ্ছে করছে। এটা আমার একটা মানসিক সমস্যাও বলা যায়। অজানাকে জানা আমার
কাছে একটা নেশার মতো। একজন মদ খোর যেমন চোখের সামনে মদের বোতল দেখলে নিজেকে সামলাতে পারে না ঠিক
তেমনি আমি কোনো বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হলে তার শেষ পর্যন্ত না দেখে থামি না।বর্তমানে আসাদ সাহেবের প্রতি ভীষণভাবে
আকৃষ্ট হয়ে আছি।কেনো? সেটা নাহয় আপনাদের অজানাই থাক।
.
আসাদ সাহেব ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে আবার বল্লেন ..
–খালিদ সাহেব আপনি কিন্তু আপনার উদ্দেশ্য টা এখনো বলেননি।
আমি কিছু বলতে যাবো এমন সময় তিনি আমার কথা আটকিয়ে নিজেই বললেন ..
–ওকে আমি বুঝে নিলাম আপনি এই জলপানের উদ্দশ্যেই এসেছেন। আরে ভাই এতে ইতস্তত করার কি আছে? নিন একপেগ
মেরেই দিন লজ্জাটা কেটে যাবে। এরপর দেখবেন আর সমস্যা হবে না। তখন প্রতিদিনই লজ্জা ছাড়াই আমার সামনে বসে
দিব্যি একের পর এক পেগ শেষ করবেন। আসাদ সাহেবের কথার কি প্রতিত্তর দিবো আমি ভেবে পেলাম না। লোকটা ধরেই
নিয়েছেন আমি মদ্যপানের উদ্দেশ্যেই উনার কাছে এসেছি। তবে যেহেতু উদ্দেশ্যে নিয়ে উনি কথা তুলেছেন তাহলে দিমত
করার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি হাসিমুখে জবাব দিলাম ..
–আপনার ধারণাই ঠিক। এইসকল পানীয় আগে একসময় শখের বসে খেতাম। এখন অভাবের কারণে খেতে পারিনা।
তাই আপনার কাছেই আসলাম। গল্পও হবে নেশাও হবে। হাহাহা
.
লোকটা আমার কথায় একটু হাসলেন। মনেহয় আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য টা বুঝতে পেরেছেন সেই জন্যই একটু গর্ব
বোধ করলেন। ধনী মানুষ গুলো মনে হয় এমনি হয়।অল্পেই অহংকার বোধ করে।
–আমি জানতাম খালিদ সাহেব। এই উদ্দেশ্য ছাড়া আমার কাছে কেউ কখনো আসে না। আমার এখানে যারা আসে তারা
ফ্রীতে বিদেশী পানীয় পান করার জন্যই আসে। আপনিও তার ব্যতিক্রম হবেন না,সেটা আমি জানতাম। এরপর তিনি তার
বাসার কাজের লোককে উদ্দেশ্য করে ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে আসতে বললেন। রোগামতো একটা লোক। বয়স আনুমানিক
পঞ্চাশ পার হয়েছে। লোকটা সানন্দে বরফ আনতে গেলো। দেখে মনে হলো লোকটা অনেকদিন থেকেই এখানে গোলামী করছে।
মালিকের হুকুম সবসময় সানন্দে পালন করে। আমি আসাদ সাহেবের ধারণায় পরিবর্তন আনার জন্য বল্লাম ..
–আসাদ সাহেব,আমার এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য কিন্তু এই জল ভক্ষণ নয়।
–একটু আগেই তো বল্লেন এটাই আপনার উদ্দেশ্য। তাছাড়া আর কি উদ্দেশ্য থাকতে পারে?
–মূলত আমি আপনার সম্পর্কে জানার জন্যই এসেছি।
–হাসালেন মি.খালিদ। দুনিয়ায় এতো মানুষ থাকতে আমার মতো একজন দুশ্চরিত্রের মানুষের সম্পর্কেই আপনার জানার আগ্রহ হলো!
–হ্যাঁ। আসলে আমি লক্ষ করেছি আপনার ক্যারেক্টারে ভিন্নধর্মী কিছু লক্ষনীয় বিষয় আছে যা আমাকে প্রভাবিত করেছে
আপনার সম্পর্কে জানার জন্য। আমি এই শহরে ছয়মাস হলো এসেছি। এই পর্যন্ত অনেক জনের সাথেই আমার পরিচয় হয়েছে।
কিন্তু আপনার মতো ব্যতিক্রমধর্মী মানুষ আমি এর আগে দেখিনি।
আসাদ সাহেব আবারো ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকালো। রোগা লোকটা এসে বরফ টুকরো রেখে গেলো। যাওয়ার আগে
সেও আমার দিকে একটু ভ্রু কুচকে তাকালো। আমি সেটা আমলে নিলাম না।
–আসলে ব্যতিক্রম বলতে কি বুঝাতে চাচ্ছেন? আমি সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা?
–আসলে ঠিক তা না। আসলে আপনার ক্যারেক্টার এ অন্যরকম কিছু আছে। যেটা অনেকটা মজার আবার অনেকটা চমকপ্রদ।
আপনাকে ভালো লেগেছে বলেই আপনার সাথে গল্প করার জন্যই আপনার বাড়ির ঠিকানা বের করেছি।আর আজ রাতের
বেলায় চলে এলাম। আচ্ছা শহরে এক সাইডে এতো নিরিবিলি জায়গায় থাকার কারণ টা কি?
–কি বলবো বলুন, শহরের গ্যাঞ্জাম আমার ভালো লাগে না। তাছাড়া নিরিবিলি পরিবেশে থাকতে ছোটবেলা থেকেই অনেক
সাচ্ছন্দ বোধ করি।
আমি আর কিছু বল্লাম না। লোকটা মনে হয় এখনো বিয়ে করেনি। কারণ এই বাড়িতে উনার কাজের লোক আর উনাকে ছাড়া
কাউকে দেখলাম না। উনি আমার দিকে পানীয়ের গ্লাস এগিয়ে দিলেন।
–নিন খালিদ সাহেব মেরে দিন। জীবনে কয়টা দিনই বা বাঁচবেন? যে কয়টা দিন বাঁচবেন সুখেই বাচার চেষ্টা করুন।
..আমি গ্লাসের সবটুকু সাবার করে দিলাম। সাঙ্ঘাতিক জিনিস। গলা দিয়ে নিচে নামার সময় মনে হচ্ছিলো যেনো গলাটা পুরে যাচ্ছে।
তরল গিলছি নাকি আগুনের তৈরী শরবত গিলছি ভেবে পাচ্ছিলাম না। তারপর ও সহ্য করে নিলাম। আসাদ সাহেব আমার দিকে
সিগারেট বাড়িয়ে দিলেন।
–আপনি কোন ব্র্যান্ডের সিগারেট খান আমি জানিনা।আজকে নাহয় আমার পছন্দের ব্র্যান্ডের টাই চলুক।
আমি প্রতিউত্তর না করে সিগারেট জালালাম।
.
–আমি ছাই কোথায় ফেলবো? কোনো এসট্রে আছে কি?
–আপাতত রুমের পুরো ফ্লোরটাকেই এস্ট্রে ভেবে নিন। রুম ঝাড়ু দেয়ার জন্য কাজের লোক আছে। এ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না।
আমি সিগারেটে টান দেয়া শুরু করলাম। আসাদ সাহেব ও টানতে লাগলেন। উনার সিগারেট খাওয়ার স্টাইলটা অন্যরকম।
এটাও আকৃষ্ট করার মতো। প্রত্যেকটা টান দেয়ার পর হাত বদল করেন। মূলত দুই হাতেই সিগারেট টানছেন তিনি।ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বললেন …
–জীবনে প্রথম কোনো মানুষ দেখলাম যে কিনা আমার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। সারাজীবন আমাকে সবাই ঘৃনা করেই এসেছে।
এমনকি আমার নিজের বাবাও আমাকে তার থেকে এতো দূরে সরিয়ে রেখেছে। আর আপনি কিনা আমার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
আসলে এখন আপনার প্রতি আমার আগ্রহ হচ্ছে।
–না আপনি আসলেই অনেক মজার একটা মানুষ। এজন্যই তো গল্প করতে এতদূর এসেছি। আসলে কথায় আছে না রতনে রতন চেনে।
সেরকম টাই ভেবে নিন। সবকিছুর মর্ম কি সবাই সমানভাবে বুঝে নাকি।
–তা অবশ্য আপনি ঠিকই বলেছেন। কিন্তু আমার সাথে কি গল্প করবেন বলুনতো!
–আপনার জীবনের যেকোনো বিষয় নিয়ে আমরা গল্প শুরু করতে পারি।
–হুম তা যায়। তবে আপনি কি জানেন খালিদ সাহেব. .. প্রত্যেকটা মানুষেরই দুইটা সত্তা আছে। একটা ভালো একটা খারাপ।
আপনার আমার সবার মাঝেই আছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো প্রকাশ পায়। আবার অনেকেই ভিন্নধর্মী দৈত সত্তার অধীকারী।
মনে করুন উপরে অনেক সাদামাটা কিন্তু আসল রুপটা অনেক কুৎসিৎ।
–আপনি এইসব সত্তা নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন কেনো? আপনার মাঝেও কি এগুলো আছে নাকি?
–হ্যাঁ থাকতেও পারে। তবে বললে আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা।
–মনে হচ্ছে বিষয় টা অনেক ইন্টারেস্টিং হবে। তাহলে এ নিয়েই গল্প করা যাক।
…আসাদ সাহেব সিগারেট এর ফিল্টার টা ফ্লোরে ফেলে দিলেন। হাত ঘড়িতে চোখ বুলিয়ে বললেন ..
–রাত বারোটা পার হয়ে গেছে। আপনি কি মাতাল অবস্থায় বাসায় যাবেন নাকি রাতভর আমার সাথে গল্প করবেন?
–না আমি আসলে ফ্যামিলি নিয়ে থাকিনা। আর ততটা সময়জ্ঞান ও আমার মাঝে নেই। রাত দিন বলে আমার কাছে কোনো পার্থক্য নেই।
আপনি গল্পের সঙ্গি হতে রাজি থাকলে আমি সারারাত ই আপনার সাথে গল্প করতে রাজি আছি। গল্প শুনতে আমার কোনো বিরক্তি আসেনা।
.
আসাদ সাহেব একটা মুচকি হাসি দিলেন। মনেহয় উনার গল্প শুনাতে ভালোই লাগে।
–দেখুন যে গল্পটা আমি আপনাকে আজ শুনাবো তা শুধু একটা গল্পই। আবার গল্প বলে এটাকে উড়িয়ে দিতে পারবেন না কিন্তু।
এটা কোনো ঠাকুরমার ঝুলির মতো বানানো গল্প নয়। বাস্তব জীবনের গল্প।
–আচ্ছা ঠিক আছে আপনি শুরু করুন।
আসাদ সাহেব আরেকটা সিগারেট ধরালেন।
–একি আপনি সিগারেট নিতে লজ্জা পাচ্ছেন নাকি! আসাদ সাহেব আমার দিকে একটা সিগারেট এগিয়ে দিলেন।
.
সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে তারপর ধোঁয়া ছাড়লেন। এরপর সিগারেট ডানহাত থেকে বামহাতে নিলেন। তারপর বলতে শুরু করলেন ..
–এই গল্প আমি কখনোই কাউকে বলিনি। আজ ই প্রথম আপনাকে বলবো। অবশ্য বিশ্বাস অবিশ্বাস আপনার নিজের ব্যপার।
আমাদের এই মানব সমাজের ভিতরে মানুষের অগোচরেই ঘটে চলেছে অনেক রহস্য। কিছু কিছু আমরা জানতে পেরেছি আর
কিছু কিছু আমাদের অজানাই রয়ে যায়। কেননা আমরা বাস্তবকে বেশি বিশ্বাস করি আর অবাস্তব কে হেসে উড়িয়ে দেই।
আচ্ছা তার আগে বলুনতো আপনি কি ভূত বা পিচাশে বিশ্বাস করেন?
–কেনো বলুনতো?
–না আসলে গল্পটা শুনানোর জন্য আমার সেটা জানা লাগবে।
–সারাজীবন ভূত কে অবিশ্বাস করলাম। ভূত বলতে কিছুই নেই এই বিশ্বাস টাই মানুষের মাঝে উপস্থাপন করে আসলাম।
আর আজ আপনি এই প্রশ্ন আমায় করলেন!
–ওহ আচ্ছা আচ্ছা তার মানে করেন না। আমিও করিনা।আধুনিক বিজ্ঞানের এই যুগে এইসব ভূতে বিশ্বাস গাজাখুরি কল্পনা ছাড়া কিছুই না।
–আচ্ছা যাই হোক আপনি গল্প শুরু করুন।
আসাদ সাহেব হাত বদল করে আবারো সিগারেট এ একটা লম্বা টান দিয়ে গল্প বলতে শুরু করলেন …
— মূলত ছোটবেলা থেকেই অনেক বাজে সভাবের লোক ছিলাম। সবসময় মাথায় উদ্ভট সব চিন্তাভাবনা আসতো। আমার দেখভাল
করার জন্য তেমন কোনো লোক ছিলনা। আমার মা আমাকে জন্ম দিতে গিয়েই মারা গেছেন। পরিবারে আমি একমাত্র সন্তান ছিলাম।
আমার মায়ের মৃত্যুর পর বাবাও মনে হয় অনেক টা ভেংগে পড়েছেন। তবে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন নি। ব্যবসায়ী ব্যস্ততার কারণে
নাকি আমার কথা ভেবে তিনি বিয়ে করেননি তা আমি জানিনা।
.
তবে আমার মনে হয় তিনি ব্যাবসায়ী ব্যস্ততার কারণেই বিয়ে করেননি। কেননা তিনি আমাকে কখনোই সময় দিতেন না।
সবসময় ব্যবসা নিয়ে পড়ে থাকতেন। আমার দেখভাল করার জন্য অবশ্য চাকর বাকর কম রাখেননি। কিন্তু বলেন আপনজনের
ভালোবাসা আর পয়সা দিয়ে কেনা ভালবাসা কি কখনো এক হয়। এটুকু বলে আসাদ সাহেব থেমে গেলেন।
এরপর তিনি সিগারেট টা একটানে শেষ করে ফেললেন। আর একটা সিগারেট জালালেন। লোকটা সম্ভবত গল্প শুরু করলে
চেইনস্মোকার হয়ে যান। আবার বলতে লাগলেন …
–আমার মন আপনজনের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকতো। তখন সম্ভবত ক্লাস সেভেনে পড়ি। আমার বাবা আমার
সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতেন না। তিনি অনেক রাতে বাসায় ফিরতেন। আমি উনার সাথে কথা বলার জন্য মাঝে মাঝে জেগে
থাকার চেষ্টাও করতাম। কিন্তু সেই সময় ঘুমের সাথে পেরে উঠতাম না। একদিন ঘুমের সময় অদ্ভুত সপ্ন দেখলাম। সপ্নে আমি
আমার মাকে দেখলাম। এরপর প্র্যাই আমি আমার মাকে সপ্নে দেখতে লাগলাম। একসময় সেই সপ্নে দেখা মাকে আমি বাস্তবে
দেখতে লাগলাম। আমি একা একাই কি করে চলেছি আমি নিজেই বুঝেছিলাম না। আমি বন্ধ ঘরে একা একাই মায়ের সাথে কথা বলতাম।
আমি অনেকটা উম্নাদের মতো হয়ে গেলাম। নিজের প্রতি কোনো কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না। সবসময় শুধু মাকেই কল্পনা করতে লাগলাম।
অবশ্য মায়ের চেহারাটা কল্পনা করতে আমার সমস্যা হয়নি কারণ আমার কাছে আমার বাবা মায়ের বিয়ের ছবি ছিলো।
আসাদ সাহেব কথাটা বলেই উনার ঘরের দেয়ালের দিকে চোখ দিলেন। আমিও উনার লক্ষবস্তুর দিকে তাকালাম। দেয়ালে
একটা বিয়ের ছবি দেখতে পেলাম। সম্ভবত এটাই উনার বাবা মায়ের বিয়ের ছবি।
তিনি সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে আবার বলতে লাগলো …
–আমি স্কুল গেলে ছুটি হওয়ার সাথে সাথে বাসায় চলে আসতাম দ্রুত। কেনো যেনো মনে হতো আমার মা আমার জন্য খাবার নিয়ে বসে আছেন।
আমি মায়ের সাথে গল্প করতাম সবসময়। ঘরের দরজা বন্ধ রেখে সবসময় আমার কল্পিত মায়ের সাথে আমি কথা বলে যেতাম। বিষয়টা আস্তে
আস্তে গুরুতর ভাবে আমার ভিতরে ঢুকে গেলো। এমন একটা সময় এসে দাড়ালো আমি যেনো বিশ্বাস ই করতাম না যে আমার মা মরে গেছেন।
বিষয় টা আমার বাবার কানে গেলো। বাড়ির চাকর বাকর রা হয়তো বিষয়টা খেয়াল করেছে আর তারাই হয়তোবা বাবাকে বলেছিলো। কোনো এক
চাকর বলেছিলেন আমাকে জিনে আসর করছে। এরপর বাবা বিষয়টা আমলে নিলেন। ফকির দরবেশ দেখানো শুরু হলো কিন্তু আমার অবস্থার
উন্নতি হলো না। আমি যেমন তেমনই রয়ে গেলাম। ফকির দরবেশরাও ইচ্ছামতো ট্রিটমেন্ট করতো আর টাকা হাতাতো। অনেক টাকাই ব্যায় করা
হলো আমার পিছনে কিন্তু আমি যেমন, তেমনি রয়ে গেলাম। এরপর একদিন একটা ভয়ংকর কাহিনী ঘটিয়ে দিলাম। বাসার কোনো এক চাকর
আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,”ছোট সাহেব আপনার আম্মাজানতো আপনারে জন্ম দিয়াই মরি গেছে, মরা মাইনসের লগে কথা কন ক্যামনে?
” এই কথা শুনার পর আমার মাথায় খুন চেপে গেছিলো। আমার মাকে মৃত বলায় চোখের সামনে থাকা জন্মদিনের কেক কাটা ছুরি দিয়ে সেই
লোককে যখম্ করে বসি। ভাগ্য ভালো লোকটা সেদিন মরেনি। মরলে হয়তো আমিও আজ ফাসির আসামি হয়ে জেলে বন্দী থাকতাম। তবে সেই
ঘটনার পর বাবা আমাকে নিয়ে আরো চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এরপর তিনি আমাকে এক সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে নিয়ে যান। আর সেখানেই জানতে
পারেন প্রিয়জনের ভালোবাসার অভাবের কারণেই আমার মাঝে এইসব সমস্যা দেখা দিয়েছে। এরপর আমার ভালোভাবেই ট্রিটমেন্ট হলো।
বাবাও সংগ দিতে লাগলেন। সময় বের করে আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হতেন। একসময় আমিও মেনে নিলাম আমার মা বেচে নেই। আস্তে আস্তে
সাভাবিক হয়ে গেলাম।
.
আসাদ সাহেব একটা দীর্ঘ শাস ছাড়লেন। আমি বল্লাম ..
–যাক শেষ পর্যন্ত তাহলে সুস্থ হতে পেরেছেন
আসাদ সাহেব এবার হো হো করে হেসে উঠলেন …
–অবশ্য সবার ধারণা এমনই ছিলো। তবে মানসিক রোগটা আমাকে পুরোপুরি ছাড়েনি। তা নাহলে কি আমার বাবা আমাকে এতো দূরে সরিয়ে রাখতেন।
–আসলে ছাড়েনি মানে! আপনি কি এখনো একজন সাইকো রোগী নাকি!
–অনেকটা সেরকমই। তবে সবসময় নই মাঝে মাঝে আরকি। সেইসময় রোগটা আমাকে পুরোপুরি ছাড়েনি। আমি এখনো মাঝে মাঝে অদ্ভুত
সব কর্মকাণ্ড করি। ওইযে বল্লাম না দৈতসত্তা। আমার ভিতরে দুই ধরণের চরিত্র আছে এখনো। মাঝে মাঝেই দ্বিতীয় চরিত্র টা মাথা চারা দিয়ে উঠে।
খুবই ভয়ঙ্কর হয়ে যাই তখন। আমি আর আমার মাঝে থাকিনা সেসময়।
..আসাদ সাহেবের কথা শুনে মনে হলো আরো অনেক ঘটনাই আছে হয়তো এনার জীবনে। অথচ বাইরে থেকে লোকটাকে দেখে কখনোই মনে
হবে না উনি একজন মানসিক রোগী।
–আচ্ছা আপনি আমাকে গল্প শুরু করার আগেই ভূতে বিশ্বাস করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন। অথচ আপনার গল্পের সাথে ভূতুড়ে কোনো বিষয়
ই তো খুজে পেলাম না।
–না আসলে আমি দেখছিলাম আপনি কুসংস্কার এ বিশ্বাস করেন কিনা? আসলে আমাদের দেশের মানুষেরা এইসব অদ্ভুত মানসিক রোগ
গুলোকে ভূতুড়ে ব্যপার বলে বিবেচনা করে থাকে। অনেকেই জিনের আসরও মনে করে থাকে। আসলে সবই ভুল ধারণা আর কুসংস্কার।
আমার কি মনে হয় জানেন আমাদের দেশে যারা এইসব কুসংস্কার মানে তারা নিজেরাই একেকটা মানসিক রোগী।
–আচ্ছা আসাদ সাহেব বর্তমানে আপনি কিরকম মানসিক রোগে ভুগছেন?
–এটা অনেকটা সাঙ্ঘাতিক। প্রকাশ করার ইচ্ছা হয়না। তবে আপনি শুনতে চাইলে বলতে পারি। একটা শর্ত আছে।
–কি শর্ত?
–একটু আগে যে গল্পটা বলেছি সেটা আপনাকে সত্যি ভেবে নিতে বলেছি। আর এখন যেটা বলবো সেটাকে শুধু্ গল্পই ভেবে নিতে হবে।
অর্থাৎ আগের কন্ডিশন ছিলো গল্প হলেও সত্যি আর এখনকার কন্ডিশন হচ্ছে সত্যি হলেও গল্প।কি রাজিতো?
–হুম রাজি।
..লোকটার অদ্ভুত সব কথাবার্তা আমায় বার বার মুগ্ধ করে। একজন মাতাল মানুষ ভালোই গল্প করতে পারে দেখছি। একজন মাতাল এতো
ভালো গল্প করতে পারে এনার সাথে কথা না বললে জানতামই না। যাই হোক উনার গল্প শুনতে হলে উনার কন্ডিশনে আমাকে রাজি হতেই হবে।
–তাহলে শুনুন খালিদ সাহেব। দাড়ান আমি আর একটা সিগারেট জালিয়ে নেই।
…আসাদ সাহেব সিগারেট জালিয়ে আবার শুরু করলেন ..
–মূলত সেই প্রথম ঘটনার পর থেকেই আমার মাঝে এইসব উদ্ভট আচরণ গুলো ভালোই পেয়ে বসে। আমার সঙ্গি সাথি বন্ধুবান্ধব কম থাকায়
নিজেকে সবসময় গুটিয়ে রাখতাম। মানুষের সাথে মেলামেশা কম করার কারণে আমার চিন্তাভাবনা গুলো সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা।
চিন্তাভাবনা গুলো হতো অনেকটা ধারণাতীত অদ্ভুত লেভেলের। তো সেইবার ইন্টার পরীক্ষার পর আমি ভার্সিটিতে পড়বো সেই উদ্দেশ্যে
আমাকে বাড়ি ছাড়া হতে হবে।বাবার কড়া হুকুম। নিজেকে যেনো আর এভাবে গুটিয়ে না রাখি। আমাকে দূরে এক শহরে রেখে আসা হলো।
সেই শহরে আমার বাবার নিজস্ব একটা বাসায় আমার থাকার ব্যবস্থা করা হলো। মূলত আমার বাবার অনেক ধন সম্পদ থাকার কারণে বিভিন্ন
শহরে বাড়ি কিনে রেখেছেন। এটাও তারই একটা। বাড়িতে একজন কেয়ার টেকার ছিলেন।নাম আব্দুল জব্বার।আমি জব্বার কাকা বলে ডাকি।
খালিদ সাহেব আপনি কি বিরক্ত হচ্ছেন?
–না একদম না। আপনার কেনো এমন মনে হচ্ছে?
–আপনি গল্প শুনার সময় হা হু শব্দ করেন না তাই মনে হলো।
–আরে না আপনি চালিয়ে যান।
–তো যাই হোক যা বলছিলাম আরকি .. নতুন শহরের অচেনা বাসাটা আমার দারুণ লাগলো। সুন্দর মনোরম পরিবেশ। পিছনে সুন্দর সাজানো বাগান।
সামনে সুন্দর নকশা করা গেইট। তাছাড়া বাসাটা দুইতলা বিশিষ্ট এবং সুন্দর ডিজাইন। পুরো বাড়িটার একমাত্র রাজা আমি। তারপর নতুন জীবন
শুরু করলাম।কিন্তু অন্যান্য মানুষের ভার্সিটি লাইফ যেমন হয় আমার ভার্সিটি লাইফ তেমন হলো না। মূলত লেখাপড়া নিয়ে বেশি ভাবতাম না ।
জব্বার কাকা বাসার নিচের ফ্লোরে থাকতো আর আমি উপরে থাকতাম। জব্বার কাকার সাথে একটা ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেলো আমার।
কথায় কথায় জানতে পারলাম বেচারা অনেক আগেই পরিবারকে হারিয়েছে। বেচারার দুঃখ টা আমি ভালোভাবেই উপলব্ধি করলাম। কেননা
ফ্যামিলি না থাকার কষ্ট টা কি তা আমি ভালোভাবেই জানি। জব্বার কাকা নিজেই আমার রান্না করে দিতেন। এমনকি সব কাজ তিনি একাই করতেন।
মহিলাদের পুরুষদের সকল রকমের কাজই তিনি করতেন। কিন্তু একদিন ঘটলো অন্যরকম ঘটনা!
–কিরকম ঘটনা!!! অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম আমি
আসাদ,সাহেব গলার আওয়াজ নিচু করে বলতে লাগলেন।
–নিজেকে শক্ত রেখে মন দিয়ে শুনুন। একদিন জব্বার কাকাকে বল্লাম, চলেন একসাথে রাতের খাবার টা খাই। কিন্তু জব্বার কাকা বললেন,
আমি তো খাবার খেয়েছি। আমি তার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। উনি সবেমাত্র রান্না করে গরম গরম রাতের খাবার আমাকে দিয়েছেন।
অথচ তিনি বললেন তিনি রাতের খাবার খেয়েছেন। কখন খেলেন তিনি! অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, রান্না তো সবেমাত্র শেষ করলেন,
খেলেন কখন? তিনি কিছু বললেন না। মাথা নিচু করে রইলেন। আমি বুঝতে পারলাম ব্যপার টা অন্যরকম। বল্লাম, কাকা আসলে ঘটনা কি?
আপনি মিথ্যা বলছেন কেনো? তিনি এবারে বললেন, বাবা আসলে তুমি কি মনে করবে জানিনা, আমি আসলে রান্না করা মাংস খেতে পারিনা।
আমি কাচা খেতে বেশি পছন্দ করি। আমি জব্বার কাকার কথা সুনে আকাশ থেকে পড়লাম। এ আমি কি শুনছি! এই লোকতো দেখি আস্ত একটা
পিচাশ। কাচা মাংস খেতে পছন্দ করে। আমার কেমন যেনো লোকটাকে ভয় ভয় লাগতে শুরু করে।কখন না জানি আবার আমাকেই খেয়ে বসে।
অবশ্য পরবর্তীতে ব্যপারটা মানিয়ে নিয়েছি।
..আসাদ সাহেবের গল্প শুনে এই প্রথম আমার ভয় লাগতে শুরু করলো। ভূত পিচাশের নাম অনেক শুনেছি তবে সেটা গল্পে। কিন্তু আজ প্রথম
মানুষ পিচাশের নাম শুনলাম তাও আবার বাস্তবে। গায়ের লোমগুলো শিউরে উঠলো।
–খালিদ সাহেব আপনি কি ভয় পাচ্ছেন নাকি?
–আরে নাহ কিসের ভয়! তবে ওই লোকটা তো দেখছি আপনার থেকেও অনেক বড় মানসিক রোগী। বিরাট মাপের সাইকো যাকে বলে।
এখন উনি কোথায় আছেন? বেচে আছেন নাকি মরে গেছেন?
.
–আরে মরতে যাবে কেনো? বেচেই আছে। একটু আগেই তো এসেছিলো উপরে আপনার সাথে দেখাও হলো। যিনি আমাদের হুইস্কির পেগ
বানানোর জন্য বরফ দিয়ে গেলেন একটু আগে তিনিই জব্বার কাকা। আর যে বাড়িটার কথা বলেছিলাম সেই বাড়িটা এটাই। যেখানে আমরা
দ্বিতীয় তলায় বসে গল্প করছি। আর নিচ তলায় আছেন জব্বার কাকা।
–উনার সাথে আপনি এতোদিন থেকে আছেন কি করে? ভয় করেনা? উনি কি এখনো মাংস খায় নাকি? প্রশ্ন গুলো করে ঢক ঢক করে পানি
খেলাম টেবিলে রাখা পানির বোতল থেকে। ভয়ে আমার গলা বসে গেছে।
–কি যে বলেন খালিদ সাহেব। উনি আমার থেকে বড় সাইকো হবেন কি করে? উনিতো যেকোনো রকমের মাংস কাচা খান। কিন্তু আমি তো
ইদানিং মানুষের মাংসের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়েছি। বেশ কয়েকবার জব্বার কাকাকে টাকা দিয়ে কবর খুড়ে লাশ আনিয়েছি। কিন্তু মরাদেহ
খেয়ে তৃপ্তি হয়না। তাজা মাংস লাগে আমার। বলেই মাথা নিচু করলেন আসাদ সাহেব।
…আসাদ সাহেবের ভাব ভঙ্গি দেখে আমার কলিজা ধরাশ ধরাশ করতে শুরু করেছে। এই বাড়িতে আমরা তিনজন ছাড়া আর কেউ নেই।
তাছাড়া লোকালয় থেকে অনেক নিরিবিলিতে। এখানে এই নরখাদকগুলো আমাকে খেয়ে ফেললে কেউ কিছু জানতেও পারবে না। আমার
লাশটাও খুজে পাবে না। কেনযে এত উত্তেজনা দেখিয়ে এখানে এসেছিলাম। এখন নিজের কপালে চাপর মারা ছাড়া কিছুই করার দেখছি না।
হঠাৎ আসাদ সাহেব মাথা তুললেন। উনার চোখটা অনেকখানি লালচে ভাব হয়ে গেছে। অতিরিক্ত নেশা করার কারণে নাকি মাংস খাওয়ার
খুদায় তা আমি জানিনা।
–খালিদ সাহেব বলেছিলাম না আমার মধ্যে দুইটি সত্তা আছে। দ্বিতীয় সত্তাটা এমনি ভয়ানক। আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারি না।মাঝে মাঝে
প্রচন্ড কাচা মাংসের লোভ জাগে মনের মধ্যে। তবে নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করি।আমি এই রোগটা থেকে বের হওয়ার অনেক চেষ্টাই
চালাচ্ছি কিন্তু পারছি না।
ঘড়ির দিকে তাকালেন তিনি।
–চারটে বেজে গেছে।তার মানে ভোর হতে বেশি দেরী নেই। আপনি তাড়াতাড়ি আমার বাসা থেকে প্রস্থান করুন। কারণ আমার দ্বিতীয় সত্তাটা
যখন তখন ভয়ানক রূপ নিতে পারে। আমি চাইনা আমার দারা কারো কোনো ক্ষতি হোক। আপনি যাওয়ার আগে আপনার ফোন নাম্বার টা
দিয়ে যাবেন প্লিজ। আর হ্যাঁ আপনি কিন্তু বলেছেন এই গল্পটাকে শুধুমাত্র গল্পই ভাববেন। সত্যি ভাববেন না।
–আচ্ছা টিক আছে।
…আমি আর এক মুহুর্ত দাড়ালাম না। সারারাত একটা পিচাশের সাথে গল্প করেছি আমি ভাবতেও পারছি না। বেচে ফিরতে পারলেই হয়।
তবে আসাদ সাহেবের কথামতোই নাম্বার টা লিখে দিয়ে নিচে নেমে গেলাম। নামার সময় লক্ষ করলাম জব্বার বুইড়ার রক্তমাখা চোখ নিয়ে
আমার যাওয়ার জন্য দরজা খুলে দিচ্ছেন। আমি উনার চোখের দিকে একবার তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে নিলাম। হন হন করে রাস্তায় বেড়িয়ে
পড়লাম। আলো ফুটতে শুরু করেছে। ভয় বলতে দিনের আলোয় কিছুই নেই। রাতের আধারে আমাদের চারপাশে কি হচ্ছে আমরা তার কতটুকু
খোজ রাখি। দিনের আলোয় হয়তো আসাদ সাহেব একজন সুস্থ সাভাবিক মানুষের ন্যায় সবার মাঝে বিচরণ করবেন।আর রাতের বেলায় হাহাকার
করবেন কাচা মাংসের জন্য। এদিকে আর ভুলেও আসা যাবে না। জান নিয়ে ওই পিচাশ দুইটার হাত থেকে ফিরে এসেছি এটাই অনেক।
.
এক সপ্তাহ পরেই আমার ফোনে একটা আননোন নাম্বার থেকে ফোন এলো ..
–হ্যালো। খালিদ সাহেব আমি আসাদ বলছি।
–ওহ ,জি বলুন। কেমন আছেন? শরীর ঠিক আাছে তো?
–হ্যাঁ। একটা খবর জানানোর জন্য ফোন করলাম। আসলে আগামীকাল ই আমি বিদেশে যাচ্ছি এই মানসিক রোগটার উন্নত চিকিৎসার জন্য।
আশা করি আমি ঠিক হয়ে যাবো পুরোপুরি। ফিরে আসলে আপনি আমার সাথে সাক্ষাৎ করবেন নাকি এড়িয়ে চলবেন?
–সেটা পরেই দেখা যাবে। আপাতত বেস্ট অব লাক। সুস্থ হয়ে আসুন এটাই কামনা করি।
…ফোন রেখে ভাবতে লাগলাম। আসলেই কি তিনি এই সমস্যা থেকে বেরুতে পারবেন? নাকি নতুন করে তার মধ্যে আর একটা মানসিক রোগের
উদ্ভাবন হবে? জানিনা আর জানতেও চাইনা। আপাতত এইসব চিন্তা না করলেও চলবে।
…………………………………….সমাপ্ত ………………………………..