ডিটেকটিভ

ডিটেকটিভ

খেলার মাঠে পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে বসেছিলাম দুজনে। আমি আর পিন্টু। হাতে পায়ে ধুলো, গায়ের গেঞ্জি ঘামে জবজব করছে। তবু এক্ষুনি বাড়ি যাওয়ার কথা ভাবতে পারছিলাম না দুজনেই। ইস্কুলে গরমের ছুটি পড়ে যাচ্ছে কাল থেকে। গরমের ছুটি মানেই পড়াশুনো নেই। সারাদিন বাড়ি বসে সময় নষ্ট করলে তো আর হবে না – নতুন কিছু খেলা বের করতে হবে। কদিন আগে আবিষ্কারক হওয়ার চেষ্টা এক্কেবারে মাঠে মারা গেছে। আমরা ডাইনোসরের হাড় ভেবে মাটি খুঁড়ে যা খুঁজে পেয়েছিলাম তা আসলে অন্য কিছু। কিন্তু তাতে উৎসাহে ভাটা পড়েনি একটুও। আমরা দুজনেই নিশ্চিত ছিলাম যে একটা কিছু উপায় হবেই। গরমের ছুটি বলে কথা।

পিন্টুই কথা বলে উঠল একসময়, ‘আচ্ছা, আমরা গোয়েন্দা হলে কেমন হয়?’
‘গোয়েন্দা?’ আমি অবাক হয়ে ঘুরে বসলাম।
‘হ্যাঁ, কেন নয়? পৃথিবীর সব দেশেই খুদে গোয়েন্দা আছে। তাদের কীর্তিকলাপের কথা কত জায়গায় লোকের মুখে মুখে ঘোরে।’
‘তাই নাকি? কই আমি তো জানি না-’
‘তুই জানিস না বলেই কি আর হয় না? আর বড় বড় গোয়েন্দাদের এসিটেন্ট ছোটরাই হয়।’
‘আচ্ছা, তা নয় হলাম। কিন্তু তারপর’
‘তারপর আমাদের রহস্যের অনুসন্ধান করতে হবে। বুদ্ধি খাটিয়ে চোর ধরতে হবে।’
আমি চোখ বড় বড় করে বললাম, ‘সে কি আমরা পারব?’
পিন্টু বুক ফুলিয়ে বলল, ‘কেন পারব না? নিশ্চয়ই পারব। একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমি অনেক গোয়েন্দা গল্প পড়েছি। আমাদের সব সময় চোখকান খোলা রাখতে হবে। চারিদিকে সব খুঁটিনাটি লক্ষ্য করতে হবে। আর একটা ক্লু পেলেই ব্যস – কেল্লাফতে’
‘ক্লু? সেটা আবার কি? ইস্ক্রুপ টিস্ক্রুপ নয় তো?’
‘দূর, তোর দ্বারা কিচ্ছু হবে না। কোন বড় রহস্যের সমাধান এক একটা ছোট্ট সূত্রের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। সাধারন মানুষের তা চোখে পড়েও পড়ে না। কিন্তু আমাদের তার মধ্যে থেকেই অপরাধীকে খুঁজে নিতে হবে।’

যেমন কথা তেমন কাজ। ফুটবল মাঠ ছেড়ে আমরা দুই খুদে গোয়েন্দা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আমি তখনও ঠিক ঠিক বুঝছি না আমরা কোন রহস্যের সমাধান করবো। পিন্টু আমাকে একমনে বুঝিয়ে চলেছে। আমাদের রহস্য খুঁজে নিতে হবে। একবার দু-একটা রহস্যের সমাধান করে ফেলতে পারলেই আর দেখতে হবে না। দিকে দিকে আমাদের নাম ছড়িয়ে পড়বে। আপাতত ঠিক হল পিন্টুই হবে প্রধান গোয়েন্দা, আর আমি ওর এসিস্টেন্ট। তবে আমাদের কাজ শুরু হয়ে যাবে আজ থেকেই।
বাড়িতে ঢোকার সময় ছোটকাকা ধরে বলল, ‘কিরে গরমের ছুটি পড়ে গেছে বলে কি পড়াশুনো শেষ হয়ে গেল নাকি? আয় তোকে একটু ইংরাজীটা দেখিয়ে দিই-’
আমি ছোটকাকাকে কিছু না বলে চুপিচুপি ঢুকে পড়লাম। পিন্টু বলেছে, গোয়েন্দাদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে সব সময়। এসব তো নেহাত ছোটখাট ব্যাপার।

হাত পা মুখ ধুয়ে একটু পড়তে বসলাম। না বসলে মা রাগ করবে। বাবাকেও বলে দিতে পারে। আর ওদিকে ইস্কুলে ছুটির কাজও দিয়েছে একগাদা। প্রত্যেক সাবজেক্টের জন্য হোমটাস্কের খাতা খুলে দেখতে শুরু করেছি কি কি দিয়েছে। তাড়াতাড়ি শেষ না করে ফেলতে পারলে ভাল করে গোয়েন্দাগিরি করা যাবে না।

পিন্টু বলে দিয়েছে সবদিকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। পড়ার ঘরে আমি একা একা বসে ভাবছিলাম কি লক্ষ্য করা যায়। কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় একটা রহস্য। অঙ্কের খাতাটা খুলে রেখেছি বটে, কিন্তু কাজ কিছুই এগোচ্ছে না। এমন সময় পাশের ঘর থেকে মার গলার আওয়াজ পেলাম। মা কাকীমার সঙ্গে কথা বলছে। অন্য সময় হলে শুনতাম না। কিন্তু আজকে বুকটা ধুকপুক করতে শুরু করল। কোথাও কিছু একটা চুরি হয়েছে মনে হচ্ছে।

পড়া মাথায় উঠল। আমি একলাফে হাজির হলাম মার কাছে। মা আর কাকিমা দুজনেই বসে ছিল সোফাতে। আমি চেঁচিয়ে উঠলাম, ‘মা, কি চুরি হয়েছে গো?’
মা চমকে বলল, ‘সে কি তোর পড়া হয়ে গেল?’
‘না হয়নি। আজই তো ছুটি পড়ল। আজকে না পড়লেও হবে। তুমি বলনা, আমাদের বাড়িতে চোর এসেছিল কিনা?’
‘আরে, হ্যাঁ। সেটাই তো বলছিলাম। তবে চোর এসেছিল কালকে রাতে। ঘুমোতে ঘুমোতে মনে হচ্ছিল কেন জানিনা একটু অস্বস্তি লাগছে। তারপর আজ সকালে দেখলাম অত সুন্দর দামী এমব্রয়ডারি করা বেডকভারটা নিয়ে পালিয়েছে। ওটা ছিল আমার ঘরেই সেলাই মেশিনটার ওপরে।’

কাকীমা এতক্ষন চুপ করেছিল। এবার বলে উঠল, ‘সিঁড়ির তলা থেকে তোমার কাকুর নতুন জুতোজোড়াও নিয়ে গেছে।’
আমি আরো খানিক শুনলাম। প্রথমে মনে হল কেবল চাদর আর জুতো? তারপর ভাবলাম শুরুটা না হয় ছোটখাট চুরি দিয়েই হোক। পরে বড় সুজোগ পাওয়া নিশ্চয়ই যাবে। এখনকার মত একটা রহস্য তো পাওয়া গেল। এইসব ভাবতে ভাবতে ছটফট করছিলাম। কিন্তু সেটা তো আর এক্ষুনি বলা যায় না মাকে বা কাকীমাকে। তাই সব শুনেটুনে ঘরে চলে এলাম।
এটা নিয়ে পিন্টুর সাথে এখনই আলোচনায় বসতে পারলে দারুন হত। কিন্তু এত রাতে বাড়ি থেকে বেরোনর উপায় নেই। একটা ফোন করা যেতে পারে ওদের বাড়িতে। কিন্তু ফোনটা তো আবার বাইরের ঘরে। সবাই শুনতে পেয়ে যাবে। পিন্টু বলে দিয়েছে, আমাদের কাজ করতে হবে সবার চোখের আড়ালে। কেউ যেন টেরটি না পায় আমরা চুপি চুপি গোয়েন্দা হয়ে গিয়েছি। আর তার ওপরে ছোটকাকার তো ভরসা নেই। কে জানে হয়তো সবার সামনে কান মুলে দিয়ে বলল, ‘যাও এসব ছিঁচকেমো না করে পড়তে বস।’

খেতে বসেও উসখুশ করছিলাম। বাবা একবার বলল, ‘কি রে কি হয়েছে তোর? শরীর-টরির খারাপ নাকি?’
আমি মাথা নেড়ে অল্প কিছু খেয়ে উঠে পড়লাম। ঠিক করলাম রাতে বিছানায় শুয়েও ঘুমোব না একেবারেই। খালি মনে হচ্ছিল এই যেন কেউ জানালার ফাঁক দিয়ে হাত গলাচ্ছে। উসখুশ করতে করতে একসময় ঘুমিয়েই পড়লাম কখন।

সকালে কোনরকমে জলখাবারটা খেয়েই ছুট দিলাম আমাদের গোপন আস্তানায়। সেটা আর কোথাও নয়, আমাদের পাড়ারই একটা শেষ না হওয়া বাড়িতে। বাড়িটার ছাত ঢালাই হওয়ার পর কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। কে জানে আবার কবে শুরু হবে। তবে যতদিন না হয় ততদিনই মঙ্গল। আমাদের এই আস্তানাটা খুব একটা জানাজানি হয়নি। গিয়ে দেখি পিন্টু ইতিমধ্যেই এসে হাজির হয়েছে। শুধু তাই ই না, একটা ছোট্ট নোটবুক নিয়ে কিসব যেন লেখালিখি করছে।

‘কিরে তুই কখন এলি?’
‘বেশ কিছুক্ষন। গোয়েন্দাদের ধৈর্য না ধরলে কিছু না।’
‘আরে শোননা, আমার কাছে একটা দারুন খবর আছে। আমি একটা রহস্য খুঁজে পেয়েছি জানিস।’
‘হুমম, ধীরে সুস্থে গুছিয়ে বল।’
‘আমাদের বাড়ি থেকে চুরি হয়ে গেছে। এর আগে কখনো আমাদের বাড়িতে চোর আসেনি’
‘হড়বড় করিসনি। কি চুরি হয়েছে?’
‘একটা নতুন বেডকভার আর ছোটকাকার একজোড়া জুতো।’
‘হুমম, বুঝেছি-’
‘কি বুঝলি রে?’
‘এটা পুরনো খবর’
‘পুরনো খবর মানে? বললেই হল?’ আমি একটু জেদ করে বললাম, ‘একশবার নতুন খবর। চুরিটা হয়েছে পরশু রাত্তিরে। মা আমাকে কালকে রাত্তিরে বলেছে।’
‘আরে তা বলি নি। তোদের বাড়িতে চুরি হয়েছ নতুন। কিন্তু পাড়ায় সব বাড়িতেই কিছু না কিছু চুরি হচ্ছে কয়েকদিন থেকে। বড় কিছু নয়, সবই ছোটখাট জিনিস। তাই কেউ পুলিশের কাছেও যেতে পারছে না।’
‘সে তুই কি করে জানলি?’
পিন্টু একটু মুচকি হাসি হেসে বলল, ‘সে অনেক কথা। গোয়েন্দা তো আর বললেই কেউ হয়ে যায় না। চারদিকে খোঁজ খবর রাখতে হয় কি হচ্ছে, কি না হচ্ছে। বুঝলি?’
আমি অবাক হলাম, ‘ও তাহলে এখন উপায়? তুই কি কিছু ভেবেছিস নাকি কি করবি?’
‘পাড়ার সবাই খুব সতর্ক হয়ে গেছে। ঠিক করছে রাতে কয়েকদিন পাহারাও দিতে পারে।’
‘সে তো বড়রা দেবে। আমাদের কি আর সেখানে নেবে?’
‘না, তা নেবে না। আমাদের নিজের মত করে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। দেখতে হবে কার ওপর সন্দেহটা বেশি হয়?’
‘ধুর, চোরকে কি আমরা চিনি নাকি যে সন্দেহ করব?’
পিন্টু এবার একটু বিরক্তই হল। ‘উফফ, তোকে যে আর কি কি শেখাব ভেবে পাচ্ছি না। মন দিয়ে শোন – গোয়েন্দাগিরির নিয়ম হচ্ছে সন্দেহ করতে হবে সকলকেই। কাউকে বাদ দিলে চলবে না। অনেক ছোটখাট ঘটনার মধ্যেই ক্লুটা লুকিয়ে থাকতে পারে।’
আমার ব্যাপারটা ঠিক মনে ধরল না। তাও পিন্টু রাগ করতে পারে ভেবে আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না।

আমাদের বিকেলের ফুটবল খেলা মাটি হল।
আজ দুপুরেই আমাদের সামনের বাড়িটা থেকে একটা সাইকেল চুরি গেছে। এরকম অবস্থায় আমাদের তো আর বসে থাকা চলে না। আমরা আবার রওনা দিলাম আমাদের আস্তানার দিকে। পিন্টুটা দেখি কানের কোনে একটা পেন্সিল গুঁজে রেখেছে। কেন কে জানে, হয়তো মাঝে মাঝে ওর ছোট্ট নোটবইতে কিছু লিখবে বলে। কিন্তু এই মুহুর্তে ওকে ছুতোর মিস্তিরির মত দেখাচ্ছে ঠিক। আমি ওর পদ্ধতির সাথে ঠিক একমত হতে পারছি না। কিন্তু একা একাও কিছু করতে পারব না ভেবে চুপচাপ দেখে যাচ্ছি।
ও আমাদের আস্তানায় পৌঁছেও কিছু করল না। চুপচাপ একটা জানলার বক্সে সিমেন্টের স্ল্যাবটার ওপরে উঠে বসে বলল, ‘আমাকে আরকটু ভাবতে দে।’

আমি পায়চারি করতে করতে ভাবছিলাম যে চুরি করছে সে কি আর আমাদের পাড়ার কোন লোক হবে? তাহলে তো সে আগেও চুরি করত বা এতদিনে ধরা পড়ে যেত। আর যে চুরি করে তাকে চুরি করা জিনিস কোথাও তো নিশ্চয়ই লুকিয়ে রাখতে হয়। হয়তো নিজেকেও কোথাও না কোথাও লুকিয়ে থাকতে হতে পারে। এমন সময় ধড়মড় করে একটা আওয়াজ পেলাম। চমকে ওঠার সাথে সাথে কেন জানি না খুব ভয়ও পেয়ে গেলাম। এই সব মুহুর্তে পিন্টুকে আমার খুব দরকার। ও খাতা নামিয়ে রেখে বলল, ‘টুবলু, ভয় পাসনি। নে হাত ধর।’ এইভাবে আমরা পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম বাড়িটার পিছনের দিকে। এখানে আমরা বড় একটা আসি না। সিঁড়ির তলায় একটু অন্ধকার ঘুপচি মত, আর তার ওপাশে সেপটিক ট্যাঙ্ক। আমরা একটু করে এগিয়ে দেখলাম একটা লোক, জড়সড় হয়ে।

পিন্টুই সাহস করে বলল, ‘কে তুমি? এখানে কি করছ?’
লোকটা খনখন করে মাথা নীচু করে বলল, ‘আমি চোর বাবু। আমি একটু ঘুমিয়েছিলাম এইখেনে। তোমাদের গলার শব্দে জেগে গিয়ে পালাচ্ছিলাম-’

পিন্টুর সাথে থেকে আমারও সাহসে বুক ফুলে উঠছিল। তাছাড়া লোকটা আমাদের মত দুজন ক্ষুদে গোয়েন্দাকে দেখে ভয় পাচ্ছে দেখে আরো যেন সাহস বেড়ে উঠল। বললাম, ‘পালানো বের করছি তোমার। তোমাকে আমরা পুলিশে দেব।’
লোকটা কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, ‘বাবু, তোমরা কাউকে বলে দিওনি। ওরা আমাকে পুলিশে দিবেনি। পিটাইয়ে মেরে ফেলবে-’
পিন্টু বলল, ‘এত ভয় তো চুরি কর কেন?’

‘পেটের দায়ে বাবু। ফ্যাকটিরিতে কাজ করতাম আগে। সে কাজ বন্ধ হয়ে গেল। তারপর ছিলাম এক সেলাইয়ের দোকানে। হপ্তাখানিক আগে সেখান থেকেও তাড়ায়ে দিল-’
‘তাই বলে চুরি করবে?’
‘আর করবুনি বাবু। চুরি আমি কোনদিন করিনি। কি নিয়েচিই বল তোমরা বাবু। এর বাড়ি থেকে চাদর, ওর বাড়ি থেকে বাসন।’
‘কেন আর আজকের সাইকেলটা?’
‘ও সাইকেল নিয়ে পালাচ্ছিলাম তখন একটা কুকুর তাড়া করল বলে পুকুরের পাশে কচুবনে ফেলে এইচি। চুরির জিনিস কি করব তাই ই জানিনে বাবু। দু একটা জিনিস এই বাড়ি পড়ে রইচে। চুরি আর করবুনি। কিন্তু তুমি ধরিয়ে দিলে ওরা খুব মারবে আমায়-’

সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরীই হল আমার। কালকে প্রথম বাড়িতে না বলে আমরা এত বড় একটা কাজ করেছি। কিন্তু কালকে চোরটার কথা শুনে খুব মায়া লাগছিল।

ওকে পুলিশে দেব কি? ওই চেহারায় কি আর মার খাওয়ার জন্য আর কিছু বাকী আছে? আমি আর পিন্টু একবার চোখ চাওয়া চাওয়ি করে নিলাম। আগেও দেখেছি আমাদের যতই ঝগড়া বা কথা কাটাকাটি হোক না কেন, দরকারের সময় আমরা খুব সহজেই একজন আরেকজনের মনের কথা খুব বুঝে নিতে পারি। ঠিক করলাম লোকটা যখন বলছেই চুরি আর করবে না তখন মনে হল ওর পালানর ব্যবস্থা করতে হবে আর এই ঘটনাটা বড়দের কাউকে জানান হবে না।

তবে তার আগে কিছু খাবার জোগাড় করতে হবে। ও নাকি দুওদিন কিছু খায়নি। তবে বেশিক্ষন সময় আমাদের লাগল না। বাদামভাজা ছিল আমার পকেটে। পিন্টুদের বাড়িটাও কাছেই। ও নিয়ে এল খাওয়ার জল আর একটু চকলেট। সেইসঙ্গে আমাদের জমান টাকার ফান্ড থেকে লোকটাকে কুড়িটা টাকা দিয়ে বলল, ‘অনেক চুরি করেছ। এইবেলা চুপি চুপি বিদেয় হও।’
আর আমি বললাম, ‘এক মিনিট। চুরির জিনিসগুলো এখানেই রেখে যাও।’

বিছানায় শুয়েই শুনতে পেলাম বেশ হইচই হচ্ছে বাড়িতে। হওয়ারই কথা। আমাদের কাজের পিসি বাড়ির পাঁচিলের পাশে খুঁজে পেয়েছে মার বেডকভার আর কাকার জুতোটাও। অন্যান্য হারান জিনিসও এক এক করে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে এখান ওখান থেকে। সাইকেলটা তো আমরা উদ্ধার করেছিলাম কালকেই।

ঘুম ভেঙে গেলেও আমার উঠতে ইচ্ছে করল না। পৃথিবীর সেরা ডিটেকটিভদেরও একটু বিশ্রামের প্রয়োজন। শুয়ে শুয়ে দেখলাম জানলার ফাঁক দিয়ে রোদের ঝিকিমিকি এসে পড়ছে জানলার কোনে। বড় সুন্দর এই সকালটা।

গল্পের বিষয়:
রহস্য
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত