আরব্য গল্প-উপন্যাসে অশরীরী কিংবা জিনের ছড়াছড়ি রয়েছে। বহু সত্য-মিথ্যার মিশেলে রচিত এসব গল্পে এখনো অনেকে শিউরে ওঠেন। তেমনি অভিশপ্ত ঘটনার সাক্ষী ওমানের বাহলা শহর। রাজধানী থেকে মাত্র ২০০ কি.মি. দূরত্বের শহরটিকে আরবিয়রা অভিশপ্ত নগরী বলে। জানবেই না কেন! আরব উপদ্বীপের এ মরুভূমির মরূদ্যানে নিকৃষ্টতম কাজ হরহামেশাই চলে। শহরটিকে অশরীরী, দুষ্ট আত্মা বা জিনের বাসস্থান বলা হয়। এর পেছনের ইতিহাস আরও ভয়ঙ্কর। আগে শহরটিতে মুসলিম চেহারার আদলে খারিজি সম্প্রদায়রা বসবাস করত। প্রকৃত অর্থে এরা কালোজাদুর বিদ্যা চর্চা করত।
ইসলাম ধর্মে কালোজাদু বিদ্যা ও ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্পূর্ণ হারাম। কিন্তু খারিজিরা এ নিষেধ অমান্য করত এবং বাহলা দুর্গটি ছিল তাদের মূল কেন্দ্র। তারা কালোজাদুতে এতটাই পারদর্শী ছিল যে, কোনো বাহন ছাড়াই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যেতে পারত। মুসলমানদের ওপর তারা বিভিন্ন অত্যাচার করত। তাদের মূল দাবি ছিল সব মুসলিম তাদের অনুসরণ করবে। এতে করে যদি তাদের মৃত্যুও হয় হোক। ইতিহাসে খারিজিরাই প্রথম সন্ত্রাসী যারা জিহাদের নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করত। বাহলার কালোজাদু নিয়ে বহু কল্পকথা রয়েছে। খারিজিরা পেশাদার জ্যোতিষী দিয়ে ভবিষ্যৎ গণনা করত। স্থানীয় অনেকেই প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিসের স্বীকার। কথিত আছে যে, এখানে অশরীরী আত্মারা এক রাতে শহরের বিশাল দেয়াল তৈরি করেছিল। অনেকটা মধ্যপ্রাচ্যের ‘সালেমের গ্রামে’র মতো ঘটনা। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, ওমানের মতো ইসলামী রাষ্ট্রে বাহলা এখনো টিকে আছে কি করে! বাহলা এখনো কালোজাদুর অভিশাপে জর্জরিত। এখনো এখানে প্রতিটি পদক্ষেপ সাবধানে ফেলতে হয়। কারণ, এসব অশরীরী কখন যে কার দুর্ভাগ্যের কারণ হয় বলা মুশকিল।