‘আল জাজিরাহ আল হামরা’, উত্তর আরব আমিরাতের পরিত্যক্ত গ্রাম। আরবরা এর নাম দেয় লাল দ্বীপ। ১৪০০ শতাব্দীতে গ্রামটির উদ্ভব। ১৮৩১ সালে এর পুনঃনির্মাণও হয়। ব্রিটিশ তথ্য অনুযায়ী ৩০০-এর বেশি ঘর ও ১৩টি মসজিদ নিয়ে ৪১০০ লোক বসবাস করত। ‘রাস আল খাইমাহ’ শহরের দক্ষিণের গ্রামটি এক সময় বণিকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল। খুব বেশিদিন আগের নয়, ১৯৬০ সালে গ্রামটি বেশ সমৃদ্ধশালী ছিল। তখনো বিলাসী বাড়িঘর ছিল এখানে। উপকূলীয় গ্রামটিতে তখন ফার্সি অভিবাসী, পর্তুগিজ ব্যবসায়ী এবং ব্রিটিশ কর্মকর্তারা দাপিয়ে বেড়াত। কারণ, এখানকার স্থানীয়রা মাছ এবং মুক্তার ব্যবসা করত। কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। ১৯৬৮ সালের পর হঠাৎ করেই মানুষশূন্য হতে থাকে। যারা থেকে যায় তারাও খুব ভয়ে দিন কাটায়। কারণ, এখানে অশরীরী আত্মার আনাগোনা বেশি। নানা রকম প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিস ঘটে। হয়তো এ কারণেই গ্রামটি শহর থেকে বিচ্ছিন্ন। একবার স্থানীয় চলচ্চিত্রনির্মাতা ফয়সাল হাশমি কিছু বন্ধুকে নিয়ে গ্রামটিতে একটি রাত কাটাতে আসেন। তাদের সঙ্গে ঘটতে থাকে নানা ভৌতিক কর্মকাণ্ড।
বোঝার বাকি রইল না যে গ্রামটি ভয়ঙ্কর এবং অভিশপ্ত। সে রাতেই তারা গ্রাম ছাড়ে। আরেকবার কিছু পর্যটক ঘুরতে আসে। তারা প্রাচীন দুর্গের ছবি তুলতে গেলে তাদের সঙ্গেও ঘটতে থাকে অস্বাভাবিক ঘটনা। স্থানীয়দের ধারণা এখানে অভিশপ্ত আত্মা রয়েছে। তারা প্রায়ই বিচিত্র হাতের ছাপ দেখতে পান। তাদের ধারণা এটি আগত দর্শনার্থীদের জন্য সতর্ক সংকেত। ‘আল জাজিরা আল হামরা’ প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিসের জন্য জনপ্রিয়। অনেকে দুঃসাহসিকতা দেখাতে বেড়াতে আসেন। যদিও স্থানীয়রা তাদের বরাবরের মতোই নিরুৎসাহিত করে। তারা সতর্ক করে দেন যে, এখানে দুষ্ট জিনের উপদ্রব বেশি। বিজ্ঞানের যুগে এসবের ব্যাখ্যা চলে না। তবুও নিত্যনতুন ভৌতিক রহস্য আর নিঃস্ব হওয়া গ্রামটিকে কি অস্বীকার করা যায়?