খেলার মাঠে সন্তুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল রাত্রে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়লে আমরা আম কুড়োতে যাব।
সন্তু আমার বাড়ির পাশেই থাকত। ঠিক এগারোটায় ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে ও এসে হাজির হল। বাড়ির বাইরের দিকে পড়ার ঘরে ওর জন্য অপেক্ষা করছিলাম আমি। বাবা, দাদা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছেন। ভেতর থেকে কারোর গলার আওয়াজ পাচ্ছিলাম না। শুতে যাবার আগে মা দেখে গেছেন আমি পড়ছি। গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল খুললে প্রি-টেস্ট পরীক্ষা। সেজন্য মা কয়েকদিন আগে পড়ার ঘরেই আমার শোবার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, পড়তে পড়তে ঘুম পেলে আমি যাতে ওখানেই শুতে পারি। আমি যথেষ্ট বড় হয়েছি। একলা শুতে আজকাল আর ভয় করে না।
সন্তু এসে ডাকতেই আমি চুপিচুপি পড়ার ঘরে তালা দিয়ে বেরিয়ে এলাম। আম কুড়োতে যাবার কথা বাড়ির কাউকে বলিনি। বললে এত রাত্রে কেউ আমাদের যেতে দিতেন না। ছোটবেলায় ক্লাস থ্রি-ফোরে পড়ার সময় বন্ধুরা মিলে প্রায় রোজই বিকেলবেলা আমবাগানে যেতাম। কুড়িয়ে পাওয়া আম খাবার লোভ উঁচু ক্লাসে ওঠার পর চলে গেছে। সেদিন খেলার মাঠে অনেকদিন পর পুরনো ইচ্ছেটা কেন জানি হঠাৎ আমার আর সন্তুর মধ্যে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল!
সেসময় আমরা মালদা জেলার মানিকচকে থাকতাম। মানিকচক’কে ঠিক শহর বলা যায় না। গঞ্জের মতো ছিল জায়গাটা। এমনিতেই মালদার আমের যথেষ্ট নামডাক আছে। মানিকচকের আমবাগান আবার জেলাবিখ্যাত। তবে আমাদের নিজস্ব কোনো আমবাগান ছিল না। ঠাকুর্দা মারা যাবার আগে ভিটেবাড়িটা ছাড়া আর সব জমিজমা বিক্রি করে ফেলেছিলেন পিসিদের বিয়ে দিতে গিয়ে। ধানচালের ব্যবসা করে বাবা সংসার চালাতেন। আমরা বাজার থেকে আম কিনে খেতাম। এ ছাড়া চুরি করে, কুড়িয়ে খাওয়া-টাওয়া তো ছিলই।
বিকেলে অল্পস্বল্প ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় আকাশ পরিষ্কার ছিল। সন্তু আর আমি বাইরে বেরিয়ে দেখি চারপাশে জ্যোৎস্নার ঢল নেমেছে। আমাদের বাড়ি থেকে আমবাগানগুলি বেশ খানিকটা দূরে। লোকালয় ছাড়িয়ে যেতে হবে। সেজন্য দুই বন্ধু মিলে তাড়াতাড়ি পা চালালাম। বাড়ির লোকেরা টের পাবার আগেই ফিরে আসতে হবে।
নিস্তব্ধ রাত। পাতলা বাতাসে ভিজে মাটির সোঁদা গন্ধ। দিনের গরমভাব এখন নেই। পরিষ্কার জ্যোৎস্নার আলোয় মেঠো রাস্তা ধরে হেঁটে যেতে আমার ভালোই লাগছিল।
পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে সন্তু জিজ্ঞেস করল, “কি রে বাবলা, ব্যাগ এনেছিস তো?”
“…এনেছি। পকেটে আছে”, নিচু গলায় বললাম আমি।
মিনিট দশেক হাঁটার পর পালেদের আমবাগানে আমরা প্রথম ঢুকলাম। বাগানটা খুব বড় না হলেও পুরনো। আমও ধরেছে অনেক। গাছের ওপর ছড়িয়ে পড়া জ্যোৎস্নায় আমগুলো ধূসর দেখাচ্ছিল। বেশ বড় বড় ফজলি আম ঝুলে আছে থোকায় থোকায়।
কিন্তু গাছতলায় খুঁজে পেতে একটা আমও পেলাম না দুজনে। আশ্চর্য ব্যাপার! বিকেলে ঝড় হল, অথচ একটা আমও বাগানে পড়ে নেই! এর মধ্যেই কারা যেন সব কুড়িয়ে নিয়েছে! এদিককার আমবাগানে পাহারাদার বা মালি রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। ঢিল ছুঁড়ে বা চুরি করে কেউ আম খায় না। লোকে গাছতলায় কুড়িয়ে যা পায় তা-ই যথেষ্ট। কুড়িয়ে পাওয়া আম নিলে বাগানের মালিকও কিছু বলে না।
প্রথম বাগানে আম না পাওয়ায় আমাদের মন খারাপ হয়ে গেল। এরপর দুই বন্ধু ঢুকলাম পাশের বাগানে। বাগানটা এক মাড়োয়াড়ির। আমরা নাম জানতাম না। এই বাগানের গাছগুলি বেশ ঝাঁকড়া আর ঘন করে লাগানো। ফলে আগের বাগানের মতো গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে জ্যোৎস্নার আলো বাগানে বিশেষ ঢুকছিল না। তাহলেও যা ঢুকছিল তাতে গাছতলার মাটি দেখতে পাচ্ছিলাম কোনোমতে। কিন্তু আমি আর সন্তু পরস্পরের মুখ দেখতে পাচ্ছিলাম না ভালো করে।
এ বাগানেও যখন একটা আমও কুড়িয়ে পেলাম না, খুব হতাশ হয়ে পড়লাম আমি। ঝড়ে পড়া আম সব কারা কুড়িয়ে নিল? সেই ছোটবেলা থেকে আম কুড়োচ্ছি, এরকম অভিজ্ঞতা হয়নি কখনো। হঠাৎ খেয়াল করলাম, আম খুঁজতে খুঁজতে আমি আর সন্তু আলাদা হয়ে গেছি। আধো-অন্ধকারে সন্তুকে ধারেকাছেও দেখা যাচ্ছে না আমার সঙ্গে টর্চ নেই। বাড়ি থেকে আনতে ভুলে গেছি।
সন্তুকে খুঁজে পাওয়ার জন্য আমি বাগানের মধ্যে অস্থিরভাবে ঘুরতে শুরু করলাম। নিস্তব্ধ রাত্রি। মাঝেমাঝে টুপটাপ শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ শুনতে পাচ্ছি না। ওগুলো পাতা ঝরার শব্দ। গাছ থেকে আম পড়লে ওরকম শব্দ হয় না। কারুর পায়ের শব্দও ওরকম নয়। তাহলে সন্তু গেল কোথায়? আম কুড়োনোর কথা আমার মাথায় উঠল। এক অজানা ভয়ে শিউরে উঠল আমার হাত-পা।
একা-একা সেই অন্ধকার বাগানের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমি ডাকতে লাগলাম, “সন্তু! এই সন্তু! তুই কোথায়?” কেউ সাড়া দিল না। তার বদলে একটা রাতজাগা পাখি মানুষের গলার আওয়াজ পেয়ে বিকট স্বরে ডেকে উঠল। আচমকা পাখির বিকট ডাক শুনে ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। গায়ের রোম সব খাড়া হয়ে গেছে। আমি এখন কি করব?
এমন সময় পাশ থেকে কে যেন খুব আস্তে আমার নাম ধরে ডাকল। গলার স্বর শুনেই বুঝলাম সন্তু, অথচ বুঝতে পারলাম না কখন ও পাশে এসে দাঁড়াল। চোখ খুলে ওর দিকে ঘুরে বললাম, “কি রে, তুই কোথায় চলে গিয়েছিলি? ”
“….আমি তো তোর পাশেই ছিলাম”, উত্তর দিল সন্তু।
“….তাহলে আমি তোকে দেখতে পাচ্ছিলাম না কেন?”
“….অন্ধকারে ওরকম হয়”।
সন্তু আমার পাশে এসে দাঁড়ালেও ওর মুখটা ভাল দেখতে পাচ্ছিলাম না। তবে ওকে কাছে পাওয়ায় আমার ভয়টা কমতে শুরু করল।
আমি বললাম, “সন্তু, একটা আমও পাচ্ছি না আজ। কপাল খারাপ। চল বাড়ি ফিরে যাই”।
আমার কথায় গুরুত্ব দিল না সন্তু। বলল, “ফিরে যাব কি! তার চেয়ে চল – আমরা গড়পারের আমবাগানে যাই। এদিককার বাগানের আম ধারেকাছের লোকজন কুড়িয়ে নিয়ে গেছে। অতদূরে কেউ আম কুড়োতে যায় না। ওখানে গেলে নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে”।
সন্তুর কথা শুনে আমি একটু অবাক হলাম। ওর বুদ্ধিশুদ্ধি কি সব লোপ পেয়ে গেছে? গড়পারের আমবাগান এখান থেকে অন্তত মাইল দুয়েক দূর হবে। নদীর সরু বাঁধের ওপর দিয়ে হাঁটতে হবে একটানা। দিনের বেলা হলে না হয় কথা ছিল। এই নিশুতি রাতে ওখানে কেউ যায় বলে আমি শুনিনি। ধারেকাছেও মানুষের বাড়িঘর নেই।
বাগানের মধ্যে এতক্ষণ ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। খানিক আগে পাখির চিৎকার শুনে আচমকা ভয় পাওয়ায় সেই ক্লান্তি এখন শরীরে জেঁকে বসেছে। রাত কত হয়েছে জানি না! একবার ভাবলাম গড়পারের আমবাগানে যাব না! ফিরতে দেরী হলে বাড়ির লোক জেনে যেতে পারে। তখন আম কুড়নো বরাবরের জন্য ঘুচে যাবে। আবার ভাবলাম, এত কষ্ট করার পরেও একটা আম নিয়ে বাড়ি ফিরব না? পকেটের ব্যাগ পকেটেই থেকে যাবে? সাতপাঁচ ভেবে শেষপর্যন্ত সন্তুর কথায় রাজি হয়ে গেলাম। ওকে বললাম, “সন্তু, গড়পারের বাগানে যেতে পারি কিন্তু তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে”।
“….নিশ্চয়ই”, একটু মুচকি হেসে সম্মতি জানাল সন্তু। অন্ধকারে ওর মুখের হাসি দেখতে না পেলেও গলার স্বর শুনে তা বুঝলাম। আমি খুব ভয় পেয়ে গেছি ভেবে বোধহয় ওর এই হাসি।
নদীর বাঁধের ওপর দিয়ে আমরা দুজনে হাঁটছি। হাঁটছি তো হাঁটছিই! বাঁধটা সরু হওয়ায় দুজনের পাশাপাশি হাঁটা সম্ভব হচ্ছিল না। সেজন্য সন্তু আগে আগে যাচ্ছিল, আমি পেছনে। তাড়া থাকায় সন্তু এবার এত জোরে হাঁটতে শুরু করেছে যে আমি কিছুতেই ওর সঙ্গে তাল রাখতে পারছিলাম না। পেছন থেকে মনে হচ্ছিল ও যেন উড়ে যাচ্ছে!
নদীর চড়া, জলের মৃদু স্রোত, চারপাশের গাছপালা, পাটক্ষেত, দূরের আমবাগান, সামনে সন্তু – জ্যোৎস্নার আলোয় চারপাশের সবকিছু আবছা দেখালেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। আমার মনে হল নদীর ধারে জ্যোৎস্না লোকালয় থেকে আরো বেশী উজ্জ্বল হয়। হাঁটতে হাঁটতে আমরা বাঁধের পাশে মাঝিদের কুঁড়েঘর পার হয়ে গেলাম। সন্তু আগে থাকায় আমাদের কথাবার্তা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দুজনেই চেষ্টা করছিলাম গড়পারের আমবাগানে কত তাড়াতাড়ি পৌঁছনো যায়।
তাড়াতাড়ি হাঁটতে আমার বেশ কষ্ট হচ্ছিল। মাঝে মাঝেই সরু বাঁধের ওপর পা ঠিকমতো পড়ছিল না। হড়কে যাচ্ছিল। দু-একবার হোঁচট খেতে খেতে বেঁচে গেলাম। বাঁধের ওপর আবার গরমের দিনে সাপের খুব ভয়। না দেখে শুনে একবার পা ফেললে আর নিস্তার নেই। অথচ সন্তুর হাঁটা দেখে মনে হচ্ছিল ও এসবের যেন কোনো পরোয়া করছে না।
কতক্ষণ এভাবে একটানা হেঁটেছি মনে পড়ছে না। হঠাৎ কে যেন পেছন থেকে ছুটে এসে আমায় জাপটে ধরল! আমি ছটফট করে নিজেকে ছাড়াতে প্রাণপণ চেষ্টা করলাম। পারলাম না। আমার ছটফটানি থামাতে সে পেছন থেকেই আমার গালে প্রচণ্ড জোরে একটা চড় মারল। চড় খেয়ে আমি নিস্তেজ হয়ে পড়লাম। কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি উদাস মিঞা আমাকে ধরে রেখেছে। উদাস মিঞা আমাদের খুব পরিচিত মাঝি। চোখাচোখি হতেই ও বাজখাঁই গলায় জিজ্ঞেস করল, “কেউ কোথাও নেই, এই নিশুতি রাতে একা একা তুমি কোথায় যাচ্ছিলে? মরার সাধ হয়েছে তোমার?”
আমি বললাম, “মরতে যাব কেন? আমি আর সন্তু গড়ের বাগানে আম কুড়োতে যাচ্ছিলাম”। ধরা গলায় উদাস মিঞার জেরার উত্তরে বললাম আমি।
“….কোথায় সন্তু? আমি তো কাউকেই দেখছি না তোমার সঙ্গে?” উদাসের গলার স্বর আবার কাঁপিয়ে তুলল রাত্রির নিস্তব্ধতাকে।
সামনের দিকে হাত দেখিয়ে বললাম, “ওই তো! আগে হেঁটে যাচ্ছে!”
আমার আর উদাসের কথাবার্তা শুনে সন্তু দাঁড়িয়ে পড়েছিল। হাত তুলে ওকে দেখাতেই ও পেছন ফিরে তাকাল।
এদিকে চড় খেয়ে উদাসের হাতের বাঁধনের মধ্যেই আমি তখন থরথর করে কাঁপছি।
সন্তু পেছন ফিরে তাকাতেই ওর মুখের চেহারা দেখে, আমার বুকের রক্ত হিম হয়ে গেল। ও কি রকম মুখের চেহারা সন্তু’র? সন্তুর অত সুন্দর মুখটাকে এক নিমেষে কে এরকম হিংস্র করে দিল? গলার স্বরটাও এত ভয়ঙ্কর কি করে হয়ে গেল? ওরকম গলার স্বর কোনো মানুষের হতে পারে না। এই সন্তুকে আমি চিনি না। এই সন্তুকে আমি দেখিনি কোনোদিন।
কিন্তু ও আমাকে চেনে। জিজ্ঞেস করল, “কি রে বাবলা? আম কুড়োতে আর যাবি না?”
উত্তর দেবার মতো অবস্থায় তখন আর আমি নেই। উদাস মিঞার চড় খাবার পরেও শরীরে যা জোর ছিল, সন্তুর বীভৎস মুখ আর ভয়ঙ্কর গলার স্বর শুনে তাও হারিয়ে গেছে। গলা বুক শুকিয়ে কাঠ। ঠোঁটদুটোতেও কোনো সাড় খুঁজে পাচ্ছি না।
আমি কিছু বলছি না দেখে ও আবার বলল, “যা…! এ যাত্রায় খুব বেঁচে গেলি!”
কথা শেষ হতে না হতেই আমার চোখের সামনে সন্তুর চেহারাটা যেন ভোজবাজির মতো হঠাৎ মিলিয়ে গেল। আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
জ্ঞান ফিরতে দেখি মায়ের বিছানায় শুয়ে আছি। আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে মা, বাবা, দাদা, উদাস মিঞা আর সবার সামনে সন্তু।
সন্তুকে সবার সঙ্গে দেখতে পেয়ে আমি কিরকম বোকা হয়ে গেলাম। ওর ওই বীভৎস মুখ আর ভয়ঙ্কর কণ্ঠস্বর আমার আবার মনে পড়ে গেল।
বিছানার ওপর ধড়মড় করে উঠে বসে ভয়ার্ত গলায় বললাম, “সন্তু! তুই এখানে?”
সন্তু কিছু বলল না। আমার সব কথা শুনে বাবা এক পা সামনে এগিয়ে এসে বললেন, “সন্তু বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। ও তো আম কুড়োতে যায়নি”। তারপর শান্ত গলায় আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুই কার সঙ্গে আম কুড়োতে যাচ্ছিলি, বাবলা?”
কার সঙ্গে আবার? সন্তুর সঙ্গে। মনে মনে উত্তর দিলাম আমি।
কিন্তু বাবা বলছেন, সন্তু গত রাতে বাড়ি থেকেই বেরোয় নি। ও বাড়িতেই ঘুমিয়ে ছিল। তাছাড়া উদাস মিঞাও আমার সঙ্গে সন্তুকে দেখতে পায়নি। তাহলে কে আমার সঙ্গে আম কুড়োতে গিয়েছিল? উদাস মিঞা আমাকে ধরে না ফেললে সে আমাকে কোথায় নিয়ে যেত? কোন বাগানে আজ আম কুড়োতাম আমি?
অনেক চিন্তা করেও সেই মূহুর্তে আমি এই প্রশ্নগুলোর কোনো উত্তর খুঁজে পেলাম না।
……………………………………………………..( সমাপ্ত)………………………………………………….
গল্পের বিষয়:
রহস্য