বি কম পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে l রেজাল্ট বেরোবার আশায় বসে আছি l হাতে কিছু ফাঁকা সময় l বন্ধু বান্ধব নিয়ে প্রায় , পিকনিক , সিনেমা যাওয়া , খেলাধুলা লেগেই আছে l
সেদিন রাত্রে বাড়িতে খেতে বসেছি , অর্ধেক খাওয়া হয়েছে l এই সময় দরজার কলিং বেলটা বাজলো l বাবা ব্যাজার মুখে ঘড়ির দিকে চাইলো l রাত দশটা বাজে l শীতের রাত…এই সময়ে আবার কে ? আমি উঠে সদর দরজাটা খুলতেই দেখি — কলেজের বন্ধু সুমিত দাঁড়িয়ে l
ওর বিদ্ধস্থ চেহারা দেখে মনে সন্দেহ দেখা দিলো l মানকুণ্ডু থেকে এই রাতে এতখানি পথ এসেছে l নিশ্চয়ই কিছু অঘটন ঘটেছে ! বাবার ব্যাজার মুখটা দেখে এসেছি l মিনমিন করে বললাম ” কি ব্যাপার ? কি হয়েছে ? ”
ওর অসহায়ের কণ্ঠ ” তোর একটু সাহায্য চাই ” l বাধ্য হয়ে বলি ,
” ভেতরে আয় ” যতই বাবা রাগ করুক , শীতের রাতে বন্ধুকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা ঠিক নয় l যতদূর সম্ভব মনে হয় , কোন বিপদে পড়েছে l
” না না ভেতরে গিয়ে বসার মতো হাতে সময় নেই l একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে l তুই আমার সঙ্গে , একটু চুঁচুড়া হাসপাতালে যাবি ? আমার তেমন জানাশোনা নেই l ”
” তুই খাপছাড়া কথা বললে কিছু বুঝতে পারবো না l কার দুর্ঘটনা ? কোথায় দুর্ঘটনা ? একটু খুলে বল ” l
” তুই রেডি হয়ে আয়, যেতে যেতে সব বলছি ” বুঝলাম , ও দেরী করতে চাইছে না l
” ঠিক আছে , আমি আসছি l একটু দাঁড়া ” l ভেতরে ঢুকে এলাম l বাবা মা দুজনেই ভেতর থেকে সব শুনেছে l মা বললো ” তুই অর্ধেক খাবার ফেলে চলে যাবি ? ”
” শুনলে তো , মনে হয় ওরই কারো কিছু হয়েছে l তোমরা খেয়ে নিয়ে শুয়ে পড়ো ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে যাচ্ছি …l ”
বাবা এবার মুখ খুললো ” আমি জেগে আছি l তুই যা , ওখান থেকে বরং ফোন করিস l আর কিছু টাকা পয়সা সঙ্গে নিয়ে যা ” ইস , আমি ভাবছিলাম বাবা রেগে গেছে ? বাবা হাজার টাকা হাতে দিলো l তবুও আমি ডুপ্লিকেট চাবিটা নিলাম l কেননা এখনই দশটা বেজে গেছে lবাবার স্কুটারটা নিয়ে সুমিতকে তুলে নিলাম l অন্ধকার রাস্তা চিরে চললাম …হাসপাতালের দিকে l গাড়িতে কোন কথা বলে লাভ নেই , হেলমেটের জন্যে শুনতেও পাবো না l
মিনিট দশেকের মধ্যেই হাসপাতাল চত্বরে স্কুটার দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লাম ” এবার বল , কার কি দুর্ঘটনা হয়েছে ? ” আমার গায়ে জ্যাকেট থাকা সত্ত্বেও শীত লাগছে ..l আর সুমিতের শরীরে একটা হাফ হাতা সোয়েটার ..l এখন দেখলাম অল্প কাঁপছে l তার মানে তাড়াহুড়োয় বেরিয়ে এসেছে l
ওর মুখে চিন্তার ছাপ l দু বার ঢোঁক গিলে বললো , ” “কাল সকালে মাকে নিয়ে , দাদা বৌদি বোলপুর গেছিলো গাড়ি নিয়ে l আমি একা ছিলাম বাড়িতে l আজকেই বিকেলে ফেরার কথা..” l করুণ চোখে তাকালো আমার দিকে l আমি জানি ওর বাবা নেই l মা ছোটবেলা থেকে ওদের দুইভাইকে মানুষ করেছে অনেক কষ্টে l ওর দাদা কোল ইন্ডিয়াতে ভালো চাকরি করে l গত বছর বিয়ে করেছে , আমরা সেই বিয়েতে খেয়েও এসেছি l ওর মুখে কিছুদিন আগে শুনেছি , দাদা গাড়ি কিনেছে l ওদের এখন মোটামুটি সুখের সংসার l
” তারপর ? ” জানিনা এর কি বলবে ?
” কিছুক্ষন আগে , বর্ধমান থানা থেকে ফোন করেছিল — ওদের গাড়ি একসিডেন্ট করেছে l একজনের আঘাত গুরুতর l বোধহয় দাদার মোবাইল থেকে আমার নম্বর পেয়ে ফোন করেছিল “l আমার মনে উৎকণ্ঠা l ” পুলিশই উদ্যোগ নিয়ে ওদের চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে আসছে l আমরা যেন হাসপাতালে অপেক্ষা করি l গাড়িটার অবস্থাও নাকি খুব খারাপ l ওটা বর্ধমান থানায় রাখা আছে …l” মনে হচ্ছে ও কেঁদে ফেলবে l. আমার মনেও দুশ্চিন্তার মেঘ জমলো l পুলিশের মুখে সুমিত শুনেছে, ওদের কারো সঙ্গে সরাসরি কথা হয় নি l এখানেই খটকা l কি অবস্থায় আছে ওরা ? ওর দাদা ড্রাইভ করছিলো , কেননা সামনা সামনি একসিডেন্ট হলে…সামনের সিটে যারা থাকবে , তাদেরই বেশি আঘাত লাগার সম্ভাবনা l আর পিছু দিক থেকে কোন গাড়ি মারলে ….l এখন সবই কল্পনা করতে হচ্ছে l ওর বৃদ্ধা মা তারই বা কি অবস্থা ? পুলিশের কথানুযায়ী একজনের আঘাত গুরুতর l সেটা কার ?
আমরা দুজনে একই চিন্তা নিয়ে এখানে অপেক্ষারত…l ” শোন , আরও কয়েকজন বন্ধু বান্ধবকে খবর দিই l কেননা পুলিশ এখানে পৌঁছে দিয়ে খালাস l ”
ও অন্যমনস্ক মনে বললো ,” এখুনি ডাকবি ? আমিও কয়েকজন আত্মীয় স্বজন কে বলেছি l তারাও এসে পড়বে ..l” ওর কাঁধে হাত রাখলাম l
” চিন্তা করিস না l সব ঠিক হয়ে যাবে ” l এবার আমি বাড়িতে ফোন করে সব জানিয়ে দিয়ে — ওদের শুয়ে পড়তে বলে দিলাম l
কিন্তু আমরা দুজনে কেউই জানতাম না , কি ধরণের ঘটনার মুখোমুখি হতে যাচ্ছি !!
….রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঠান্ডা বাড়ছে l সুমিত বললো
” তোকে খুব কষ্ট দিচ্ছি বল ? ” ওর শুকনো মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম l
” এ কথা তোর মনে কেন আসছে? …আমার জীবনে যদি এই ঘটনা ঘটতো , তোর কাছে যেতাম না ? তাহলে আর বন্ধু কি হলো বল ! ” মনে পড়লো — ওর খাওয়া দাওয়া হয়েছে তো ? জিজ্ঞেস করাতে ও কাঁধ ঝাঁকালো l
” এখন আর ওসব নিয়ে ভাবছি না l এমনিতেই দুশ্চিন্তায় গা পাক দিচ্ছে l খালি ভাবছি , কার অবস্থা কতো গুরুতর ? ” — সত্যি কথাই বলেছে l তিন জনেই বেঁচে আছে তো ? মনে এলেও , মুখ ফুটে বলতে পারলাম না l ও আরও ভেঙ্গে পড়বে l অত জলি ছেলেটা এই কয়েক ঘন্টায় যেন বুড়োটে মেরে গেছে l হাসপাতালের চত্বরটায় ভিড়টাও কমতে আরম্ভ করেছে l শুধু মাঝে মাঝে তীব্র সাইরেন বাজিয়ে এম্বুলেন্স গুলো ঢুকছে l ওঃ , এইভাবে অপেক্ষা করা যে কতখানি শরীর আর মনের ওপর চাপ পড়ে , তা এখন মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারছি l সময়ও যেন থমকে গেছে l মোবাইলটায় এগারোটা বাজছে l
প্রায় চল্লিশ মিনিট এখানে দাঁড়িয়ে l ” তোকে কখন ফোনটা করে ছিল ? ”
” সাড়ে আট টা নাগাদ ” l তার মানে, দু ঘন্টার ওপর হতে চললো l ওর মনটা একটু অন্য দিকে ঘোরাবার জন্যে বললাম l
” চল , সামনের দোকান থেকে একটু চা খেয়ে আসি ..” l
” তুই যা , ….ওরা যদি এসে পড়ে ? ”
” আরে , গেটের সামনেই চায়ের দোকান l ওরা ওখান দিয়েই ঢুকবে l অনেকক্ষন একনাগাড়ে দাঁড়িয়ে আছি l চল চল..” l ওকে একরকম জোর করেই নিয়ে চললাম l
” বিস্কুট খাবি ? ” ওর দিকে তাকালাম l
” বিশ্বাস কর , এখন পেটে কিছু ঢুকলে , বমি করে ফেলবো ” বুঝতে পারছি , খাওয়া দাওয়া হয়নি l এর ওপর আকাশ ভাঙা অশুভ চিন্তা l জোর না করে , হাতে চায়ের ভাঁড়টা ধরিয়ে দিলাম l ও এক দৃষ্টে হাসপাতালের গেটটার দিকে তাকিয়ে l মনে হচ্ছে ওর মনের জোরটা একেবারে তলানিতে ঠেকেছে l সুমিত কাঁপা হাতে চুমুক দিলো l ওর মনে কি ঝড় চলছে, বন্ধু হিসেবে অনুমান করতে পারছি l পরিবারের যার কিছু ঘটুক না কেন….তার কালো ছায়া সংসারের ওপর পড়বেই l
এবার ও একটা শক্ত বাস্তব কথা বললো ” শঙ্কর , এখানে মর্গটা কোন দিকে ? ” একটু গরম চা চলকে আমার হাতে পড়লো l একটু আগেই এই কথাটাই ভাবছিলাম l পুলিশ হয়তো ভাঙেনি কথাটা , সত্যি যদি কেউ ইতিমধ্যে মারা গিয়ে থাকে ? তার বডিটা মর্গে ঢোকাতে হবে l চায়ের ভাঁড় টা ফেলে দিয়ে বললাম l
” হঠাৎ এইসব তোর মনে আসছে কেন ? তোর এই মুহূর্তে শক্ত থাকার দরকার l কেননা মাসীমাদের তোকেই সামলাতে হবে , যাই ঘটুক না কেন ? ” কথাগুলো জোর দিয়ে বললাম l যাতে ওর হারানো শক্তি ফিরে আসে l
চায়ের পয়সা মিটিয়ে ধীর গতিতে হাসপাতালের কম্পাউন্ডের মধ্যে আবার প্রবেশ করলাম l
” কারা সব আসবে বলেছিলিস না ? ”
” বললো তো হাসপাতালে আসবে ” ভাঙা গলায় ও বললো l ” আসলে কি জানিস , আত্মীয় স্বজনদের থেকে বন্ধু বান্ধব ভালো ” l
হাতে হাত ঘষে বললাম ” চল একবার এমার্জেন্সিতে খোঁজ নিয়ে আসি l যদি পুলিশ থেকে কোন খবর ওদের কাছে এসে থাকে ? ” এই প্রথম ওর চোখে আলো দেখলাম l
” ভালো বলেছিস l ওদের কাছে খবর থাকতে পারে ” আমরা ওখানে এলাম l …..না নেই l কোন খবর নেই ..l অগত্যা আবার বাইরে বেরিয়ে এসে রেলিং ঘেরা জায়গাটায় বসলাম l পা দুটো টেনে গেছে l একটা হাই তুলে বললাম ” মোবাইলটা দে , দেখি কোন নম্বর থেকে ফোন এসেছে ? ওখানেই ফোন করি l যদি খবর মেলে ? ”
ও বুক পকেট থেকে ফোন টা বার করলো l দেখলাম , ল্যান্ড লাইন নম্বর l তার মানে থানা থেকে করেছিল l কপাল ঠুকে রিং ব্যাক করলাম l অপর প্রান্তে রিং হচ্ছে… l কানে ঠেকিয়ে অপেক্ষা করলাম l সুমিত আমার পাশে বসে উদগ্রীব চোখে চেয়ে রইলো l
….ক্রমাগত রিং হয়েই চলেছে , তারপর কেটে গিয়ে রেকর্ড করা কথা বাজতে শুরু করলো l অর্থাৎ ডায়াল কিয়া নম্বর….থোড়ি দের মে ফির ফোন… l
” কি রে ? কেউ ধরলো ? ” সুমিতের নিরুৎসাহ গলা l ঘাড় নাড়লাম l এই ভাবেই কি রাত কাবার হবে নাকি ? এতক্ষনে পৌঁছে যাওয়া উচিৎ ছিল l আর কিছু সময় বাদে তারিখ চেঞ্জ হয়ে যাবে l এক যদি রাস্তায় আসতে গিয়ে , ওদের মধ্যে কেউ….. l জোর করে বাজে চিন্তাটা তাড়ালাম l
আর চিন্তা ধরে রাখা যাচ্ছে না l মাথাটা হালকা করার জন্যে পকেট থেকে একটা সিগারেট বার করলাম l
” তোর তো এসব চলে না ! ” l
” তুই টান…এখনও সামনে দুটো দোকান খোলা আছে l একটা পান খেয়ে আসি l গা গুলোনটা কমছে না l” ও বিশৃঙ্খল পা ফেলে রাস্তার দিকে এগোলো l দু একটা টান দিয়েছি , এই সময় চোখে পড়লো…একটা পুলিশের স্করপিও গাড়ি গেট দিয়ে ঢুকছে l পিছনে একটা ম্যাটাডোর l বুকটা নিজের অজান্তে ছ্যাঁত করে উঠলো l তার মানে নির্ঘাত কেউ মারা গেছে….ডেড বডি টা l সিগারেট ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম l
পুলিশ গুলোর সাথে , সুমিতের দাদাকেও নামতে দেখলাম l মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা l আমার সঙ্গে চোখাচোখি হতে , অবাক মুখে এগিয়ে এলো l
” এই এতো রাত্রে তুমি এখানে ? কারো কিছু হয়েছে নাকি ? ” বিস্ময়ে কান চুলকোলাম l
” আপনাদের জন্যেই তিন ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি …l ” — এই সময় পুলিশ অফিসারটা বললো ” অনেক রাত হয়েছে l বডিটা নিয়ে মর্গের দিকে চলুন l আমাদের আবার ফিরতে হবে “l মানে হলো , সুমিতের মা কিংবা বৌদি যে কোন একজন মৃত ! ওঃ , এই সময়েই ও আবার পান খেতে গেলো !
মনে হয় সুমিতের দাদার চাপা কষ্ট টা চেনা কাউকে দেখে , বাইরে বেরিয়ে এলো l আমাকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলো ” পারলাম না শঙ্কর , সুমিতকে বাঁচাতে পারলাম না ! ওর রোগা শরীরটা ট্রাকের বড়ো চাকায় থেঁতলে গেলো l ” আমার মাথাটা যেন কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে ! কোন সুমিতের কথা বলছে ওর দাদা ! কোথাও ভুল করছে l এইসময় ম্যাটাডোরের পিছনের ডালাটা একটা লোক খুললো l চোখে পড়লো…রক্তাক্ত শরীরে শুয়ে আছে আমার বন্ধু সু-মি-ত l সেই হাফ হাতা সোয়েটার গায়ে ! — আমার মুখ দিয়ে একটাও কথা বেরোচ্ছে না l
আমার মন এখন আমার কব্জায় নেই l মনের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে এক রাশ প্রশ্নের সাথে , হাড় হিম করা আতংক …l কানে আসছে ওর দাদার অস্পষ্ট গলা ” বুঝেছি , বন্ধুর এই আকস্মিক মৃত্যুতে তুমি বাক্যহারা “l
…..এই মুহূর্তে কি আমি বলতে পারবো ? যে আপনার ভাইই আমাকে ডেকে এনেছে ? একটু আগেও ও সঙ্গে ছিল ? এখন পান খেতে গেছে ? …কেউ বিশ্বাস করবে আমার পাগলের প্রলাপ ? মুখ থেকে বেরোলো অন্য কথা l
” মাসিমা আর বৌদি কেমন আছে ? ”
” ওরা বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি l সুমিতও বেঁচে যেত , শেষ মুহূর্তে ধাক্কার চোটে ওর দিকের দরজাটা খুলে গেলো l সিট বেল্ট বাঁধা থাকলে হয়তো বাঁচত , কিন্তু….” দাদা আর বলতে পারলো না l কান্নায় গলা বুজে গেলো l
…..সুমিতকে মর্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো l …সেইজন্যে জানতে চাইছিলে দোস্ত, মর্গটা কোথায় ? দাদা পুলিশের গাড়িতে ফিরে গেলো l …এবার আমি একা l
শীতের কুয়াশা ভরা রাস্তায় , অন্ধকারে হেড লাইট জ্বালিয়ে বাড়ির পথ ধরলাম l …মাথাটাও যেন কুয়াশায় ভরে গেছে l নির্জন রাস্তায় , রাত দুটোর সময় আমি বাড়ি ফিরছি… ! একটু আগেই যার জীবনে এমন একটা ঘটনা ঘটেছে , যা বুদ্ধি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না l কিছুক্ষণ আগে যাকে স্কুটারে চড়িয়ে নিয়ে গেলাম , সে এখন ঘুমোচ্ছে মর্গের বরফের ভেতর l আর আমি ? …কাঁধে একটা আলতো হাতের ছোঁয়া পেলাম…l সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে আতঙ্কের ঢেউ খেলে গেলো l
আমি জানি পিছু ফিরলেই সুমিতকে দেখতে পাবো l যা এই মুহূর্তে আমার ইন্দ্রিয় গুলো সহ্য করতে পারবে না l দাঁতে দাঁত চেপে , বাড়ির গলিটায় ঢুকে পড়লাম l ….দেখতে পেলাম , বাড়ির বারান্দায় আলো জ্বালিয়ে মা , বাবা দুজনেই ছেলের জন্যে অপেক্ষা করছে ll
…………………………………………………..( সমাপ্ত )……………………………………………….