প্যারানরমাল জগৎ বলতে কিছু একটা আছে। হ্যা আমি সাইন্সের স্টুডেন্ট হয়েও এই কথা স্বীকার করছি।
আমি মোটে রসিকতার কথা বলছি না। এর মুল কারণ হলো এই জগতের সবকিছু যুক্তিদিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।
আমরা মানুষ হলেও ২০Hz থেকে ২০,০০০Hz কম্পাঙ্কের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পাই না কিন্তু অন্যান্য প্রাণীরা যা পায়।
আমাদের চোখ থ্রি ডাইমেশনের বেশি কিছু দেখতে সক্ষম নয় কিন্তু আমাদের চারপাশেই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য অদৃশ্য রশ্নি,তরঙ্গ,
বল বা শক্তি। অনেক কিছুই যা স্পর্শ করতে পারি না হয়ত অনুভব করতে পারি কখনো বা পারি না।
তাই এসবের দৃষ্টিকোণ থেকে বলতেছি প্যারানরমাল জগৎ বলতে কিছু একটা আছে আর হয়ত যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার সাথে প্যারানরমাল কিছু না ঘটছে ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারবেন না।
তবে আমি এটা বলতেছি না যে ভূত পেত আত্না এসব আছে, হতে পারে সেটা কোনো এক ধরণের শক্তি যার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান দিতে পারে না আবার হতে পারে কোনো অশরীর অবয়ব যা আমাদের বাস্তব জগতের বাহিরে। সবকিছুরই তার বিপরীত কিছুর উপর আকর্ষণ থাকে।
ছেলেদের যেমন মেয়েদের প্রতি আগ্রহ বা অকর্ষণ থাকে তেমনি মেয়েদেরও ছেলেদের প্রতি আগ্রহ থাকে।
এজন্য কিছু মানুষের আগ্রহ থাকে।
প্যারানরমাল জগতের প্রতি তাই তারা প্লানচ্যাটে বা এরকম কিছু মাধ্যমে প্যারানরমাল জগতের সাথে যোগাযোগের চেস্টা করে। আমাদের মাঝেই কিছু সংখ্যক মানুষ আছে যাদের সাথে অস্বাভাবিক কিছু ঘেটেছে বা ঘটচ্ছে ঠিক আমার সাথেও যেমনটি ঘটেছিল। আমার কথাগুলো অনেকের কাছেই অহেতু মনে হচ্ছে তো !
আচ্ছা আমি আপনাদের একটা প্রশ্ন করি, মানুষসহ সকল প্রাণীই এক অদৃশ্য শক্তির বলেই বেঁচে থাকে কর্ম সম্পাদন করে আর যখন সেই শক্তি দেহ থেকে নির্গত হয়ে যায় তখন সেই দেহকে মৃত বলে চিহ্নিত করি। কিন্তু আমরা তো প্রায় প্রত্যেকেই জানি এই মহাবিশ্বে শক্তি ধ্বংস হয় না, তাহলে আমার প্রশ্নটা এখানে যে ঐ নির্গত শক্তি কোথায় থাকে আর কি রূপে থাকে ?
হুম মানুষের যেমন ঐ জগতের প্রতি আগ্রহ আছে তেমনি প্যারানরমাল জগতের সদ্যস্যদের মধো কারো আমাদের স্বভাব, চলাফেলা,জীবণযাত্রা, দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিস বা আমাদের দেহের স্বাদ অথবা রক্তের ঘ্রাণ এসব নিয়ে আগ্রহ থকতে পারে।
এমনই কিছু আমার ঘটেছিল যা ভাবলেই শরীরের সমস্ত লোম শিউরে ওঠে, সেদিন হয়ত পুরোটাই ভাগ্যের জোরেই বেঁচে ফিরেছিলাম। বেশি না মাত্র কয়েক দিন আগের ঘটনা। আমাদের প্রথম পর্ব পরীক্ষা চলতেছিল। সেদিনের পরেরদিন ছিল পদার্থ পরীক্ষা ।
সেদিন পড়া শেষ করেছিলাম রাত সাড়ে এগারোটায় এরপর ফোনটা হাতে নিয়ে ফেসবুকে লগ ইন করলাম দেখি ‘কিউট পেত্নী’ নামে একটা মেয়ে ফ্রেন্ড রিকয়েস্ট দিয়েছে প্রোফাইল পিকে একটা পুতুলের ছবি।
মেয়েদের স্বভাবই জীবনে একবার হলেও প্রোফাইলপিক পুতুল দেয়া ফরজ কাজ। তাই আইডিটা চেক করা শুরু করলাম..,
এবাউট ফলোয়ার্স লাইকস দেখে মনে হল আইডিটা রিয়েল তাই ফ্রেন্ড রিকয়েস্ট এক্সেপ্ঠ করে তার টাইমলাইনে ঢুকলাম।
ঢুকে দেখি সব ছ্যাকা খাওয়া স্টেটাস দিয়ে ভর্তি তাই আমার স্বভাব মতো দু একটা পোস্ট ভিজিটকরে ফেসবুক থেকে বেরিয়ে আসলাম কারণ ঐ সময় আড্ডা দেয়ার মতো কেউ ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যে অনুভব করলাম আমার ক্ষুধা পেয়েছে এবং প্রচন্ড ক্ষুধাই পেয়েছে। ঘরের মধ্যে খাওয়ার মতো কিছুই ছিল না। তবে পেটকে তো শান্ত করতে হবে কারণ পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি।
মেসের সিনিয়র ভাইরাও নাই তাদের HSC লিখিত পরীক্ষা গত ২৫ তারিখেই শেষ হয়ে গেছে আর ২৬ তারিখেই সব গুছিয়ে বাড়ি চলে গেছে। ফাস্ট ইয়ারের যারা ছিল তারাও কয়েকদিনের ছুটি পেয়ে বাড়ি ভ্রমণে গেছে। সম্পূর্ণ মেসে শুধু আমি আর আরেকজন ভাই।
ঐ ভাইকে কয়েকবার ডাকলাম কিন্তু কোনো সাড়া পেলাম না হয়ত ঘুমিয়েছে তাই ডিস্টার্ব করলাম ন। পকেটে কিছু টাকা নিয়ে একা একাই বেড়িয়ে পরলাম। উপজেলায় রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত আজিজ আঙ্কেলের দোকান খুলা থাকে কিন্তু সেদিন ভাগ্যের কি পরিহাস সন্ধ্যায় মৃদু ঝড় ও বৃষ্টি হওয়ার কারণে সবাই আগেই দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে বাজারে ঝড়বাদলের মধ্যেও কয়েকটা হোটেল সারারাত পর্যন্ত খুলা থাকে তাই বাজারের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম। যদিও বাজারটা একটুদূরে তবে লোকালয়ের মধ্য দিয়ে রাস্তা হওয়ার কারণে কোনো দুঃচিন্তা মাথায় নিলাম না। তাছাড়া বয়ঃসন্ধি কালে প্রত্যেক কিশোরের সাহসটা একটু বেশি থাকে।
গতবেশ কয়েকদিন ধরে উত্তর অঞ্চলে কাল বৈশাখী প্রভাব বিস্তার করতেছে যার ফলশ্রুতিতে সেদিন সন্ধ্যায়ও বৃষ্টি হয়েছিল। তাই সাধারণ মানুষ সেদিন আগেই নিজ গৃহে প্রবেশ করেছিল। রাস্তা পুরা জনমানবশূন্য, রিক্সা ভেন কিছুই পেলাম না সমস্ত রাস্তায় আমিই একমাত্র জীবিত প্রাণী।রাস্তার মাঝখান দিয়ে একা একাই হাঁটছি।চারপাশের পরিবেশ নিরব থাকার করণে আমি আমার হাঁটার শব্দ তীব্রভাবে শুনতে পাচ্ছিলাম। কানের পাশ দিয়ে শির শির করে বাতাস বয়ে যাচ্ছিল। বাতাসের শন শন শব্দে বাতাসের গতিবেগ উপলব্ধি করতে পারতেছিলাম। মধ্যরাতে পরিবেশটা নির্জন থাকার কারণে মনের মধ্যে কিছুটা ভয়ের আভাস উপলব্ধি করতে পারলাম।
তবে মনের মঝে কিছূটা সাহস সঞ্চয় করলাম কিন্তু সাহসটা ভয়ে পরিণত হলো ঠিক যখন উপজেলা কার্যলয় ভবণটা পার করে খানিকটা সামনে এগোলাম। জায়গাটা একটু ফাঁকা রাস্তার পাশে বড় বড় গাছ । হঠাৎ শুকনো পাতর উপর কিছু হেঁটে যাওয়ার শব্দ শুনতে পেলাম। অথচ বৃষ্টির কারণে সব কিছুই ভেজা তাহলে শুকনো পাতা আসবে কোথা থেকে ?
প্রথমে শব্দটা একবারেই হয়েছিল তাই ভেবেছিলাম হয়ত মনের ভুল ! কিন্তু কয়েখ পা আগাতেই শব্দটা আবার স্পষ্ট ভাবে শুনতে পেলাম। এভাব একটু ভয় পেলাম ভয়ের কারণে ক্ষিধার কথা ভুলে গেছি। কথায় আছে না বিপদ যখন আসে তখন চারপাশ থেকেই আসে আমারও ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটল রাস্তার পাশের রোডলাইট গুলো হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল। মুহুর্তে জায়গাটা ঘন অন্ধকারে পরিণত হল। ভয় পেলে বা খুব উত্তেজনা কাজ করলে মানুষের মস্তিষ্ক সঠিক ভাবে সিগনাল পাঠাতে পারে না।
আমারো ঠিক সেরকমই হয়েছিল কি করব কাছু ভাবতে পারছিলাম না। হঠাৎ মনে হলো আমাকে কেউ পেছন থেকে অনুসরণ করছে। উল্টা দিক থেকে উষ্ণ বাতাস আমাকে স্পর্শ করে যাচ্ছিল।
আমি মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম আমার সাথে অস্বাভাবিক কিছু ঘটতে চলছে। তবুও ভয় আর প্রচন্ড কৌতুহল নিয়ে পেছনে তাকানোর সাদ্ধান্ত নিলাম। যেই না মাথাটা অল্প ঘুরিয়েছি ঠিক তখনই একটা শক্তি এসে আমাকে ধাক্কা দিল আমি নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে প্রকান্ড কৃষ্ণচুড়ার গুড়ির সাথে ধাক্কা খেলাম। এতকিছুর পরেও সেই বস্তুটিকে দেখার তীব্র কৌতুহলে আমি আবার পিছনে ফিরলাম কিন্তু ততক্ষণে সেই অবয়বটি আমকে ধরে ফেলেছিল। আমি কারো সাহায্যের আশায় চিৎকার দিলাম কিন্তু আজব ব্যপার আমার কন্ঠ দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছিল না। আমি আবার চেষ্টা করতে লাগলাম এত জোরে চিৎকার করার চেস্টা করলাম যে মনে হচ্ছিল এই বুঝি গলা ফেটে রগ বের হয়ে যাবে তবুও একটুও আওয়াজ বের হচ্ছিল না। আমি তখন প্রচন্ড ঘেমে যাচ্ছিলাম ।
ঘামের ফলে আমার টিশার্টটা দেহের সাথে এঁটে গিয়েছিল।প্যারানরমল জিনিসটা চোয়াল ধরে আমাকে মাটি থেকে প্রায় কয়েক ফুট উপরে শূন্যে ভাসিয়ে রেখেছিল।ঐ মুহুর্তে আমার দেহের প্রতিটা অঙ্গ পাথরের মতো হয়ে গিয়েছিল , নড়াচড়া করার বোধ শক্তিটা পাচ্ছিলাম না। তবে সেটই বুস্তুটির দেখা পেলাম। মানুষের শরীরের চামড়া ছিলে নিলে মাংস ও রক্ত দিয়ে যেরকম আকার ধারণ করবে সেটি ছিল কিছুটা সেরকম। তাজা মাংস থল থল করছে। মুখমন্ডল আদৌ ছিল কি না জানি না ।
তাছাড়া অন্ধকারে গাছের পাতার ফাঁকদিয়ে চাঁদের ম্লান আলোতে যতটা দেখা সম্ভব ততটা দেখতে পেয়েছিলাম। মাথার অর্ধেকটা পচা মাংস যাতে একটা কাক ঠকরে ঠকরে খেলে যেমনটা হয় সেরকম আর বাকিটা লম্বা চুল জাতীয় কিছু দ্বারা আবৃত। এবার সে যেই হাত আকৃতির বস্তুটা দ্বারা আটকে রেখেছে সেটার দিকে দৃষ্টি দেয়ার চেষ্টা করলাম। সেটি ছিল পুরোটাই একট মাংপিন্ড। আর সেখান থেকে এক ধরনের গরম তরল পদার্থ গড়িয়ে আমার দেহের উপর পরছিল। হবে হয়ত সেটি তাজা রক্ত !
সেই অবয়বটি এতটাই বিভৎস আর ভয়ংকর ছিল যে আমি আপনাদেরকে ব্যাখ্যা করে বোঝাতে পারব না।
সেই বস্তুটির দেহ থেকে খুব বিশ্রি বিভৎস গন্ধ বের হচ্ছিল।
কখনো মর্গে গিয়েছিলেন? যদি যেয়ে থাকেন তাহলে সেখানে যে লাশের গন্ধ টা পাওয়া যায় ঠিক সেই রকম গন্ধ ঐ বস্তুটা থেকে বের হচ্ছিল। তবে পচা বা গলিত লাশের গন্ধটা তীব্র ছিল। এতটাই তীব্রযে আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আমার চরপাশ অক্সিজেনশূন্য। সেটি আমার চোয়াল এতটাই শক্ত করে ধরে রেখেছিল যে এই বুঝি আমার চেয়াল ভেঙ্গে যায় যায় আবস্থা, এক্ষনি বুঝি ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হবে। আমার ঐ সময় খুব তৃষ্ণা পেয়েছিল। খুব বাঁচার ইচ্ছা করতেছিল। ইস আর একটাবার যদি বাঁচার সুযোগ পেতাম!
সেই ভয়ংকর বস্তুটি তার মুখটা আমার মুখের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। আমার নিশ্বাস নিতে তখন কষ্ট হচ্ছিল, বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। শুধু একটু পানি যদি পেতাম শুধুই এক গ্লাস পানি! মাথাটা ভারী হয়ে আসছে চোখের দৃষ্টি ঝপসা হয়ে আসছে, চোখের কোণায় লবনজল জমা হয়েছে। নাহ্ আর পারছিনা..
ঠিক সেই মুহূর্তে ঐ অবয়বটি আমার কানের কাছে এসে তীব্র কন্ঠে বলল…..,
” আমার সিরিয়াস পোস্টে ..…ha ha react দিছিস ক্যারে..!!!”