কালাযাদু

কালাযাদু
– ব্রেকআপ ডান? ফোনের ওপাশ থেকে সুস্মিতা কাঁদো কাঁদো গলায় উত্তর দেয়,
– হ্যাঁ।
– ব্লক ডান?
– হ্যাঁ।
– ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, ইন্সট্রাগ্রাম কোনোকিছু বাদ রাখিস নাই তো?
– না।
– গুড, ভেরি গুড। এইবার চিল করতে থাক। সুস্মিতা এবার দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে,
– কিন্তু নেহা, আমার খুব খারাপ লাগছে রে। আমি ওকে খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম।
– ধুর শালী, ঢং কম মারো৷ নতুন আরেকটা ভালো বাসা হইলেই এইরকম হাজারও “খুব ভালোবাসা” আইসা খাঁচায় ধরা দিবে। আচ্ছা আগের বারের বাসাটায় এ.সি ছিল না? নাকি মাত্র একটা সিলিং ফ্যান দিয়াই কাম চালাইতে হইছে?
– ছিঃ নেহা, তোর মুখে না কিচ্ছু আটকায় না। ওর সাথে আমার সেরকম কিছু হয়নি।
– তাইলে “খুব ভালোবাসা” কেমনে আসলো!
– তুই থামবি প্লিজ? আর ঠিকভাবে কথা বল।
– আচ্ছা থামলাম। এইবার তুই ঠিকভাবে শোন৷ তোরে রবিনের কথা বলছিলাম না?
– কোন রবিন?
– আরে আমাদের এলাকার বড় ভাই। ওই যে আসতে যাইতে যে পোলারে সালাম দিই আমি।
– ও হ্যাঁ, কিন্তু উনি তো আমাদের অনেক সিনিয়র। আর তুই নাম ধরে ডাকছিস! নেহা বিরক্তি প্রকাশ করে,
– তো কি মুরুব্বি বইলা ডাকবো? আমার এত ন্যাকামি আসে না তোদের মত।
– এটা মোটেও ন্যাকামি না, ভদ্রতা।
– আচ্ছা যাই হোক শোন, মালডা হেব্বি আছে দেখতে। কি ঠাটবাট নিয়া চলাফেরা করে রে ভাই! দেখলেই বুকের বাম পাশে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা উঠে। তাড়াহুড়ো করে নেহাকে থামিয়ে দেয় সুস্মিতা,
– এক মিনিট, এক মিনিট৷ তুই কি কোনোভাবে উনাকে আমার জন্য…
– এক্কেবারে ঠিক ধরছিস। এই না হইলে আমার বান্ধবী৷
– অসম্ভব। ইশতিয়াককে ছাড়া অন্য কারো কথা আমি ভাবতেই পারি না।
– তাইলে প্রতিদিন রাইতে স্বপ্নের মধ্যে রানবীর সিং’য়ের চুল ধইরা কে টানাটানি করে? সুস্মিতা আর রাগ সামলে রাখতে পারে না। বলে,
– তুই ভদ্রভাবে কথা বলতে পারিস না নেহা? সবসময় সব কথাতে তোর বাজে ইংগিত দিতেই হবে? তারউপর তুই কিসের সাথে কি মেলাচ্ছিস!
– তাইলে কথা ওইটাই ফাইনাল। রবিনই, না স্যরি, রবিন ভাইয়াকেই তোর সাথে ফিক্সড করার ব্যবস্থা করতেছি। তুই জাস্ট সাতটা দিন সময় দিবি আমারে, তারপর দেখবি কালাযাদু কারে বলে। সাতদিন পর…
– হ্যালো নেহা…
– হ্যাঁ সুস্মিতা বল।
– বাব্বাহ্, হঠাৎ এত শুদ্ধ ভাষায় কথা বলছিস যে?
– কই!
– না মনে হল আর কি। কই থাকিস আজকাল? পাওয়াই যায় না।
– আর বলিস না দোস্ত, কয়েকদিন ধরে এত জ্বর আর মাথাব্যথা৷ বালিশের উপর থেকে মাথাই তুলতে পারি না। সারাদিন মাথা ঝিমঝিম করে খালি। কি যে একটা বাজে অবস্থা।
– ও। রেস্ট নে তাইলে। আমি না হয় পরে কল দিব।
– হ্যাঁ তাই ভালো। আর শোন সুস্মিতা…
– বল।
– তোকে রবিন ভাইয়ার কথা বলছিলাম না? ওর আশা বাদ দে। শালা একটা লুইচ্চা পাবলিক। হুদাই ওর পেছনে এত সময় নষ্ট করলাম।
– উফফফ, তুই এখনো এসব নিয়েই পড়ে আছিস নেহা! রেস্ট নে, তাড়াতাড়ি সুস্থ হ। সুস্মিতার সাথে কথা শেষ হওয়ার পরপরই নেহার নাম্বারে অন্য একটা কল আসে। রিসিভ করার পর ওপাশ থেকে ভেসে আসে এক দাপুটে পুরুষ কণ্ঠ,
– কার সাথে কথা বলছিলে? কতক্ষণ ধরে কল করে যাচ্ছি।
– স্যরি রবিন, আর হবে না এমন। কি করে আমার বাবুটা? মিস করে আমাকে? বেশি নাকি কম?
– উঁহু, একটু ভিডিও কলে আসো না। দেখি তোমাকে।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত