টুনি প্রতিরাতে আমার কাছে আসত, আমি ঘুমিয়ে গেলেও আসত। অন্ধকার রুমে আমরা চুপিচুপি কথা বলতাম। প্রায়ই সে বলত, “নেহাল তোমার বাবা অনেক খারাপ লোক ওরে শেষ কইরা দেও।” টুনির পীড়াপীড়ি তে একদিন রাতে ভোজালি দিয়ে বাবার মাথাটা ধড় থেকে আলাদা দিলাম। ভয়ে আতংকে মা জ্ঞান হারান। ছোট বোন নীলা তাঁর রুম থেকে দৌড়ে ছুটে আসে; আমার হাতে রক্তমাখা ভোজালিটা দেখে বিকট এক চিৎকার দিয়ে সে ও সাথে সাথে জ্ঞান হারালো। আমি ঠান্ডামাথায় ওয়াশ রুমে গিয়ে লম্বা একটা গোসল দিলাম। আহ্! মনের মধ্যে তখন কী প্রশান্তিটা না কাজ করছিল! যাক,অবশেষ টুনির কথাটা আমি রাখতে পেরেছি। বাসা থেকে থানা কাছেই, মুহর্তের মধ্যেই পুলিশ এসে আমাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করল। মায়ের তখনো জ্ঞান ফিরে আসেনি । পুলিশ দড়ি দিয়ে বেঁধে রুম থেকে আমায় বের করছিল।
তখন দেখি নীলা খানিকদূর থেকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওকে দেখে সহানুভূতির মুচকি একটা হাসি দিতেই, ওর শরীর টা ভয়ে কেপে ওঠে! ঠিক তখনি টুনির কথা মনে হয়ে গেল আমার। বাবা কে দেখলে টুনি ঠিক এমনি ভীতিগ্রস্ত হয়ে যেত। পুলিশের গাড়ি আস্তে আস্তে চলতে শুরু করে। আমি শেষবারের মত বাসার দিকে তাকাই। নীলা গেইটের দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। আমি চোখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে টুনি কে খুঁজতে থাকি। সে কোথাও নেই; তাকে কোথাও দেখতে পাই না। জেলে যাওয়ার এক বছর পর কোট-কাছারি শেষে যখন নিশ্চিত হয়ে গেলাম, আমার ফাঁসি হয়ে যাবে, তখন আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হল পাবনা মেডিকেল হাসপাতালে। শেষ পর্যন্ত বাবা কে খুন করার দায়ে এখনো বেঁচে আছি, নইলে কি আজ আমি আমার জীবনের অবিশ্বাস্য গল্পটা আপনাদের বলতে পারতাম?
যাই হোক, আমার বাবা ছিলেন ভুমি অফিসার। বিচিত্র কারণে চাকরির আরো পাঁচ বছর থাকা সত্ত্বেও আগেভাগে রিটায়ার্ড করেন। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর তার কাজ ছিল পেপার পড়া আর রাত জেগে টিভির নিউজ দেখা। ঘন্টায়-ঘন্টায় তিনি চা খেতেন। বাসায় কাজের লোক না থাকায় নীলা আর মা দুজন মিলেই বাবা কে চা করে দিত। বাবা কে আমি অসম্ভব ভয় পেতাম।অবশ্যি বড় হওয়ার পর থেকে তিনি কখনো ধমক দেননি,তবু তার গাম্ভীর্যপূর্ণ আচরণের জন্য কেন জানি ভয় লাগত। সেদিন কত তারিখ ছিল মনে নেই, মা তার বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টিতে নীলা কে সাথে করে নিয়ে গেছেন। সন্ধার একটু পড়েই বাসার কলিংবেল বেজে উঠে। আমি দরজা খুলতেই দেখি নীলার টিউটর মিস সারবিনা দাঁড়িয়ে আছে।
আমি অবাক হয়ে বললাম, “আপনি? কিন্তু নীলা তো আজ বাসায় নেই।” সাবরিনা কিছুটা হতভম্ব হয়ে বলল, “ও আচ্ছা তাহলে আজ আমি আসি।” “কেন নীলা আপনাকে ফোন করে কিছু বলে দেয়নি?” “আসলে আমার ফোনটা বন্ধ ছিল।” বাবা ড্রয়িংরুম থেকে গলা বাড়িয়ে বললেন, “কে এসেছে রে?” আমি সাবরিনার দিকে তাকিয়ে লজ্জায় পড়ে গেলাম। দ্রুত বললাম, “সরি, আপনাকে অনেকক্ষণ দরজায় দাঁড় করিয়ে রাখলাম, প্লিজ ভিতরে আসুন।” সাবরিনা সপ্তাহে তিনদিন নীলাকে বাসায় পড়াতে আসে। দু’বছর ধরে একটানা পড়াচ্ছে, নীলা যখন ক্লাস এইটে পড়ে তখন থেকেই। সাবরিনা বাবার অপজিটে সোফার কোণে বসতেই বাবা হাসি দিয়ে বলল, “কেমন আছো মা?”
“জ্বী আংকেল ভালো।”
“তোমার পড়াশোনার কী খবর?”
“মাস্টাস তো শেষ হলো, এখন বিসিএস জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।” বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “খাম্বার মত এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা চা নাস্তার ব্যবস্থা কর।”
“না না আংকেল আমি কিছু খাব না,” এই বলে সাবরিনা ওঠে দাঁড়ায়। “আমি আজ আসি, কাল এসে পড়িয়ে যাব।”
“আরে বসতো,” বাবা আমার দিকে তাকালেন। “যা তুই চা নিয়ে আয়।”
আমি সাবরিনার দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসি দিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে গেলাম। এসে দেখি চা পাতা, চিনি কিছুই নেই। বাসা থেকে একটু দূরেই মুদি দোকান। রুম থেকে মানিভ্যাগ টা নিয়ে বাবা কে বললাম, একটু নিচে যাচ্ছি। বাসা থেকে নিচে নামতেই দেখি ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায়। আমি ফোনের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় এসে নামি। হঠাৎ মনে হলো, বাবা কী মোমবাতি খুঁজে পাবে? নাকী আমি না আশা পর্যন্ত তারা অন্ধকারেই বসে থাকবে? দোকানদার কে এক হাজার টাকার নোট দিতেই বলে ভাংতি নেই। সে আমার কাছ থেকে নোট’টা নিয়ে পাশের দোকানে গেল ভাংতি আনতে।আমি অস্তিরভাবে পায়াচারি করছিলাম মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, বাবা কী মোমবাতি টা খুঁজে পেল?
ঠিক দশ মিনিট পর বাসায় এসে দেখি, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বুকটা ছেদ করে ওঠে আমার, এমন তো হওয়ার কথা না। দরজায় টোকা দিলাম,কিন্তু ভেতর থেকে কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। দু’মিনিট অপেক্ষার পর বাবা দরজা খোলেন। “কী রে আসতে এত দেরি লাগে?” বাবার কথার উত্তর না দিয়ে ড্রয়িংরুমে দিকে তাকালাম। সাররিনা কে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে ফ্যাকাসে কণ্ঠে বললেন, “তোর আসতে দেরি দেখে নীলার মেডাম চলে গেছে।” সেদিনের বিষয়টা আমি স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু সাবরিনা পরদিন সকালে মা’র নাম্বারে ফোন দিয়ে বলল আর পড়াবে না। মা কারণ জানতে চেয়েছিল। সাবরিনা জবাবে বলেছিল, হোস্টেল বদল করেছে তাই সেখান থেকে যাতায়তের সমস্যা তাই আর পড়াতে পারবে না।
মা সন্ধায় মেঝে তে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন, তখন ঝাড়ুর সাথে সোফার নিচ থেকে চুলের কাঁটা বের হয়ে আসল। মা চিৎকার করে নীলা ডাক দিয়ে বললেন, “কী ব্যাপার চুলের কাঁটা এখানে-সেখানে পড়ে থাকে কেন?” আমি সোফায় বসে টিভি দেখছিলাম। নীলা চুলের কাঁটাটা হাতে নিয়ে আশ্চর্য হয়ে বলল, ” ওমা! এটা তো সাবরিনা ম্যামের।” লাল কাঁটাটা আমি সনাক্ত করতে পারি, সেদিন সাবরিনার চুলে এটাই ছিল। বুকে চিনচিন ব্যাথা শুরু হয়, ওদিন কী হয়েছিল জানি না, তবে সাবরিনার সাথে ভয়ংকর কিছু হয়েছিল তা আমি বুঝতে পারছিলাম। বাবা নাজিম চৌধুরীর প্রতি ঘৃণাটা সেদিন থেকেই জমতে শুরু করে। না পারছিলাম কিছু বলতে না পারছিলাম কিছু করতে। তবু সাবরিনা কে তন্নতন্ন করে খুঁজেছিলাম,কী হয়েছে জানতে।কিন্তু, কোথাও পাইনি। মেয়েটা তাঁর নাম্বারও বদলে ফেলেছিল।
মাস দেড়েক পর মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। হাসপাতাল থেকে তিন পর বাসায় নিয়ে আসি। ডাক্তার বলে দিয়েছেন, বাসার সমস্ত কাজকর্ম থেকে যেন বিরত থাকে। মা অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে বড় মামা আসলেন মা’কে দেখতে। সাথে করে গ্রাম থেকে একটা কাজের মেয়ে নিয়ে এসেছেন। অবশ্য মামাকে অনেক আগে থেকেই মা বলছিলেন একটা কাজের মেয়ের ব্যবস্থা করে দিতে। মেয়েটার নাম টুনি, বয়স ষোলো সতের হবে একদম নীলার বয়সী।কাজের মেয়ে টুনি কে দেখে মা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। টুনি রান্না ঘরে ঘুমায়। খুব ভোরে উঠে বাবার হাল্কা চা নাস্তার ব্যবস্থা করে। কিন্তু টুনি আমাদের বাসায় কাজের এক মাস যেতে না যেতেই মা’কে চাপ দিতে থাকে গ্রামে ফিরে যাওয়ার জন্য। মা বুঝিয়ে শুনিয়ে তাকে শান্ত করে, আগের চেয়ে বেতন আরো এক হাজার টাকা তিনি বাড়িয়ে দিলেন।
একদিন রাতে হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে গেল। কী কারণে ভাঙল সেটা প্রথমে বুঝতে পারলাম না। একটু ধাতস্থ হতে রান্না ঘর থেকে গোঙানির শব্দ শুনতে পেলাম। বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠেই লাইট জ্বালালাম।লাইট জ্বালাতেই রান্নাঘর থেকে দড়াম দড়াম শব্দ শুনতে পেলাম। আমি দ্রুত রুম থেকে বের হয়েই দেখি মা রান্নাঘরের সামনে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছেন। তখনি বাবা রান্নাঘর থেকে বের হয়ে আমাদের না দেখার ভান করে আস্তে করে তাঁর রুমে ঢুকে গেলেন। কিছুক্ষণ হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে থেকে আমি মা’র দিকে তাকালাম। মা’ও অসহায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। মা’র চোখ দুটো ছলছল করছিল। ভোরবেলা পর্যন্ত মা আমার রুমে একটানা কেঁদেই চলেন। নীলা মা’কে এসে জিজ্ঞেস করে, ‘কী হয়েছে মা?’ মা নীলার দিকে চেয়ে আরো ফুঁপাতে লাগলেন। নীলা যেন কিচ্ছুটি বুঝতে না পারে সেজন্য মা বিধ্বস্ত কণ্ঠে কিছুক্ষণ পর জবাব দিলেন, “কিছু হয়নি রে মা। তোর নানুর কথা মনে পড়ছিল তাই কাঁদছি। যা তুই তোর রুমে যা।”
সকাল বেলা মা রান্নাঘরে টুনির সাথে অনেকক্ষণ কথা বললেন। তিনি কি বলেছে জানিনা, কিন্তু টুনি কে নিয়ে যখন রান্নাঘর থেকে বের হয় তাঁকে দেখতে একদম স্বাভাবিকই লাগছিল। মা আমাকে বললেন, “তোর বড় মামা কে খবর দে, আজকের মধ্যে যেন আসে।” বড় মামা অসুস্থ আসতে পারলেন না। জানালেন কদিন পর আসবে। মামা সাতদিন পরে আসলেন। টুনি এই সাত দিন নীলার রুমে বিছানাপত্র নিয়ে ঘুমিয়েছে। আমি সব সময় টুনি কে চোখে-চোখে রাখতাম, বাবাকে দেখেলেই সে ভয়ে কুঁচকে যেত। মা বেশ কিছু টাকা দিয়ে মামার সাথে টুনি কে বিদায় করে দিলেন। ঘটনা হয়তো এখানে শেষ হয়ে গেলেই পারত। কিন্তু শেষ হয়নি। মা বাবা কে ডির্বোস দিতে চাইলেন। ডিবোর্সের কথা শুনে মায়ের পায়ে পড়ে গেলাম। মা নিরাসক্ত কণ্ঠে বললেন, ” এমন অমানুষদের সাথে কী সংসার করা যায়?”
কান্নার স্বর আটকে রেখে বললাম, ” তুমি চলে গেলে আমরা দু’ভাই-বোন কোথায় যাব? একবার ভেবে দেখেছ আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে?” মা’কে জড়িয়ে ধরে আমি হাউমাউ করে কেঁদে উঠি। মা পাথরের মত নিশ্চল দাঁড়িয়ে থাকলেন। একটা সময় মা খানিকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠেন। কিন্তু বাবার সাথে কথা তেমন বলতেন না বলেই চলে।
বাবা আগের মতই নির্বিকার। সারা দিন পেপার পড়তেন না হয় টিভি দেখতেন। আমি প্রতিদিন মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে ঘুমাতে যাই। বুকের ভেতর একদলা ঘৃণা জমে থাকে সব সময়। বাবা কে মুখফটে কিছুই বলতেও পারতাম না মাস ছয়েক কেটে গেল। একদিন শেষ রাতে বড় মামার ফোনে জেগে উঠি। তিনি ফোন করে জানালেন, টুনি আত্মহত্যা করেছে। আমি বিস্তারিত কিছু আর জানতে চাইলাম না।
সকাল হতেই কেউ কে না জানিয়ে ছুটে গেলাম বড় মামার কাছে। আমি যখন সেখানে পৌঁছাই লাশ ততক্ষণে পোস্টমর্টেমে নিয়ে গেছে। লাশ ফেরত নেয়ার সময় যখন মামা পেপারে সাইন করছিলেন তখন ডাক্তার জানাল, টুনি প্রেগন্যান্ট ছিল। ডাক্তারের কথা শুনে চমকে যাই। বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠে। কবরে নামানোর আগেই টুনি মুখটা শেষ বারের মত আমার দেখার সুযোগ হয়েছিল। কী নিষ্পাপ! কী সুন্দর! টুনির গরীব বাবা মা থানাপুলিশও করেনি। কে কারা তাদের মেয়েটার সর্বনাশ করল, উপরওয়ালার কাছে চোখে জল ফেলেই শুধু তার বিচার দিলেন তারা। আমি উদভ্রান্তের মত এদিক-ওদিক ঘুরে রাতেই বাসায় ফিরে আসি। মামার কাছে ঘটনা মা ফোনেই জেনে গিয়েছিলেন। মা আমার সাথে একটা কথাও বলেনি, যেন একদম চুপ হয়ে গেছেন।
ভার্সিটি যাওয়া বন্ধ করে দিলাম। সারাক্ষণ অন্ধকার রুমে একা একা-বসে থাকি। কিছুদিন পর টুনিও আমার সাথে সঙ্গদেয়। বলে, “কী লজ্জা লাগে এমন বাপের সন্তান হয়েছ বলে?” আমি বলি, ” না মা’র জন্য কষ্ট লাগে। ত্রিশটা বছর এমন মানুষরূপী অমানুষটার সাথে সংসার করে চলছেন।” টুনি খিলখিল করে হেসে উঠে। বলে, ” অমানুষ দের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার নাই ওরে শেষ করে দেও।” টুনির কথা শুনে আমার চোখ চকচক করে উঠে। মনের ভিতর পৈশাচিক আনন্দ পাই। এরপর আসে সেই কাঙ্ক্ষিত রাত ভোজালিটা নিয়ে বাবার রুমে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছি, টুনি পেছন থেকে অভয় দিয়ে বলল, “ভয় পেয় না আমি আছি তো।” টুনির কথায় আমার সাহস বাড়ে। একলাফে বাবা বুকের উপর চেপে বসলাম। চোখটা বন্ধ করে ভোজালিটা চালিয়ে দিলাম একদম গলা বরাবর…
পরিশিষ্ট : জেল থেকে মানসিক হাসপাতালে আসার পর মাসে একবার মা আমায় দেখতে আসেন।তিনি শুধু কান্নাই করেন। টুনি তো প্রায়ই বিরক্ত হয়ে বলে, “তুমি কি পাগল? তোমাকে এখানে এনে রেখেছে কেন?” আমি বলি, “পাগল না হল পাগলাগারদে এনে রাখবে কেন?”
আমার কথায় টুনির মন খারাপ হয়ে যায়। হঠাৎ প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে বলে, “জানো আমার মত অনেক টুনিই দেশ-বিদেশে বাসা বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে কিছু খারাপ মানুষের হাতে এমন নির্যাতনের শিকার হয়। পেটের দায়ে কেউ-কেউ মুখ বুজে সব সহ্য করে, যখন সহ্য করতে না পারে আমার মতই এমন নিষ্ঠুর নিয়তি হয় তাদের।” আমি টুনির কথার কোন জবাব দিতে পারি না;অসহায়ের মত তাঁর ছলছল চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে থাকি। ভাবি টুনির মত মেয়েরা চার দেয়ালের আড়ালে এভাবেই কাঁদে। ওদের চোখের জল কেউ দেখতে পায় না।
গল্পের বিষয়:
গল্প