ভালোবাসার বাঁধন

ভালোবাসার বাঁধন
“বাসর রাতে কোন বর কী এভাবে মন খারাপ করে থাকে?” আমি মুখ তুলে স্ত্রী তমা’র দিকে তাকালাম। “একী তোমার চোখে পানি কেন সে শাড়ির আঁচল দিলে আমার চোখ দুটো মুছে দিল। “ছিঃ এমন পবিত্র রাত এভাবে মাটি করে দিও না।” “আমার এই বিয়েতে তুমি কী হ্যাপি?” ঠান্ডা গলায় জানতে চাইলাম তার কাছে। “হ্যাপি না হলে কেউ কী শখ করে ঘরে সতীন আনে?” তমা শব্দ করে হেসে উঠল। “এই যা ভুলেই গেছি। তোমার বাসর ঘর সাজচ্ছিলাম, বাকী ফুল গুলো নিতে এসে তোমার সাথে দেখা হয়ে অযতা সময়টা নষ্ট হলো আমার তমা চলে গেল। আমি বেলকনি তে এসে আকাশের দিকে তাকালাম। কৃষ্ণপক্ষ চলছে, আকাশটা কেমন যেন বিদঘুটে অন্ধকার।
যাক, ভালোই হলো; আজ চাঁদ নেই জোছনাও নেই দশ বছর আগে তমা মেয়েটার সাথে যখন আমার বিয়ে হয়; বাসর রাতে সে বলছিল, “চলেন ছাদে যাই, জোছনা দেখি।” আমি অবাক হয়ে বলি, “এত রাতে ছাদে? মা যদি টের পায়?” কথা শুনে তমা খিলখিল করে হেসে উঠে। টোলপড়া গালে হাসি যে এত সুন্দর হতে পারে আগে জানা ছিল না। সে হাসি থামিয়ে বললো, “ওমা! আপনি এখনো আপনার মা’কে ভয় পান!” তমা আবার হেসে দিয়ে মুখ চেপে ধরল। আমার শরীরে খোঁচা দিয়ে বললো, “চলেন তো। এই রাতটা না হয় আরো স্মরণীয় থাক। চাঁদের আলোয় জামাই-বউ দুজন মিলে রোমান্স করব।এমন রাত কী আর আসবে?” হায়! তমা কী তখন জানতো, তাঁর স্বামীর জীবনে নতুন করে আবার বাসর রাত আসবে! আর সে নিজেই সেই বাসর ঘরটা সাজাবে? আমি পরিবারের একমাত্র সন্তান। আমার আর কোন ভাই বোন না থাকায়, অনেক আদর যত্নে বড় হয়েছি।
কলেজে যখন পড়তাম মা দুষ্টুমি করে বলতো, কী রে তোর কোন মেয়ে পছন্দ আছে নাকি? মা’র কথা হেসে উড়িয়ে দিতাম। মা সব সময় আমার সাথে এমন বন্ধু সুলভ ছিল। কলেজ শেষ করে যখন ভার্সিটি তে পড়ছি তখনো এ কথাটা মা প্রায়ই জিজ্ঞেস করতেন। কেন এই প্রশ্নটা করতেন, তখন কিছুই বুঝতাম না। একটা সময় এসে ঠিকি বুঝতে পারি আমার চাকরীরর বয়স যখন আট মাস চলছে, তখন মা আমার তড়িঘড়ি করে বিয়ের ব্যবস্থা করেন।বিয়েটা হয় মায়ের পছন্দতেই। ভেবেছিলাম নিজেকে আর গুছিয়ে তারপর বিয়েটা করব। কিন্তু তখন মায়ের মুখের উপর না করতে পারিনি। তাছাড়া বাবা হঠাৎ মারা যাওয়ার কারণে, মা খুব নিঃসঙ্গ অনুভব করত। চাকরি হওয়ার পর আমিও অফিসের কাজে থাকতাম, মা’কে তেমন একটা সময় দিতে পারতাম না।
সেসময় তমা আমার ঘরে বউ হয়ে আসে। প্রথম রাতে তাঁর গালের টোলপড়া হাসিটা যখন দেখি সেদিন’ই তার প্রেমে পড়ে যাই আমি। হ্যাঁ, বিয়ের পর আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন মন ভরে প্রেম করেছি। সে পবিত্র প্রেমের সরলতা মাদুর্যতা বলে বুঝানো হয়তো সম্ভব না। অফিস টাইমে প্রতিদিন বিকেল তিনটা বাজলেই ছটফটানি শুরু হয়ে যেত আমার। কখন পাঁচটা বাজবে, কখন বাসায় যাব, কখন তাকে জড়িয়ে ধরে একটু আদর করব? সারা সপ্তাহ ধরে হলিডের জন্য অপেক্ষা করতাম।প্রত্যকটা ছুটির দিন যেন ঈদের মত। টোনাটুনির মত এখানে-ওখানে ঘুরতাম। তার ঝালমুড়ি খুব পছন্দ ছিল । গুনে-গুনে দুটো মরিচ দিতেই হবে নয়তো এই ঝালমুড়ি তার চলবে না। কোন এক অদ্ভুত কারণে সে ফুসকা খেতে চাইত না। ফুসকা খেতে বললেই সে কেমন যেন হয়ে যেত।
একদিন ওকে আমি একটু জোর করতেই দেখি তাঁর চোখের কোণে পানি এসে যায়। সে কান্না ভেজা চোখে বলে, “দেখো আমি কুসংস্কার বিশ্বাস করি না। কিন্তু আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। তোমাকে আমি কখনোই হারাতে চাই না” তাঁর মুখে এমন অদ্ভুত কথা শুনে বড় অবাক হয়ে বললাম, কী হয়েছে তোমার?ঠিক করে বলতো? আমি তার অতীত নিয়ে কখনো কিছু জানতে চাইনি। কিন্তু সেদিন সে নিজ থেকেই সব বলছিল। কথা শুনে যা বুঝতে পারলাম সেটা হল, কলেজ লাইফে যেদিন সে পছন্দের মানুষটার সাথে প্রথম ফুসকা খেয়েছিল তার কিছুক্ষণ পরেই নাকি সেই মানুষটা রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। তাঁর খুব ভয় হয়, যদি আমার সাথেও এমন টা ঘটে।” ঘটনা শুনার পর, ওর শাড়ির আঁচলে আমার হাতটা বাঁধি। মুচকি হেসে বললাম, “এভাবে না হয় তোমার পাশে সব সময় বেঁধে রেখো, তাহলেই তো আর হারানোর ভয় থাকবে না। যেখানেই হারাই এক সাথেই তো হারাবো।”
সেই মধুর সময় গুলো যেন শেষই হচ্ছিল না। কিন্তু বিয়ের বছর কাটতে না কাটতেই মা আমাকে চাপ দিতে থাকেন বাচ্চার নেয়ার জন্য। আমি সব সময় চুপ থাকতাম কিছু বলতাম না। কারণ তমা’র ইচ্ছে ছিল বিয়ের দু’বছর পর বাচ্চা নিবে। আমিও তাঁর ইচ্ছার দ্বিমত পোষণ করিনি। দেখতে-দেখতে কীভাবে যেন অনেক গুলো বছর কেটে গেল। কিন্তু তমা আর বাচ্চার মা হতে পারে না। মাঝেমধ্যে মা রাগের মাথায় কটু কথা বলতেন। আমি তখন তমা’র হাতটা পরম মমতায় চেপে ধরতাম; চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দিতাম যত কিছু হোক না কেন আমি আছি তো তোমার পাশে। একটা সময় তমা’র সাথে মায়ের তেমন একটা কথা হত না। বউ শাশুড়ি বাসার দুকোণে দু’জন পড়ে থাকে। বিধাতার কী নিষ্ঠুর নিয়তি। তাদের মনের ভিতরের যন্ত্রণার ভাষাটা ওই একই। একজন বাচ্চার মা হতে চায়, আরেকজন দিনের পর দিন অপেক্ষা করছে কবে নাতি-নাতনির মুখ দেখবে।
মায়ের যন্ত্রণা টা হয়তো একটু বেশি। শুনেছি আমি জন্মের পরেও অনেক চেষ্টা করেছিলেন আবার বাচ্চার মা হতে।কিন্তু মায়ের হরমোন জটিলতার কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি। মা আসলে চেয়েছিলেন আমি যেন খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করি। এইজন্য প্রায় সময় জিজ্ঞেস করতেন কোন পছন্দ আছে কীনা? কারণ নিজের আর কোন সন্তানাদি না হওয়ার আকাঙ্ক্ষাটা মিটাতে চেয়েছিলেন এই নাতি-নাতনীদের মুখ দেখে সমস্যাটা আসলে আমার স্ত্রী তমা’র। সে কোন ভাবেই বেবি কনসিভ করতে পারে না। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, চিকিৎসাও চলছে তবু ডাক্তারা তেমন কোন আশা দিতে পারছিল না। মন দূর্বল হয়ে গেলে মানুষ অনেক কিছুই বিশ্বাস করতে শুরু করে। শুধু মা ডাক টা শুনার জন্য সে কবিরাজি চিকিৎসা থেকে শুরু করে; গলায় দাবিজ,হুজুরের পানিপড়া কোন কিছুই বাদ রাখেনি । সব সময় কেমন যেন মনমরা হয়ে থাকত । ওর মুখটার দিকে তাকাতেও খুব মায়া হতো।
প্রায় সন্ধার দিকে অফিস থেকে ফিরে এসে দেখতাম প্রতিদিন সে জানালার পাশে আনমনা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। কী হয়েছে তোমার, এ প্রশ্ন করলে তেমন সুউত্তর মিলত না। কিন্তু আমি কিছুটা হলেও জানতাম তাঁর এই কষ্টের কারণ? আমার মা তাকে চাপ দেওয়াচ্ছিল আমি যেন দ্বিতীয় বিয়ে করতে রাজী হই। কিন্তু সে এ বিষয়ে আমার সাথে কোন আলোচনা করত না । আর করবেই বা কেন? কোন মেয়ে কী চায়, নিজের স্বামী কে এত সহজেই অন্যজন কে ভাগ দিতে? একদিন সন্ধার সময় অফিস থেকে ফিরে এসে দেখি তমা বেড রুমের লাইট না জ্বালিয়ে অন্ধকারে বালিশে মুখ গুছে শুয়ে আছে। কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, “কী হয়েছে তোমার?” তমা কথার জবাব দিচ্ছে না। আমি বিছানা থেকে উঠে লাইট জ্বালালাম। দেখি তার নাক মুখ ফোলা-ফোলা,বুঝলাম সে হয়তো কোন কারণে কান্নাকাটি করেছে। বিছানা থেকে জোর করে উঠিয়ে হাত বুলিয়ে মাথার চুল গুলো ঠিক করে দিলাম। শান্ত গলায় বললাম, “মা কী কিছু বলেছে?”
-না।
-তাহলে কাঁদছ কেন?
তমা হঠাৎ করে আমায় জড়িয়ে ধরে, ফুফিয়ে-ফুফিয়ে কাঁদতে লাগল। “তুমি আরেক টা বিয়ে কর। পালক সন্তান আনলেও তো বংশ রক্ষা হবে না। আর মা খুব করে চাইছে নাতির মুখ দেখতে, আমি তো সেটা দিতে পারছি না। তুমি আরেক বিয়ে করেই ফেলো। আমি কথাটা মন থেকেই বলছি।” তমা এক নিশ্বাসে কথা গুলো শেষ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কথার জবাব না দিয়ে বিরক্ত হয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম ফ্রেশ হতে। রাতের বেলা দেখি তারা বউ-শাশুড়ি মিলে হাসি মুখে কুটকুট গল্প করছে। শেষ কবে তাদের এমন হাসি মুখ দেখেছিলাম মনেই নেই।
হঠাৎ অজানা এক ভয় গ্রাস করল আমায়। তবে কী তমা আসলেই মা’কে সম্মতি দিয়ে ফেলেছে আমার দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে মা হঠাৎ পাত্রী দেখা শুরু করে দিলেন। তার কাছে গিয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি কেন এমন টা করছেন? তিনি হাসি মুখে উত্তর দিলেন, “বউ মা তো সম্মতি দিয়েই দিয়েছে।তোর এত আপত্তি কীসের?” তখন ছুটে গেলাম তমা’র কাছে।বললাম, “কেন এই পাগলামি টা করলে তুমি?” সে হেসে বললো, “পাগলামির কী আছে? মানুষ দুটো বিয়ে করেনা? বিয়ের পর যখন তুমি বাচ্চার বাবা হবে, ঠিক তেমন করে আমিও তো বাচ্চার বড়-মা হবো। এখন বলো আমার কী মা ডাক শুনতে ইচ্ছে করেনা?” কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি আমি তাঁর মুখের দিকে। আমাকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সে হঠাৎ করে ওয়াশরুমের ভিতর ঢুকে গেল।
প্রথম বিয়ের মত করেই দ্বিতীয় বিয়েটাও হুট করে হয়ে হয়ে যায় আমার। কী হচ্ছে, কী ঘটছে কিছুই যেন মাথায় ঢুকছিল না । শুধু তাকিয়ে-তাকিয়ে দেখছিলাম তমা’র সে কী উৎসাহ! হাসি মুখে বিয়ের সব দায়িত্ব নিজের হাতেই সামাল দিচ্ছে। দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, বিধাতা কী মাটি দিয়ে বানিয়ে এই নারী জাতটাকে?পাহাড় সম দুঃখকষ্ট, বুকে হাজারো যন্ত্রণা লুকিয়ে হাসি মুখে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করাটাই কী এদের বৈশিষ্ট্য “আজব তো! তুমি এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছো?” তমার ডাকে সংবিত্ ফিরে পেলাম। “চলো-চলো নতুন বউকে আর কতক্ষণ একা রাখবে।”
তমা টানতে-টানতে আমাকে বাসর ঘরে এনে ঢুকায়। রুমের অন্যসব মানুষ কে বের করে দিয়ে, আমাকে নতুন বউ মুমতারিনের পাশে এসে বসায়। “বাহ্ দুজকে বেশ মানিয়েছ তো,” নতুন বউয়ের শাড়ির আঁচলটা আমার পাঞ্জাবীর কোণায় বাঁধতে-বাঁধতে হাসিমুখে বললো, “এই যে সতীন, ভালোবাসার মানুষটা তোমার কাছে বেঁধে দিয়ে গেলাম। রেখাল রেখো, যেন হারিয়ে না যায়।” শরীরের ভিতর একটা শিহরণ বয়ে গেল। আচমকা একটা দিনের কথা মনে পড়ে গেল আমার, যেদিন ওর শাড়ীর আঁচলে আমার হাত বেঁধে ছিলাম আজ কী কারণে বলল সে এ কথা ? তবে আমিও কী আজ হারিয়ে গেলাম ওর জীবন থেকে? ছয় বছর পর। স্ত্রী মুমতারিনের ডাকে ঘুম ভাঙে আমার। “কী হলো আজ অফিস যাবে না?” ঘুম জড়ানো গলায় বললাম, “না।”
“তোমরা বাপ-বেটি কী পেয়েছে বলতো? একজন বলছে আজ স্কুলে যাবে না। আরেক জন নবাবের মত বলছে অফিস যাবে না,’ বিছানায় বসে সে আমার শরীরে ধাক্কা দেয়। “না তা হবে না। উঠো বলছি।” এক ঝটকায় মুমতারিন কে ঝাপটে ধরে বিছানায় জড়িয়ে ধরলাম।
“একী! কী করছ তুমি? ছাড়ো মেয়ে দেখে ফেলবে তো?”
“দেখুক।”
“ইশ! ছাড়ো তো, অভদ্রতামি করনা।”
মুমতারিন আমার গলায় চিমটি দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। শাড়ির ভাজ ঠিক করতে-করতে বললো, ” আজ কী হয়েছে তোমার বলতো?” আমি ওঠে দাঁড়িয়ে ওর কমরে আবার জড়িয়ে ধরলাম। “কেন মনে নেই, আজ আমার বিবাহ বার্ষিকী?” মুমতারিনের মুখটা নিমিষেই ম্লান হয়ে গেল। ” হয়েছে আর ডং করতে হবে না। আহ্লাদী যেখানে দেখানোর দরকার সেখানে গিয়ে কর।” মুচকি একটা হাসি দিলাম। আমার হাসি দেখে মুমতারিন হিংসুটে একটা মুখমোচর দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। আজ আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। গাজীপুর সাফারি পার্কে অনেকক্ষণ ধরে দুজন পাশাপাশি হাঁটছি। তমা হঠাৎ করে বললো, “মেয়েটা কে আনলে না কেন?”
আস্তে করে তমার হাতটা আবার ধরলাম। “না এই দিনটা শুধু তোমার আর আমার। মাইশা কে (আমার মেয়ে) আনলে কী তোমার হাত ধরে এভাবে হাঁটতে পারতাম? তোমাকে ঝালমুড়ি খাইয়িয়ে দিতে পারতাম?” “ওরে বাবা এতই যখন দরদ,কাল রাতে উইশ করতে এলে না কেন? তুমি আসবে ভেবে আমি তো অনেকক্ষণ জেগে ছিলাম। কেন, ছোট বউ কে ফাঁকি দিয়ে আসতে ভয় পেলে বুঝি?” পার্কের ব্রেঞ্চে বসতে-বসতে বললাম, “সরি! কাল ক্লান্ত শরীরে হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আর হ্যাঁ আমি কাউকে ভয় পাই না শুধু তোমাকে ছাড়া।” তমা চোখ বড়-বড় করে তাকালো,”আমাকে ভয় পাও তুমি?”
“হ্যাঁ।”
“কেন, আমি আবার কী করলাম?”
“এই যে প্রতিমাসে নিয়ম করে একবার হলেও রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যাও;
হাতে পায়ে ধরে আদর করে আবার ফেরত আনতে হয়। ” তমা মুখ টিপে হাসছে, “তুমি কী মনে কর তোমার জন্য আমি ফেরত আসি?’ গলার স্বর কিছুটা নরম করে,” মাইশা তো এখন আমার সাথেই ঘুমায়।ওকে ছাড়া আমি কী এখন এক মুহূর্ত থাকতে পারব?”
আমি তাঁর দিকে কিছুটা ঝুকে পড়ে বললাম,”এই যে তোমার শাড়ির আঁচল টা একটু এদিকে দিবে?” আমার কথা শুনে তমা আঁতকে ওঠে। “না-না প্রত্যাক বার তুমি এই পাগলামি টা করে আমার মান-সম্মানের বারোটা বাজাও। না এবার আর তা হতে দিচ্ছি না।” আমি তমা’র শাড়ির আঁচল ধরতে চাইলেই সে উঠে আলতো পায়ে ছুটতে লাগলো। আমি ও তাঁর পিছন-পিছন ছুটে যাচ্ছি।আজ ওর শাড়ীর আঁচল দিয়ে হাতে বাঁধন দিতে পারি আর না পারি। কিন্তু এটা জানি তমা’র সাথে আমার এই ভালোবাসার বাঁধন কখনোই ছিড়বে না।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত