নীতু ছোট বেলা থেকেই মামা-মামির কাছে মানুষ। খুব শান্ত-শিষ্ট ও নম্র-ভদ্র মেয়ে নীতু।বাবা চলে যাওয়ার পর মা-মেয়ে মিলে মামার সংসারেই বড় হয়েছে। মামার সংসারে বড় হলেও বাবার অভাব কখনো বুঝতে দেয় নি নীতুর মামা। নিজের মেয়ের মতোই আদর ও ভালোবাসা দিয়ে লালন পালন করেছে। মামার এক ছেলে ও এক মেয়ে।নিয়াজ ও নিশাত ২ জনেই নীতুর ছোট নীতু ওদের নিজের ভাই-বোনের মতোই আদর যত্ন করে আবার সুযোগ পেলে শাসন করতে ও ছাড়ে না। বড় আপু হিসেবে নীতুর যেন তুলনা হয় না। পড়ালেখায় ও বেশ ভালো নীতু।অনার্স 3rd ইয়ার শেষ করে সবেমাত্র ফাইনাল ইয়ার শুরু করেছে। নীতু আত্মনির্ভরশীল মেয়ে সে পড়ালেখা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে।
পড়ালেখার পাশাপাশি সংসারের প্রায় সমস্ত কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাতের কাজে সে পারদর্শী। মামিকে সাহায্য করা , পরিবারের সবার খেয়াল রাখা, মামার প্রতি যত্ন নেওয়া সবই সে একা হাতে করতে ভালোবাসে। মা ও মামি কে রান্না ছাড়া ঘরের কোন কাজই তেমন করতে হয় না। সন্ধ্যায় মা ও মামির সিরিয়াল দেখতে বসে নীতুর হাতের চা-নাস্তা ছাড়া যেন আড্ডা-ই জমে না তাদের।অফিস থেকে ফিরে নীতুর হাতের এক কাপ কফি মামার চাই ই চাই। আর নিশাত ও নিয়াজের চাই আপুর বানানো স্পেশাল মুড়ি চানাচুর। এত ব্যাস্ততার মাঝে নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় হয় না তার নিজের পছন্দ-অপছন্দ, ঘুরতে যাওয়া এমনকি একটা প্রেম পর্যন্ত করা হয় নি প্রপোজাল যে পায় নি এমন না অনেক প্রপোজাল ই পেয়েছে কিন্তু কাউকে বিশ্বাস করে প্রতারিত হতে চায় না নীতু পড়ালেখা শেষ করে ভাল একটা চাকরি করে মায়ের পাশে দাঁড়ানোই তার একমাত্র লক্ষ্য সেদিন সন্ধ্যায় ড্রইংরুমে বসে সবাই মিলে সিরিয়াল দেখছে আর গল্প করছে। এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজ শুনে টিভি অফ করে যে যার মতো ঘরে চলে গেলো। নীতু জানে মামা চলে এসেছে তাই সবাই একদম চুপ, নীতু ছাড়া বাকি সবাই বড্ড ভয় পায় তাকে।নীতু গিয়ে দরজা খুলতেই মামা ভেতরে ঢুকে জিজ্ঞেস করল……..
—কি রে মা সবাই কই ? এত চুপচাপ কেন ? মাথা নিচু করে নীতু উত্তর দিল— যে যার রুমে আছে আর নিশাত পড়াশোনা করছে।
—মামা কি চা খাবেন নাকি কফি দিব ?
—এখন আর কফি খাব না এক কাপ রং চা করে দিলেই হবে বলে নিজের রুমে চলে গেলেন।
রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাবে এমন সময় নিশাত বলে জানো আপু, রাশেদ আমাকে প্রপোজ করেছে কি করা যায় বলোতো ? রাশেদ ওই যে ওই ছেলেটা নিশাত একদম না, এখন এসব প্রেম ট্রেম করবি না, ওকে না করে দিবি…. পড়াশোনা করো সময় হলে তখন ভাল ছেলে অনেক পাবা । এখনো তোমার বয়স হয় নাই, যাও ঘুমিয়ে পড়।আচ্ছা আপু আমার না হয় বয়স হয় নাই কিন্তু তোমার তো হয়েছে তুমি কেন প্রেম কর না ? এত সুন্দর দেখতে তুমি, কেউ কখনও প্রপোজ করে নাই তোমাকে সত্যি করে বলবা ? নীতু বলে আরে পাগলী আমি এসব প্রেম-ভালোবাসাতে বিশ্বাস করি না বিয়ে একদিন করতে হবে তার জন্য পরিবারের বড়রা আছেন। আমি এসব নিয়ে ভাবি না হইছে এবার ঘুমিয়ে পড়।
রফিক সাহেব কাউকে কিছু না জানিয়েই নীতুর বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক করেছেন। আজকে দুপুরে একসাথে বসে লাঞ্চ করেছেন।ছেলের নাম আহনাফ, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ভাল একটা চাকরি করে।ছেলের সাথে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করেছেন বিয়ে নিয়ে,নীতুকে নিয়ে। খোলামেলা সব কথা বলে ছেলেটাকে বেশ ভালো আর ব্রাইট মনে হয়েছে রফিক সাহেবের। আহনাফ ই নীতুর জন্য পারফেক্ট ছেলে।
পরদিন সকালে মামি এসে নীতুকে জানায়, নীতু তোর বিয়ে। বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক করেছে তোর মামা, কিছু দিন বাদে বিয়ে। বিকালে তোর মামা তোকে দেখা করতে বলেছে। নীতু হাসে আর বলে পাত্র কেবল দেখেছে বিয়ে তো আর এখনই হচ্ছে না, ঠিক আছে আমি মামার সাথে কথা বলব বিকেলে বারান্দায় বসে আছেন রফিক সাহেব। নীতু কফি হাতে নিয়ে হাজির মামার সামনে কিছু বলবে তার আগেই মামা বলল দেখ মা তুই বড় হয়েছিস, পড়ালেখা ও শেষের দিকে এখনই বিয়ের উপযুক্ত সময়। তোর উপর আমার দায়িত্ব টুকু এবার পালন করতে দে মা।নীতু বলল মামা আপনি আমার বাবার মতো, বাবা নেই তবুও কখনো বাবার অভাব বুঝতে দেন নি আমাকে। অনেক আদর যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে মানুষ করে তুলেছেন। আপনি যা ভালো মনে করেন তাই হবে আমার এ ব্যাপারে কোন আপত্তি নেই। রফিক সাহেব খুশি হয়ে বললেন আমি জানতাম তুই অমত করতেই পারবি না। জানিস মা, ছেলেটা খুব ভালো, শিক্ষিত, নম্র-ভদ্র। আমার খুব ভালো লেগেছে।ছবি আছে নিশাতের কাছে দেখে নিস আর আমি আহনাফের সাথে তোর দেখা করিয়ে দিব তোরা আলাদাভাবে নিজেরা কথা বলে নিস।
নীতু মনে মনে ভাবে আরেঞ্জ ম্যারেজ এর ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা মেয়ের মধ্যেই এক ধরণের ভয় কাজ করে। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে আমি রোমাঞ্চিত, কোন এক অজানা কারণে আমার কোন ভয় হচ্ছে না বরং অজানা আতঙ্কিত মন অপেক্ষায় আছে নতুন এক অনুভূতির, নতুন এক জীবনের। ২ দিন পর আহনাফের সাথে নীতুর বাহিরে দেখা করার কথা অজানা এক অনুভুতি কাজ করছে। নিশাত সাথে যাওয়ার কথা থাকলেও নিয়াজের সাথে যেতে হয় নীতুকে। এদিকে আহনাফ রেস্টুরেন্টে বসে নীতুর জন্য অপেক্ষা করছে। মিনিট দশেক পরেই নীতু এসে বসল আহনাফের সামনে। নীতুকে দেখেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল , কি অপরূপ মায়াবী দেখতে ! বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর আহনাফ ই জিজ্ঞেস করল……
আহনাফ : আচ্ছা আপনার নাম নীতু ?
নীতু : না তো, আমার নাম রুমঝুম।
আহনাফ : মামা তো বলল আপনার নাম নীতু।
নীতু : ওহ মামা বলেছে তাহলে আমার নাম নীতু (মুচকি হেসে) জানেন যখন জিজ্ঞেস করছেন কেন?
আহনাফ : না মানে শুরু তো করতে হবে আচ্ছা অর্ডার দেই ?
নীতু : আপনার মনে হয় আমাকে খুব একটা পছন্দ হয় নাই,যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করছেন।
আহনাফ : অরে না না আপনাকে অপছন্দ করার দুঃসাহস আছে নাকি ?
নীতু : আপনি কিন্তু আমার বাইরের রূপ দেখে বলছেন ভেতরের আমি রাগী না শান্ত, ভালো না খারাপ, আপনার সাথে আমার আন্ডারস্যান্ডিং হবে কি হবে না সেগুলা যাচাই করে নিবেন না ?
আহনাফ : আমার কাছে সৌন্দর্য মানে বাইরের চাকচিক্য না ভেতরের মন টাই আসল প্রথম পরিচয়ে আপনার ভালো লাগা-মন্দ লাগা, আপনার কথা বলা, ব্যাবহার,পছন্দ-অপছন্দ এসবের সঙ্গে পরিচয় হওয়া কিন্তু বাস্তব জীবনে জানতে গেলে একটু সময় তো লাগবেই।
নীতু : না আমি বহুরূপী না আমি ভেতরে যেমন বাইরেও ঠিক তেমন ই।
নীতু : আচ্ছা আপনার কাছে কি মনে হয় আরেঞ্জ ম্যারেজে লাভ ম্যারেজের মতো ভালোবাসা থাকে। আসলে এখানে তো আগে থেকেই সব ঠিক করা থাকে। তোমার তাকে ভালোবাসতেই হবে,এক সাথে থাকতেই হবে…সত্যি কি ভালোবাসা থাকে?
আহনাফ : এক্ষেত্রে আমি মনে করি ভালোবাসার অনেক ক্ষদ্র ক্ষুদ্র কর্নার আছে যেমনঃ ভালোলাগা, মায়া, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা , কেয়ারিং, দায়িত্বশীল এসব কিছুর সমন্বয়ে ভালোবাসার জন্ম হয়…. এরপরেই তো সম্পর্কটা তৈরী হয় আর সম্পর্কটাই তো শুরু হয় পরিচয় দিয়ে। এক পা দু পা করে সেই সম্পর্ক পূর্ণতা পায়।
আহনাফের বেশ পছন্দ হয়েছে নীতুকে।এমন শান্ত ,সহজ সরল একটা মেয়েকেই সে জীবনসঙ্গী হিসেবে চেয়েছে।বাসায় ফিরে মায়ের কাছে নীতুকে নিয়েই এগুলা বলছিলো।আহনাফের মা অসুস্থ,অনেক দিন ধরে প্যারালাইজড অবস্থায় আছেন। নীতুর প্রশংসা শুনে ও ছবি দেখে তিনি ও পছন্দ করলেন। নীতুকে সামনাসামনি দেখবে বলে একদিন বাসায় নিয়ে আসার জন্য আহনাফকে বললেন। সে সম্মতি জানিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।নীতুকে ফোন দিবে কি দিবে না করে অনেকক্ষণ বসে থাকার পর সাহস করে ফোন দিয়েই দিল।অপর পাশ থেকে নীতু রিসিভ করে সালাম দিয়ে কথা বলতে লাগল দুজনে বেশ কিছুক্ষণ হাসি ঠাট্টা আর গল্প করে কাটিয়ে দিল।
রফিক সাহেবের কাছে নীতুর মা ও মামি আহনাফ সম্পর্কে সব শুনেছে।ছেলের বাবা বিজনেস করে,মা অসুস্থ সব ই জানে। নীতুর মায়ের কাছে মতামত জানতে চাইলে বলে ভাইজান আপনি আছেন যা ভাল হয় আপনি দেখেশুনে করেন। ছোট থেকেই ওর বাবা নেই আপনি ওর ভাল মন্দ সব বুঝেন আমার কোন আপত্তি নাই। যদি নীতুর পছন্দ হয় তাহলে তাড়াতাড়ি বিয়ে টা করিয়ে দেন।মামা মামি সহ পরিবারের সবার পছন্দ কারো কোন আপত্তি নাই এ বিয়েতে এখন শুধু অপেক্ষা দুজন দুজনের বন্ধুত্ব হতে,একে অপরকে জানার, দুজন দুজনকে চিনে নেওয়ার। এভাবে আরও বেশ কিছুদিন তাদের ফোনালাপ চলে মাঝে মাঝে অফিস ফাঁকি দিয়ে হুটহাট দেখা করা, নীতুর ভার্সিটিতে গিয়ে অপেক্ষা করা, দুজন মিলে ঘুরতে যাওয়া তাদেরকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে আস্তে আস্তে দুজন দুজনকে বুঝতে শিখে, একে অন্যকে ভালো মতো জানতে পারে।
এক পর্যায়ে নীতুর ও আহনাফ কে ভালো লেগে যায়।জীবনসঙ্গী হিসেবে তাকেই মনঃস্থির করে ফেলে। আহনাফ যদিও আগেই ভালোবেসে ফেলেছিল নীতুকে কিন্তু সেভাবে বলা হয় নি কারো।তাই দুজনেই মনে মনে ঠিক করেছে আজ দেখা হলে মনের কথা গুলা বলে দিবে।নীল অপরাজিতা হাতে অধীর আগ্রহে নীতুর জন্য অপেক্ষা করছে আহনাফ— কখন আসবে ?সময় যেন কিছুতেই কাটছে না।প্রায় ২০ মিনিট পর গাঢ় সবুজ রঙ এর শাড়ী পরে নীতু এসে সামনে দাঁড়াল আহনাফ যেন চোখ সরাতেই পারছে না,অপরূপ সুন্দর দেখতে লাগছে। সবুজ শাড়ী, হাতে লাল চুড়ি, খোঁপায় লাল গোলাপ দিয়ে নীতু হালকা সেঁজেছে এর আগে কখনো এতটা সুন্দর দেখায় নি আজকে একটু বেশি ই অপূর্ব লাগছে।
এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নীতু একটা চিমটি কেটে বলল….
নীতু : কি মিঃ! এইভাবে হা করে কি দেখছো ?
আহনাফ : আমার বউকে…আজকে আমার বউকে অপরূপ দেখতে লাগছে।
নীতু : কে তোমার বউ ? এখানে তো আমি একা দাঁড়িয়ে।
আহনাফ : হুম তুমি ই আমার বউ আর তোমাকেই বলছি।
নীতু : বিয়ে করেছো আমায় ? বউ বল কোন সাহসে ! আজ পর্যন্ত প্রপোজ করার সাহস হয় নাই আর বিয়ে…
পাশ থেকে নীল অপরাজিতা গুলা হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে নীতুর সামনে গিয়ে আহনাফ প্রপোজ করে বসল—
আহনাফ : তোমার জন্য অনেক খুঁজে এক গুচ্ছ নীল অপরাজিতা পেয়েছি.. তোমার খোঁপায় পড়াব বলে। তুমি কি আমার অপরাজিতা গ্রহণ করবে ? বিয়ে করবে আমায় ? অনেক ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে।
নীতু : হুম আমি তোমার অপরাজিতা গ্রহণ করব,রোজ সকালে অপরাজিতা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করব। আমিও যে তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি (কান্নাজড়িত কণ্ঠে) নীতু এখনো ভাবতে পারছে না এভাবে কেউ ওকে প্রপোজ করেছে,এখনো সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে আহনাফ এসে চোখ মুছে আলতো করে নীতুকে জড়িয়ে ধরে বলল— কি পাগলী এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না ! চল আজ বাসায় গিয়ে মামা মামিকে বলে এবার বিয়ের ডেটটা ফাইনাল করে ফেলি অনেক তো প্রেম হল এবার কাছে আসার সুযোগ করে দাও আমাকে। হাসতে হাসতে বলল আহনাফ।
এরপর লেকের পাড়ে দুজনে বসে অনেক গল্প-খুনসুটি, অজানা অনেক কথা শেয়ার করল সারাজীবন দুজন দুজনার পাশে থাকার প্রতিজ্ঞা করল এমনকি গায়ে হলুদ থেকে বিয়ের প্ল্যানিং পর্যন্ত করে ফেলেছে। রাস্তার অপরপ্রান্তে আইচক্রিম ওয়ালাকে দেখে নীতু আহনাফের কাছে বায়না শুরু করে দিল আইচক্রিম খাবে বলে আচ্ছা ঠিক আছে বলে প্রেমিকার বায়না মিটাতে ওকে বসিয়ে রেখে আহনাফ আইচক্রিম আনতে চলে গেলো। গিয়ে দেখে দোকানে লম্বা লাইন কি আর করা বাধ্য হয়ে তাকেও লাইনে দাঁড়াত হল একের পর এক যাচ্ছে তবুও যেন লাইন শেষ হয় না এদিকে নীতু একা একা বিরক্ত হয়ে অনেকক্ষণ বসে আছে।প্রায় ২০ মিনিট হয়ে গেল এখনও আসছে না দেখে নিজেই ওর কাছে যাবে ভেবে হাঁটা শুরু করল। অপরপাশে আহনাফের আইচক্রিম কেনা শেষ রাস্তা পার হবে ঠিক তখনই দেখে নীতু তার দিকে আসছে।
আহনাফ বার বার চিৎকার করে সাবধানে রাস্তা পার হতে বলে নীতু কে তুমি দাঁড়াও আমি আসছি বলে– নীতু চারপাশ ভাল করে না দেখেই এক পা দু পা করে রাস্তায় হাঁটা শুরু করলে উল্টা দিক থেকে একটা চলন্ত বাস এসে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে নীতু। মুহূর্তের মধ্যে আহনাফ নীতু নীতু বলে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে ছুঁটে আসে।ততক্ষণে নীতু শেষ, নিস্তেজ হয়ে মাটিতে পড়ে আছে নীতুর মাথা ফেটে রক্ত বেরিয়ে শরীর লাল রঙে রঞ্জিত হয়ে যায়। মানুষ জড়ো হয়ে যায়, ভিড় করে দাঁড়ায় সবাই। ভিড় ঠেলে কাছে গিয়ে দেখে নীতুর নিথর দেহ মাটিতে পড়ে আছে কোন সাড়া শব্দ করছে না, কোন কথা বলছে না, খুব নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে।
আহনাফ মাটিতে বসে নীতুকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে আর চিৎকার করে বলছে কেন তুমি সাবধানে রাস্তা পার হলে না,কেন আর একটু অপেক্ষা করতে পারলে না… কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে… নীতু আমি যে বড্ড একা হয়ে গেলাম। নীতু চলে গেছে অনেক বছর হলো আহনাফ এখনো নীতুর কথা মনে করে গুমড়ে গুমড়ে কাঁদে। এখনো সে একাই রয়ে গেছে, অন্য কাউকে আর নীতুর জায়গা টা দিতে পারে নি। নীতুর বিয়ে ঠিক হলো ঠিকই কিন্তু বিয়েটা আর সম্পূর্ণ হল না…