কিছুদিন আগে প্রেমিকার বাবা কল দিয়ে বলতেছে” রিফাত বাসায় কেউ নাই। তুমি আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবা?খুব জরুরী দরকার ছিল”। মনে মনে দুই তিনবার নাউজুবিল্লাহ পড়ে বললাম” আঙ্কেল আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আমি অই টাইপের ছেলে না। আপনি অন্যকোথাও চেষ্টা করুন”। আঙ্কেল ধমক দিয়ে বললেন ” আরে হারামজাদা তুই জিম কে বিয়ে করতে চাস না? ওর ব্যাপারে কথা বলতেই তোরে বাসায় ডাকছি।
নামাজের ওজু করছি আমি। নাইলে তোর অবস্থা না থাক এইসব মনে আনলেও ওজু ছুটে যাবে। যেহেতু প্রেমিকার বাবা বাসায় ডেকেছে। তাও বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে। খালি হাতে কিভাবে যাই৷ এক বন্ধুর থেকে পাঁচ হাজার টাকা ধার নিয়ে বগুড়ার দই থেকে শুরু করে দার্জিলিং আপেল। সিলেটের চা থেকে শুরু করে কুমিল্লার রসমালাই। কিচ্ছু বাদ রাখি নাই। সব কিনে প্রেমিকার বাসায় হাজির। যেহেতু প্রেমিকা কয়েকদিন আগে বান্ধবীরদের সাথে বান্দরবান ট্যুরে গেছে আশা করছিলাম প্রেমিকার মা আছে। গিয়ে ইচ্ছেমতো খাওয়াদাওয়া করা যাবে। কিন্তু তিনিও নাকি বাসায় নাই। ভাইয়ের বাসায় ঘুরতে গেছে। চুপিচুপি প্রেমিকার বাবার সামনে বসে আছি। আর প্রেমিকার বাবার দেওয়া এক টাকা দামের মিঃ ম্যাংগো চকলেট চুষে খাচ্ছি।
শুনো রিফাত, আমি ভেবে দেখলাম তুমিই জিমের জন্য পারফেক্ট। চাকরিবাকরি পাওনি সমস্যা নেই। তোমার মতো ছেলের কাছে মেয়ে দিতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু বাবা আমার মেয়েটাকে সুখে রাখবে। আর দ্রুত ভালো একটা চাকরির ব্যবস্থা করে নিবে। এই আমাকে দেখো। জিমের মাকে বিয়ে করে ৩০০ টাকা নিয়ে ঢাকা শহরে এসেছিলাম। এখন আমার দুইটা বাড়ি। সেসবে ভাড়া তুলছি। আরামে খাচ্ছি।এই বয়সে এসেও বিভিন্ন ধরনের নিত্যনতুন কাজ করছি। আশাকরি তুমিও পারবে। আগামী মাসে তোমার আর জিমের বিয়ে সেরে ফেলতে চাই আমি।
এতদিন বই, পুস্তকে, ইসলামি সভায় ও মসজিদে ফেরেস্তাদের কথা শুনেছি। আজ মনে হলো সেই ফেরেস্তা সামনে বসে আছে। তাড়াতাড়ি হবু শ্বশুরের পা ছুঁয়ে সালাম করলাম। হবু শ্বশুর আমাকে বললো, বাবা তুমি মনে হয় ঘি আনতে ভুলে গেছো। আর শুনো এই কথা এখনই জিমকে জানানোর দরকার নেই। ও ট্যুর শেষ করে এলে সবাই মিলে ওকে সারপ্রাইজ দিবো কেমন! জিমদের বাসা থেকে বের হয়েই আরেক বন্ধুর থেকে এক হাজার টাকা ধার করে এক কেজি ঘি কিনে আমার বাসার (এখন শ্বশুরের বাসা ভবিষ্যতে আমার হবে) দারোয়ানের কাছে দিয়ে আসলাম। শ্বশুর আমার যে ফেরেস্তা। মুখ ফুটে যে ঘিয়ের কথা বলেছে তাতেই আমি খুশি। কি বোকামি করে যে যাবার আগে ঘি কিনে নিয়ে যাইনি। রাতে শুয়ে আছি।
এমন সময় কাছের ছোটো ভাই মেসেঞ্জারে একটা ভিডিও লিংক দিয়ে বললো, বড়ভাই এইটা আপনি না? লিংকে ক্লিক করে ইউটিউবে গিয়ে দেখলাম। আরে হ্যাঁ আমিই তো। জিমের বাবার সাথে বসে আছি। বিয়ে নিয়ে কথা বলছি। কিন্তু ভিডিওর শেষে জিমের আব্বু বলে উঠলো ” হ্যাঁ বন্ধুরা একটু আগে যাকে প্রাঙ্ক করলাম সে হচ্ছে আমার মেয়ের ৪ নাম্বার প্রেমিক। করোনার কারণে সব ভাড়াটিয়া বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। তাই মেয়ের প্রেমিকদের নিয়ে এভাবে বাসায় খরচ করে নিচ্ছি। ভিডিও ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার দিবেন। আশাকরি সামনে আরও এমন প্রাঙ্ক ভিডিও আপলোড দিবো।
গল্পের বিষয়:
গল্প