ভাগ্যবতী

ভাগ্যবতী
~ রেডি থাকবি আজকে। ভালোভাবে সাজবি। নামি-দামি অল্প বয়সের পোলা পাবি। পোলাডারে কিন্তু একদম খুশি করে দিবি। কচিকাঁচা মেয়েদের দেখাইলাম। অথচ এগুলারে রাইখা পোলা তোরে না দেইখা কিল্লাই রাজি হইলো? শতবার কইলামও ‘ ওয় পুরাতন মাল। বয়স ২৮ এ-র কাছাকাছি। ‘ তাও বলে ‘ পব্লম, পব্লেম নাই ‘। [ চেচিয়ে ] আরে কি জানি কইছিল ইংরেজিতে শেফালী?
~ পব্লেম নাই। শেফালীর উত্তরে চোখ উল্টিয়ে ফেলল ইম্রিবা। বিষন্ন মুখ নিয়ে বলল,
~ প্রব্লেম। মানে, সমস্যা নেই। আচ্ছা শুনো না দিদি। আজকে লোকটাকে অন্যকারো কাছে পাঠাও না। শরীরটা আজ ভালো না তেমন। আনোয়ারা সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে বলল,
~ তোর বা*। চুপচাপ পা মেলে দিবি। রাত্রের ১২টায় আইবো। যা ভাগ, সাজুগুজু কর।
ইম্রিবা তার পিছলে চুলগুলো পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উপড়ের দিক হাটা দিলো। আজ, তার শরীর খুব ক্লান্ত। অনেক্ক্ষণ সে চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, আজ একজন কাস্টমারও পেলেন না। প্রতিদিন সেখানে দাঁড়ালে তিন-চারটে তো চোখ বুঝে পেয়ে যায়। নিশ্চিত আজ তাকে বেশি কুৎসিত লেগেছিলো। জামদানী শাড়ি পড়ে, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দিয়ে, চুলগুলো খোঁপা করে নিলো। চুল খোলা থাকলে নাকি কাস্টমারদের ভেজাল হিয়। তাই, খোঁপা করাই উত্তম। বাহিরে তীব্র বৃষ্টি হচ্ছে। জানালা বন্ধ করে দিলো। বিছানার মাথায় হেলান দিয়ে ফেইসবুক লগিং করলো। নিউজফিডটা ঘুরছিল। হঠাৎ ধড়াম আওয়াজে দরজা খুলে কেউ প্রবেশ করলো। ইম্রিবা দ্রুত ভাবে দাঁড়িয়ে গেলো। ভিতরে প্রবেশকারী ব্যাক্তিকে দেখে ভ্রু উচু করে রইলো। ২০_২১ বয়সের এক যুবক ছেলে। অল্পবয়সী ছেলে তার কাছে কেনো আসবে? তাও এমন ভয়ংকর সুন্দর যুবক।
~ আপ ইম্রিবা আপনি বলতে গিয়েও বলল না। আপনিটা একদমই মানাচ্ছে না। বাচ্চা বয়সের ছেলের সাথে এগুলো ভাবতেও বিরক্ত লাগছে। বয়সী লোক আসেন ঠিকাছে। কিন্তু, এমন যুবক ছেলে?
~ তুমি কিন্তু টাকা নিয়ে ফিরতে পারবে। টাকা ফিরত দিয়ে দেবো। ইম্রিবার সামনে দাঁড়ানো ছেলেটা ঘড়ি খুলে ঠিক বিছানার পাশের টেবিলে রাখলেন। হালকা ভেজা ই’ন করা শার্টটির হাতার বোতাম খুলতে লাগলো। কলার থেকে বোতাম খুলতে খুলতে বললেন..
~ জানালাটা খুলে দাও।
ছেলেটার আওয়াজ প্রচন্ড ম্যানলি টাইপের। মানে এককথায় আপনি শুনতে বাধ্যগত এমন আওয়াজ। শরীরের পশম গুলো দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ইম্রিবার। তার পা নিজনিজ জানালা বন্ধ করতে চলে গেলো। জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাসের সাথে বৃষ্টির ফোঁটাও আসছে। সে ন্যায়নীতি অবলম্বন করে একই যায়গায় গিয়ে দাঁড়ালো। তার আজ আওয়াজই আসছে না। কাস্টমার প্রবেশ করতেই ইম্রিবার কড়াকড়ি গলা শুনা যেতো ‘ নে দ্রুত কাজ শেষ করে বিদায় হয়ে যায়। ‘ কিন্তু আজ? কোনো আওয়াজি কেনো বেরোচ্ছে না? ছেলেটি তার শার্টটি সম্পুর্ন খুলে বিছানায় ছুড়ে মারলো। ফরসা বডিটা সম্পুর্ন চোখের সামনে ইম্রিবার। পায়ের বোর্ড শু দুটো খুলে পাশে রাখলো। ছোট ভেজা চুলগুলো হাত দিয়ে ঝাড়তে লাগলো। ইম্রিবা শুধু চোখ খুলে দেখে যাচ্ছিলো। হঠাৎ তার লাগলে শুরু করলো। এমন অল্পবয়সী ছেলের সাথে এগুলো করার কথা ভাবতেও বেশ অদ্ভুত লাগছে।
~ টাকাটা নিয়ে অন্যকারো কাছে যাও। আমি পারছি না। দুখিঃত। এইবার ছেলেটা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ইম্রিবার তাকালো। সাথেসাথেই তার সামনে চলে আসলো। ছেলেটি ইম্রিবার ছেকে ৫_৬ ইঞ্চিখানেক লম্বা হবে। সে একটু পিছনে চেপে গেলো। বিছানার সাথে একদম লেগে। ছেলেটি তার বুড়ো আঙুলের সাহায্যে ইম্রিবার ঠোঁটের লিপস্টিক ঘেঁষে পুছে দিলো। যে-ই কারণে লিপস্টিক বাম গালে ছড়িয়ে গেলো।
~ লিপস্টিক লাগাতে হবে না। [ শাড়ির আঁচল টেনে খুলে দিয়ে ] শাড়িও পড়তে হবে না। [ চুলে খোঁপা টান দিতেই, ইম্রিবা ‘ উঁহু ‘ করে উঠলো ব্যাথায় ] চুল নিয়ে কিচ্ছু করতে হবে না। বুঝেছ?
ইম্রিবার পিছলে চুলগুলো ঝরঝর করে কোমড়ে লুটিয়ে পড়লো। সে এখনো বিস্মিত হয়ে নিচে তাকিয়ে। এতটুকু ছেলের কাহিনি মাথায় ঢুকছে না। এমন ভয় করছে কেনো? বুক ধড়ফড় কেনো করছে? গলা শুকিয়ে যাচ্ছে বারবার। একজন রাগী বেশ্যা হয়েও সে এ-ই পিচ্ছি ছেলেকে ভয় পাচ্ছে?আওয়াজ ও বেরোচ্ছে না তার। ছেলেটির হাত কোমড় ছুঁয়ে দিতেই ইম্রিবা ‘ উঁহু করে উঠলো। তারপর ঠিকঠিক ইম্রিবার শাড়ি ততক্ষণাত খুলে গেলো। ছেলেটির এক ধাক্কায় সে দেওয়ালে দ্রিম করে লেগে গেলো। ব্যাথা পেয়েও তার মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হয়নি। কারন, ছেলেটির ঠোঁট তার ঠোঁট কামড়ে দিতে ব্যাস্ত। ব্লাউজের বোতাম গুলোও খুলে গেলো। ইম্রিবা শুধু হালকা চাঁপাস্বরে আওয়াজ করে যাচ্ছিলো। ছেলেটির রাগে ইম্রিবা আগুনের মতো শুধু পুড়েছে।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইম্রিবা। নিজেকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কামড়ের দাগ গুলো স্পষ্ট লালচে দেখাচ্ছে। পুরো শরীর তার চিনচিন হয়ে জ্বলছে। মুখেও দাগ গুলো ফুটে আছে। ঠোঁটে আঙুল ছোঁয়াতেও ভয় করছে জ্বলার কারণে। ভোরের ছয়টা বাজছে। অথচ ছেলেটি এখনো তার বিছানায় উল্টো হয়ে ঘুমানো। কাজ শেষেই তো চলে যাওয়ার কথা? বা ইম্রিবা নিজেও তো বের করে দিচ্ছে না। তার বলতেও শরীর ঘিনঘিন করছে যে ‘ তার প্রচন্ড লজ্জা লাগছে ‘। একজন বেশ্যা হয়েও তার লজ্জা লাগছে। যা তার আছে আজ অবদি জানতো না।
এ-ই শরীর নিয়ে সে কাজে কিভাবে যাবে? কাস্টমার নিবে নাকি? বা সে কাজে যেতে পারবে নাকি সেটাও সন্দেহ। বাহিরে গেলেই সকলেই প্রশ্ন ছুড়ে মারবে। তারা বুঝে যাবে তার শরীরে দাগের কারণ। সে কি বলবে? তাদের তো নিয়ম আছে। শরীরে দাগ বসানো নিষেধ। আবার, রাত্রিতেই কাজ শেষে ফিরত যাওয়া। অথচ, এই ছেলে এখনও শুয়ে। ইম্রিবা আড়চোখে বিছানায় তাকিয়ে ঘাড়ে ছুঁয়ে দিলো। বড্ড জ্বলছে, সব জ্বলছে। গোসল করে কামিজ পড়ে দাঁড়িয়ে সে। সাহসও হচ্ছে না ডেকে দেওয়ার জন্য। আটটা হয়ে এসেছে। অথচ, ছয়টা থেকে ছেলেটির মোবাইল বেজেই যাচ্ছে। এবার বেজে উঠতেই সে নড়ে উঠলো। ইম্রিবা দ্রুত অন্যদিকে ফিরে গেলো। আড়চোখে দেখলো, ছেলেটি মোবাইল কানে গুঁজে বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বসলো। ঘুম জড়ানো ভাঁড়ি কন্ঠে কথা বলতে লাগলো। চুলগুলো হাত দিয়ে উঁচু করে দিলো!
~ ইয়ে’স ম্যানেজার!
~?
~ ইয়াহ! গুড মর্নিং! হোয়াট এবাউট ইনভেস্ট?
~?
~ টু মাচ! ১২ লাখ ৫০ হাজার হলে সাইন দেবেন! আদারওয়াইস ক্যান্সেল!
~?
~ গিভ মি টু আওয়ার অ্যান্ড আই’ল বি দ্যায়ার!
ইম্রিবা মুখটি ‘হা’ করে দাঁড়িয়ে রইলো। তার হাত পা কাঁপছে। বিছানার দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছে না। পিছনে ছেলেটির উষ্ণ আভাস পেতেই কুঁকড়ে গেলো। তা পা দু’টি শুধু দূরে যেতে চাইছে। হঠাৎ ছেলেটির হাত তার পেট ছুঁয়ে দিলো। ইম্রিবা ধিরে ধিরে ঘুড়লো। চোখে চোখ রাখতে গিয়েও বারবার ব্যার্থ হচ্ছে। তার থুতুনি ধরে উঁচু করে ধরলো, বুড়ো আঙুলের সাহায্যে লালচে দাগগুলোতে ছুঁয়ে দিতে লাগলো। ছেলেটি যেতেই আনোয়ারা সহো ঘরে আরো কিছু মেয়েরা এলো। ইম্রিবা নিজ মনে মোবাইল টিপছে। আনোয়ারা এসেই চোখ বড়বড় করে বলল..
~ হায় আল্লাহ। কি করছে ছেলেটা তোরে! শুধু কি কামড়াইছে নাকি কামের কাম কিছু করছে? আরেকজন বলল..
~ ছেলেটা কিন্তু চমৎকার দেখতে! আমরাও পিছুপিছু গেছিলাম যদি পছন্দ কইরা ফেইলা এতটাকা দিয়ে এক রাইত থাকে! কিন্তু বাবাহ। পোলাডা যেই গাড়ি চালাইয়া মাথা উছা কইরা বাইরাইলো! আনোয়ারা আবার বলল..
~ তা কি করলো তোরে নিয়া? নিশ্চই এক ঘন্টা পরেই ঘুমাইয়া গেছে! ইম্রিবা থমথমে গলায় বলল..
~ সারারাত ঘুমুতে দেয় নি! পাচ’টা ত্রিশে ছেড়েছে। ভগড়ভগড় না করে, ঔষুধপাতি কিছু আনো!আমার শরীর ব্যাথা করছে! পুরো শরীরের দাগ গুলো জ্বালা করছে মলম দিতে হবে। আমার চুলগুলো ছিঁড়ে কিচ্ছু রাখে নি! চোখ দেখছো না আমার? লাল হয়ে ভয়ংকর দেখাচ্ছে! গলা ভেংগে গেছে! এটাকে ছোট ভেবে নেহাতি পাপ করেছি! অনেক বড়! অসভ্য কোথাকার! আজকে যত কাস্টমার আসবে সব পাঠাবা! আমি সারাদিন কাজ করবো! কত টাকা দিলো আমাকে এমন হেনোস্তা করার জন্য? এই লোক আসলে বলবে আমি আর কাজ করবো না! বুঝেছো সোজাসুজি বলবে! করবো না মানে করবো না! ইম্রিবা তার সারারাতের যন্ত্রণা পুরো বের করে ফেলল। ইন্তু সেটা করেও ঢোগ গিলছে। দড়জায় সেই ছেলেটি পকেটে হাত পুরে দাঁড়িয়ে। হয়তো মোবাইল নিতে এসেছে, যেটা আপাতত বিছানায় পরে আছে। ধিরে দাঁড়িয়ে গেলো ইম্রিবা। তার ভয় করছএ। ছেলেটি তার হাত স্লো-মোশনে দেখিয়ে দিলো সবাইকে বেরোতে। ইম্রিবা মাথা দুলিয়ে না করে দিলো আনোয়ারাকে। আনোয়ারা টুকরো হেসে বলল..,
~ তা, স্যার টাকাপয়সার ব্যাপারে কিছু কথা কইতাম। ছেলেটি থমথমে আওয়াযে বলল, আব্দুল নিচে আছেন। সব বুঝিয়ে দিবেন। আউট ইম্রিবা সেখানেই ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো। তার মাথা ভনভন করছে। সবাই ঘর থেকে বেরোতেই সে দরজা লাগিয়ে দিলো।
~ কাস্টমার লাগবে? এইবার ডাবল দাগ হবে।
একঘণ্টা শুধু বিছানায় চোখ বুঝে শুয়ে ছিলো ইম্রিবা৷ অতিরিক্ত রাগ লাগছে! সে যে উঠে দাঁড়াবে শক্তি পাচ্ছে না! গোসল নিয়ে নিচে নামলো কাঠের সিঁড়ি দিয়ে ধীরেধীরে! তার পল্লির মেয়ে গুলো ছেলেদের ডেকে যাচ্ছে! আনোয়ারার রুমে যেতেই আনোয়ারা দাঁড়িয়ে গেলো! আনোয়ারার ম্যানেজার সহো সাথীরা সব দাঁড়ালো! আনোয়ারা খুকখুক করে হেসে উঠলো! একটুপর আওয়াজ করেই হেসে ফেলল!
~ এহন জ্বলতাছে না?
~ তুমি কিছু বললে না কেনো? এক_দু ঘন্টার যায়গায় সারারাত ছিলো! তারউপড় দিন_দুপুর বেলা তোমার সামনে কাহিনী করে গেলো আর কিছু বললে না?
~ তুই কিছু কইলিনা কেন?
~ কি বলতাম? দেখেছো না কিভাবে তাকাচ্ছিলো? আমি যে তার বড় সেটা সে না ভুললেও আমিই ভুলে গেছি! আর এখানে আসতে দেবে না ছেলেটাকে!
আনোয়ারা বিষন্ন মুখে বলল..
~ তোরে কিন্না নিছে! বড়বড় চোখ করে, একটু হাসার চেষ্টা করে বলল..
~ মজা করছো না?
~ ছেড়ার ডাইবার আইবো তোরে নিতে বিকালে! মাঝেমাঝে আমাগো দেখতে আইবি তো?
~ কেনো? আমি ভুল শুনছি তাই না?
~ কচি ভার্জিন মাইয়াও এতো টিয়া দিয়া কেউ কিনে না!
যতো তোরে দিয়া কিনতাছে! না করতে পারুম না রে! গাড়িতে বসে ইম্রিবা ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে! ওর সাথে এই বয়সে কি হচ্ছে ধারণা নেই! সাথে আবার কিচ্ছু নেই! শুধু শরীরে কামিজ আর কিছুই নিতে দেয় নি ড্রাইভার! ফোনটাও নিতে দেয় নি! এ কোন জ্বালা! এক দোতলা বাংলোর সামনে গাড়ি যেতেই দাড়োয়ান গেইট খুলে দিলো! ড্রাইভার এর মুখ কুচকানো দেখে খারাপ লাগছে! ড্রাইভারটা বারবার বিড়বিড় করে কি জেনো বলছে! স্বাভাবিক বেশ্যাদের দেখলে আর কি বা ভাববে! ছেলেটাকে দেখেই বুঝেছিলো ইম্রিবা বড়লোক হবে! বাড়ি দেখে আরো কুঁকড়ে উঠলো! ভয় করছে খুব! পরিবার থাকলে বাড়িতে? ভিতরে ঢুকতেই মাঝবয়সী এক মহিলা দৌড়ে আসলো! সোফায় বসতে দিয়ে কোথায় জেনো দৌড় দিলো! মিনিটে ফিরে এসে হাতে মলম দিলো!
~ সাহেব বলছে তোমারে এইটা দাগে দাগে লাগাতে ! তারপর খাবার খেয়ে ঔষুধ খাইতে! তোমার জন্য সাহেবের ঘড়ে ফোন রেখে গেছে! সেইটায় তার নাম্বার সেভ করা। কল দিতে বলছে ! মাথা নেড়ে, ইম্রিবাকে যা যা বলা হয়েছে সে তাই করলো! ফোন দেওয়ার সময় দু’বার ভেবে আর দিলো না! সোফায় মহিলাটার সাথে বসে রইলো! সামনে বড় দেওয়াল টিভি! মহিলা এইবার ঘুড়লো..
~ নাম কি তোমার?
~ ইম্রিবা! আপনার?
~ আকিয়া! বয়স কতো?
~ ২৮!
~ আমার ৪৫..! এখানে কাজ করি ২০ বছর যাবত!
~ জ্বি! উনার নাম কি?
~ ইহসাব মজুমদার!
~ বাড়িতে আর কেউ থাকে না?
~ আমি আর আরেকটা বুয়া আছে! দু’জন মিলে বাড়ি পরিষ্কার রাখি! আমি রেঁধেবেরে বিকেলে চলে যাই! কিন্তু সাহেব বলল সে না আসা পর্যন্ত তোমার সাথেই থাকতে!
~ মানে পরিবার নেই আপনার সাহেবের?
~ তার মা_বাবা মারা গুয়েছে প্ল্যান ক্রাশ খেয়ে! তখন সাহেবের বয়স ১৬! ভাই_বোন নেই সে একাই! এভাবে রিলেটিভ’স অনেক! সবাই সম্পত্তির লোভে! কিন্তু সাহেব অনেক ম্যাচুয়ের! সে তখন থেকেই নিজে সব সামলায়! কিন্তু বয়স কম হওয়ায় তার বিশ্বস্ত ম্যানেজার ও সামলাতো! এখন সেই সামলায়!
~ বয়স কতো তার?
~ ২১ হতে ৩ মাস বাকি!
~ পড়ালেখা?
~ এইচএসসি কাম্পলিট !
~ এতো অল্পবয়সে? হালকা হেসে..
~ ক্লাস টপকিয়েছে!
বললাম না সে একটু ছোট থেকেই বেশি ম্যাচুয়ের ছিলো! আর সেটা ম্যাডাম সারাদিন বলতেন! ৩ বছরেই তাকে স্কুলে দেওয়া হয়! দেখবেন কিভাবে কথা বলে! পুরো ম্যানলি টাইপের! ভাবতেই পারবেন না সে ছোট! যখন রাগেন? সেদিন বাড়িতে আমরা কেউ থাকি না! থাকলে হাসপাতাল যেতেই হবে! বলেই হেসে দিলেন! ইম্রিবা হালকা ভেবে বলল..
~ আপনি কি জানেন আমাকে কেনো আনা হইসে? মানে আপনি জানেন আমি কোথা থেকে এসেছি! মহিলাটি দাঁত দেখিয়ে হেসে বলল..
~ সাহেব এসে পরবে! কাল বরং খুলে বলবো! তুমি বরং টিভি দেখো! আমি রান্না সেরে আসি!
দরজা দিয়ে ইহসাব কে ঢুকতে দেখেই দাঁড়ালো ইম্রিবা! তার হাতে অফিস ব্যাগ! পাশে বয়সী এক লোকের সাথে কথা বলে বলে ভিতরে আসছে! ইম্রিবা কে দেখেই ব্যাগটি সোফায় রেখে, গলার টাই খুলতে খুলতে বলল..
~ তোমায় বলে নি আমি কল দিতে বলেছিলাম? ইম্রিবা মাথা নাড়ালো!
~ হ্যা বলেছে!
~ কল করো নি কেনো?
~ উমম ভু..ভুলে গিয়েছিলাম! সোফায় পা উঁচু করে বসতে বসতে..
~ সমস্যা নেই! আর ভুলবে না! ব্যাগ নিয়ে ঘরে যাও! ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার আগেই সেই লোকটার আওয়াজ..
~ আরে আমরা পরিচর হয়ে নেই! [ ইম্রিবা ঘুরতেই ] আমি ম্যানেজার আইয়ুব!
~ জ্বি আসসালামু অলাইকুম! আমি আইয়ুব আগেই বলে উঠলো..
~ ইম্রিবা! আমি জানি! তা আইয়ুব কিছু বলার আগেই ইহসাব থমথমে গলায় বলল..
~ রুমে যেতে বলেছি তোমায়!
ইম্রিবা দ্রুতো চলে গেলো! পরেরদিন রুম থেকে আর বের হয় নি সে! তার শরীর অচল! ইম্রিবার উপড় এতো রাগ কেনো ছেলেটার ? তাকে কয়েকদিনেই মেরে ফেলবে! বিছানায় বসে ছিলো! কাজ শেষে আকিয়া আর তার সাথে আরেকটা মহিলা রুমে আসলো হাতে খাবার! আকিয়া হালকা হেসে বলল..
~ সাহেব কয়টায় বেড়িয়েছিলেন? ইম্রিবা ভাংগা গলায় বলল..
~ ১২ টার দিক!
~ সাহেব কিন্তু ৬ টায় বাড়ি থেকে বের হন! বলেই দুষ্টু হাসলো! তারপর ধীর আওয়াজে বলল..
~ তোমায় কিন্তু সাহেব ৪ বছর আগের থেকে চিনে! এইবার অবাক না হয়ে থম হয়ে রইলো ইম্রিক! আকিয়া হালকা ওয়ায়জে বলল..
~ আমাকে সব খুলে বলতো আইয়ুব! প্রতিদিন সাহেবের কাহিনী খুলে বলতো আর কি করা যায় পরামর্শ চাইতো!
~ কি কাহিনী?
~ সাহেব তখন ফার্স্ট ইয়ারে পড়তেন! বয়স ও কম ছিলো!
ম্যানেজার এর সাথে মিটিং শেষ করে আসার পথে তোমাকে দেখেছিলো রাস্তার মোড়ে! ম্যানেজার বেশ বুঝতে পারেন সাহেবের পছন্দ হয়েছিলো তোমায় ! প্রায় দেখতেন তোমাকে অন্যকারো সাথে চলে যেতে মোড় থেকে! বুঝতে পারেন তোমার কাজ! ওই পথ দিয়ে নাকি আর আসতেন না গাড়ি ঘুড়িয়ে আসতেন! ম্যানেজার বিয়ের ব্যাপারটাও বলতে পারতেন না কারন সে তখনো ছোট! মেয়েদের সাথে কথা বলতে বললে প্রচন্ড রেগে যেতো! সুইজারল্যান্ড গিয়েছিলো বছর পর ফিরেছিলেন! এসে প্রায় মাস খানিক পর নাকি তুমি যেখানে দাঁড়াতে ওই রাস্তা দিয়ে আবারও আসতে লাগলো! ম্যানেজার বুঝতেন যে ” তোমার বয়স আর কাজকর্ম ” তাকে বাধা দিচ্ছিলো আগাতে! এভাবেই সে রাগ দেখিয়ে চলতো! তাও তোমার কাছে যেতো না! কষ্ট পেতো তাও বান্দা ঠাই ছিলো। কখনো ম্যানেজারকেও খুলে কিছু বলেন নি! হঠাৎ বছর খানেক পর শুনলাম তোমাকে নাকি কিনেছে। টাকা নাকি ম্যানেজারকে দিয়ে পাঠিয়েছিলো।একটু থেমে আকিয়া হাসলো!
~ তোমার উপড় সেই রাত্রে রেগে ছিলো তাই না?
ইম্রিবা মিনমিন করলো ~ রেগে শুধু? আমাকে ৪ বছরের ঝাল এক রাত্রে দিয়েছে! আচ্ছা ইম্রিবা নিজেকে কি ভাগ্যবতী ভাববে? তার চোখের জল গুলো কি খুশির? আচ্ছা, বেশ্যাদের ও কি ভালোবাসার মানুষ থাকে? নাকি সেই একমাত্র ভাগ্যবতী? চোখ বুঝে শুধু চোখের জল ফেলেছে সে সারাদিন!
ইহসাবের বাড়িতে এসেছে আজ ৩ মাস হচ্ছে! আজই তাদের বিয়ে হয়েছে! ধীরেধীরে জানলো কতোটা পাগলাটে ছেলেটা! বয়সের বাচ্চামো ভাব না থাকলেও পাগলাটে রয়েছে! সেটা হঠাৎ দেখা যায়! ইম্রিবা গাল ধরে আয়না দেখছে। তাকে থাপ্পড় মেরেছে তাও খুব জড়ে! মারার কারন ও ছিলো! ইম্রিবা বলেছিলো ~ আমি আপনার যোগ্য নই! একদম না! আপনি পরে পস্তাবেন! শুধু বেশ্যা করে রেখে দিন, যখন ইচ্ছা ব্যাবহার করবেন! থাপ্পড় মেরে ইহসাব এর জবাব ছিলো ~ তুই আমার বেশ্যা হবি! আসলে ইম্রিবা ভাগ্যবতী বেশ্যা। নাহলে কি আজ সে ইহসাবের বিছানায় তার বউ হয়ে বসে থাকতো? তাও তার থেকে ৭ বছরের বড় হয়ে? সকলের নসিবে থাকে না এমন কাল্পনিকতা।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত