আদিবা আমার ডিবোর্স চাই গোসল করে আয়না সামনে বসে চুল ঠিক করছি আর পাশে খাটে বসে থাকা লোকটা দিকে আর চোখে তাকাচ্ছি আর মিটি মিটি হাসছিলাম হঠাৎ কথাটা শুনে চমকে উঠলাম মুখটা কালো হয়ে গেলো।
আমি: নীল ( চোখ থেকে টপ করে পানি পরলো)
নীল: দেখো অনেক দিন বলতে চেয়েছি পারি নি আজ বলে ফেললাম
আমি: কিন্তুু আমার ভুলটা কি বলো আমি তো তোমার সব কথা শুনি নীল খাট থেকে নেমে মুখো মুখি হয়ে চিল্লিয়ে বলে উঠলো
নীল: কোন কথাটা শুনেছো
আমি: তুমি বলো কোনটা শুনি নি
নীল: নাটক করবা না,,,
আমি: খুব রেগে আছো আমার উপর বলো না কি ভুল করেছি
নীল: ওকে তুমি যখন বলবে না কি ভুল করছো আমি বলছি তবে শুনো কত বার বলেছি এতো পড়াশোনা করে কি হবে তোমায় তো জব করতে দিবো আর দ্বিতীয় কথা আমার ফ্যামেলির সবাই বাচ্চা চাই আম্মু এসব টেনশনে হসপিটালে দু দিন ধরে ভর্তি আছে তুমি বুঝো না নাকি বুঝে না বুঝার ভান করো তুমি ভালো করে জানো আমি সব সয্য করবো কিন্তুু আম্মুর কষ্ট সয্য করতে পারবো না।
আমি: ( গাল বয়ে বয়ে টপ টপ করে পানি পরছে কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছি না)
নীল: চোখের পানি মুছো তুমি জানো আমি তোমার চোখের পানি সয্য করতে পারি না
আমি: এমন তো কথা ছিলো না তুমি বলেছিলে আমার সব স্বপ্ন পূর্রন করবে
নীল: হ্যাঁ বলেছিলাম কিন্তুু সংসারে একটা নিয়ম আছে।
আমি: তুমি কত চেন্স হয়ে গেছো
নীল: এই এই এসব কথা বাদ দাও আমি সিন্ধান্ত নিয়েছি তুমি তো আমার কথা শুনবে না বরং আমার ামম্মু আব্বুকে কষ্ট দিয়ে যাচ্ছো আমি নিতে পারছি না তাই কাল উকিল আসবে ডিবোর্স লেটার সািন করে দিও নীল রুম থেকে চলে গেলো চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো। ৪ বছর রিলেশনের পরে গত ৩ বছর হলো বিয়ে হয়েছে এ কি সেই নীল যে আমাকে দেখার জন্য ঠাটা পড়া রৌদে দাড়িয়ে থাকতো এই সেই নীল যে আমার জন্য সব কিছু করতে পারতো এ কি সেই নীল যে আমাকে প্রমিজ করেছিলো আমার পড়াশোনাটা করতে দিবে আমার স্বপ্ন গুলো পূর্রন করবে ভাবতে দুচোখ বয়ে পানি পরছে। রাতে না খেয়ে সুয়ে পরলাম একটু পর নীল আসলো
আমি: চলো খাবে
নীল: খেয়ে আসলাম
নীল সুয়ে পরলো একবার মুখ ফুটে বললো না খেয়েছি কি না আজ কত চেন্স যে নীল আমাকে খাওয়ানোর জনন্য অনেক রাত অবন্ধী বাসার নিচে দাড়িয়ে থাকতো। চোখের পানি মুছে সুয়ে পরলাম। নীলের পাশে সুয়ে জোরিয়ে ধরতে হাত দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দূর্রত্ব বজায় রেখে সুয়ে পরলো। এ কোন দিন দেখাচ্ছো খুদা এই ছেলেটা বলতো আমাকে জোরিয়ে না ধরে ঘুম আছে না আজ সে। অন্য পেশ হয়ে সুয়ে পরলাম। পরের দিন রান্না করছি হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো দৌড়ে গেলাম
আমি: আম্মু এসেছেন দরজা পাশে লোকটাকে দেখে ভ্যবাচ্যাকা খেলাম এটা তো উকিল
উকিল: নীল আছে
আমি: হ্যাঁ আসুন না ভিতরে বসুন আমি ডেকে দিচ্ছি
উকিল: ধন্যবাদ
আমি: এই তো নীল
উকিল: এসো
নীল: এসেছেন
উকিল: হুম এই যে পেপার
নীল: হুম আদিবা ডিবোর্স পেপার সাইন করে দাও
আমি: পেপার টার দিকে তাকিয়ে দুচোখ জলে ভরে গেলো।
নীল: প্লিজ সাইন করো আর পারছি না আমি দোয়া করে রেহায় দাও
আমি: নীল কি বলছো এসব এতো দিনের সম্পর্ক প্লিজ এমন করো না
নীল: দোয়া করো আমায় আর মুক্তি দাও
আমি: পায়ে পরি নীল প্লিজ এমন করো না খুব ভালোবাসি তোমায় থাকতে পারবো না আমি তোমাকে ছাড়া
নীল: এবার বেশি করছো বাংলা কথা বুঝো না
আমি: প্লিজ নীল যা বলবে তাই শুনবো আর জানো তুমি না
নীল: ঠাসসসসস গালে হাত দিয়ে আবাক হয়ে গেলাম। সামান্য মশা কামড়ালে যে মানুষটা সয্য করতো না সে আজ আমায় আঘাত করলো
নীল: কথা বুঝো না প্যান প্যান ধর সাইন কর মুক্তি দে বুকের ভিতর একরাশ অভিমান আর কষ্ট নিয়ে পেপারে সাইন করে দিলাম। পেপারের উপর দুপোটা পানি পরলো
নীল: ধন্যবাদ পেপারটা পরে পাঠিয়ে দিবেন
উকিল: ওকে
নীল: কথায় যাবে যেখানে খুশি যাও বাবা মা ছাড়া তো কেউ নেই নিশ্চয় সেখানে যাবে
আমি: নিশ্চপ ( বুকের ভিরতটা ক্ষত বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে)
নীল: শুনো আম্মু কাছে যাচ্ছি এসে যোনো তোমাকে না দেখি। আর হ্যাঁ খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নিবো। ভালো থেকো। নীল বের হয়ে গেলো ফ্লোরে বসে কাঁদতে লাগলাম।
নীল: আম্মু কেমন আছো
আম্সু: এতো ভালো তুমি কেমন অাছো বাবা
নীল: ভালো
আম্মু: বউমা কয় আসে নি
নীল: আম্মু তোমায় সব বলবো আগে বাসায় চলো
আম্মু: হুম
নার্স: বাসায় যাচ্ছেন
আম্মু: হুম
নার্স: এমন বউমা সবার ভাগ্যে হয় না কত যত্ন করে আপনার
আম্মু: হুম ও তো আমার বউমা না আমার মা দেখো না কত শাসন করে
নার্স: হা হা হুম বাসায় যান দেখবেন কত তাড়াতাড়ি সুস্ত হয়ে যাবেন
নীল: কি বলছো আম্মু
নার্স: বউটা আপনার লক্ষী রোজ আসতো সন্ধায় চলে যেতে শাশুড়ি কত যত্ন নিতো
আম্মু: তুই বক বি তাই তুই বাসায় যাবার আগে চলে যেতো
নীল: কিহ বলছো তুমি। আমি এটা কি করলাম আম্মু থাকো সন্ধায় এসে নিয়ে যাবো
আম্মু: কি হলো বাপ কয় যাস
নীল: পাগলিটাকে সরি বলতে হবে যায় আইসক্সিম নিয়ে যায় রাগগটা কমবেনি
নীল: কয় গে পাগলি কয় তুমি সারা বাড়ি খুজে পেলো না রুমে যেতেই দরজা বন্ধু
নীল: এই পাগলি রাগ করেছো খুলো না দরজাটা দেখো কি এনেছি উফপ খুলো না প্লিজ সরি পাগলি।
নীল: দরজা খুলছো না কেনো। নীল চাবি দিয়ে দরজাটা খুলে ভিতরে এসে দেখে পুরো রুমে রক্ত বন্যা বয়ে গেছে আমি বিছানা পরে আছি
নীল: এই পাগলি কি গো এই কথা বলো না এটা কিরছো পাগলি সরি আমি জানি খুব বড়ড় অন্যায় করেছি।
নীল ডাকতে লাগলো কিন্তুু উঠার জন্য হয়তো আমিটাই আর নেই। টেবিলে রাখা চিঠিটা নীল রাতেতে নিয়ে পরতে লাগলো। প্রথম যেদদিন বলেছিলে আমার মা আমার কাছে সব কষ্প দিও না তাকে ভিস্বাস করো তারপর থেকে নিজের মা ভেবে তাকে ভালোবেসে গেছি।
কিন্তুু তুমি আজ কি করলে আমাকে দিয়ে ডিবোস পেপার সাইন করালে নীল আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না পাড়লের মতো ভালোবাসি তোমায় বেচে থেকে তোমাকে অন্য কারে হতে দেখতে পারবো না তাই অনেক দুরে চলে গেলাম শেষ কথাটা ৪ মাসের অন্তরসত্তা তুমি বাবা হতে চলেছো। আমি ভেবেছিলাম সামনে মাঝে তোমার বার্র্ডে তোমাকে সেরা উপহার হিসেবে এই খবরটা দিবো কিন্তুু পারলাম না দিততে সরি নীল পাগলিটাকে মাফ করে দিও। নীল চিঠিটা ছিড়ে ফেলে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
গল্পের বিষয়:
গল্প