কান্তিচন্দ্রের বয়স অলপ, তথাপি দীবিয়োগের পর দ্বিতীয় শীর অনুসন্ধানে ক্ষাত থাকিয়া পশুপক্ষী-শিকারেই মনোনিবেশ করিয়াছেন। দীঘ কৃশ কঠিন লম্ব শরীর, তীক্ষ দটি, অব্যথা লক্ষ্য, সাজসজায় পশ্চিমদেশীর মতো; সঙ্গে সঙ্গে কুস্তিগির হীরা সিং ছক্কনলাল, এবং গাইয়ে বাজিয়ে খাসাহেব, মিঞাসাহেব অনেক ফিরিয়া থাকে; অকমণ্য অনচের-পরিচরেরও অভাব নাই।
দইচারিজন শিকারী বন্ধবোন্ধব লইয়া অঘ্রানের মাঝামাঝি কান্তিচন্দ্র নৈদিঘির বিলের ধারে শিকার করিতে গিয়াছেন। নদীতে দুইটি বড়ো বোটে তাঁহাদের বাস, আরও গোটা-তিনচার নৌকায় চাকরবাকরের দঙ্গ গ্রামের ঘাট ঘিরিয়া বসিয়া আছে। গ্রামবধদের জল তোলা, স্নান করা প্রায় বন্ধ। সমস্ত দিন বন্দকের আওয়াজে জলস্থল কম্পমান, সন্ধ্যাবেলায় ওস্তাদি গলার তানকতবে পল্লির নিদ্রাতলা তিরোহিত। একদিন সকালে কান্তিচন্দ্র বোটে বসিয়া বন্দকের চোঙ সযত্নে বহতে পরিকার করিতেছেন, এমন সময় অনতিদারে হাঁসের ডাক শুনিয়া চাহিয়া দেখিলেন, একটি বালিকা দই-হাতে দইটি তরণে হাঁস বক্ষে চাপিয়া ধরিয়া ঘাটে আনিয়াছে। নদীটি ছোটাে, প্রায় স্রোতহীন, নানাজাতীয় শৈবালে ভরা। বালিকা হাঁস দাইটিকে জলে ছাড়িয়া দিয়া, একেবারে আয়ত্তের বাহিরে না যায় এইভাবে, হস্তসতক মেনহে তাহাদের আগলাইবার চেষ্টা করিতেছে। এটুকু বঝা গেল, অন্য দিন সে তাহার হাঁস জলে ছাড়িয়া দিয়া চলিয়া যাইত, কিন্তু সম্প্রতি শিকারীর ভয়ে নিশ্চিন্তচিত্তে রাখিয়া যাইতে পারিতেছে না। মেয়েটির সৌন্দয নিরতিশয় নবীন, যেন বিশ্বকমা তাহাকে সদ্য নির্মাণ করিয়া ছাড়িয়া দিয়াছেন। বয়স ঠিক করা শক্ত। শরীরটি বিকশিত কিন্তু মুখটি এমন কাঁচা যে, সংসার কোথাও যেন তাহাকে লেশমাত্র পশ করে নাই। সে ষে যৌবনে পা ফেলিয়াছে এখনও নিজের কাছে সে খবরটি তাহার পৌছে নাই । কান্তিচন্দ্র ক্ষণকালের জন্য বন্দকে সাফ করায় ঢিল দিলেন। তাঁহার চমক লাগিয়া গেল। এমন জায়গায় এমন মুখ দেখিবেন বলিয়া কখনও আশা করেন নাই। অথচ, রাজার অন্তঃপরের চেয়ে এই জায়গাতেই এই মুখখানি মানাইয়াছিল। সোনার ফলদানির চেয়ে গাছেই ফলকে সাজে। সেদিন শরতের শিশিরে এবং প্রভাতের রৌদ্রে নদীতীরের বিকশিত কাশবনটি ঝলমল করিতেছিল, তাহারই মধ্যে সেই সরল নবীন মুখখানি কান্তিচন্দ্রের মাখ চক্ষে আশিবনের আসন্ন আগমনীর একটি আনন্দচ্ছবি অকিয়া দিল। মন্দাকিনীতীরে তরণ পাবতী কখনও কখনও এমন হংসশিশ বক্ষে লইয়া আসিতেন, কালিদাস সে কথা লিখিতে ভুলিয়াছেন।
এমন সময় হঠাৎ মেয়েটি ভাঁতরঙ্গত হইয়া কাঁদো-কাদো মুখে ছাড়াতাড়ি হাঁস কারণসন্ধানে বাহিবে আসিয়া দেখিলেন, তাঁহার একটি রসিক পরিষদ কৌতুক করিয়া বালিকাকে ভয় দেখাইবার জন্য হাঁসের দিকে ফাঁকা বঙ্গকে লক্ষ্য করিড়েছে। কাস্তিচন্দ্র করিলেন, অকস্মাৎ রসভঙ্গ হইয়া লোকটা সেইখানে ধপ করিয়া বসিয়া পড়িল । কান্তি পনরায় কামরায় আসিয়া বন্দক সাফ করিতে লাগিলেন। সেইদিন বেলা প্রহর-তিনেকের সময় গ্রামপথের ঘনচ্ছায়ার মধ্য দিয়া শিকারীর দল শস্যক্ষেত্রের দিকে চলিয়াছিল। তাহদের মধ্যে একজন বন্দকের আওয়াজ করিয়া দিল। কিছর দরে বাঁশঝাড়ের উপর হইতে কী-একটা পাখি আহত হইয়া ঘুরিতে ঘুরিতে ভিতরের দিকে পড়িয়া গেল। কেতিহেলী কান্তিচন্দ্র পাখির সন্ধানে ঝোপঝাড় ভেদ করিয়া ভিতরে গিয়া দেখিলেন, একটি সচ্ছল গহস্থঘর, প্রাঙ্গণে সারি সারি ধানের গোলা। পরিচ্ছন্ন বহৎ গোয়ালঘরের কুলগাছতলায় বসিয়া সকালবেলাকার সেই মেয়েটি একটি আহত ঘাঘ বকের কাছে তুলিয়া উচ্ছসিত হইয়া কাঁদিতেছে এবং গামলার জলে অঞ্চল ভিজাইয়া পাখির চঞ্চপটের মধ্যে জল নিংড়াইয়া দিতেছে । পোষা বিড়ালটা তাহার কোলের উপর দুই পা তুলিয়া উধামুখে ঘাঘরটির প্রতি উৎসক দটিপাত করিতেছে ; বালিকা মধ্যে মধ্যে তাহার নাসিকাগ্রভাগে তজনী-আঘাত করিয়া লব্ধ জন্তুর অতিরিক্ত আগ্রহ দমন করিয়া দিতেছে। পল্লির নিমন্তব্ধ মধ্যাহ্নে একটি গহপথপ্রাৎগণের সচ্ছল শান্তির মধ্যে এই করণছবি এক মহতেই কান্তিচন্দ্রের হৃদয়ের মধ্যে অাঁকা হইয়া গেল। বিরলপল্লব গাছটির ছায়া ও রৌদ্র বালিকার ক্লোড়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছে ; আদরে আহারপরিতৃপ্ত পরিপাট গাভী আলস্যে মাটিতে বসিয়া
-আন্দোলনে পিঠের মাছি তাড়াইতেছে ; মাঝে মাঝে বাঁশের ঝাড়ে ফিস ফিস কথার মতো নতন উত্তরবাতাসে খস খস শব্দ উঠিতেছে। সেদিন প্রভাতে নদীতীরে বনের মধ্যে যাহাকে বনশ্রীর মতো দেখিতে হইয়াছিল, আজ মধ্যাহ্নে নিস্তব্ধ গোঠপ্রাঙ্গণচ্ছায়ায় তাহাকে স্নেহবিগলিত গহলক্ষীটির মতো দেখিতে হইল। কান্তিচন্দ্র বন্দকহন্তে হঠাৎ এই ব্যথিত বালিকার সম্মখে আসিয়া অত্যন্ত কুণ্ঠিত হইয়া পড়িলেন। মনে হইল, যেন কমালসন্ধ চোর ধরা পড়িলাম। পাখিটি যে আমার গলিতে আহত হয় নাই কোনোপ্রকারে এই কৈফিয়তটুকু দিতে ইচ্ছা হইল। কেমন করিয়া কথাটা পাড়িবেন ভাবিতেছেন, এমন সময়ে কুটির হইতে কে ডাকিল, “সন্ধা।” বালিকা যেন চমকিত হইয়া উঠিল। আবার ডাক পড়িল, “সন্ধা।” তখন সে-তাড়াতাড়ি পাখিটি লইয়া কুটিরমখে চলিয়া গেল। কান্তিচন্দ ভাবিলেন, নামটি উপযুক্ত বটে। সন্ধা!
– কান্তি তখন দলের লোকের হাতে বন্দকে রাখিয়া সদর পথ দিয়া সেই কুটিরের স্বারে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। দেখিলেন, একটি প্রৌঢ়বয়স্ক মণ্ডিতমখ শাতমতি ব্লাহরণ দাওয়ায় বসিয়া হরিভক্তিবিলাস পাঠ করিতেছেন। ভক্তিমণ্ডিত তাঁহার মখের সগভীর স্নিগ্ধ প্রশান্ত ভাবের সহিত কাস্তিচন্দ্র সেই বালিকার দয়া মাখের সাশ্য অনুভব করিলেন।
কান্তি জল খাইলে পর ব্লাহরণ তাঁহার পরিচয় লইলেন। কান্তি পরিচয় দিয়া কহিলেন, “ঠাকুর, আপনার যদি কোনো উপকার করিতে পারি তো কৃতাৰ্থ হই ।” নবীন বাড়জে কহিলেন, “বাবা, আমার আর কী উপকার করিৰে। তবে সন্ধা বলিয়া আমার একটি কন্যা আছে, তাহার বয়স হইতে চলিল, তাহাকে একটি সংপারে দান করিতে পারলেই সংসারের ঋণ হইতে মন্তিলাভ করি। কাছে কোথাও ভালো ছেলে দেখি না, দরে সন্ধান করিবার মুতো সামথাও নাই; ঘরে গোপীনাথের বিগ্রহ আছে, তাঁহাকে ফেলিয়া কোথাও যাই নাই।” । কান্তি কহিলেন, “আপনি নৌকায় আমার সহিত সাক্ষাৎ করিলে পাত্র সম্বন্ধে আলোচনা করিব।” – এ দিকে কাস্তির প্রেরিত চরগণ বন্দোপাধ্যায়ের কন্যা সন্ধার কথা যাহাকেই জিজ্ঞাসা করিল সকলেই একবাক্যে কহিল, এমন লক্ষীস্বভাবা কন্যা আর হয় না। পরদিন নবীন বোটে উপস্থিত হইলে কান্তি তাঁহাকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন এবং জানাইলেন, তিমিই ব্লাহরণের কন্যাকে বিবাহ করিতে ইচ্ছক আছেন। ব্রাহরণ এই অভাবনীয় সৌভাগ্যে রক্ষকণ্ঠে কিছুক্ষণ কথাই কহিতে পারলেন না। মনে করিলেন, কিছ-একটা ভ্রম হইয়াছে। কহিলেন, “আমার কন্যাকে তুমি বিবাহ করিবে ?” কান্তি কহিলেন, “আপনার যদি সম্মতি থাকে, আমি প্রস্তুত আছি।” নবীন আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “সন্ধাকে ?”—উত্তরে শুনিলেন, “হাঁ।” নবীন স্থিরভাবে কহিলেন, “তা দেখাশোনা—” কান্তি, যেন দেখেন নাই, ভাণ করিয়া কহিলেন, “সেই একেবারে শভেদটির সময় {” নবীন গদগদকণ্ঠে কহিলেন, “আমার সন্ধা বড়ো সাশীলা মেয়ে, রাধাবাড়া ঘরকন্নার কাজে অন্বিতীয়। তুমি যেমন না দেখিয়াই তাহাকে বিবাহ করিতে প্রস্তুত হইয়াছ তেমনি আশীবাদ করি, আমার সাধা পতিব্ৰতা সতীলক্ষী হইয়া চিরকাল তোমার মঙ্গল করকে। কখনও মহাতের জন্য তোমার পরিতাপের কারণ না ঘটক।” কান্তি আর বিলম্ব করিতে চাহিলেন না, মাঘ মাসেই বিবাহ সিন্ধর হইয়া গেল । পাড়ার মজুমদারদের পরাতন কোঠাবাড়িতে বিবাহের স্থান নিদিষ্ট হইয়াছে। বর কন্যার মাখের দিকে চাহিলেন। নতশির টোপর-পরা চন্দনচচিত সধাকে ভালো করিয়া যেন দেখিতে পাইলেন না। উদবেলিত হাদয়ের আনন্দে চোখে যেন ধাঁধা লাগিল । – বাসরঘরে পাড়ার সরকারি ঠানদিদি ৰখন বরকে দিয়া জোর করিয়া মেয়ের ঘোমটা সেই প্রতিজ্ঞা কি এমনি একটা অদ্ভুত পরিহাসে অদষ্ট তুড়ি দিয়া ভাঙিয়া দিল ! কত ভালো ভালো বিবাহের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করিয়াছেন, কত আত্মীয়বন্ধবোন্ধবদের সাননেয় অনুরোধ অবহেলা করিয়াছেন ; উচ্চকুটবিতার আকর্ষণ, অথের প্রলোভন, রপেখ্যাতির মোহ, সমস্ত কাটাইয়া অবশেষে কোন-এক অজ্ঞাত পল্লিগ্রামে বিলের ধারে এক অজ্ঞাত দরিদ্রের ঘরে এতবড়ো বিড়ম্ববনা, লোকের কাছে মুখ দেখাইবেন কী করিয়া। –
বশরের উপরে প্রথমটা রাগ হইল। প্রতারক এক মেয়ে দেখাইয়া আর-এক মেয়ের সহিত আমার বিবাহ দিল। কিন্তু ভাবিয়া দেখিলেন, নবীন তো তাঁহাকে বিবাহের পবে কন্যা দেখাইতে চান নাই এমন নয়, তিনি নিজেই দেখিতে অসম্মত হইয়াছিলেন। বদ্ধির দোষে যে এতবড়ো ঠকাটা ঠকিয়াছেন সে লন্তজার কথাটা কাহারও কাছে প্রকাশ না করাই শ্রেয়ঃ বিবেচনা করিলেন।
ঔষধ যেন গিলিলেন কিন্তু মুখের তারটা বিগড়াইয়া গেল। ৰাসরঘরের ঠাট্ট আমোদ কিছই তাহার কাছে রচিল না। নিজের এবং সবসাধারণের প্রতি রাগে তাঁহার সবাঙ্গ জলিতে লাগিল। এমন সময় হঠাৎ তাঁহার পাশববতিনী বধ অব্যক্ত ভীত স্বরে চমকিয়া উঠিল। সহসা তাহার কোলের কাছ দিয়া একটা খরগোসের বাচ্ছা ছটিয়া গেল। পরক্ষণেই সেদিনকার সেই মেয়েটি শশকশিশর অনুসরণ-পবেক তাহাকে ধরিয়া গালের কাছে রাখিয়া একান্ত সেনহে আদর করিতে লাগিল। “ঐ রে, পাগলি আসিয়াছে” বলিয়া সকলে তাহাকে চলিয়া যাইতে ইঙ্গিত করিল। সে ভ্রক্ষেপমাত্র না করিয়া ঠিক বরকন্যার সমুখে বসিয়া শিশুর মতে কৌতুহলে কী হইতেছে দেখিতে লাগিল। বাড়ির কোনো দাসী তাহার হাত ধরিয়া টানিয়া লইবার চেষ্টা করিলে বর ব্যস্ত হইয়া কহিলেন, “আহা, থাক-না, বসাক।” মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করিলেন “তোমার নাম কী।” সে উত্তর না দিয়া দলিতে লাগিল। ঘরসন্ধ রমণী হাসিয়া উঠিল। কান্তি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার হাসদুটি কতবড়ো হইল।” অসংকোচে মেয়েটি নীরবে তাঁহার মুখের দিকে চাহিয়া দেখিতে লাগিল। হতবধি কান্তি সাহসপবেক আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার সেই ঘনঘন আরাম হইয়াছে তো?” কোনো ফল পাইলেন না । মেয়েরা এমনভাবে হাসিতে লাগিল যেন বর ভারি ঠকিয়াছেন । অবশেষে প্রশন করিয়া খবর পাইলেন, মেয়েটি কালা এবং বোবা, পাড়ার যত পশুপক্ষীর প্রিয়সঙ্গিনী। সেদিন সে যে সন্ধা ডাক শনিয়া উঠিয়া ঘরে গিয়াছিল সে তাঁহার অনুমানমাত্র, তাহার আর-কোনো কারণ ছিল। *. কাতি তখন মনে মনে চমকিয়া উঠিলেন। যাহা হইতে বঞ্চিত হইয়া পথিবীতে তাঁহার কোনো সখ ছিল না, শাভদৈবক্রমে তাহার নিকট হইতে পরিমাণ পাইয়া নিজেকে ধন্য জ্ঞান করিলেন। মনে করিলেন, “যদি এই মেয়েটির বাপের কাছে যাইতাম এবং সে ব্যক্তি আমার প্রার্থনা-অনুসারে কনাটিকে কোনোমতে আমার হাতে সমপণ করিয়া নিকৃতি লাভের চেষ্টা করিত ‘ শুভদৃষ্টি যতক্ষণ আয়ত্তচু্যত এই মেয়েটির মোহ তাঁহায় মনটিকে আলোঁঞ্চত করতেছিল ততক্ষণ নিজের বধটে সবন্ধে একেবারে অন্ধ হইয়াছিলেন। নিকটেই আর কোথাও কিছু সাত্বনার কারণ ছিল কি না তাহা অনুসন্ধান করিয়া দেখিবার প্রবত্তিও ছিল না। যেই শুনিলেন মেয়েটি বোবা ও কালা অমনি সমস্ত জগতের উপল্প হইতে একটা কালো পদা ছিন্ন হইয়া পড়িয়া গেল। দরের আশা দরে হইয়া নিকটের জিনিসগুলি প্রত্যক্ষ হইয়া উঠিল। সগভীর পরিত্রাণের নিশ্বাস ফেলিয়া কান্তি লজাবনত বধরে মাখের দিকে কোনো-এক সষোগে চাহিয়া দেখিলেন। এতক্ষণে যথাথ শুভদৃষ্টি হইল। চম চক্ষর অন্তরালবতী মনোনেত্রের উপর হইতে সমস্ত বাধা খসিয়া পড়িল। হাদয় হইতে এবং প্রদীপ হইতে সমস্ত আলোক বিচ্ছুরিত হইয়া একটিমাত্র কোমল সকুমার মখের উপরে প্রতিফলিত হইল ; কান্তি দেখিলেন, একটি স্নিগ্ধ শ্রী, একটি শান্ত লাবণ্যে মুখখানি মণ্ডিত। বঝিলেন, নবীনের আশীবাদ সাথক হইবে।
আশিন ১৩০৭