কলেজ ক্যাম্পাসে বসে ভ্যা, ভ্যা করে কেঁদে যাচ্ছি। শুধু যে কাঁদছি তা নয় একেবারে হাত, পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে। হাত, পা ঠাস ঠাস করে ফেলছি। শুভ্র রাগী ফেস করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। মূলত শুভ্রর থাপ্পর খেয়েই আমি কাঁদছি। শুভ্র বিরক্তি নিয়ে চেঁচিয়ে বললো।”
—-” থামবি নাকি ঠাটিয়ে আরেকটা দেবো?” ধমক খেয়ে মুখটা বেলুনের মতো চুপসে গেলো। শুভ্র কতক্ষণ চুপ থেকে এরপর বললো,
—-” তোকে আমি কি বলেছিলাম? বলেছিলাম তো যে ছেলেদের থেকে দুরে থাকবি!”
এবার আমার মাথা গরম হয়ে গেলো। ও আমার ফ্রেন্ড ছিলো তাই কথা বলেছিলাম। হ্যা মানছি কিউট পোলা দেখলে আমি ক্রাশ খাই। তো এতে এতো লাফালাফি করার কি আছে? রেগে প্রস্তুতি নিচ্ছি এই শুভ্রকে আজকে টাইট দেবো। শুভ্র হচ্ছে আমার বয়ফ্রেন্ড+খালাতো ভাই। বড় বড় নিঃশ্বাস নিয়ে ছেড়ে বললাম।”
—-” ওই বেদ্দপ পোলা নিজেরে কি ভাবিস তুই?” শুভ্র চোখ বড় বড় করে তাকালো। আমার কথায় বেচারার মুখের পানি সব পড়ে গিয়েছে। ক্যাম্পাসের সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। কারন সবাই জানে রোজ তার বয়ফ্রেন্ডকে ভীষন ভয় পায়। আজকে প্রমান করে দেবো আমি কত সাহসী। একটা সেই রকম ভাব নিয়ে আবার মুখ ছোটালাম,
—-” ওই শালা গন্ডার কোথাকার। তুই আমাকে সবসময় ধমক দিস কেন? আর তোর এত বড় সাহস আমাকে থাপ্পর মারলি? আমার গাল কি তোর বাপের সম্পতি? কেনরে তুই আমাকে কেন মারলি বল? তোর ভাব বেশী তাই না? ৩মাস ধরে তোর পিছনে ঘুরে তোকে বয়ফ্রেন্ড করেছি তাই?” আসলে শুভ্রর পিছনে পাক্কা ৩মাস। চরকির মতো ঘুরে ওকে বয়ফ্রেন্ড করেছি। এতক্ষণ আরেকদিকে তাকিয়ে পকপক করছিলাম। এবার শুভ্রর দিকে চোখ পড়তেই কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে গেলো। মুখে জোড়পূর্বক মিথ্যে হাসি ফুটিয়ে বললাম।”
—-” তুমি কি জানো? তুমি কতটা ভাল। তুমি আমাকে মারতে পারো যত ইচ্ছে তত। আমাকে ধমকও দিতে পারো আমি মোটেও মাইন্ড করবো না হে হে আসি বাই!” ক্যাম্পাস থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে এলাম। তবে আমি সিওর শুভ্রও চলে আসবে। আল্লাহ গো এ আমি কি করে ফেললাম? নিজের পায়ে নিজে কুড়োল মারলাম। আগে যদি জানতাম বয়ফ্রেন্ড হওয়ার পর এ আমার জীবন ত্যানাত্যানা করে দেবে। তাহলে কোনদিন ও আমি ওকে বয়ফ্রেন্ড বানাতাম না। ভেবেছিলাম ক্যাম্পাসের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম ছেলেকে বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে ভাব নেবো। কিন্তুু কে জানতো? আমার ফুটা কপালে এরকম অত্যাচার লেখা ছিলো।
এখন আমি ব্রেকআপও করতে পারিনা। ব্রেকআপের কথা বললে ঠাস, ঠাস করে থাপ্পর মারে। একটুপর শুভ্র মামনি, মামনি করতে করতে বাড়ি এলো। আল্লাহ এবার আমি কোথায় পালাবো? শুভ্র আমার আম্মুকে মামনি বলে। এদিকে আমি আস্তে করে পুল সাইডে চলে এলাম। শুভ্র কিভাবে যেন টের পেয়ে গেলো। অবশ্য সবসময়ই আমি লুকিয়ে গেলে ঠিক খুজে বের করে। চুপচাপ দাড়িয়ে ছিলাম ওমনি ধাক্কা অনুভব করলাম। আর ধপাস করে পুলের ভেতরে গিয়ে পড়লাম। আম্মুগো বলে তাকিয়ে দেখি শুভ্র দাত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে। ভ্যা, ভ্যা আল্লাহর নাম নিয়ে আবার শুরু করবো। তখন শুভ্র মুচকি হেসে বললো,
—-” রেড রোজ তোকে আর মারবো না। আয় উঠে আয় ঠান্ডা লেগে যাবে।” আমিও খুচিতে নাচতে নাচতে কিনারে এলাম। ওমনি শুভ্র নিচু হয়ে আমার ঘাড় ধরে কয়েক চুবানি দিলো। চুবানি খেয়ে হনহন করে উঠে এসে বললাম!”
—-” তুই বয়ফ্রেন্ড না আস্ত জল্লাদ, রাক্ষস। আজকের পর তোর সাথে আমার ব্রেকআপ কুত্তা, শুভ্র দেরী না করে ঠাস করে। বাম কানের নিচে এক থাপ্পর দিলো। আমি আল্লাহ গো বলে চেঁচিয়ে উঠলাম। শুভ্র রক্তচক্ষু করে বলে গেলো।”
—-” ব্রেকআপের নাম আর মুখেও নিবি না। আর তোর গাল আমার বাপের সম্পতি না, আমার সম্পতি!” বলে চলে গেলো হেলেদুলে। এদিকে থাপ্পর খেয়ে আমার দিন, দুনিয়া ঘুরছে। বিশ্বাস করেন রাসেল ভাই। থাপ্পর খেয়ে আমি বাম কানে কম শুনছি,
গল্পের বিষয়:
গল্প