লাভ লেটার

লাভ লেটার
স্যার, একটা হেল্প করবেন আমাকে?
-কি হেল্প?
-আপনি প্রমিজ করেন যে হেল্পটা করবেন?
-ঠিকআছে করলাম প্রমিজ ৷ এবার বলো কি করতে হবে আমাকে?
-আপনি তো জানেন আমার হাতের লেখা ভালোনা ৷ লিখতে গেলে অনেক বানান ভুল হয় ৷ ভাষার সঠিক প্রয়োগ করতে পারিনা ৷ বাক্যে অসামঞ্জস্যতা থাকে ৷ আপনি যদি আমাকে একটা লেটার লিখে দিতেন, তবে কৃতজ্ঞ থাকতাম৷
-কিসের লেটার?
-রাগ করবেন না তো বললে?
-আরে হেয়ালী না করে বলোতো!
-আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি ৷
তার মন জয় করতে একটা লেটার লেখার খুব দরকার স্যার ৷ কিন্তু আমি প্রেমের লেটার ইতোপূর্বে কখনই লিখিনি ৷ কেমনে লিখতে হয় জানিনা ৷ জিরো অভিজ্ঞতা আমার ৷ তবে, আমার ধারণা আপনি অনেক ভালো লাভ লেটার লিখতে পারবেন ৷ কারণ আপনি বাংলা সাহিত্যে অনার্স করেছেন ৷ দয়া করে স্যার, আমাকে একটা লোটার লিখে দিবেন? ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র রাকিবের কথা শুনে আমি হতভম্ব ৷ আকাশ থেকে উল্টা দিক হয়ে মাটিতে ধপাস করে পরলাম, এতে পেট ফেঁটে নাড়ি ভুড়ি বের হবার কথা ছিলো কিন্তু তেমনটা হয়নি ৷ রাকিবের কথাগুলো থম মেরে শুনছিলাম ৷ সে ছাত্র হয়ে কোন সাহসে শিক্ষকের নিকট এমন আবদার করতে পারলো? আমি শিক্ষক হয়ে ছাত্রকে লাভ লেটার লিখে দিবো সে ভাবলো কি করে? সামনে তার পরীক্ষা, অথচ এই সময়ে তার প্রেম নিয়ে এতো চিন্তা ভাবনা ৷ এই ছেলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট কেমনে করবে? রাকিবকে ধমক মেরে বললাম,
-তুমি কি আমার সাথে মশকরা করছো? এগুলো কি বলছো তুমি? তোমার আম্মুকে কি সব বলে দিবো? রাকিব ঘাবড়ে গেলো ৷ তবুও কিঞ্চিৎ জোর দিয়ে বললো,
-স্যার, আপনি প্রমিজ করেছিলেন যে আমাকে হেল্প করবেন ৷ দয়া করে আপনার প্রমিজ রক্ষা করুন ৷
-চুপ করো, প্রেম ট্রেমের ব্যাপারে আমি কোনো হেল্প করতে পারবোনা ৷
-ঠিকআছে ৷ তাহলে কাল থেকে আপনি আর আমাকে পড়াতে আসবেন না ৷ আমি অন্য টিউটরের কাছে পড়বো! পরে গেলাম ঝামেলায় ৷ ৬ হাজার টাকার টিউশন ৷ এটা ছুটে গেলে সর্বনাশ ৷ নতুন টিউশনি খুঁজতে গেলে সহজে পাবোনা, পেলেও ৪ হাজার টাকার বেশি মাস শেষে পাবোনা ৷ আর তাছাড়া, এই বাসায় টিউশনি করা মানে প্রতিদিন রাতের বেলায় মুখরোচক খাবার খেয়ে যাওয়া ৷ মোটেও এই টিউশনিটা বাতিল করা উচিত হবেনা ৷ আর ভাবলাম না ৷ রাকিবকে বললাম,
-ঠিকআছে, চিঠি লিখে দিবো ৷ তবে, চিঠিতে তোমার নয় আমার নাম লিখা থাকবে ৷ এটা এজন্যই করবো যাতে চিঠিটা তুমি কাউকে দিতে না পারো ৷ তোমার কাজ হবে আমার লেখা চিঠির সমস্ত কিছু দেখে হুবহু আরেকটা চিঠি লিখবে ৷ এরপর তোমার মনের মানুষকে সেই চিঠিটা পাঠিয়ে দিবে ৷ এটা করা উত্তম হবে ৷ এতে আমার কোনো দোষ থাকবেনা ৷ পরবর্তিতে যদি চিঠি নিয়ে কোনো ঝামেলা হয় তবে সেখানে আমার কোনো দোষ ধরা পরবেনা ৷ আর হ্যাঁ, আমার লেখা চিঠিটাতে তোমার মনের মানুষের নামও থাকবেনা! প্রিয়তমা বলে সম্বোধন করা হবে!
-ঠিকআছে, আপনি যেরকমভাবে চান সেরকমভাবে লিখবেন ৷
-তুমি যাকে ভালোবাসো, সে কি তোমার সাথে কথা বলছে কখনো?
-বলেছে,তবে, এখনো তার সাথে সেরকমভাবে কোনো কথা হয়নি!
-ও, তাহলে এক কাজ করো— আগে তার সাথে ফ্রি ভাবে কথা বলে নাও ৷ এরপর নাহয় চিঠি বিনিময় করবে!
-না, আমি ভুল করবোনা ৷ দেরি করতে চাইনা ৷ প্রথমে তার নিকট প্রেমের প্রস্তাব পাঠাতে চাই ৷ সামনাসামনি বা ফোনে তাকে মনের কথা কখনই বলতে পারবোনা, এজন্য চিঠিকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছি ৷ শুধু চিঠিটা তার নিকট পৌঁছে দিলেই হবে! এরপর যা হয় হবে!
-আমার মনে হয়না এযুগের কোনো মেয়ে সামান্য চিঠি পেয়ে প্রেমের ডাকে সাড়া দিবে ৷
-সেটা পরে দেখা যাবে ৷ আপনি আগে চিঠিটা লিখে দেন!
রাকিবকে চিঠি লিখে দিলাম মনের মাধুরী মিশিয়ে ৷ প্রথম দেখায় কারো প্রেমে পরলে তার প্রতি যেরকম অনুভূতি হয় এবং সেই অনুভূতি যেভাবে প্রকাশ করতে হয় ঠিক সেভাবে সবকিছু চিঠিতে উল্লেখ্য করলাম ৷ এছাড়া, মেয়েটির রুপ ও গুণের প্রশংসার কথাও তুলে ধরলাম ৷ আমার এই চিঠির অনুকরণে রাকিব যদি আরেকটা চিঠি তৈরি করে এবং তার মনের মানুষের নিকট পাঠিয়ে দেয়, তবে অবশ্যই রাকিবের ভালোবাসা স্বার্থক হবে! রাকিবের হাতে চিঠিটা দিয়ে বললাম এটা দেখে অন্য একটা চিঠি তৈরি করে নাও এবং মেয়েটির নিকট পাঠিয়ে দাও, আমার বিশ্বাস সে তোমার ভালোবাসায় সাড়া দিবে! ১ মাস পর, বাজার থেকে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরছিলাম ৷ অন্ধকারাচ্ছন্ন রাস্তা ৷ ঘন কালো আধারে হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে ৷ যেকারণে মোবাইলের লাইটটা অন করলাম ৷ অকস্মাৎ, ফোনটা বেজে উঠলো ৷ স্কিনে অচেনা নাম্বার ভাসছে ৷ ফোনটা রিসিভ করবো কি করবোনা এটা নিয়ে বিস্তর দ্বিধায় জরিয়ে পরলাম ৷ এক মন বললো ফোনটা কেটে দিতে ৷ আরেক মন বললো জরুরি কোনো ফোনকল হতে পারে,কলটা কেটে দেওয়া ঠিককাজ হবেনা ৷ করলাম রিসিভ ৷ ওপাশ থেকে নারীর মধুর কন্ঠস্বর ভেসে আসলো ৷ কিঞ্চিৎ তীক্ষ্ণ গলায় জোর দিয়ে মেয়েটি আমাকে বললো,
-অর্ণব, তুমি কোথায়? এখন এই মুহূর্তে তুমি তিন রাস্তার মোড়ে আসো ৷ আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি! মেয়েটির কথার কোন অর্থ খুঁজে পেলাম না ৷ সে যে পরিচিত কেউ নয় এটা ভালো করে বুঝতে পারছি ৷ মাথায় আসছেনা যে অপরিচিত কোনো মেয়ে কিভাবে আমার নাম জানলো? এবং তিন রাস্তার মোড়ে কেন যেতে বললো আমাকে? মেয়েটিকে কিছু বলছিনা বলে সে ফের বললো,
-কি হলো অর্ণব, তুমি অামার কথার কোনো জবাব দিচ্ছোনা কেন? আমার কথা কি শুনতে পাচ্ছোনা?
-হ্যাঁ, শুনতে পাচ্ছি ৷ কিন্তু আপনি কে সেটা বলেন তো? আপনাকে আমি চিনতে পারছিনা!
– তিন রাস্তার মোড়ে আসো তবেই চিনতে পারবে!
-আমি আপনার কথায় কেন তিন রাস্তার মোড়ে যাবো? আপনি তো সন্ত্রাসীও হতে পারেন ৷ ওখানে গেলে যদি কিডন্যাপ করেন তখন কি হবে আমার?
-ধ্যাত্তেরি, আজাইরা কথা বলে ৷ আমি যেটা বলছি সেটা করো৷ তিন রাস্তার মোড়ে আসো তাড়াতাড়ি!
-যদি না যাই ওখানে?
-তবে তোমার খবর করে ছাড়বো!
-ওহ, তাহলে আপনি আমাকে চিনেন?
-আরে বোকা সেটা আমার নিকট আসার পরই জানতে পারবে!
-ওকে, যাচ্ছি আমি!
তিন রাস্তার মোড়ের উদ্দেশ্যে চললাম ৷ রাত ৯টার বেশি বাজে ৷ এই সময় কোনো মেয়ের কথায় কোথাও যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে? দেখাযাক কি হয়? পনের মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম তিন রাস্তার মোড়ে ৷ বাসস্টেশনের একপাশে একটি মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছি ৷ তার পরনে বিয়ের শাড়ি ৷ এটা কি সেই মেয়ে যে আমাকে ফোন দিয়েছিলো? যদি সে হয় তাহলে তো ঝামেলা হতে পারে ৷ তার পরনে বিয়ের শাড়ি, গা ভর্তি গহনা ৷ নিশ্চয় সে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে আসছে ৷ মেয়েটির নিকটে যেতে হবে ৷ ধীর পায়ে হাঁটতে হাঁটতে মেয়েটির খুব নিকটে গেলাম এবং স্তম্ভিত হয়ে গেলাম ৷ আরে এ তো রাকিবের বোন সাদিয়া ৷ সে কেন এখানে? তার না আজ বিয়ে? তারমানে সে বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছে? কিন্তু কেন? সাদিয়া চেঁচিয়ে বললো,
-এতোক্ষণ লাগে আসতে? গাধা কোথাকার ৷ সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি আমি ৷ যাহোক, চলো এখন! অবাক হয়ে বললাম,
-মানে? কই যাবো আমি? একমিনিট, আপনি কি সেই মেয়ে যে আমাকে ফোন করে এখানে আসতে বলেছেন?
-আমাকে দেখে সেটা বুঝতে পারলে না? আচ্ছা, তুমি কেমন পুরুষ হ্যাঁ? চিঠিতে ভালোবাসার কথা লিখে দিলে, এরপর একবারও আমার মুখোমুখী হলেনা ৷ রাকিবকে যখন পড়াতে আসতে শুধু সেইসময় দূর থেকে আমাকে একনজর দেখে নিতে ৷
ভালোবাসার কথা চিঠিতে বলে দিয়ে হাওয়া তুমি, এতসহজে কি ভালোবাসা পাওয়া সম্ভব বলো? আর দূর থেকে আমাকে দেখে তুমি ঠিক কি বুঝাতে চাইতে বলোতো? তুমি কি ভাবতে ওরকম একটা চিঠি কোনো মেয়ের নিকট দিলে আর হ্যাবলার মত তাকিয়ে থাকলে যেকোনো মেয়ের ভালোবাসা পেয়ে যাবে? আমাকে শুধু একটা মাত্র চিঠির মাধ্যমে ঘায়েল করতে চেয়েছিলে? এসব কি রকমের ভালোবাসা হ্যাঁ? রাগ অভিমান তো ভালোই তোমার ৷ আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে জানার পর তুমি রাকিবকে পড়াতেও আসোনি৷ এটা দেখে বুঝতে পেরেছিলাম যে তুমি আমার উপর রাগ করে আর পড়াতে আসছোনা ৷ বুঝতে পারিনা যে তুমি সরাসরি কেন আমার নিকট ভালোবাসার কথা বলতে পারোনি ৷ আজকে এখনো তুমি অভিনয় করছো ৷ কিসের এতো ভয় তোমার? মনের কথা মুখ ফুটে বলতে পারোনা কি কারণে? এতোটা লাজুক হলে তো চলবেনা! হ্যাঁ, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে তুমি সাহসের অভাবে আর লজ্জায় আমার মুখোমুখী হয়ে মনের কথা বলতে পারছোনা ৷
ভেবেছিলাম আমি নিজেই তোমার নিকটে গিয়ে দাঁড়াবো আর তোমাকে গ্রহণ করবো ৷ কিন্তু মনকে স্থির করতে পারছিলাম না ৷ কিন্তু যখন আমার বিয়ে ঠিক হলো তখন আর দেরি করতে পারলাম না; প্ল্যান করলাম যে বিয়ের দিনই বাসা থেকে পালাবো ৷ বিয়েটা ঠিক হয়েছিলো আমার মতামত না নিয়ে ৷ তাই বাবা, মাকে কিছু বুঝতে না দিয়ে পালিয়ে আসছি; তারা বুঝুক মেয়ের অমতে বিয়ে ঠিক করার ফল কেমন হয়! যদি বিয়ের আসর থেকে না পালাতাম তবে নিজের উপরে অন্যায় করা হতো, এমনকি তোমার উপরেও ৷ তোমার চিঠির ভাষা আর তোমার চোখের ভাষা পড়ে বুঝতে পেরেছিলাম তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো ৷ এই দুটা জিনিসের মায়ায় আজ আমি বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে আসছি ৷ নাও, এবার আমার হাতটা ধরো! সাদিয়া কথাগুলো একনাগারে বলে গেলো ৷ তার কথাগুলো শুনে হতভম্ব এবং নির্বাক আমি ৷ অতিরিক্ত আবেগ আমাকে ঘিরে ধরলো তার কথার কারণে ৷ হ্নদস্পন্দন এতো বৃদ্ধি পেয়েছে যে থরথর করে কাঁপছি ৷
সাদিয়া যা বললো তা কি সত্য? আমি তো তাকে কখনো চিঠি দিইনি, তাহলে সে এমনটা দাবি করছে কেন? তবে এটা সত্য যে তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম ৷ তার দিকে দৃষ্টি না দেবার কোনো প্রশ্নই আসেনা; কারণ সে যে মাপের সুন্দরী একবার চোখ গেলে আর চোখ ফেরাতে ইচ্ছা করেনা ৷ কিন্তু এরমানে এই নয় যে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে হবে, তাও চিঠিতে ৷ সে সুন্দরী বলেই কি প্রেম করতে হবে তার সাথে? বুঝলাম না সে চিঠির কথা বলছে কেন? মাথা কাজ করছেনা আমার ৷
ও একমিনিট, রাকিবকে যে চিঠিটা লিখে দিয়েছিলাম, সেই চিঠিটা কোনোভাবে কি সাদিয়ার হাতে পৌঁছেছিলো? হ্যাঁ, হয়তো এমনটাই ঘটেছে ৷ তাছাড়া তো সাদিয়া আমাকে চিঠির কথা বলতোনা! যাহোক, এখন আমার কি করা উচিত? নিশ্চয় বোকার মত কাজ করলে চলবেনা ৷ এখন যদি সাদিয়াকে সত্যটা খুলে বলি তাহলে আমারই সর্বনাশ হবে! তার মত এতো সুন্দরী শিক্ষিত মেয়েকে হারানো মানে নিজের সর্বনাশ নিজে করা ৷ সে যখন আমার ভাগ্যে এসেছে তবে তাকে ফিরিয়ে দিবো কেন? আর তাছাড়া, এতো প্রেম ও মায়া নিয়ে কেউ হাত ধরার কথা বললে তার হাত কি না ধরে থাকা যায়? সাদিয়ার হাতটা ধরলাম ৷ তার নরম কোমল হাতটা আমার হাতে আবদ্ধ হতেই বুকটা ভালোলাগার আবেশে ভরে গেলো! সাদিয়া কপট রাগস্বরে বললো,
-কি ব্যাপার, এখনো তুমি চুপ আছো কেন?সেই কথাটা কি বলবেনা? অবাক হয়ে বললাম,
-কোন কথা? সাদিয়া আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
-আবার বলে কি কথা? তুমি কি চাচ্ছো এখন আমি রাগ করে চলে যাই! আমি আর এই মুহূর্তে ভুল করতে চাইনা ৷ ভুল করলেই হাতে আসা মুক্তা হারিয়ে ফেলবো চিরতরে! সাদিয়াকে আমার বুকের জমিনে জড়িয়ে নিয়ে মৃদ্যুভাবে চাপ দিয়ে শীতল কন্ঠস্বরে বললাম,
-I Love You সাদিয়া! সাদিয়া নিচুস্বরে বললো,
-হয়েছে এবার ছাড়ো ৷ আর তাড়াতাড়ি চলো ৷
-আমাদের বাসায় যাবো না কি কোনো হোটেলে?
-শ্বশুরবাড়ি যাবো!
১ মাস পর, এতদিন পর রাকিব আমাকে ফোন করে বললো,
-ভাইয়া, আপনাকে দিয়ে যে চিঠিটা লিখে নিয়েছিলাম সেটা ভুলক্রমে আমার আপুর হাতে গিয়েছিলো ৷ আর আপনার চিঠির অনুকরণে যে চিঠিটা আমি লিখেছিলাম সেটা আপনার বোনকে দিয়েছি ৷ সে আজ আমার গার্লফ্রেন্ড! কি আর করবো বলেন, আমি না আপনার বোনকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম ৷ রাগ করবেন না দয়া করে ৷ আপনি আমার প্রেমগুরু ৷ যাইহোক, ভালোলাগছে যে ভাগ্যক্রমে আপনিও আমার বোনকে পেয়ে গেছেন৷ তবে সত্যটা যদি আপু জানতে পারে তবে আপনার কপালে দুঃখ আছে ৷ সাদিয়া আপু অতিরিক্ত সুন্দরী বলে ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্ক জরাতে পারতোনা, সবাই ভাবতো সে হয়তো সম্পর্কে জরিত আছে ৷ একারণে ২২ বছর ধরে আপু একা ছিলো ৷ আজ যদি সে জানতে পারে আপনি তাকে পাবার জন্য চিঠিটা লিখেন নি তবে আপনি শেষ! রাকিবকে ভয়ার্ত কন্ঠে বললাম,
-শালাভাই, তোমার এতোবড় উপকার করেছি, এবার আমার উপকার করো ৷ দয়া করে কখনই তোমার বোনকে সত্যটা বলবেনা!
-ঠিকআছে, বলবোনা ৷ কিন্তু আমার একটা কথা রাখতে হবে!
-কি কথা?
-আগে বলেন কথাটি রাখবেন ৷
-রাখবো, বলো!
-আমি গোপনে আপনার বোনকে বিয়ে করেছি ৷ এটা আপনার পরিবার যাতে মেনে নেয় সেটার দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকে! আমি আর কি উত্তর দিবো, এর আগেই অজ্ঞান!
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত