পাত্রের মা: তোমার নাম কি মা?
পাত্রী: শাড়িটা খানিকটা উপরে তুলে জিন্সটা গুটাতে গুটাতে নীচের দিকে তাকিয়ে বললো বার্থ নেইম,নিক নেইম নাকি সার্টিফিকেট নেইম? পাত্রের মা বোকা বনে কিছুক্ষণ হেঁসে নিলেন। তারপর বললো…
পাত্রের মা: তোমার যেইটা ইচ্ছে সেইটাই বলো।
পাত্রের মামা: আরে তুমি সবকিছুই বলো তো মা সবই বলো।
পাত্রী: বার্থ নেইম আরোশি সার্টিফিকেট নেইম আরোশি ইসরাত আর নিক নেইম আরু।
পাত্রের মা: বাহ্ বেশ সুন্দর নাম তো। মাথায় হাত দিতে গেলেই পাত্রী চেয়ারের উপর পা তুলে চেঁচিয়ে উঠলো….
পাত্রী: আরে আরে চুলে হাত দিচ্ছেন কেন? কতো কষ্ট করে চুলগুলো ঠিক করে বেঁধেছি হাত দিয়ে নষ্ট করে দিয়েন না।(চুল ঠিক করতে করতে)
পাত্রীর চিৎকার শুরু পাত্র সহ সবাই লাফিয়ে উঠে। তারপর পাত্রীর কথা শুনে বোকার মত হেঁসে বুকে থুতু দেয়। পাত্রী পা নামিয়ে বলে হিহি আসলে আমি একটু এমনি। মাঝে মাঝেই চেঁচিয়ে উঠে কথা বলি। আর চুলে কাউকে হাত দিতে দেই না।
পাত্রের মা: ও ঠিক আছে। এই বয়সে আমিও এমন ছিলাম। তা মা তুমি রান্না পারো তো?
পাত্রী: হ্যাঁ এ আর এমন কি কাজ। অনেক রান্নাই পারি আমি।
পাত্রের মা: আলহামদুলিল্লাহ। তা কি কি পারো তুমি মা?
পাত্রী: ভাত,ডিম ভাজি, আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা,শাক ভর্তা,পটল ভর্তা,ঢেরস ভর্তা,করলা ভর্তা, পেঁপে ভর্তা,শিম ভর্তা…
পাত্রের মামা: থামো মা থামো। তুমি তো দেখি অনেক কিছুই পারো।(জোর করে হাসার চেষ্টা করে)
পাত্রী: হ্যাঁ তা ঠিক বলেছেন এছাড়াও আরো অনেক কিছুই পারি।(হেঁসে হেঁসে)
পাত্রীর মা: আরর কি কি পারো তুমি মা?(তুতলাতে তুতলাতে)
পাত্রী: নাচতে পারি, নাচাতে পারি, গাইতে পারি, খেলতে পারি, আঁকতে পারি, খাইতে পারি,আড্ডা দিতে পারি, পার্টি করতে পারি,ঘুরাঘুরি করতে পারি, ফেইসবুকিং করতে পারি….
পাত্রের মা: বুঝে গেছি মা বুঝে গেছি।
পাত্র: পাত্র হঠাৎ ফট করে বলে উঠলো তা পারো না কি কি তুমি?
পাত্রী: মুচকি হেসে বলল মোটামোটি সবই পারি আমি শুধু ডিম ভাজিটা উল্টাতে পারি না, ভর্তা করার সময় মরিচ পেঁয়াজ মাখতে পারি না,ঘরের কাজ করতে পারি না,বাসন মাজতে পারি না,ঝাড়ু দিতে পারি না, রান্না করতে পারি না…
পাত্রীর মা: হ্যাঁ বুঝেছি বুঝেছি। তা মেয়েকে বিয়েতে কি কি গহনা দিবেন? পাত্রীর মায়ের দিকে তাকিয়ে।
পাত্রীর মা: পা থেকে মাথা পর্যন্ত সাজিয়ে দেবো সে চিন্তা করবেন না।
পাত্রের মামা: খাঁটি সোনা দিয়েন দেখতে ভালো লাগবে। (হেঁসে)
পাত্রী: আরে না না না, আমি ওসব সোনা দানা নেবো না। তুমি বরং গহনার টাকাগুলো আমাকে দিও আমি ঐ টাকা দিয়ে পাথরের গহনা আর কাঁচের চুড়ি কিনে নেবো। উপস্থিত সবাই হা হয়ে গেছে পাত্রীর কথা শুনে। পাত্রের মা আর মামা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই বিয়ে কিছুতেই হতে পারে না। এই মেয়েকে বিয়ে করলে তো বাপের বাড়ি থেকে সোনা দানা কিছুই নিতে দিবে না। অপর দিকে পাত্র জেদ ধরেছে
পাত্র: বিয়ে করলে এই মেয়েকেই করবে না হলে চির কুমার থেকে যাবে। আরে এমন মেয়ে কয়জন পায়? বিয়ের পর কতো টাকা বাঁচবে উফ্! এখন মা আর ছেলের জোরাজুরি চলছে। মা বলছে এ বিয়ে হবে না আর ছেলে বলছে এ বিয়ে হবেই। এদিকে পাত্রী যে শাড়ি পাল্টে জিন্স আর শার্ট পরে মাকে দাঁড় করিয়ে পার্টি করতে বেরিয়ে গেছে কেউ বুঝতেই পারেনি।
গল্পের বিষয়:
গল্প