১০ লক্ষ টাকা যৌতুক নিয়ে অহনাকে বিয়ে করলাম।বিয়েতে এতো টাকা নিতে পেরে আমার চেয়ে কেউ খুশি না।এই টাকা নেওয়ার পিছনে কারণ আছে।অহনার সাথে সোহান নামের একটা ছেলের সম্পর্ক ছিল।ছেলেটা ওর সাথে গভীর সম্পর্ক করে ওকে ছেড়ে চলে যায়। আমাকে আমার এক চাচা এসে অহনার কথা বলে।ওর পরিবার যেই ভাবে হোক ওকে বিয়ে দিয়ে দিবে।আমার চাচা আমাকে অফার দেয়।এক দিলে দুই পাখি মারা হবে এক দিকে দশ লক্ষ টাকা অন্য দিকে বিয়ের কিছুদিন পর অহনাকে তালাক দিয়ে দিব।এই বুদ্ধি নিয়ে অহনাকে বিয়ে করলাম। বিয়েতে দেনমোহর ধরছি মাত্র ৫০ হাজার টাকা।বাকি সব টাকা আমার লাভ।।
আমার নাম তো বলা হয় নাই আপনাদের।আমার নাম নীলয়।একটা ছোট ব্যবসা করি। বাসর ঘরে ঢুকে দেখি অহনা বসে আছে।আমি ঢুকার পর অহনা আমার পা ধরে সালাম দেয়।আমি বলি এতো কিছু না করলেও হবে।তখন অহনা বলে না আপনি আমার স্বামী তাই আমাকে এটা করে উচিত।এটা আমার কর্তব্য। এরপর আমি বিছানার উপর এ বসলাম অহনাকেও বসতে বললাম। অহনা আমার পাশে বসলো।অহনাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম সোহান এর সাথে তোমার কি কি হয়েছে।এই কথা শুনার পর অহনা কান্না করে দেয়। অহনা আমাকে বলতে থাকে আপনি আমাকে দরকার হলে মারেন কিন্তু ওই নরপশুর কথা আমার কাছে জিজ্ঞেস করেন না দয়া করে।
আমি অবাক হয়ে আরো জিজ্ঞেস করলাম কেনো কি এমন করেছে ও আপনার সাথে।তখন অহনা আমাকে বলে আসলে আমি সোহানকে নিজের মন থেকে বেশী ভালোবেসেছি।আমার সবটুকু ওকে উজাড় করে দিছি কিন্তু ও একটা ইবলিশ শয়তান। আমার সব কিছু ও শেষ করে দিছে।আমি ওকে ঘৃণা করি।তখন অহনা বলে আমি সুইসাইড করতে অনেক বার চেয়েছি কিন্তু আমার পরিবার আমাকে করতে দেয় নাই।আচ্ছা বলুন ভালোবাসলে কেনো ঠকতে হয়। আমি তো ওকে সত্যিকারে ভালোবেসে ছিলাম।আমার কি দোষ ছিল।কেন এই রকম করলো ও।আসলেই কি ভালোবাসা বলতে কিছু আছে না দেহ ভোগ করার নামেই ভালোবাসা।বলবেন আমাকে।
আমি অহনার কথাগুলো শুনে অবাক হতেছি। অহনা আমাকে বলতেছে।আচ্ছা একটা ও আমার সাথে এই রকম করেছে সমাজ ওকে কিছু বললো না।কিন্তু আমাকে সমাজ দূরে সরিয়ে দিয়েছে।হয়তো আপনিও আমাকে ঘৃণা করবেন সারাজীবন। আচ্ছা বলুন তো এক হাতে কি তালি বাজে।সব দোষ কেনো মেয়েদের হবে।সমাজে কেন আমরা অবহেলিত।একটা ছেলে দশটা মেয়ের সর্বনাশ করলেও সেই ছেলেকে সমাজ কিছু বলে না কিন্তু সেই দশটা মেয়ের এই সমাজে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে থাকে। অহনার কোনো কথার জবাব ছিল না আমার কাছে।নিজেকে প্রশ্ন করলে আসলেই একটা মেয়ে সম্মান কি দিতে পারি আমরা। কিন্তু এতো আবেগ কেনো মেয়েদের এই প্রশ্ন করলাম অহনাকে।তখন অহনা বলে আসলে আমরা মেয়েরা যাকে ভালোবাসি গভীর ভাবে ভালোবাসি।তাকে নিয়ে থাকতে চাই।একটা স্বপ্ন গড়ে তুলি মনের গহীন কোণে। কিন্তু একটা সময় অনেকের স্বপ্ন ভেঙে যায়।
আমি অহনার কথা গুলা নিজেকে করার পর উত্তর পেলাম না।আমিও নিজেও তো টাকা নিয়ে ওকে বিয়ে করেছি।আসলে এটা তো আমার উচিত হয় নাই।আমি আর অহনাকে সেই রাতে কিচ্ছু বললাম না।পরদিন আমি অহনাকে নিয়ে ওর বাপের বাড়ি যাই।অহনার আব্বু-আম্মু আমাকে দেখে অবাক।আমি কিছু বলার আগেই তারা বলতে শুরু করে অহনা কি করেছে বাবা তোমার সাথে। তখন আমি অহনার আব্বুর কাছে সেই দশ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিলাম।
সেই টাকা দেওয়ার পর অহনার বাবা আমাকে বলে বাবা এই টাকা দিতেছো কেন।তখন আমি অহনার বাবাকে বলি আব্বা আপনার টাকা আমার লাগবে না।আমি আপনার মেয়েকে নিয়ে এমনেই থাকতে চাই।আমার যা আছে তা নিয়ে আমি ওকে নিয়ে সুখী হতে চাই।এই বলে অহনার হাত ধরে আমার বাসার দিকে আসতে থাকি।রিকশায় অহনা আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।আমি অহনার হাতটা ধরে রেখেছিলাম।
গল্পের বিষয়:
গল্প