ডিপ্রেশন কমাতে ‘অপরাজিতা রানী’ নামে একটা ফেইক আইডি খুলছিলাম। আমার সেই ফেইক আইডিতে এক ছেলে মেসেজ দিছে…
-রানী কেমন আছো তুমি?
–একদমই ভালো না, তুমি কেমন আছো?
-আছি ভালোই তুমি কেন ভালো নাই?
–ও কিছুনা বাদ দাও, ঠিক হয়ে যাবে।
-বলো না কি হয়েছে!
–আমার ভালো লাগছেনা,
এই অসহ্য জীবন নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকব কিছুই বুঝতে পারছিনা। ধ্যাততত…ভুল করলে মাফ করো, বায়। বলেই আমি অফলাইনে গেলাম৷ আমি জানি সেই ছেলেটা এখন অনেক মেসেজ দিবে। ২০ মিনিট পর অনলাইনে আসলাম। যা ভাবছিলাম তাই ছেলেটা অনেক মেসেজ দিছে। আমি বললাম….
-হয়নি কিছু আমি ঠিক আছি। কিছু মনে নিওনা।
–আমায় কি তোমার বন্ধু মনে হয়না?
-হ্যাঁ তাতো হয় তুমি আছো বলেই আমি ফেসবুকে আসি।
–তাহলে বলো কি হয়েছে?
-বাদ দাওতো, কি করো তুমি?
–তুমি যদি না বলো আমি কথা বলবনা। প্লিজ রানী বলোনা কি হয়েছে?
-বললামতো কিছুনা।
–আচ্ছা বলতে হবেনা।
-আচ্ছা বলতেছি, আসলে আমার বেশ কিছু টাকার দরকার, আব্বুর কাছে চেয়েছি দেয়নি, বলল সেদিনই তো দিলাম এখন আবার কিসের দরকার। কেমন লাগে বলোতো?
–এই ব্যাপারে কেউ মন খারাপ করে?
-তুমি জানোনা টাকাটা আমার কত দরকার৷ আমার এক বান্ধবীর বোনের বিয়ে, ওরা খুবই গরীব। আমি হেল্প করতে চাই ছিলাম।
–তোমার বান্ধবী মানে আমারওতো বান্ধবী তাইনা? বলো কত টাকা?
-আরে তুমি এসবে কেন নিজেকে জড়াচ্ছো? বাদ দাও, বলো কি করছো এখন?
–তুমি বলবে কি না?
-কি বলব?
–কত টাকার দরকার?
-দেখো তন্ময় এটা আমার বিষয় তোমার শুধু শুধু টাকা নষ্ট করে লাভ নেই, আর আমি বাবাকে ম্যানেজ করবনি। মাত্র দুই হাজার টাকাইতো বাবা দিয়ে দিবে!
–তারমানে দুই হাজার টাকা?
-ইসসসস ধ্যাত আমি বলেই দিলাম। তোমাকে এজন্যই বলি এই বিষয় বাদ দাও।
–একটা কথা বলব রাখবে?
-কি কথা?
–বলো রাখবে কিনা?
-রাখব!
–তোমার বিকাশ নাম্বার দাও…!
-মানে? তন্ময় তুমি কি পাগল? কি বলছো এসব?
–দেখো দিতে বলছি দাও।
-দেখো তন্ময় এসব পাগলামির কোন মানে হয়না!
–তুমি যদি আমায় আপন ভাবো তবে দিবে নাম্বার যদি না দাও তাহলে বায়।
মনে মনে বললাম, আমিতো এইডাই চাই। তাই দেরি না করে টুপ করে নাম্বার দিলাম। কিছুক্ষণ পরই নাম্বারে ২ হাজার টাকা আসলো। সাথেসাথে কলও আসলো। খাইছেরে কলতো কাটা যাবেনা। আমি মোখলেসকে ডেকে বিষয়টা বুঝিয়ে বললাম। মোখলেস ফোন ধরেই মেয়ে কণ্ঠে বলল….
-তন্ময় বাসায় আম্মু আছে।
–ওহ আচ্ছা, তোমার ভয়েস তো খুব মিষ্টি!
-ইসস তাই বুঝি? তুমি এই মিষ্টি খাবে?
–আমিতো তোমার সবই খেতে চাই৷
-আচ্ছা মাঝরাতে কল দিবনি যা খেতে মনচায় খেও এখন রাখি সোনা, বায়। মোখলেস কল কেটে দিলো। আমি আহাম্মক হয়ে গেলাম৷ মোখলেস যে এতবড় খিলাড়ী আমি জানতাম না। ওর মাথায় ঠুয়া মেরে বললাম…..
-হারামি তোর কাছে আছে কি খাওয়াবি কি?
–ধুররর ভাই পোলাডারে স্বান্তনা দিলাম।
-ভালো করছস, চল হোটেল যাব।
মোখলেস সহ হোটেল গেলাম। দু’জনে ৫ প্লেট বিরিয়ানি খেলাম। মোখলেসকে ৩০০ টাকা দিলাম। বেচারা হেব্বি খুশি। বাসায় এসে ছাঁদের রেলিং ধরে বসে আছি। সাথে মোখলেস৷ দোতালা উপর থেকে মোখলেস মানুষের মাথায় ছ্যাপ দিচ্ছে। ব্যাপারটা ভালো লাগছে। আসলে পকেটে টাকা থাকলে সবকিছুই রঙ্গিন লাগে।
গল্পের বিষয়:
গল্প