পিটার উইলিয়ামস বা এরকম কিছু একটা নাম-টাম হবে হয়তো। আমার ভালো মতো মনে নেই। তবে যদি কখনো তার ব্যাপারে আগ্রহ বোধ করি, নামটা ঠিকভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো নিশ্চিত। এখন ততটুকুই বলি যতটুকু ঘটেছে। অবশ্য বলার মতো আসলেই কি কিছু ঘটেছে? বুঝতে পারছি না। বাট, দ্যাটস অ্যান ইন্টারেস্টিং এনকাউন্টার, আই মাস্ট অ্যাডমিট।
গতকাল সব সময়ের মতো আমি দৌড়ে ক্লাসে ঢুকলাম। নির্ধারিত সময়ের পাঁচ থেকে সাত মিনিট পর। কারণ যে-কোনো কাজেই দেরি করা আমার মজ্জাগত। বলা যায়, আমার জন্মগত স্বভাব। যেখানে যেখানে আমার যাওয়ার দরকার, কাজে অথবা অকাজে, বলতে গেলে সেসব জায়গায়ই আমি প্রায় অলঙ্ঘনীয়ভাবে দেরিতে হাজির হই। আর দেরিতে
হাজির হয়ে অবশ্য কখনো আন্তরিকভাবে দুঃখিত বোধ করি না। সেরকম কোনো দুঃখবোধ প্রকাশ করার প্রশ্নই আসে না। তবে, টু বি ফ্রাঙ্ক, সে-সময়গুলোতে আমাকে বিশেষ এক ধরনের ভাবের আশ্রয় নিতে হয়। ব্যাপারটা খানিকটা এরকম যে, বিশেষ কারণেই আমার দেরি হয়েছে, দেরি হওয়াটা কোনোভাবেই এড়ানো যেত না, এবং এই দেরি হওয়াতে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো কোনো অস্বাভাবিক বিশাল ব্যাপারও ঘটেনি। কাজে কাজেই এই দেরি হওয়াটা একটা আনইম্পর্ট্যান্ট মামুলি ব্যাপার, অ্যাস ফার অ্যাস আয়েম কনসার্নড…। এবং এটা আমার চরিত্রগত বিশেষ বৈশিষ্ট্যও বটে!
যা হোক, তবে এই বিশেষ কোনো কিছু ভুল করা বা না করার সঙ্গে মহাভারত অশুদ্ধ হওয়ার তুলনাটা যখন-তখন অতি ব্যবহারে একটা ক্লিশে ধারণায় পরিণত হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস। আমি ভাবছিলাম অন্য কিছু বলা যায় কিনা। না, মানে, প্রফেসর পিটারকে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে এ-বিষয়ে। একটা অহেতুক আলোচনার প্রসঙ্গ তৈরি করে। এত মানুষ থাকতে প্রফেসর পিটারের নামটাই প্রথমে মনে আসার কারণটা হলো, তিনি আমার ব্যাপারে অ্যাপারেন্টলি সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট পরিমাণে আগ্রহ প্রকাশ করে ফেলেছেন। যুক্তিস্বরূপ বলা যায়, সেদিন আমি দেরি করে তার ক্লাসে ঢুকলেও তিনি মুখে তো কিছু বললেনই না, বরং এমন সুন্দর একটা ঠোঁটভঙ্গি করলেন যে, আমি বুঝে গেলাম, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। আই মিন, সাত মিনিট দেরিতে ক্লাসে ঢোকার পরও যদি প্রফেসর তার ছাত্রীর দিকে, বলা নি®প্রয়োজন ক্যাম্পাসে ছাত্রীর বুদ্ধিদীপ্ত সুরতের সুনাম আছে, এমন রোমান্টিক দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন, তখন সন্দেহ করার মতো একাধিক কারণ থাকলেও থাকতে পারে।
তবে ওই সময়ের জন্য ভাবের মুখোশ পরে ছাত্রী নির্বিকার। খুঁজে পেতে একটা নড়বড়ে ডেস্কে সে কোনোরকম বসার মতো কায়দা করলো। কিন্তু তৎপরবর্তী পঁয়ত্রিশ মিনিট সে শুধু কোমরে ব্যথা অনুভব করা ছাড়া আর কিছুই বুঝতে পারেনি। অতঃপর প্রাকৃতিক ভূগোলের ওপর এবড়ো-খেবড়ো একটা ক্লাস নিয়ে প্রফেসর পিটারের নিঃশব্দ প্রস্থান। আশ্চর্য! এত সুন্দর হেসে যিনি ছাত্রীর দেরিতে ক্লাসে ঢোকাকে অনুমোদন করলেন, ক্লাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় একবারও তার দিকে তাকানোর প্রয়োজন বোধ করলেন না। আশ্চর্য বইকি!
দুই
ভার্সিটির ক্যাফেটেরিয়ার যে কোনাটা শ্যামলীর সব সময়ের পছন্দের জায়গা, আজ সেখানে যাওয়ার পর তার ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। প্রফেসর পিটার বসে আছেন তার সমস্ত আতিথেয়তার আয়োজন সম্পন্ন করে। টেবিলে দুই মগ ধোঁয়া-ওঠা কফির সুবাস এলোমেলোভাবে ঘ্রাণ ছড়িয়ে আছে। শ্যামলীর একটা ধাক্কা খাওয়ার মতো অবস্থা হলো। তিনি কীভাবে জানলেন, এ-সময় এখানে শ্যামলী আসবে? তবে কি তিনি তার সবকিছু ইত্যবসরে জেনে নিয়েছেন? শ্যামলীর সন্দেহ তাহলে শেষ পর্যন্ত সত্যি প্রমাণিত হতে যাচ্ছে?
কী কাণ্ড! মাত্র দুমাস হলো তার ইভনিং টাইমের ক্লাসে যাওয়া-আসা শুরু। সেদিন, অর্থাৎ যেদিন সে দেরি করে ক্লাসে ঢুকেছিল, এর আগে মাত্র দু থেকে তিনবার সে প্রফেসর পিটারের ক্লাস করেছে। পড়ার জন্য বিষয়টা তেমন গুরুত্বপূর্ণ বা আহামরি কিছু না। প্রাকৃতিক ভূগোল জাতীয় কিছু একটা। কিন্তু তিনি পড়ান এমন চমৎকার! তাই ওরকম রসকষহীন ভৌগোলিক একটা বিষয়ও কেবল তার পড়ানোর মাধুর্যগুণে অসাধারণ হয়ে ওঠে। ধাক্কা সামলে শ্যামলীকে একসময় কথা বলতে হয়।
প্রফেসর, আপনি এখানে?
হ্যাঁ, এখানে, একেবারে তোমার পছন্দের জায়গায়।
না, আমি বলতে চাইছি যে, আপনি কি…
না, ভুল করে এখানে এসে উপস্থিত হইনি, ডিয়ার। জেনে-শুনে খবর নিয়েই এসেছি যে, ক্লাসের বিরতিতে তুমি এখানে একা একা বসে কফি পান করো। একেবারে নিজের মতো করে।
কিন্তু আমি ভাবছি…
তুমি কী ভাবছ সেটা পরে জেনে নেওয়া যাবে। তার আগে তোমার জানা দরকার কেন আমি এখানে।
বলুন, কেন?
সত্যি শুনতে চাও?
জি, শুনতে চাই।
তাহলে তোমাকে চোখ বন্ধ করে শুধু কান দুটো খোলা রাখতে হবে।
না, না, সেটা সম্ভব নয়। আমি চোখ-কান খোলা রেখে চলা মানুষ। আপনি সত্যি সত্যি বলতে চাইলে আমাকে এ-অবস্থায়ই আপনার কথা বলতে হবে।
জানি না কেন, আমার মুখ থেকে এ-কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে প্রফেসর পিটারের মুখের ওপর এক ঘন কালো মেঘের ছায়া দেখতে পেলাম। আমাকে দ্বিতীয়বার অন্য কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তিনি চট করে উঠে পড়লেন। হঠাৎ তার কিছু মনে পড়েছে এমন একটা ভঙ্গি করে তিনি ক্যাফেটেরিয়া থেকে বের হয়ে করিডোর ধরে সোজা চলে গেলেন তার রুমের দিকে। আমি ঠান্ডা হয়ে যাওয়া একটা কফির কাপ টেনে নিলাম।
তিন
এরপর সপ্তাহ দুয়েক আমি ক্লাসে যেতে পারিনি। অফিসের ব্যস্ততা আর নিজের শারীরিক অসুস্থতার কারণে। চারদিন টানা বিছানায় শুয়ে ছিলাম। কেউ খোঁজ নেয়নি আমার। ওই অসহায় মুহূর্তগুলোতে কেন যেন আমার শুধু প্রফেসর পিটারের চেহারাটা খুব মনে পড়তো। অদ্ভুত কিছু রোমান্টিক ভাবালুতায় আপ্লুত হয়ে পড়তো দুর্বল মনটা। পরক্ষণেই নিজেকে নিষ্করুণ যুক্তির মতো কিছু একটা দিয়ে ঝাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে বলতে চাইতাম, ছি! এসব কী ভাবছি আমি!
প্রফেসর পিটার একজন সম্মানী ব্যক্তি। এই ভার্সিটিতে অনেক বছর ধরে আছেন। ছাত্রছাত্রীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। স্বীকার করতেই হবে, তার এই জনপ্রিয়তার পেছনে শিক্ষক হিসেবে তার অসাধারণ যোগ্যতা যেমন ভূমিকা রেখেছে, যদিও তার বিষয়টা তেমন পরিচিত কিছু নয় – প্রাকৃতিক ভূগোল যার নাম, একই সঙ্গে হিচ্কক হিরো জেমস স্টুয়ার্টের সঙ্গে তার অবিশ্বাস্য চেহারাগত সাদৃশ্য তাকে এক অন্যরকম মর্যাদা দিয়েছে, যেটা সহজেই অনুমেয়। প্রথম দিন ক্লাস করতে গিয়ে আমার চোখ কপালেই তোলা ছিল পুরোটা সময়। আমি ভাবতেই পারছিলাম না, এটা কীভাবে হয়। দুজন মানুষের চেহারাগত সাদৃশ্য এত অবিকল কেমন করে হতে পারে। আর পড়বি তো পড় মালির ঘাড়ে অবস্থায় আমার মতো এমন একজনের সঙ্গে ব্যাপারটা ঘটলো যে কিনা একই সঙ্গে হিচ্কক আর স্টুয়ার্টের সমান পাঁড় ভক্ত। রিয়ার উইন্ডো থেকে শুরু করে ভার্টিগো। অহ্-হো, প্রথম দিনই আমার ভার্টিগোর মতো হয়ে গেল!
প্রফেসর পিটারকে যথারীতি মনে মনে আমার প্রেমিক বানিয়ে ফেললাম। আর ওই যে আগেই যেমনটা বলেছিলাম, তিনি আমার দিকে অমন আগ্রহ ফুটিয়ে তাকিয়েছিলেন তার কারণও প্রথম সপ্তাহে ক্লাসের পরপরই আমি বলতে গেলে ছুটে গিয়েছিলাম তার রুমে। আর কেউ কিছু বলার আগেই আমার মনোভাবটা তাকে জানানো দরকার এমনটা ভেবে একটুও সময় নষ্ট করতে চাইনি। কেননা, এর আগে এরকম সময়মতো কোনো একজনকে কিছু জানাতে পারিনি বলে…, থাক, সে-কথা এখন আর নাইবা বলা গেল। আমি জ্বরের ঘোরে এরকমটা ভাবতে ভাবতে অন্য এক জগতে চলে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রফেসর পিটার এক অদ্ভুত নীরব দৃষ্টি মেলে শুধু আমাকে অবলোকন করেছেন, মৃদু হেসেছেন কখনো কখনো, কিন্তু মুখে কিছুই বলেননি। অথবা, হতে পারে, তার কিছু বলারই ইচ্ছা হয়নি। তিনি শুধু ওভাবে চুপচাপ মৃদু হাসতে পারেন, এর বেশি কিছু নয়।
অথচ আমি যখন টলটলায়মান পায়ে কিচেন থেকে কোনোরকম এক কাপ গরম কফি বানিয়ে এনে বিছানায় এলিয়ে পড়লাম, তখন আমার মনের পর্দায় সেদিনের সেই ক্যাফেটেরিয়ার দৃশ্যপট ভেসে উঠলো। আমি কী বোকা! প্রফেসর পিটার আমার মতো সাধারণ এবং অনিয়মিত একজন ছাত্রীর জন্য এতটা করলেন আর আমি কেমন একটা ভাব ধরলাম তার সামনে। অথচ এই আমিই তো প্রথম দিনই তার রুমে ছুটে গিয়েছিলাম শুধু এ-কথা বলার জন্য যে, আমি জেমস স্টুয়ার্টের কতটা ভক্ত!
তিনি শুধু তার ট্রেডমার্ক হাসি দিয়ে বলেছিলেন, হু ইজ দ্যাট স্টুয়ার্ট-নেমড্ গাই? ইউ গাইজ আর রিয়েলি ক্রেজি। এভরিবডি স্টার্টস টকিং অ্যাবাউট হিম অ্যাজ সুন অ্যাজ দে হ্যাপেন টু থ্রো দেয়ার গ্লেন্স অন মি, টেল মি প্লিজ হু ইজ হি…
প্রফেসর পিটার আরো কিছু বলেছিলেন। এখন আর আমার তা মনে নেই। কিন্তু এটা তার প্রফেসরসুলভ ভনিতা না রিয়েল অজ্ঞতা ছিল তা আমার পক্ষে বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি। বিষয়টা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ মেলেনি এরপর। আর কিছু বুঝতে পারিনি বলেই সেদিন ক্লাসে দেরি করে ঢোকার পরও যখন তিনি আমার দিকে একটা ইনডালজিং লুক দিলেন, চির-রোমান্টিক এই আমি অন্য কিছু ভাবতে শুরু করলাম। আর তারপর ওই ক্যাফেটেরিয়া এপিসোড…
চার
দু-সপ্তাহের অনুপস্থিতির পর কী হতে পারে আমার ধারণায় ছিল না। আর ওটা নিয়ে আমি যে খুব একটা চিন্তিত ছিলাম সেরকমও কিছু নয়। প্রাকৃতিক ভূগোলের মতো একটা নিরস বিষয়। শুধু পড়ার জন্য পড়া। আমার জন্য একটা অতিরিক্ত মাস্টার্স ডিগ্রি। এর বেশি তো কিছু নয়। সত্যি কথা বলতে কী, ইভনিং প্রোগ্রামের আর কোনো সাবজেক্টে চান্সও পাইনি আমি, দুঃখজনকভাবে। পরিচিতজনকে বলেছি, অফিসের কাজের চাপ। প্রকৃত ঘটনা হলো, এই আইবুড়ো বয়সে পড়াশোনা করতে আমার আর একদম ভালো লাগে না। তারপরও ওই পড়াশোনা আমাকে কিছুতেই ছাড়ছে না। লেগেই আছে যেমন-তেমনভাবে হলেও। আর এখন এ-সময় এর মাঝে প্রফেসর পিটার ঢুকে পড়ে পুরো ব্যাপারটা এলোমেলো করে দিয়েছেন আমার জন্য।
অন্য সময়ের মতো ক্যাফেটেরিয়ায় আমার সেই প্রিয় কর্নারটায় গিয়ে বসলাম। আজ বেশ শীত পড়েছে। ওভারকোটটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নিয়ে একটু আয়েশ করার চেষ্টা করলাম যতটা এই ক্যাফেটেরিয়ার মতো পাবলিক প্লেস অ্যালাউ করে। আমার পেছনের টেবিলে বেশ কিছু ছেলেমেয়ে অকারণ হই-হুল্লোড় করছে। আর আমি সবসময়ের মতো একা। ঘন জনারণ্যেও। কফির কাপটা শক্ত করে ধরে আমি সামান্য অন্যমনস্ক হওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু বৃথা সে চেষ্টা। আমার কানে পরিষ্কার ভেসে এলো প্রফেসর পিটারের নাম। না, কোনো ভুল না। ওরা প্রফেসর পিটারকে নিয়ে কিছু একটা বলছে। আমাকে উদ্দেশ করে কিছু নয় তো? কান খাড়া করতেই হলো।
হু, ব্যাপারটা সত্যি খুব দুঃখজনক।
ঠিক বলেছ। ওনার মতো একজন প্রাণোচ্ছল মানুষ এমনটা করবেন ভাবাই যায় না।
কিন্তু আসল ঘটনা কী এখনো কিছু বোঝা যাচ্ছে না।
সবাই একটা নোটের কথা বলছে। একটা সুইসাইডাল নোট।
সুইসাইডাল নোট? প্রফেসর পিটার? সুইসাইড? এসব কী বলছে ওরা? চেয়ারটা ডান পায়ে জোরসে পেছনে ঠেলা দিতে গিয়ে গরম কফি চলকে পড়ে আমার ওভারকোটটা খানিকটা ভিজিয়ে দিলো। আমি তাল সামলানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।
পাঁচ
ঠান্ডায় জমে যাওয়া প্রফেসর পিটারের মৃতদেহটা যখন আবিষ্কার করা হয় তার বাথটাবে, তখন প্রথমে কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি অন্য কিছু? পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে জানা গেল, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন তিনি। আর সেটাই তার হঠাৎ হার্ট ফেইলিওরের কারণ।
তবে যখন তার কম্পিউটারের প্রিন্টার থেকে একটা সুইসাইডাল নোটের প্রিন্টআউট পাওয়া গেল, তখন তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেলেও সবটুকু বোঝা যায়নি। স্বাভাবিক কারণেই। ওই নোটটায় লেখা ছিল : ‘ফর হুম ইট মে কনসার্ন। আই হ্যাড লস্ট মাই ওয়াইফ অ্যান্ড ডটার ইন অ্যা রোড অ্যাক্সিডেন্ট। হোয়েন শি কেম টু মাই রুম ফর দি ফার্স্ট টাইম, আই ওয়াজ টোটালি টেকেন অ্যাবেক – আই গট কনফিউজড। হাউ কুড ইট বি? লরা ইজ ইড, লিডিয়া ইজ ডেড।… বাট শি হ্যাড হার ওউন থোটস, অ্যান্ড আই হ্যাড মাইন… গুডবাই…’
প্রাকৃতিক ভূগোল না কী যেন সাবজেক্টটার নাম? আমার আর ডিগ্রি-টিগ্রি নেওয়া হয়নি। কারণ, এর পরে আমি এক ক্রনিক ভার্টিগো রোগীতে পরিণত হয়েছিলাম। সবাই আমার জন্য দুঃখ প্রকাশ করতো। কিন্তু প্রকৃত কারণ আজ পর্যন্ত কেউ জানতে পারেনি। কারণ কেউ জানতেই পারেনি, ফর হুম ইট রিয়েলি কনসার্নড…