নৈঃশব্দ্যের অত্যাচার

নৈঃশব্দ্যের অত্যাচার
পাড়ায় একটা খবর ভেসে বেড়াচ্ছে স্মৃতি আপার বরের সাথে ডির্ভোস হয়ে যাচ্ছে৷ এক কাপড়ে ছয় বছরের কন্যার হাত ধরে বাপের বাড়িতে চলে এসেছে। কান কথায় বিশ্বাস করতে নেই। মফস্বলের ইট-পাথরের ইমারতে শহুরে হাওয়া লেগেছে ঠিকই কিন্তু পরনিন্দা আর পরচর্চা না করলে ভেতরবাড়ির লোকজনের পেটের ভাত হজম হয় না। রঙচঙিয়ে না বললে এক একটা গল্প দৈর্ঘ্য-প্রস্থে বিরাটকার হবে কী করে! অতএব শোনা কথা বিশ্বাস করলাম না। স্মৃতি আপার মুখের গড়ন নিঁখুত। ফর্সা গালে লাল তিল, হাসলে দারুণ দেখায়। ঢেউ খেলানো কোমর ছুঁই ছুঁই খোলা চুলে কলেজ যেত সাথে এলাকার ছেলেদের মন হরণ করেও নিয়ে যেত। রোজ দু’চারটা প্রেমের প্রস্তাব, রংনাম্বারে বিরক্ত করা ছিল অহরহ ঘটনা।স্মৃতি আপা বড় দুই ভাইয়ের কড়া শাসনে মানুষ। ভালো মেয়ে হিসেবে পাড়ায় বেশ সুনাম ছিল।মুরুব্বিরা নাজমা কাকীকে বলতেন,
-দেখিস, তোর মেয়ের কত বড় ঘরে বিয়ে হয়৷ ও রাজরানী হবে।
আশ্চর্য! লক্ষীমন্ত আর সুন্দরী মেয়ে দেখলেই লোকে কেন পয়সাওয়ালা বর আর ধনী শ্বশুরবাড়ির আর্শীবাদ করে। একটা মেয়ের ভালো থাকা কি স্রেফ ভালো বিয়ে হবার উপর নির্ভর করে! সে যাই হোক, বাকিসব সুন্দরী মেয়েদের মত স্মৃতি আপার খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায়। পাত্রের ঢাকা নিজস্ব বাড়ি আছে, বিশাল পারিবারিক ব্যবসা, বনেদি পরিবার। মধ্যবিত্তের কন্যা স্রেফ রুপের জোরে অভিজাত মহলে ঠাঁই পেয়ে গেল। বাহারি কাতান আর ভারী গহনায় শরীর মুড়িয়ে স্মৃতি আপা যখন বাপের বাড়ি বেড়াতে আসতেন একেবারে ইন্দ্রানীর মত দেখাত৷ মেয়েটাও হয়েছে তুলতুলে পুতুল দেখলেই মনে হয় গাল ছুঁয়ে আদর করে দেই।এত বছর সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল।হয়ত বরের সাথে কোনো কারণে কথা কাটাকাটি হয়েছে তাই রাগ করে বাবার বাড়ি চলে এসেছে। আর বউঝিরা তিলকে তাল ভেবে গল্প ছড়াচ্ছে। দু’বেলা টুথব্রাশ আর ইংলিশ কোমড ব্যবহার করে আমরা যতই সভ্য হবার ভাণ করি ভেতরটা অন্তঃসারশূন্য। পরের দুঃখ দেখে উহু আহ করি আবার মনে মনে কথা বলার মত নতুন একটা বিষয়বস্তু পেয়ে তৃপ্ত হই।
সে যাই হোক, স্মৃতি আপার আমার চেয়ে বয়সে মোটে তিন বছরের বড়।একসাথে হাসতে-খেলতে বড় হয়েছি। আমার তেমন ভুবনভোলানো রুপ নেই তাই স্মৃতি আপা সংসার করছে আর আমি কিণ্ডারগার্টেনে ইংরেজি পড়াই।মা বিয়ের জন্যে তাড়া দেন আবার আমি চলে গেলে একদম একা হয়ে যাবেন এটা ভেবেও কষ্ট পান।স্কুল,টিউশন নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকি সপ্তাহান্তে মায়ের পছন্দমাফিক পাত্রের দেখা করে আলাপ করে আসি৷ বরাত মন্দ তাই ব্যাটে-বলে হচ্ছে না। পাড়ার লোকজন যদিও এরমাঝে গুজব ছড়িয়ে দিয়েছে আইবুড়ো থেকে যাব আমার আর বিয়ে হবে না তবু একা আমি বেশ আছি।
অন্তত দিন শেষে মায়ের হাতে মাছের ঝোল মেখে ভাত খেয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারি, একগাদা কচিকাঁচা আমায় দেখলে আনন্দে ম্যাম বলে চিৎকার করে উঠে এই বা মন্দ কি। আমার সকাল শুরু হয় খানিক আগেভাগে। ঘরের টুকিটাকি কাজ সেরে একেবারে গোসল করে ছাদে চুল শুকাতে আসি। পরিচ্ছন্ন আকাশ, শীতল হাওয়া বয়। শীতের আমেজে শিশির ভেজা ছাদে হাঁটতে ভালোই লাগে৷ এত দ্রুত সূর্য রোদ ছড়ায় না তবু শীতল হাওয়া মনপ্রাণ জুড়ায়। মা এসে নাস্তা খেতে ডাকেন। পৌনে আটটার মাঝে স্কুলে উপস্থিত থাকতে হয়। আটটায় ক্লাস শুরু। রুটিনের বাইরে এক পা ফেলার জোর নেই। খাবার টেবিলে মা বলে,
-আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যেই করেন।
-কি হয়েছে?
-জাহিদ তো স্মৃতি স্মৃতি করে পাগল ছিল।
আমরা প্রস্তাব পাঠালে না ওরা বাড়ি এসে মেয়ে দিয়ে যেত। আমারই প্রথম থেকে স্মৃতিকে পছন্দ হত না, কেমন নাক উঁচু টাইপ মেয়ে। এমন ধাঁচের মেয়েরা শ্বশুরবাড়ির সাথে মিলেমিশে সংসার করতে পারে না৷ দিল তো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে। এবার মা-বেটি মিলে রুপ ধুয়ে পানি খা। অবাক হয়ে মাকে দেখছিলাম। এলাকার বাকিসব ছেলেদের মত আমার বড় ভাই জাহিদও স্মৃতি আপার জন্যে দিওয়ানা ছিল। কতদিন ভাইয়া আমার হাতে গল্পের বই দিয়ে বলেছিলেন,
-যা, স্মৃতিকে দিয়ে আয়।
কেউ বলে নি কিন্তু আমি জানতাম বইগুলোর ভেতর ছোট্ট চিরকুট থাকত। স্মৃতি তোমাকে ভালোবাসি,লাল সালোয়ার-কামিজে আজকে মিষ্টি দেখাচ্ছিল এইসব হাবিজাবি। যদিও স্মৃতি আপা কখনই চিরকুটের উত্তর দিত না। আমার মাও স্মৃতি আপাকে নিয়ে আদিখ্যেতা দেখাতেন । তিলের নাড়ু, জলপাইয়ের আচার বাটি ভর্তি নাজমা কাকীর বাড়িতে যেত।পরীর মত দেখতে মেয়েকে পুত্রবধূ হিসেবে ঘরে তুলবার সুপ্ত বাসনা লালন করতেন। ভাইয়া তখন প্রাইভেট ফার্মে সাধারণ চাকুরিজীবী। স্কলারশীপ নিয়ে সুইজারল্যান্ড যায় নাই। ধনীর দুলাল এসে স্মৃতি আপাকে নিয়ে চলে গেল, বিয়ের বাজারে আমাদের মত নিম্ন আয়ের ফ্যামিলি ধোপে টিকল না। আরেক চামচ ভাজি প্লেটে নিয়ে মাকে বললাম,
-ওর বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। তুমি ঠিক জানো?
-নয়ত কি! ওর মা এসে আমার কাছে সেই কান্নাকাটি। টাকা-পয়সার অভাব নাই।একটা সন্তান হয়েছে ওর ভবিষ্যৎ আছে। এমন হাতে গড়া সংসার রেখে কেউ চলে আসে বল। পাড়ায় মুখ দেখাতে পারছে না ওর মা।
-দুলাভাই অন্য কারো সাথে অ্যাফেয়ার আছে বোধহয়।
-আরে দুর। সোনার টুকরো জামাই। আগস্টে ডায়মন্ডের নেকলেস উপহার দিয়েছে।
-যার টাকা আছে তাকে টাকা দিয়ে বিচার করতে নাই ।স্মৃতি আপা কি বলে?
-বলছে মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে।আরেকটা রুটি শেষ কর। চা খাবি না?
-স্কুলে গিয়ে খাব। চুলে রিবন জড়িয়ে বেরিয়ে আসতে আসতে ভাবলাম একদিন স্মৃতি আপার সাথে দেখা করব। তার মত স্ট্রং মেয়ে এত সহজে হাল ছেড়ে দিবে বিশ্বাস করা দায়। কিন্তু আমার আর সময় হয় না। শুক্রবার অবসর ছিলাম।মায়ের দূরসম্পর্কের ফুপাতো বোন এসে হাজির। তার ফার্মাসিস্ট ছেলের জন্যে পাত্রী খুঁজছেন। না জানিয়ে অসময়ে চলে আসার কারণ হচ্ছে সাজগোজ ছাড়া কন্যার রুপ বিচার করা। তাদের পছন্দ হল কি না জানি না যাবার সময় হাতে এক হাজার টাকার নোট গুঁজে দিয়ে গেলেন। মায়ের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকাতেই ইশারায় শান্ত থাকতে বললেন।ভদ্রমহিলাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে এসে মা সোফায় আয়েশ করে বসলেন। মুখে এগালওগাল হাসি।
-ছেলের নাম নাফিস মাহমুদ। ফেসবুকে সার্চ দিয়ে প্রোফাইল চেক কর।চেহারা সুরত কেমন দেখি
হাজার টাকার নোট হাতের মুঠোয় জ্বলন্ত কয়লার মত তাপ ছড়াচ্ছে।
-মা, তোমার মেয়ে মার্স্টাস করেছে, একটা জব করছে। সুন্দরী না হোক তবু তো তার একটা আত্মসম্মানবোধ আছে এটা তো মানো। যে কেউ আসল আর তার সামনে ঢ্যাঙঢাঙিয়ে মুখ দেখাতে বের হয়ে যাব একেমন কথা!
-আহা! জাহানারা আপা দেখা করতে এসেছেন। কতদিন আমাদের সাক্ষাত হয় না।
-বোনকে দেখতে এসেছেন, বেশ ভালো কথা। কিন্তু এসব কি! টাকাটা ছুঁড়ে ফেলতেই মা কুড়িয়ে নিলেন।
-দিনকে দিন বেয়াদব হয়ে যাচ্ছিস। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীর কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। সবাই বলে মেয়ের রুজি বসে বসে খাচ্ছি তাই মেয়ের বিয়ে দিচ্ছি না। আমার সমাজে বাস করতে হয়, পাঁচজনের সাথে মেলামেশা করতে হয়। তোদের মত ফোনের স্কিনে মুখ গুঁজে দিন পাড় করতে পারি না। জাহানারা আপার দুই ছেলে। ছোটটা চুয়েটে পড়ে৷ আর বড়টার কথা তো শুনলিই।স্কয়ার কোম্পানিতে জব করে। ওদের রুপবতী চাই না, শিক্ষিতা রুচিশীল মেয়ে হলেই চলবে।আর তোর চাকরি করাতেও ছেলের আপত্তি নাই।মা হয়ে আমি তোকে জলে ফেলতে পারি না, ভেবেচিন্তেই বলেছি ছেলের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে।
-মা, তোমার পছন্দের পাত্রপক্ষের সামনে সেজেগুজে বসতে কোনদিন আপত্তি করেছি!কিন্তু যাবার সময় হাতে টাকা ধরিয়ে দিয়ে যাবে কেন? নিজেকে শোকেসে সাজানো পণ্য মনে হয়। তখন। রুপের পসরা সাজিয়ে বসেছি যেন লোকজন তা যাচাই করে টাকা ছুড়ে মারবে। মা হেসে ফেললেন,
-কি জানি বাপু, তোদের মত অতটা গভীরভাবে কোনদিন চিন্তা করি নাই। ছেলেপক্ষ দেখে আশীর্বাদ করে সালামি দিয়ে যায় এইতো সামাজিক রীতি৷ আমরা বরং টাকা পেলে খুশি হতাম। বান্ধবীরা একসাথে হলে গল্প করতাম কে কত টাকা পেয়েছে। যা দরজা খুল, দেখ কে আবার এসেছে। স্মৃতি আপা চৌকাঠে দাঁড়িয়ে৷ ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটিয়ে জিজ্ঞেস করল,
-মৌ, কেমন আছ?
-ভালো। তুমি কেমন আছ? আসো। ভিতরে আসো। বসার ঘরে টি-টেবিলে খাবার-দাবার ছড়ানো। আমার সাজসজ্জা দেখে স্মৃতি আপা কিছুটা আঁচ করতে পারল,
-আমি বোধহয় ভুল সময়ে এসে পড়েছি। তোমরা কথা বলো। আমি পরে আসব।
-আরে না না। আসো তো তুমি।
স্মৃতি আপাকে জড়িয়ে ধরে আমার ঘরে নিয়ে গেলাম। কত দিন পর দেখা হল, গায়ে সেই মিষ্টি গন্ধ। কিছুতেই ছাড়তে ইচ্ছা করছিল না।বিছানায় দুজন মুখোমুখি বসলাম। বিয়ের সময় ছিপছিপে গড়নের ছিলেন। এখন কিছুটা ওজন বেড়েছে কিন্তু স্বাস্থ্যবতী বলা যাবে না। মুখচোখে সুঢৌল ভাব। স্মৃতি আপাকে আরো সুন্দরী দেখাচ্ছে। প্রশ্ন করলাম,
-মেয়েকে নিয়ে আসলে না কেন?
-ও নানুর কাছে ঘুমায়।
-নাম রেখেছ কি?
-ছন্দ। একদিন নিয়ে আসব দেখা করতে। আমার মার্স্টাসের রেজাল্ট কি ছিল,কতদিন ধরে চাকুরি করছি, ভবিষ্যতের প্লান কি টুকিটাকি আরো কত কথা। ভাইয়ার কথাও জিজ্ঞেস করল। গ্যালারি ঘেটে ভাই-ভাবীর ছবি দেখালাম। স্মৃতি আপার দৃষ্টিতে মুগ্ধতা।
-মাশা-আল্লাহ। দারুণ মানিয়েছে। এত কথা কিন্তু বুঝতে পারছিলাম স্মৃতি আপা কিছু একটা বলতে চায়। ইতস্ততবোধ করছে। নিজ থেকেই বললাম,
-আপা, তোমার কথা বলো।
-মৌ, আমার একটা জব দরকার।কিন্তু কোথা থেকে শুরু করব বুঝতে পারছি না। অর্নাসের পার্ট শেষ হবার পর আর বই নিয়ে বসার সুযোগ হয় নি। চাকরির পরীক্ষায় বসার মত প্রস্তুতি নাই আবার সুপারিশ করার মত মামা-চাচাও নাই। খালাম্মা কাছে শুনেছই তো সবকিছু। এই পরিস্থিতিতে একটা জব না হলেই নয়। স্মৃতি আপার কণ্ঠ বিনীত অনুরোধ। খুব করে বোঝাতে চাইছেন চাকরিটা তার কতটা দরকার।
-আমি বোধহয় তোমাকে সাহায্য করতে পারব। জানুয়ারি মাস থেকে আমাদের স্কুলে নতুন শিক্ষিকা নিবে। আমি প্রিন্সিপাল ম্যামকে আলাদা করে তোমার কথা বলব। হাতে পনের দিনের মত সময় আছে। এই ফাঁকে চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেনীর ইংরেজি-গণিত বই অনুশীলন করে নাও। লিখিত পরীক্ষা নেয় না ওরা ভাইভাবে বেসিক বিষয়গুলো থেকে সাধারণ প্রশ্ন করে। আশা করি হয়ে যাবে।
-তুমি আমাকে বাঁচালে। আজ থেকেই বই সংগ্রহ করে পড়া শুরু করে দিব।
-আরেকটা কথা৷ কিন্ডারগার্টেন স্কুল, স্যালারি কিন্তু হ্যান্ডসাম নয়।
-ছোট থেকে শুরু করাই ভালো।
কাজের প্রতি নিষ্ঠা থাকে। আর আমার যা যোগ্যতা এই যদি পাই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করব। মা চা আর নাস্তা নিয়ে ঘরে ঢুকতেই আমাদের দুজনের আলাপচারিতায় ভাটা পরল। স্মৃতি আপা অর্ধেক কাপ চা শেষ করে আর দাঁড়াল না।মা কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। হয়ত মায়ের নানারকম প্রশ্নের ভয়েই তাড়াহুড়ায় ছুট দিল। দরজা ভেজিয়ে দিয়ে মা পাশে এসে বসলেন,
-স্মৃতি কেন এসেছিল?
-আমার কাছে সমরেশ মজুমদারের বই আছে কি না জানতে। সত্যটা প্রকাশ করলে মা পাড়ার লোকজনের কাছে গল্প করার মত আরেকটা টপিক পেত।
-বাব্বাহ! সংসার ভেঙে যাচ্ছে আবার তিনি বই পড়ে বেড়াচ্ছেন। এরা পারেও।
-তোমার ছেলে যদি আইরিশ মেয়ের সাথে দুই বছর লিভ ইন করার পর সেই মেয়ে কনসিভ করার পর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে পারে তাহলে স্মৃতি আপাও ডির্ভোস নিয়ে হাসিখুশি থাকতে পারে।
-একটা চড়ে খাবি, বেয়াদব মেয়ে। মায়ের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না?
-তুমি সারাক্ষণ অন্যের ব্যাপারে ভুলভাল গসিপ করে যাবে আর আমি বললেই দোষ! স্মৃতি আপা তোমার কি ক্ষতি করেছে মা? উনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমাদের না ভাবলেও চলবে। আজ ভাইয়ার ঘটনা জানাজানি হলে লোকে এরচেয়েও রসিয়ে রসিয়ে গল্প করত। তখন তোমার শুনতে ভালো লাগত? নাকি তোমার সন্তান ছেলে বলে সাতখুন মাফ! মা পারলে চোখ দিয়ে আমাকে ভস্ম করে ফেলে। কয়েক সেকেন্ড এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর,
-এই জন্যেই তোর বিয়ে হয় না। স্যান্ডেলের আওয়াজ তুলে মা চলে গেলেন। আশ্চর্য! স্বার্থে আঘাত লাগলে কাছের মানুষও কথার তরবারি দিয়ে হৃদয় খণ্ডবিখণ্ড করতে দুইবার ভাবে না।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত