আজ আমাকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসছে।আয়নার সামনে আমাকে বসিয়ে বড়াপু নামিদামি ব্রান্ডের মেকআপ লাগাচ্ছে আমার মুখে।আমি কাঠপুতুলের মতো বসে আছি তবে আমার মুখে হাসি আছে,হাসিটা লজ্জা বা আমাকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসছে তার জন্য না হাসিটা আমার বুকের মাঝে চাপা কষ্টটার জন্য,হাসিটা আমার ভাগ্যের জন্য।ছেলেপক্ষ এসে গেছে আপু বাইরে বেরিয়ে গেলো আমি জানালার পাশে দাড়িয়ে আকাশপানে মুখ দিলাম প্রতিবারের মতো এবারও আমি সেই নরকীয় যন্ত্রনা সহ্য করার জন্য প্রস্তুত। আকাশের দিকে চোখ রেখে ভাবছি আচ্ছা এবার ওনারা আমাকে কি কি জিগ্যেস করবেন?সেই প্রথমবার যারা আমায় দেখতে এসেছিলো তাদের মধ্যথেকে একজন জিগ্যেস করেছিলেন “বলি তোমার বাপ-মা বোইন তো অনেক ফর্সা তা তুমি এমন কালো হলে কেন?”প্রশ্নটা আমার অনেকবারই শুনতে হয়েছে কিন্তু মেয়ে দেখতে এসে সবার সামনে যে আমাকে এমন প্রশ্ন করা হবে আমি আশা করিনি।ছেলে মেয়ে আলাদা কথা বলে আমিও বলেছি বহুবার,অনেক প্রশ্নের সম্মুখীনও হয়েছি এই ধরেন-
*”আচ্ছা তোমার যে এত লম্বা চুল এটা কি রিয়েল?না মানে গায়ের রং তো তেমন উজ্জ্বল না,রুপের এই অবস্থা তাই এত সুন্দর চুল দিয়ে করো টা কি?”…
*”আপনাকে আমার বিয়ে করতে অসুবিধা নেই তবে আপনার গায়ের রংটা…..আসলে আমার সব বন্ধুদের বউগুলো অনেক সুন্দর সেখানে আমার বউ যদি কালো হয় তাহলে কি আমি মুখ দেখাতে পারবো!আপনি হয়তো আমার ব্যাপারটা বুঝবেন সরি।”
*”দেখুন আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার,সমাজে আমার একটা স্টেটাস আছে।আমি আর আপনি কি পারবো মানিয়ে নিতে?সবাই চাই তাদের বউ সুন্দরি হবে সেখানে আপনি এগুলো তো কিছুটা মার্জিত কথা ছিলো তবে আমি তাদের উত্তর দিতে পারিনি কোনদিন কিছু মলিন হাসি ছাড়া।অনেকে তো আমাকে কিছু জঘন্য প্রশ্ন ছুড়ে মারতো।এই যেমন,,
*”আপনি কি জন্ম থেকেই এমন কালা নাকি অতিরিক্ত সাজগোছ করতে যেয়ে এমন চেহারা বানায় ফেলছেন?”
*”আপনি কি ভার্জিন?”
*”শুনেছি তুমি নাকি ডাক্তারি পড়ো তা বছিলাম যে রেজাল্ট কি পড়েই ভালো করেছো নাকি অন্যকিছু দিয়ে??চেহারা তেমন ভালো না হলেও বাকি সব তো মাহশাল্লাহ “(আমি সেদিন অন্যকিছুর মানে বুঝিনি কিন্তু এখন বুঝি,এখন তো অনেকে সরাসরিও বলে দেয়)
তোমার কি কোন বয়ফ্রেন্ড ছিলো আর যদি থাকতো তাকে তো তোমার রুপের আগুনে বাধতে পারতে না।তাহলে কি শরীরটা দিয়েই ভুলিয়ে রাখতে?” এরকম অসংখ্য কটুকথার সম্মুখীন হয়েছি।এখন তো অভ্যাস হয়ে গেছে।আমার হয়তো আর বিয়েটা হবে না।আজ দিয়ে ২৩ বার হবে পাত্র পক্ষ আমাকে দেখতে আসছে।অনেকে বলেছে বিয়ে করবে কিন্তু তার পরিবর্তে আমার বাবাকে তাদের কিছু উপহার দিতে হবে(যেমন:টিভি,ফ্রিজ,বাইক,ফ্লাট,গহনা এসবই)শেষেতো এটাও বলে জামাইকে তো দিতে বলছি না সবই তো আপনাদের মেয়ের।মা অনেক সময় রাজি হয়েছে কিন্তু বাবা রাজি না।তার ডাক্তারি পাস মেয়েকে যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেবেন না।এসব ভাবতে ভাবতেই বড়াপু এসে আমাকে নিয়ে গেলো ছেলে পক্ষের সামনে।আমি মাথা নিচু করে বসে আছি।আমার সামনা সামনি আকাশি রং এর পাঞ্জাবি পরা লোক বসে।আমার নজর তার বুক পর্যন্ত গেলো এর বেশি ওপরে তাকানোর সাহস পেলাম না।
আগে তাকাতাম কিন্তু একের পর এক বিয়ে ভাঙার পর আর তাকাই না,যদি কাউকে ভালো লেগে যাই তাহলে যন্ত্রনাটা বেশি হবে।আমাকে কিছু নরমাল প্রশ্ন করলো এই যেমন নাম,কি পড়ি,কোথায় ইন্টার্নি করছি এসবই।তারপর ছেলের মা বলল ছেলেমেয়ের আলাদা কথা বলার কথা।কথাটা শুনেই বুকের মধ্যে কেপে উঠলো না জানি আজ আবার কি শুনতে হবে।লোকটি আমার দুলাভাইয়ের সাথে ছাদে গেলো আমি গেলাম আপুর সাথে(ভয়ে আমার বুকটা কাপছে নিজেকে শক্তও করছি অবশ্য,নতুন কিছু শুনে হজম করার জন্য)ছাদে চলে এসেছি আমাকে রেখে আপু চলে গেলো।লোকটা রেলিং ধরে উল্টা মুখ ঘুরিয়ে দাড়িয়ে আছে।পিছন থেকে আমি তাকে দেখলাম বেশ লম্বা ৬ ফিট তো হবেই।আকাশি রং এর পাঞ্জাবি পরেছেন,হাতাটা কোনুই পর্যন্ত ফোল্ড করা,হাতে একটা কালো রং এর ঘড়ি।কেন জানি না তার মুখ টা দেখতে ইচ্ছা করছে কিন্তু আমি তাকে ডাকতেও পারছি না।বেশকিছুক্ষন ওভাবে দাড়িয়ে থাকলাম ওনার পিছনে হঠাত উনি বলে উঠলেন,
-আপনি কি কথা বলতে পারেন না?
আমি কিছুটা থতমত খেয়ে গেলাম।আসে পাশে তাকালাম কয়েকবার।লোকটি আবার বলে উঠলো “এই যে মিস নীলাম্বরী আপনাকেই বলছি।”আমি তো আর একদফা অবাক হলাম লোকটি কাকে বলছে,উনি কি আমার নাম জানে না??অবশ্য আমিও তার নাম জানি না।আবার এমনও হতে পারে নীলাম্বরী তার প্রেমিকা,কি জানি হতেও পারে এসব ভাবতে ভাবতেই লোকটি আমার দিকে ঘুরে দাড়ালেন।আমি ওনার দিকে তাকাতেই আমার চোখ দুটো যেন ওনার মুখেই আটকে গেলো।ওনার শ্যামলা মুখের ওপর সিল্কি কিছু অবাধ্য চুল এসে পড়েছে,জোড়া ভ্রু দুটো কুঁচকে তাকিয়ে আছে,পাতলা ঠোট তবে হালকা কালচে।শ্যাম বর্নের হলেও যেকোনো মেয়ে অনায়াসে তার প্রেমে পড়ে যাবে।আমি লোকটির দিকে তাকিয়েই আছি,আমার ধ্যান ভাঙালেন মুখের সামনে আঙুল এর তুড়ি দিয়ে আর তিনি আবারও বললেন-
-এই যে মিস নীলাম্বরী আপনি কি বোবা??কিন্তু আমাকে তো আগে বলেনি কেউ যে আপনি বোবা আর বোবা হয়ে ডাক্তার কিভাবে হলেন?(কথাটা বলেই তিনি হাসতে লাগলেন ওনার হাসিতে আমি চোখটা নামিয়ে নিলাম)
-আপনি ভুল করছেন আমি নীলাম্বরী নয়।আমার নাম আ….
-আপনার নাম ডা. আসিয়া রহমান নীরা।(আমাকে থামিয়েই লোকটি আমার নাম বলে দিল)যাই হোক এবার বলেন আমার দিকে ওভাবে তাকিয়ে ছিলেন কেন?প্রেমে পড়ে যাবেন তো ওইভাবে তাকিয়ে থাকলে(কথাটা বলেই লোকটি আরো জোরে হাসলো আর আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম) লোকটি আর কিছুই বলল না চলে গেলো আর আমি দাড়িয়ে আছি।কেন জানি না আজ অনেক শান্তি লাগছে।এই প্রথম কোন ছেলে আমাকে দেখতে এসে কোন কটু কথা বা গায়ের রং নিয়ে মন্তব্য করেনি।বিয়েটা আমার হোক বা না হোক তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই তবে আমাকে যে আজ অস্বস্তিকর পরিস্থিতে পড়তে হয়নি এটা ভেবেই আমি খুশি।তিন দিন কেটে গেছে তাদের বাড়ি থেকে কোন খবর আসিনি।আমি তো ভেবেই নিয়েছি এবারো আমার বিয়েটা হবে না।বিকালে ঘুমিয়ে আছি বড়াপু আর দুলাভাই এসে আমাকে ডাকতে শুরু করলো-
আপু-এই নিরু ওঠ বোন,হাতে একদম সময় নেই।তোকে রেডি করতে হবে দেন কতো কাজ।আত্মীয়স্বজনও আসা শুরু হয়ে যাবে আরএকটু পরে।
আমি-কি হয়েছে বড়াপু ডাকিস কেন এভাবে আর কে রেডি হবে আর আত্মীয় কেন আসবে?(চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসলাম)
দুলাভাই-আজব আমার একমাত্র শালিকার বিয়ে আর আত্মীয় আসবে না তা কি হয়?
আমি-মানে?(আমার চোখগুলো তো তখন চড়কগাছ)
আপু-মানে আজ তোর গায়ে হলুদ আর কাল জুম্মা বাদ তোর বিয়ে।
আমি-আমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না।আমার বিয়ে মানে সত্যিই?আর কার সাথেই বা বিয়ে হচ্ছে আমার?
দুলাভাই-কার সাথে মানে অরুনের সাথে।
আমি-অরুন কে? দুলাভাই-মীরা,তোমার বোন কি গাধি নাকি হবু বরকে বলে সে কে??আরে শালিকা তিনদিন আগে যিনি আপনাকে দেখে গেলেন তিনিই অরুন।
আপু-আর কথা বাড়িয়ে কাজ নেই।তুমি বের হও এখন আমি নীরাকে রেডি করবো। দেখতে দেখতে আমার হলুদ হয়ে গেলো আর বিয়েটাও।গোলাপি একটা শাড়ি,হালকা গহনা আর খোপাই বেলি ফুল পরে বাসর ঘরে বসে আছি(আমার স্বামী নাকি বলেছেন আমাকে যেন এভাবে সাজিয়ে রাখা হয়।আমার কথাটা যেনে অনেক ভালো লেগেছিলো কারন আমিও এমনটাই চাইতাম)….মনে মনে ভাবছি লোকটি কি পাগল সবাই যাকে কালো বলে দূরে ঠেলে দেয় তাকে কেন বিয়ে করলেন উনি?উনি যেমন সুন্দর চাইলে তো অনেক সুন্দরি মেয়েকে বিয়ে করতে পারতেন কিন্তু তা না করে আমাকে কেন??আমার ভাবনার অবসান ঘটলো,রুমের দরজা লক করার শব্দে।সাদা পাঞ্জাবি পরে আছেন উনি।মুচকি হাসি দিয়ে আমার পাশে সামনে বসলেন,আমি মাথা নিচু করে ফেললাম।উনি আমার থুতনিতে হাত দিয়ে মুখটা উঁচু করলেন তারপর
-নীলাম্বরী তোমার দেনমোহরের সমস্ত টাকা আমি শোধ করে দিয়েছি তুমি কি হাতে পেয়েছো?(আমি চুপ করে থাকাই উনি আবার শুনলেন) নীলাম্বরী কি হয়েছে তোমার কথা বলো,তোমার কি মন খারাপ?
-জি না আমার মন খারাপ নেই।আচ্ছা আপনি আমাকে বার বার নীলাম্বরী কেন ডাকছেন আমার নাম তো ওটা না আর আমি ওতো গুলো টাকা দিয়ে কি করবো?
-তোমার টাকা তোমার যা ইচ্ছা করবা।আর ওই নামে কেন ডাকি এটা বলার জন্য তো তোমাকে এক জায়গায় যাওয়া লাগবে।
(উনি কথা শেষ করেই আমাকে বিছানা থেকে দাড় করালেন তারপর আমার চোখটা বেধে দিলেন আর চুপ থাকতে বললেন।আমিও কিছু বললাম না কিন্তু কিছুক্ষন পর নিজেকে শুন্যে আবিষ্কার করলাম কারন উনি আমাকে কোলে তুলে নিয়েছেন।আমি এইবার কি করছেন বললাম কিন্তু ওনার ধমকে আবার চুপ করে গেলাম।কিছুক্ষন পর মনে হলো উনি সিড়ি বেয়ে উঠছে।একটা সময়ে উনি আমাকে নামিয়ে দিয়ে চোখের বাঁধন খুলে দিলেন।নিজেকে খোলা আকাশের নিচে পেলাম।চাঁদের আলোই চারপাশটা অনেক সুন্দর লাগছে আমার খুব ভালো লাগছে এখানে এসে।আমি চারিদিকে তাকিয়ে মুহুর্তটা অনুভব করছি হটাৎ মনে হলো কেউ আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে।আমার চুলের খোপাটা খুলে দিয়ে চুলে মুখ গুজলো(জীবনে প্রথম কোন পুরুষ আমার এতোটা কাছে।আমার খুব ভয় লাগছে সাথে লজ্জা,আর এক অদ্ভুত অনুভুতি।আমি চোখ বন্ধ করে আছি) আমাকে উনি ছেড়ে দিয়ে আমার দুই কাধে হাত দিয়ে তার মুখোমুখি দাড় করালেন আর বললেন নীরা একটা গল্প শুনবে? আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যা ইংগিত করলাম।
-আই এম সরি নীরা।আমি একজন কে আজ দুবছর ধরে অনেক ভালোবাসি। কথাটা শোনা মাত্রই আমার বুকের মধ্যে কেঁপে উঠলো।আমি কি বলবো বা কি রিকাক্ট করবো আমার জানা নেই।উনি আবারও বলা শুরু করলো
-মেয়েটিকে প্রথম দেখেছিলাম একটা নীল শাড়িতে।বাসে তো কত মেয়ে দেখেছি তবে সেদিন যে এক অপূরুপার দেখা পাবো আমি আশা করিনি।মেয়েটা আমার পাশে বসে ছিলো।দেড় ঘন্টার রাস্তায় আমি তার দিকে যে কতবার তাকিয়েছিলাম তার ঠিক নেই তবে সে হয়ত আমাকে খেয়ালও করিনি।আমি তার মাঝে এতোটাই মগ্ন ছিলাম যে তার নাম ও শুনা হয়নি।আমার ঘোর কাটিয়ে মেয়েটি বাস থেকে নেমে গেলো আমার এতোক্ষনে হুশ হলো।আমি তার পিছু নেয়ার আগেই বাস চলা শুরু করলো।আমার মনটা ভেঙে গেলো কিন্তু তার সিটের দিকে তাকাতেই একটা ডাইরি চোখে পড়লো আমি তাড়াতাড়ি ডাইরিটা খুল্লাম।অনেক কিছু লেখা আছে আর আছে তার একটা ছবি।
জানো ওই ডাইরিতে মেয়েটা লিখেছিলো তার বিয়ের পর সে গোলাপি শাড়ি আর তার বর সাদা পাঞ্জাবি পরে চাঁদের আলোই বাসর রাতটা কাটাবে।তার ডাইরিটা এই দুই বছরে আমি দুহাজার বার পড়েছি,রোজ তার ছবিটা দেখি আমি।যে আমার মনে ভালোবাসার ফুল ফোটালো তাকেই হারিয়ে ফেললাম,খুব কষ্ট হতো এটা ভেবে যে তাকে তো আর ফিরে পাবো না সে তো আর আমার হবে না,কষ্টে বুকটা ফেটে যেতো তাই সিগারেট খাওয়াটা বেড়ে গেছে। ডাইরিতে তার নাম ছিলো না তাই নিজেই তাকে একটা নাম দিয়েছিলাম। (অরুনের এমন কথা শুনে আমার চোখে জল চলে এসেছে।আমি ভাবতেও পারিনি জীবনের সবথেকে স্মরনীয় রাতটাই এমন কিছু শুনতে হবে।উনি তাহলে ওই মেয়েটাকে ভুলে থাকার জন্য আমাকে বিয়ে করেছেন।আমাকে পছন্দ করে না।অবশ্য আমাকে কি দেখেই বা পছন্দ করবেন।কান্না পাচ্ছে খুব তবুও নিজেকে সামলে ওনার দিকে তাকালাম)
-কি নাম দিয়েছিলেন তার?
-জানতে চাও তার নাম?বলব কিন্তু তার আগে তোমাকে তাকে দেখাই আগে।(উনি আমার হাতে একটা ডাইরি দিয়ে সেটা খুলতে বললেন।আমি ডাইরি টা খুলতেই একটা ছবি দেখতে পেলাম।ছবিটা দেখে আমার চোখ রসগোল্লার মতো হয়ে গেলো।আমি ওনার দিকে বোকার মতো তাকালাম উনি মুচকি হেসে বললেন তার নাম দিয়েছি নীলাম্বরী।আমি আর চোখের জল আটকে রাখতে পারলাম না কেঁদেই দিলাম।কারন ছবিটা আমারই আর ডাইরিটাও আমার যা দুই বছর আগে আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম।আমি ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম আর অঝরে কেঁদে যাচ্ছি।উনি আমার মুখে হাত দিয়ে আমার চোখদুটো মুছে দিলেন আর কপালে একটা চুমু একে দিলেন)
-তুমি কাঁদলে যে আমার অনেক কষ্ট হয় তুমি বোঝ না?আর কোনদিন যেন কাঁদতে না দেখি।জানো আমি তোমাকে কতত খুজেছি কিন্তু পাইনি।তবে আমার ভালোবাসা তোমাকে ঠিকই আমার কাছে এনে দিলো।তোমার জন্য আমার খালাতো ভাইয়ের বিয়ের কথা চলছিলো।ভাগ্যিস আমি আগে থেকেই তোমার ছবি দেখেছিলাম।তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না তোমার ছবিটা দেখে আমি সেদিন কতো টা হ্যাপি হয়েছিলাম।তোমাকে আগে একবার হারিয়েছি তাই আর হারাতে দিতে পারতাম না।
মাকে বলেছিলাম তোমার যদি বিয়ে হয় তাহলে আমার ভাই না আমার সাথে হবে।আমার পরিবার আমাকে না বলেনি।ফাইনালি আজ তুমি আমার শুধুই আমার আমি আর কোনদিন তোমাকে আমার থেকে আলাদা হতে দেবো না।তোমার গায়ের রং যাই হোক আমার কিছু যাই আসে না।কারন আমার কাছে তুমি যে শুধুই আমার নীলাম্বরী কথা গুলো শেষ করে উনি আমাকে আবার জড়িয়ে ধরেছিলেন।আর আমি জীবনে প্রথম এতটা খুশি ছিলাম নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছিলো এটা ভেবে যে আমাকেও কেউ এতোটা ভালোবাসতে পারে।
গল্পের বিষয়:
গল্প