৭ বছর পর সেই পরিচিত নাম্বার টা থেকে কল এলো। একটা সময় কল লিস্টের শুরুতে থাকা নাম্বারটা এত বছর পর চোখের সামনে ভেসে উঠলো। যেই নাম্বারটা আজও ভুলতে পারি নি। কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেলাম, ভাবতে লাগলাম সত্যি কি সে কল করেছে। কিন্তু এত বছর পর কেনো! একের পর এক কল আসছে, ফোন বেজেই চলছে। আমি জানি কল রিসিভ না করা অবধি এই কল আসতেই থাকবে কারণ ফোনের ঐপাশের মানুষ টাকে একটা সময় খুব ভালই চিনতাম। ফোনটা রিসিভ করতেই কানে ভেসে এলো সেই ভারী গম্ভীর ভয়েসটা যার জন্য এক সময় পাগল ছিলাম।। নিজেকে সামলে নিয়ে অনেকটা অপরিচিত ভঙ্গিতেই জিজ্ঞাসা করলাম,
– কে আপনি? ঐ পাশটা নিশ্চুপ আবারও জিজ্ঞাসা করলাম,
– কে বলছেন? এবার সেই কন্ঠ..
– নিহা আমি আহাদ।
– ওও কেমন আছো?
– ভালো, তুমি?
– আছি! এতদিন পর কি মনে করে?
– নাম্বার তুমি বদলেছ নিহা আমি না। আমার নাম্বার সেই আগের টাই আছে।
– নাম্বার বদলানোর যথেষ্ট কারণ ছিল।
– কারণ টা কি আমি?
– একদমই না, যাই হোক নাম্বার কই পেলে সেটা জানতে চাচ্ছিনা। কেনো ফোন করেছ?
– বড্ড ব্যস্ত তুমি?
– হুম কিছুটা
– বিয়ে করেছ শুনলাম। কত বছর হলো বিয়ের?
– অনেক বছর।
– বাবু হয়েছে?
– হ্যা ছেলে বাবু
– নাম কি রেখেছো, রিয়াম?
– হ্যা এখন রাখছি।
– এখন ও রাগ ধরে রেখেছো?
– নাহ রাগ করতে অধিকার লাগে দেখাতেও অধিকার লাগে।
– সেইদিন যদি একটা বার আমার কথা শুনতে নিহা, আমি তোমাকে ঠকাতে চাইনি।
– থাক ওসব বাদ দাও শুনতে চাচ্ছি না।
– আমাকে সারাজীবন প্রতারক ভেবেই যাবে?
– ভাবাতে কি বা আসে যায় জীবন তো থেমে নেই।
– সুখে আছো?
– অবশ্যই।
– এখনও ছাদে গেলে মেঘলা আকাশ দেখলে আমাকে ভাবো?
– একদমই না।
– বদলে গেছো নিহা তুমি।
– হুম সময় সব বদলে দেয়।
– রাগ উঠলে এখনও কি কেদে বুক ভাসাও?
– নাহ রিয়ামের বাবা আমাকে অনেক বেশিই ভালোবাসে কেয়ার করে কাদায় না।
– আর তুমি তাকে ভালোবাসো?
– হ্যা বাসি।
– জানতে চাইলে না আমি কোথায় আছি কেমন আছি?
– নাহ আগ্রহ বোধ করছি না। প্রতারক মিথ্যাবাদীরা ভালই থাকে। কারণ তারা প্রতারণা করেই ভালো থাকার জন্য। কিন্তু আত্মার শান্তি তারা কখনোই পায় না। আশাকরি আর কখনোই কল করবে না।
– ঠিকাছে নিহা। ভালো থেকো।
– তুমিও
ফোনটা রাখতেই, না চাইতেও চোখের কোণের জল গুলি টপটপ করে বেড়িয়ে এলো। এই জল প্রতারিত এক মেয়ের অতীতের কষ্টের কথা চিন্তা করার ফল। নাহ কাদবো না। দিনশেষে ভাল আছি। সময় থেমে নেই আপন গতিতে চলে যাচ্ছে।
গল্পের বিষয়:
গল্প