অনুতপ্ত

অনুতপ্ত
আমার স্বামী খুব রাগী।এক গ্লাস পানি ও ঠেলে খেতে চায় না।মশারিটা কোনদিন টানায়নি।গোসল করে লুঙ্গি বালতিতে রেখে আসে।রান্না তো দূরের কথা।আমার শাশুড়ি বলেছে এই রায়হান কোন মাইগ্গা কাম করবি না।বৌ লাই পাইয়া যাইব পরে মাথায় উইঠা যাইব আমার জামাই মার কথা একদম শিরোধার্য।কোন মেয়েদের কাজ সে করে না।যদি কখনো বাবার বাড়ি যাই তো সে একশ বার ফোন করবে আর বাহিরে বাহিরে খেয়ে অসুখ বাধাবে।
একদিন খাবারে লবণ কম হওয়াতে সে কি মারটাই না মারল।আমার সাত বছরের মেয়েটা সে কি কান্না।আমি শুধু বলেছি আজকাল রিকশাওয়ালা বৌ পেটায় তুমি তো ভালো চাকরি করো শিক্ষিত মানুষ তো তুমি এমন করো কেন।ওটা বলাতে সেদিন থেমে গিয়েছিল।খুটিনাটি ব্যাপারে অহেতুক চিল্লাচিল্লি করে। একদিন আমার অনেক জ্বর আসল।বিছানা থেকে উঠতে পারছিলাম না।কিছু রান্না ও করিনি।মেয়েকে বললাম দুধটা জ্বাল দিয়ে পাউরুটি দিয়ে খেয়ে নাও মেয়ে দুধের পাতিলা নামাতে গিয়ে হাত একটু পুড়ে গেল।মেয়ে আমাকে বলেও নাই।নিজে নিজেই মলম দিয়েছে।রায়হান অফিস থেকে এসেই রাগারাগি করছে কোন কিছু রান্না হয় নি ঘর দোরের বেহাল অবস্থা।মেয়ে সামনে গিয়ে বললো বাবা আম্মুর অনেক জ্বর।
তখন মেয়ের হাত দেখল।বললো কি হয়েছে মা।মেয়ে বললো ঘটনা।ঘটনা শুনে নাকি অনেক কেঁদেছে।পরে মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে ওষুধ এনে দিয়েছে।আমার কপালে হাত দিয়ে বললো অনেক জ্বর আসছে দেখি।সেদিন সব কাজ করল রান্নাও করল খেতে গিয়ে দেখল ডালে লবণ বেশি ডিম ভুনায় তো লবণই দেয় নাই।আমি একটু উঠে এক গ্লাস দুধ খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিলাম। ওরে বাবা আমি মশারি টাঙাতে যাবো আমার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সেই টানাল।রাতে শুয়ে আছি আমার হাত ধরে বললো “রুমা আজ শুধু ডাল আর ডিম ভুনা করেছি এতেই কত ভুল হয়েছে।আর তুমি কত কাজ করো তারপর রান্না একটু খারাপ হলে কত বকাঝকা করি আর কখনো মারধর করেছি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।আর আজ মেয়ের হাত পুরে যাওয়াতে কত কষ্ট লেগেছে।পরে ভাবলাম তুমিও তো কারো মেয়ে।কত হাত কেটে যায় পুরে যায় টু শব্দটি করো না।আজ থেকে আর কখনোই বকাঝকা করব না এই মেয়ের সামনে কথা দিলাম”।
বাবা মনে থাকবে তো তোমার মেয়ে বললো।হা রে মা আর লজ্জা দিস না। আমি বললাম ভুল করে অনুতপ্ত হওয়াটাই বড়।যা তুমি আজ হয়েছ। সেই থেকে বন্ধের দিন অনেক সাহায্য করে রায়হান।আর মশারি সে নিজেই টানায়। এর মধ্যে আমার শাশুড়ি এসেছে বাসায় ওকে সাহায্য করতে দেখে দূরে ডেকে নিয়ে বললো কিরে তুই এইসব কাজ করস কেন ওর উত্তর শুনে আমি খুব খুশি হলাম। “ও বললো মা আজ আমি ওকে সাহায্য করবো কাল আমার মেয়ের জামাই আমার মেয়েকে সাহায্য করবে”
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত