বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ডদের ভালোবাসা দেখে বুকটা ফেটে যায়। আবেগে চোখের জল চুয়ে চুয়ে পরে। রাগে, দুঃখ, ক্ষোভে নিজেই নিজের ফেক আইডি দিয়ে মেসেজ দিলাম….
-এই কি করো?
ফেসবুক লাইট থেকে মেসেজ সেন্ড করলাম। মেসেঞ্জারে পকিং করে শব্দ হলো। আমিও আবেগে আপ্লূত হলাম৷ রিপ্লে দিলাম….
–কিছুনা।
-বলো না কি করো?
–তা শুনে তোমার লাভ কি?
-রাগ করেছো?
–উহু আমার রাগ নাই, কার উপর রাগ করব আমি।
-বাব্বাহ কি অভিমান।
–বয়েই গেছে আমার অভিমান করতে।
-হাহাহ পাগলি টা।
–এই যাও কথা বলবানা আমার সাথে।
আর রিপ্লে দিলাম না। বেশ মজা পাচ্ছি। সিঙ্গেলদের জন্য জোস একটা বুদ্ধি বের করলাম। ডিপ্রেশনে পরলে নিজেই নিজের ফেকাইডি দিয়ে মেসেজ দিব। একদিকে অভিমান ভাঙ্গাচ্ছি আরেকদিকে নিজেই অভিমান করছি। হাহা হুহু হিহি…আবার মেসেজ দিলাম….
–বাবু খেয়েছো?
-খিদে নেই।
–মন খারাপ করেনা সোনা, খেয়ে নাও।
-কারো দরদ দেখাতে হবেনা, যার ইচ্ছে সে খেয়ে নিক৷ আমার খেয়াল কারো রাখতে হবেনা।
–এমন করেনা সোনা, প্লীজ আর রাগ করোনা।
-কার উপর রাগব আমি, আমার বুঝি রাগ করার মানুষ আছে হু?
ওরে তালোই..! এ কেমন রাগ? হোয়াট এ চ্যাটিং নানি, আমরে দেও একটু পানি। কেমতে পসিবল, কেউ দেখলে ভাববে আসলেই গফ আছে। অথচ একটা কানাকড়িও নাই, জীবনডা ফুসফুস। এবার একটু রাগ করেই বললাম….
–না খেলে মাইর দিব।
-কিইইইই..তোমার এত সাহস আমায় মারবা?
–হ্যাঁ মারব। একশবার মারব।
-মেরেই দেখো আমিও মারব।
–ঐ ঠাসস ঠাসস…
-কুত্তা তোর এত বড় সাহস, তোকে গুলি করলাম ঐ টুসস টুসসস, ভুরুং..
–আ….আ…আ…এ কি করলে সোনা।
-ঐ ডুসুম ডুসুম…
আমি সত্যিই ভং ধরলাম। বাংলা সিনেমার আনোয়ারের মতন বুকে হাত দিয়ে ঘুরে ঘুরে অভিনয় শুরু করলাম। আমি আর বাঁচবনা, আ আ আ..বলেই চেয়ারে ধপাস করে বসে পরলাম। তখনই বাঁধলো বিপত্তি, চেয়ারের ধাক্কা লাগলো টেবিলে। আর টেবিলে থাকা গ্লাস ফ্লোরে পরে ভেঙ্গে গেলো। সাথে সাথে রুমে আম্মার আগমন, অবাক হয়ে বলল….
–কি হলো?
-আম্মা গ্লাস ভাঙছে।
–কেমনে ভাঙ্গলো?
-এমনি ভাঙ্গছে, আসলে চেয়ারে বসতে ধাক্কা লাগছিলো। বলেই টেবিলের উপর থেকে মোবাইল টা হাতে নিলাম। আম্মা কেমন জানি সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকালো, বললাম…
–কি হলো? গ্লাস ভেঙেছে তো, আর তো কিছু হয়নি। আম্মা মুচকি হাসলো, বলল…
–তোর কপালে প্রেমিকা জুটবেনা, সারাজীবন সিঙ্গেলই থাকতে হবে।
-মানে?
–তোর ফেক আইডি যে আমার মোবাইলে লগইন করা আছে জানিস?
-কিইইইই?
–তুইইতো দিছিলি, বলছিলি এটা ইউজ করতে। মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখলাম এই কাহিনী। শালার মানইজ্জত আর থাকলনা। আম্মার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম, আম্মা হাসতে হাসতে বলল….
-পাগলের সুখ মনে মনে..!
বলেই আম্মা চলে গেলো। আমি বেয়াকুব বনে গেলাম। এইডা কিছু অইলো তালোই? ছ্যাঁহহ, এই জীবনে কিচ্ছুই পাইলামনা। আমার দ্বারা কিচ্ছু হবেওনা। উল্টা আবার ডিপ্রেশনে গেলাম…জীবনডা ফুসফুস।
গল্পের বিষয়:
গল্প