অসমাপ্ত গল্প

অসমাপ্ত গল্প
—আরে নাঈম!! কেমন আছিস। শুনলাম বিয়ে করেছিস?
— আলহামদুলিল্লাহ । বিয়ে করেছি, ৬ মাসের মাথায় ডিভোর্স হয়ে গেছে! আমার ভাগ্যই খারাপ! আচ্ছা বাদ দে আমার কথা, তুই কেমন আছিস?
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। খারাপ লাগছে তোর ডিভোর্স এর কথা শুনে!
– এ ছাড়া আমার কোন পথ ছিল না। কি করবো বল? বিয়ের আগেই আমার লাইফটা ভালো ছিল। বিয়ে পর যত ঝামেলা।
— কি হয়েছে খুলে বল?
তাইলে শোন, বাবা মা পছন্দ করে আমার ঠিক করলো, আমার মেয়ে পছন্দ হয়নি তা কিন্তু না। তাদের পরিবার আমাদের পরিবার থেকে ও কম নয়। মেয়ে উচ্চ শিক্ষিত, সুন্দরী। জাঁকজমক ভাবে বিয়ে সম্পুর্ণ হয়। বিয়ের প্রথম ১ মাস আনন্দে কেটে যায়।
ভালোই কেটে গেল ১ মাস। বিয়ের ১ মাস পর থেকে শুরু হয় নানান ঝামেলা । অফিস থেকে বাসায় আসলেই দেখি বউ গাল ফুলিয়ে থাকে, তোমার মা এ বলেছে সে বলছে , আমার এটা লাগবে ওটা লাগবে , পার্লারে যাবো এত টাকা লাগবে, শপিং করবো, আমার সামর্থের বাহিরে। আর ও নানান ঝামেলা। মায়ের কাছে গেলে বউ এর নালিশ, বউ এর কাছে আসলে মায়ের নালিশ। আমি কি করবো দিশেহারা। সে তার মন মতো চলা পছন্দ করতো। কেউ কিছু বললে তা তার পছন্দ হতো না। এক পর্যায়ে ডিভোর্স।
— তোর ব্যাপারটা বুঝেছি আমি।
আসলে তোদের পরিবার চেয়েছে উচ্চ শিক্ষিত সুন্দরী মেয়ে। ধনাঢ্য পরিবার। সমস্যাই হলো এখানে। তুই ও নিশ্চয়ই সেটাই চেয়েচিস। বর্তমান যুগের একটি সমস্যা হল বাহ্যিক সৌন্দর্যপ্রীতি। সুন্দর জিনিস সবার পছন্দ,পছন্দ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হয় তখনই, যখন সৌন্দর্যকে বেশি মূল্যয়ন সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে আত্মিক ও ঈমানের সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘নারীদের চারটি গুণ দেখে বিয়ে করো : তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। তবে তুমি দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দেবে। নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০৯০) পাত্র পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সামান্য কিছু ভুল, দায়িত্বশীলতার গাফিলতি বিয়ের ক্ষেত্রে আনতে পারে মারাত্মক পরিণতি। যে আল্লাহকে ভয় করে, সে অন্তত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হলেও নিজের মানুষটার সাথে ভালো ব্যবহার করবে। শোন, একটা সম্পর্ক টিকে থাকার জন্য প্রতিটা মুহূর্ত একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করতে হয় ।চেষ্টা করতে হয় পরস্পরের সুবিধা-অসুবিধা পছন্দ-অপছন্দ জানার, তাকে সম্মান করার, পরস্পরের পরিবারকে আপন করে নেওয়ার। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো মহান আল্লাহর আনুগত্য করা। কল আসছে বাড়ি থেকে,
— আসসালামুয়ালাইকুম
— ওয়া আলাইকুমুস্সালাম শুনো আব্বার রাতের কয়টা ঔষধ শেষ হয়ে গেছে। আসার সময় ঔষধ গুলো নিয়ে এসো। আমি মেসেজ করে দিচ্ছি। আচ্ছা ঠিক আছে তুমি মেসেজ করে দাও। রাখলাম। আমার স্ত্রী কল দিয়েছে আব্বার রাতের ঔষধ শেষ হয়ে গেছে।
— তোর বউ ভালোই যত্ন নেয়?
— হুম ও যথেষ্ট ভালো , নিজের বাবা মায়ের মতন করে ভালোবাসে । আল্লাহর দরবারে লাখো শুকরিয়া তিনি আমায় চক্ষুশীতলকারী স্ত্রী দান করেছেন। মাগরিবের আজান হচ্ছে ,চল নামাজ পড়ে নেই, নামাজ পড়ে বাড়ি যেতে হবে ঔষধ নিয়ে।
-হুম চল
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত