রিক্তশূন্যতা

রিক্তশূন্যতা
– আমি অনেক ভেবে তোমাকে ডিভোর্স দেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি । এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না তাই তুমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার মা-বাবার বাসায় ডিভোর্স লেটারটা পাঠিয়ে দিও । (আমি)
– সংসারের মধ্যে টুকটাক ঝামেলা সৃষ্টি হতেই পারে তাই বলে ডিভোর্স দিতে হবে ? তুমি কি ভুলে গেছো যে আমাদের ২ বছরের একটা বাচ্চা আছে ? কেন তার ভবিষ্যতটা মা-বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে রাখতে চাও ? (সজীব)
– আমার মেয়ে ফারিয়া সুলতানার জন্য তোমাকে একদম চিন্তা করতে হবে না । আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিনে ওর শরীরে একটা ফুলের আঁচড়ও লাগতে দেব না ।
– বাবার অভাব কিভাবে পূরণ করবে ?
– সবকিছু আমার উপর ছেড়ে দাও , তুমি শুধু ডিভোর্স দিয়ে আমাকে মুক্তি দাও ।
– থাকতে পারবে তো আমাকে ছেড়ে ? রাতের বেলা আমার এই বুক ছেড়ে প্রতিরাতে বালিশে মাথা রেখে ঘুমাতে পারবে ?
– পৃথিবীতে চেষ্টা করলে অসম্ভব কোনো জিনিস নেই তাই চেষ্টা করবো । আমার বিশ্বাস তোমার সাথে থেকে যে কষ্টে আছি তারচেয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো ।
– কিন্তু আমি তো থাকতে পারবো না , ফারিয়া আর তুমি ছাড়া এ পৃথিবীতে আমার কেউ নাই সেটা তো তুমি ভাল করে জানো । তাহলে কেন আমাকে এমন দুঃখের সমুদ্রে ফেলে দিয়ে চলে যাবে ?
– ইমোশনাল কথা বলে দুর্বল করার চেষ্টা একদম করবে না ।
– শেষ একটা সুযোগ দেও প্লিজ , কথা দিচ্ছি আর কখনো তোমার সাথে রাগারাগি করবো না ।
– এ নিয়ে অনেকবার এমন কথা বলা হয়েছে কিন্তু ফলাফল শূন্য ।
– তাহলে তুমি ফারিয়া কে নিয়ে দুদিন ওর নানা বাড়ি বেড়িয়ে আসো ।
– সহজ কথাটা কেন তাড়াতাড়ি বুঝতে পারছো না তুমি ? আমি তোমার সাথে আর পারছি না । আমি বিকেলে ফারিয়া কে নিয়ে চলে যাবো , তুমি যত দ্রুত সম্ভব ডিভোর্সের ব্যবস্থা করবে ।
– পারবো না আমি , তুমি ডিভোর্স দিয়ে দিও ।
– আচ্ছা ঠিক আছে তাই হবে ।
সজীব এর সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল তিন বছরের । তারপর মা-বাবার মতামত নিয়ে আমি ওকে বিয়ে করেছিলাম । বাবা আপত্তি করেছিলেন কিন্তু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে তেমন কিছু বলতে পারে নাই । কিন্তু মনে মনে রাগ করে ছিলেন যেটা সবসময় বুঝতে পারছি । বিয়ের দু’বছর পরে আমার একমাত্র মেয়ে ফারিয়ার জন্ম হলো। সজীব এর সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু একটু বদমেজাজি মানুষ । যখন প্রেম ছিল তখন সজীব এর এই রাগ কে খুব ভালো লাগতো । আমার প্রতি সে কতটা দায়িত্বশীল সেটা বুঝতে পারতাম তখন । কিন্তু বিয়ের পরে সেই রাগারাগি টা অসহ্য লাগে আমার কাছে । প্রথম প্রথম কিছুদিন কেটে গেল তারপর থেকে যখন সে রাগারাগি করে আমিও পাল্টা জবাব দিতাম । এই থেকে শুরু হয়ে গেল অশান্তি , ইদানীং এতটাই অসহ্য লাগছে যে আমি ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলাম । বারবার ওর এই রাগারাগি সহ্য করার চেয়ে নিজে আলাদা হয়ে স্বাধীন ভাবে বাঁচবো । বিকেল বেলা ফারিয়ার আর আমার কাপড় গুলো গুছিয়ে সজীব এর সামনে থেকে বেরিয়ে পরলাম । সজীব স্থির হয়ে ড্রইং রুমের সোফায় বসে আছে আর আমি তার সামনে থেকে চলে যাচ্ছি ।
বাসায় যখন পৌছলাম তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে , দরজা খুলে মা আমাকে দেখে অবাক ৷ আমি ফারিয়া কে নিয়ে বাসার ভিতরে চলে গেলাম । বাবা মনে হয় বাসায় নেই কারণ এই সময়ে বাবার অফিসে থাকার কথা ৷ বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত আটটা পার হয়ে যায় । আমরা দুই বোন , আমাদের কোন ভাই নেই । আমার ছোট বোন এবছর ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেবে । আমি আমার রুমের মধ্যে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম । ফারিয়া এখন তার নানি আর খালার সাথে থাকবে সেটা জানি আমি । আমি দরজা বন্ধ করে সজীব এর সাথে কাটানো স্মৃতি গুলো নিয়ে ভাবছি । ভাবতে ইচ্ছে করে না তবুও কেন যেন ভালো লাগছে ।
– বাবা বাসায় ফিরে যখন শুনলেন আমি ফিরেছি তখন সাথে সাথে আমাকে ডাক দিলেন ৷ আমি ড্রইং রুমে বাবার সামনে গিয়ে বসলাম । “বাবা বললেন , হঠাৎ করে কিছু না জানিয়ে সবকিছু নিয়ে চলে আসলি কেন ? “
– বললাম , আমি আর সজীব এর সাথে সংসার করবো না তাই আমি আমার মেয়ে কে নিয়ে চলে আসলাম । বাবা তুমি তাড়াতাড়ি আমার ডিভোর্সের ব্যবস্থা করো ।
– হলো টা কি ?
– অনেক কিছু বাবা , কিন্তু সবকিছুর একটাই উত্তর আমি তার সাথে থাকবো না ।
– এটা আগে চিন্তা করিসনি কেন ?
– তখন ভুল করেছি কিন্তু এখন ভুল বুঝতে পারছি তাই শুধরে নিতে চাই ।
– সবকিছু তৈরি করার পরে ডিভোর্স পেপারে সাইন করার সময় মতামত পরিবর্তন হবে না তো ?
– না হবে না , মতামত একটাই থাকবে ।
– ঠিক আছে আমি দু তিনদিনের মধ্যে ব্যবস্থা করবো সজীব কে আমি কখনোই সহ্য করতে পারি নাই । ওকে মেনে নিতে পারিনি আমি তাই তো ও বাসায় আসলে আমার মুখ বেজার হয়ে যায় ।
– আচ্ছা ওসব কথা বাদ দাও বাবা , সামনে কি করা যায় আর কতটা দ্রুত করা যায় সেটা দেখতে হবে ।
– চিন্তা করিস না , আমি তোকে আরো বড় ঘরে বিয়ে দেবো ।
– বিয়ের কথা বাদ দাও বাবা ।
– আচ্ছা ।
মা আমাকে বললেন , একটা সংসার একবার ভেঙ্গে গেলে সেটা গড়তে পারা যায় না । হয়তো আবার বিয়ে করে নতুন সংসার পাতা যায় কিন্তু সেই প্রথম জীবনের সুখ পাওয়া যায় না । কিন্তু আমি মা’কে বললাম , মা আমি অনেক ভেবে তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম । মা চুপ করে গেল । আট দিন পরে সন্ধ্যার একটু আগে । দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো , আমি গিয়ে দরজা খুলে দেখি সজীব দাঁড়িয়ে আছে। বাবা বাসায় ছিলেন , সজীব ড্রইং রুমে প্রবেশ করে আমার হাতে ডিভোর্স পেপার টা দিয়ে বললো , ” এসবের মানে কি বৃষ্টি ? সত্যি সত্যি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে তুমি ? পাগল হয়ে গেছো ? “
– বললাম , মিথ্যা করে কি কাউকে ডিভোর্স দেওয়া যায় নাকি ? পেপার পেয়েছো সাইন করে দিয়ে চলে যাও । আর এখনো তুমি সেই আগের মতো চিৎকার চেচামেচি করো কেন ? ভুলে যেও না এটা আমার বাবার বাড়ি । “
– যদি সই না করি ?
– ড্রইং রুমের সোফায় বাবা বসে ছিল , তিনি বসা থেকে দাঁড়িয়ে উঠে বললেন , ” করবে না মানে ? তোমার চৌদ্দ গুষ্টি করবে । মগের মুল্লুক নাকি ? ফালতু একটা ছেলে আমার সহজ সরল মেয়েটার মাথা নষ্ট করে বিয়ে করছো । এখন আবার কাছে রেখে তার জীবন নষ্ট করতে চাও ? “
– সজীব বললো , বাবা আপনি আমাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা বলিয়েন না প্লিজ ।
– আমি বললাম , ভালোয় ভালোয় সিগনেচার করে চলে যাও তাহলে বাবার কিছু বলতে হবে না । আর বাবা যা বলছে সেগুলো সবকিছু আমার ইচ্ছার কারণে বলছে ।
– আমি পারবো না ।
– আমি তোমার সংসার করবো না । আমার বাবা কখনো আমার গায়ে হাত তোলেনি আর তুমি সেই কাজটাও করেছ । কি ভেবেছো নিজেকে ?
– বাবা বললো , কি বললি ? তোর গায়ে হাত তুলেছে আর তুই আগে বলিসনি কেন ?
– সজীব বললো , আমার ভুল হয়েছে বলছি তো , এখন সবকিছু ভুলে আমার সাথে চলো ।
– বাবা বললো , বৃষ্টি কোথাও যাবে না । তুমি ভালো চাও তো সাইন করে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাও ।
– ভয় দেখাচ্ছেন ? আপনার মতো মানুষ কিভাবে আমার স্ত্রীকে আটকে রাখে সেটা আমি দেখতে চাই । শয়তান একটা মানুষ আপনি ।
– বাবা দু পা সামনে এসে সজীব এর বাম গালে একটা সজোরে চড় মেরে দিল । সজীব হাত দিয়ে তার গাল চেপে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
– বাবা বললো , তোর এতবড় সাহস তুমি আমাকে শয়তান বলিস ?
– সজীব চুপচাপ ।
– আমি বললাম , এরপরও কি দাঁড়িয়ে থাকবে ? লজ্জা বলতে কিছু নেই তোমার ?
– বাবা বললো , ছোটবেলায় ওর মা চোখে কাজল দেয় নাই মনে হয় তাই নির্লজ্জ হয়েছে ।
– সজীব ডিভোর্স পেপারটা সামনে ছুড়ে ফেলে দিয়ে পিছনে ফিরে হাঁটা শুরু করেছে । বাবা পিছন থেকে বারবার বলছে সই করে যা বেয়াদব ছেলে । কিন্তু সজীব আর পিছনে ফিরে তাকায় নাই সরাসরি দরজা দিয়ে বেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল ।
রুমের মধ্যে এসে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছি , রাস্তা দিয়ে কে কে যায় সেটা দেখা যাচ্ছে । সজীব নিচে নেমে রাস্তার অপর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে । আমি রুমের মধ্যে চলে আসলাম , জানালার পর্দা সামান্য ফাঁকা করে নিচে তাকিয়ে আছি । সজীব এখনো দাঁড়িয়ে আছে , মাগরিবের আজান দিল , সজীব আস্তে আস্তে হাঁটতে শুরু করলো ।
বিকেল থেকে মায়ের শরীরটা ভালো ছিল না তাই তিনি বিছানায় শুয়ে ছিলেন । সজীব এর সাথে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে গেছে সেটা মা জেনেছে কিন্তু অনুভব করতে পারে নাই । আমি মাগরিবের নামাজ পড়ে রান্না করতে গেলাম , মা সুস্থ থাকলে আমি রান্না ঘরে যাই না । কিন্তু যেহেতু মা অসুস্থ তাই বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে আমাকে । বাসায় কাজের লোক নেই তবে সকালে এক খালা এসে ঘর মোছা কাপড় ধোঁয়ার কাজ গুলো করে দিয়ে যায় । ফারিয়া সন্ধ্যা থেকে আমার পিছু ছাড়ছে না , তার বাবা এসেছিল সে তা দেখেনি । পরিদিন দুপুরের খাবার খেয়ে মাত্র রুমের মধ্যে গিয়ে ফারিয়াকে নিয়ে বসে আছি । ঠিক তখনই বাসায় আসলো সজীব এর বন্ধু রকি , রকি ভাইকে আমি আগে থেকে চিনি কারণ সজীব এর খুব কাছের বন্ধু রকি ভাই ৷ মাঝে মাঝে প্রায়ই সজীব এর আমাদের বাসায় যেতো , সেই রকি ভাই কে দেখে অবাক হলাম আমি ।
” বললাম , রকি ভাই আপনি ? “
” আপনাকে নিতে আসলাম ভাবি , এখনই একটু ফারিয়া কে নিয়ে আমার সাথে যেতে হবে । “
” কোথায় ? “
” সজীব এর কাছে । “
” আপনি কি জানেন যে আমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি ? “
” হ্যাঁ শুনেছি কিন্তু তবুও আপনাকে যেতে হবে । সজীব আপনাকে আর আপনাদের মেয়ে ফারিয়াকে দেখার জন্য ছটফট করছে । “
” কিন্তু আমি যাবো না রকি ভাই , সজীব ওই মুখ দেখার কোন ইচ্ছে নেই আমার । “
” দেখুন ভাবি , সামান্য একটা রাগারাগির বিষয় নিয়ে আপনাদের মতো এত গভীর ভালবাসা ফুরিয়ে যাবে সেটা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না । “
” এখন তো দেখলেন , আপনাকে আমি সম্মান করি তাই সজীব এর হয়ে কোন ওকালতি করার দরকার নেই রকি ভাই । “
” আসলে ভাবি , সজীব গতকাল রাতে আপনাদের বাসার সামনে রাস্তায় ছিনতাইকারীর চক্করে পরেছে আর হাতাহাতি করতে গিয়ে ছুরির আঘাত পেয়েছে । এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে , আপনারা যদি দেখতে যেতেন তাহলে মানসিক ভাবে অনেক সুস্থ থাকতে পারতো । “
” অবস্থা কি বেশি খারাপ ? “
” হুম মোটামুটি খারাপ বলা যায় কিন্তু তবুও অসুস্থ যেটা সেটা তো অসুস্থই । “
” আমি যাবো না রকি ভাই , ওকে ডিভোর্স দেবার জন্য আমি চলে আসছি । “
” একটা বার চলুন না ? “
” মাফ করবেন প্লিজ । “
এমন সময় রকির মোবাইল বেজে উঠলো , রকি তার মোবাইল বের করে কল রিসিভ করলো আর আমি সোফা থেকে উঠে নিজের রুমে আসলাম । ফারিয়া কান্না করছে তাই ওকে কোলে নিয়ে বিছানায় বসে পরলাম । চোখের সামনে সজীব এর মুখ ভেসে উঠলো , সত্যি সত্যি কি মানুষটা অসুস্থ হয়ে গেছে ? এর আগে একবার রাগ করে চলে এসেছিলাম তখন এই রকি ভাই এসে আমাকে সজীব এর অসুস্থতার কথা বলে নিয়ে গেছিলো । মিনিট পাঁচেক পরে মা আমাকে ডাক দিয়ে বললো রকি ভাই নাকি আমাকে আবার ডাকছে । আমার মাথা গরম হয়ে গেল । ফারিয়া কে কোলে করে আমি ড্রইং রুমে গিয়ে বললাম ” আপনাকে তো বলেছি যে আমি যাব না তাহলে কেন অপেক্ষা করছেন ? যাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি তার জন্য আবার কেন যাবো আমি , বলেন ? ”  রকি বৃষ্টির দিকে না তাকিয়ে কোলে বসা ফারিয়া কে বললাে , তুমি কি তোমার আব্বুকে দেখতে যাবে মামুনী ? তোমার বাবা একটু আগে হাসপাতালে মারা গেছে তাই এ জীবনে তোমার সাথে আর তোমার বাবার দেখা হবে না । তুমি কি তোমার আব্বুর সঙ্গে জীবনের শেষ দেখা করবে মা ? “
” বৃষ্টির বুকটা কেঁপে উঠল , সে আমতা আমতা করে বললো , কি হইছে রকি ভাই ? “
” রকি বললো , হাসপাতাল থেকে আমাদের এক বন্ধু মেহেদী কল করেছে । সজীব মিনিট দশেক আগে মারা গেছে তাই আপনাকে আর আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে যেতে হবে না । ভালো থাকবেন সবসময় । আর ফারিয়ার দিকে খেয়াল রাখবেন কারণ আজ থেকে সে পিতৃহারা সন্তান । ” এ কথা বলে রকি পিছনে ফিরে হাঁটতে হাঁটতে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল । মনে হয় যেন গতকাল সজীব যেভাবে বের হয়ে গেছে ঠিক সেভাবেই বের হচ্ছে ।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত