নব্বইয়ের দশকের এক বর্ষনমুখর ছুটির দিন আর আমি

নব্বইয়ের দশকের এক বর্ষনমুখর ছুটির দিন আর আমি
সকালে ঘুম ভেঙে রান্নাঘরে গিয়ে দেখি আম্মা লোহার তাওয়ায় রুটি সেঁকতে ব্যাস্ত। পাশের চুলায় তখন টগবগ করে ফুটছে চায়ের পানি। হাতের আন্দাজে হাঁড়িতে চা পাতা দিয়েই তাকালো আমার দিকে। এই বৃষ্টিস্নাত সকালেও ভ্যাপসা গরমে ঘেমে ভিজে ন্যাতা ন্যাতা তার লেবুরঙা সুতি শাড়ি। দ্রুতপায়ে কলঘরে গিয়ে দাঁত মেজে আয়নায় চুলে চিরুনী বুলাচ্ছি সবে। এর মাঝেই আম্মার হাঁক ডাক শুরু।
– কী আর কতক্ষণ ? ঘড়ি দেখেছিস? আটটা বাজতে চললো। ছুটির দিনেও কি খানিক ফুরসত মিলবেনা আমার।
রাঙা মোরগের পুচ্ছের মতো ঝুঁটিতে তড়িঘড়ি রাবার পেঁচিয়ে দৌড়ে গেলাম আব্বাকে ডাকতে। সকাল বেলায়ই মায়ের মেজাজ তিরিক্ষি। নাহ্ আর ঘাঁটানো যাবেনা। যাই আব্বাকে ডেকে আনি। আব্বা গাড়ি বারান্দায় বেতের চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছেন। দুই পায়ের নিচে টি টেবিল আর দুই হাত আকড়ে ধরে আছেন দৈনিক জনকন্ঠের পাতা। পাশে রাখা টুলে ক্যাসেট প্লেয়ারে তখন উন্মন কন্ঠে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় গাইছেন, “হয়ত কিছুই নাহি পাবো, তবুও তোমায় আমি দূর হতে ভালোবেসে যাব।” আমার নির্ভেজাল বুদ্ধির দৌরাত্ম্যও সকাল সকাল আব্বার এই বিরহ সংগীত শোনার কারন আবিষ্কারে ব্যার্থ হলো। বুঝলাম কেনো আমার ডাক তার কানে পৌঁছুলো না। এবার একদম কানের কাছে গিয়ে কর্কশ কন্ঠে চেঁচালাম,
-আব্বা ও আব্বা নাস্তা খাবেনা? আম্মা কিন্তু আরেকটু পর খুন্তি নিয়ে তাড়া করে আসবে।
অগত্যা আব্বার সম্বিত ফিরলো। একগাল হেসে হাতের পেপার ফেলে গানের টেপের সুইস বন্ধ করলো।
-আম্মা আজকে ঘীয়ে ভাজা পরোটা করতা। সাথে সুজির হালুয়া।
– আর নবাব সাহেব তার পুত্র কন্যাদ্বয় সমেত বেলা নয়টায় সেই আহার গ্রহন করে আমায় ধন্য করতেন।
উত্তর শুনে ছোট ভাই ফাহিমের মুখের উৎসাহ দমে গেলো একদম। গাল ফুলিয়ে রুটি মুখে পুরলো। আম্মার কথার ঝাঁঝে বুঝলাম এখনো লোহা বেশ গরম। আব্বা সেই তাঁতানো লোহায় এবার খাঁটি ঘি ঢেলে গরম ধোঁয়ায় চারদিক অন্ধকার করবার জোগাড় করলেন।
– বলছিলাম কী নিরালা বৃষ্টি হচ্ছে দেখেছো নিপার আম্মা। একেবারে কুকুর বেড়াল বৃষ্টি। এই ফাহিম বলতো কুকুর বেড়াল বৃষ্টির ইংরেজি কি? আব্বা আসলে আম্মার কাছে কোনো একটা আবদার উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন। তাই পরিস্থিতির বাতাস হালকা করতে একটু কথার ঘোরপ্যাঁচ করছেন।
– হুম বুঝতে পেরেছি। খিঁচুড়ি খাওয়ার মতলব ফাঁদছো। কুকুর বেড়াল বৃষ্টি হোক আর গরু ছাগল বৃষ্টি হোক খিঁচুড়ি তো আপনাদের টেবিলে অত্যাবশকীয়।
– নাহ্ মানে তোমার কষ্ট লাঘব করতে আমি আমার দুই করিতকর্মা সেনা নিয়ে সদা প্রস্তুত আছি। চাল ধুয়ে দেয়া, নুন হলুদের কৌটো এগিয়ে দেয়া এসব আমরা সামাল দেবো। তুমি শুধু হাতা খুন্তি দিয়ে ঘুটা মেরে রান্নাটা করবে।
– যাও চায়ের কাপ নিয়ে ওদের পড়াতে বসাও। সকালে একবার চা ঠান্ডা করেছো। এইবেলা ঠান্ডা হলে কিন্তু আর পাবেনা। এই বলে আম্মা দাদাভাইয়ের ঘরে ঔষধ দিতে গেলেন আব্বা আম্মার আচরণে আশ্বস্ত হলেন যে আজ খিঁচুড়ি হচ্ছে। এদিকে বৃষ্টি থামার নাম নেই। ঝমঝম শব্দে কান ধরে যাবার উপক্রম। আমি বাংলা বই খুলে বসলাম। ছুটির দিনে খটমট বিষয় পড়তে মন সায় দেয়না। আব্বা এসেই বলে বসলেন,
-নিপা, এডভান্স ইংলিশ বইটা খোল আগে। টেন্স পড়াই। ইংরেজি গ্রামারে তো লবডংকা হচ্ছিস। নে প্রেজেন্ট ইন্ডিফিনিট টেন্স থেকে শুরু কর। ফাহিম একমনে সুর তুলে তুলে দুইয়ের নামতা পড়ে যাচ্ছে। ইস ফাহিমের পড়া কত্ত সোজা। বেচারা কে তো আর আমার মতো অক্সিলারি ভার্ব, টেন্সের স্ট্রাকচার মুখস্ত করতে হবেনা এখন। যদি আবার ক্লাস টুতে ভর্তি হওয়া যেতো। পড়া শেষে টেলিভিশন চালিয়ে নতুন কুঁড়ির অনুষ্ঠান দেখছিলাম। আজকের বিষয় ছিলো কবিতা আবৃত্তি। আমার বয়েসি এক ছেলে রবীন্দ্রনাথের বীরপুরুষ কবিতা নিপুন দক্ষতায় আবৃত্তি করে যাচ্ছে। আমি তন্ময় হয়ে শুনছি। এর মাঝেই তিন্নির ফোন এলো। ওদের বাসায় ল্যান্ড ফোন নেই। পাশের ফ্ল্যাটের রাজুদের বাসা থেকে কল করেছে বোধহয়। একদিন মাত্র স্কুল নেই তাও ওর কথা বলা চাই ই চাই।
– হ্যালো নিপা?
– হ্যাঁ তিন্নি বল।
– কি করছিলি?
– আব্বা টেন্স পড়াচ্ছে।
– হি হি হি
– এতে হাসার কি হলো
– নাহ্ পড়ার সময় তোর চেহারার কথা ভেবে হাসি পেয়ে গেলো।
– হেসে নে যতখুশি। মিলন স্যারের ক্লাসে আমিও কিন্তু তোকে আর প্যারাগ্রাফ দেখাবোনা।
– রাগ করছিস কেনো? আচ্ছা শোন, কাল কিন্তু ‘কপোট্রনিক সুখ দুঃখ’ বইটা মনে করে আনবি। বড় আপু চেয়েছে। তাই কল দিলাম।
– এখনো শেষের কিছু পাতা পড়া বাকি। রাতে শেষ করবো। তুই কি পড়ছিস?
– কি আবার ভলিউম ১৬।
– এরপর কিন্তু আমাকে দিবি। আর কাওকে দিলে খবর আছে কিন্তু।
– আচ্ছা রাখি, রাজুর আম্মু তাকিয়ে আছে এদিকে (ফিসফিসিয়ে)
– শোন, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কথাটাইতো বলিনাই।
– কি বল।
– কাল স্কুলে আসবিতো?
– হি হি হি আসবো আসবো।
– হি হি হি আচ্ছা রাখি।
খিঁচুড়ির আতপ চাল, সোনামুগের ডাল আর গরম মশলার সমন্বয়ে মোহময় সুঘ্রান ছড়িয়েছে চারিদিকে। আম্মা দেখলাম সাথে গোল চাকতি করে কাঁটা বেগুন ভাজছে। বৃষ্টিটা এবেলায় খানিকটা ধরে এলো। ফাহিম আর আমার মাঝে রীতিমতো ঝগড়া বেঁধে গেলো কে আগে বাথরুমে যাবে এই নিয়ে। আম্মার কাছে গিয়ে নালিশ করায় ও ই জিতলো। ততক্ষনে আব্বা ছাতা মাথায় জুমার নামাজ পড়ে ফিরলো। হাতে তবারুকের জিলাপি। সেই নিয়ে আবার শুরুহলো আমাদের কাড়াকাড়ি। আব্বা এক পিস নিজে খেয়ে আরেক পিস দুই ভাগ করে মিমাংসা করে দিলেন। গোসল সেরে খাবার টেবিলে এসে পেটের খিঁদে যেনো মাথায় চড়ার যোগাড়। আম্মা খিঁচুড়ির সাথে মুরগীও ভুণাও করেছে দেখছি। দাদাভাই দুপুরে আমাদের সাথেই খেতে বসে। আম্মা সবার পাত বেড়ে নিজে বসলো। দাদাভাইয়ের প্লেটে মুরগী কলিজা দিতেই তিনি বলে উঠলেন,
-ওইটা আমার নিপামণিরে দাও বউমা। আমার নাতিনেরে এই বাড়িতে সবার চাইতে ভালোটা দিবা। একদিন বলছি না। মাইয়ারা শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে কি না কি খায়। দাদাভাই সব সময় যে কেনো এত আমার বিয়ের চিন্তা করে বুঝিনা। আম্মার ও তো বিয়ে হয়েছে আব্বার সাথে। আম্মা আব্বা এরা পরস্পর কত আপন? তাহলে দাদা ভাইয়ের ভাষায় আপন ঠিক কিভাবে হয়? এসব প্রশ্নের জট খুলতে খুলতেই ভরপেটে চোখদুটো ঘুমের মাছি শক্ত করে জাপটে ধরলো। স্বপ্নে তলিয়ে যেতে যেতে দেখি তিন্নির দেয়া বইটা হারিয়ে ফেলেছি। আর ও খুব বকাবকি করছে আমাকে। আমি কাঁদতে কাঁদতে বার বার মাফ চেয়ে যাচ্ছি।
– এই আপু উঠবিনা, বই ( সিনেমা) শুরু হয়ে গেছে তো। এই আপু তুই কাঁদছিস কেনো? জেগে দেখি চোখের কোনে জলের দাগ। যাহ্ আমি সত্যিই কাঁদছিলাম। স্বপ্নের ভেতর ও কান্না করা যায় তাহলে। বসার ঘরে সবাই মাটিতে পাটি পেতে বসেছে। পাশের বাসার লিনা খালা আর তার মেয়ে পলি ও এসেছে। নিচ তলার ঐশী আপুও আছে তাদের দলে। তাদের কারো বাসায়ই টেলিভিশন নেই। প্রতি সপ্তাহে এই একটা দিনের জন্য তারা উন্মুক্ত হয়ে অপেক্ষা করে। তাই বৃষ্টির মাঝেও সবাই উপস্থিত। আম্মা ঘরের সবার জন্য সর্ষের তেল আর পেঁয়াজ কাঁচা মরিচ দিয়ে মুড়ি মেখে নিয়ে এলো। সবাই খাচ্ছে আর পুর্ন মনোনিবেশ করে বই দেখছে। আজকের বইয়ের গল্পটা দুর্দান্ত। নাগ নাগীনির রোমাঞ্চকর কাহিনী। সর্পনাগকে মেরে ফেলেছে নায়কের বাবা। তাই কাল নাগীনি তার সংগীনির খুনের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এভাবেই কাহিনি এগুচ্ছে। এত সাইন্সফিকশন পড়েও আমার মনের সিন্ধুকে আঁকুপাঁকু করতে থাকে একটা প্রশ্ন। কৌতুহলী হয়ে আম্মাকে জিজ্ঞেস করলাম।
– আম্মা সাপের স্মৃতিশক্তি এত ভালো কিভাবে হলো? কিছু ভুলে নাই দেখছো? আমার এই যারপরনাই অদ্ভুত প্রশ্নে ঘরের সবাই হো হো করে হেসে উঠলো। বুঝলাম তাদের এই তিরস্কার মিশ্রিত হাসির রহস্য উদঘাটন করতে আমাকে কিঞ্চিৎ বড় হতে হবে। বই শেষ হতে দেরি হলো কিন্তু ঘর খালি হতে দেরি হলোনা। ততক্ষণে আমি ফাহিম আর নিচতলার প্রিয়ার সাথে ঘরের মাঝেই ষোলগুটি খেলার ছঁক একেছি। খেলার প্রায় শেষের দিকে আম্মার ডাক।
– নিপা, বৃষ্টির ছাঁটে কাপড়গুলি সব ভিজে যাচ্ছে। জলদি তোল।
তাড়াহুড়ো করে খেলা ফেলে বারান্দায় গেলাম কাপড় তুলতে। বাইরে অন্ধকার গাঢ় হয়ে এসেছে তখন। তুমুল বৃষ্টিতে কিছু দেখা যায় না ভালো করে। আম্মা খেসারী ডালের পিঁয়াজু আর আর মচমচে করে বেগুণি ভেজেছে। মুড়ি সহযোগে সবাই ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে খাচ্ছে। আম্মার অবশ্য এসব খাবারে তিল পরিমান আগ্রহ নেই। নিজের জন্য পোড়ামাটির খোলায় তিনি আমন চাল ভেজে নারিকেল মাখা দিয়ে দিব্যি চিবুচ্ছেন। মার মতে মেঘলা দিনে এর স্বাদ অনেকটা বেহেশতি খাদ্যদ্রব্যের কাছাকাছি। খানা খাদ্যের পাট চুকিয়ে গেলাম নিজের পাঠে মন দিতে। আব্বা দেখলাম পরেরদিনের অফিসের কাগজপত্র নিয়ে বসলেন। এই ফাঁকে আমিও ক্লাসের ‘বাড়ির কাজ’ শেষ করলাম। নইলে মিলন স্যার হাতে জালি বেত দিয়ে টকাস টকাস করে যে বাড়িগুলো দিবেন। ভেবে এখনই গায়ের লোম দাড়িয়ে যাচ্ছে। আলিফ লায়লার লাস্যময়ী গায়িকার কন্ঠ শুনে আমার সম্বিত ফিরলো। উঠে বসার ঘরে যেতেই আম্মার গলা।
– কি সুর শুনেই চলে আসলি? কালকের পড়া করেছিস? আর মামুন স্যারের সরল অংক?
– হ্যাঁ আম্মা। সব করেছি। তুমি দেখবা?
অগত্যা আম্মাকে সব খাতা দেখিয়ে আমিও ফাহিমের সাথে বসে আলিফ লায়লা দেখার অনুমতি পেলাম। কোহেকাফের খাবিশ খারবান যখন রাজকুমারী যুলেখাকে হাতের তালুয় উঠিয়ে নিয়ে আকাশে ভাসতে ভাসতে প্রমত্ত হাসিতে ফেটে পড়ছে। তখন দুই ভাইবোন মিলেও যেনো ভেসে যাচ্ছিলাম ওই প্রকান্ড দৈত্যের সাথে কোহেকাফের মায়াবী পথে। অনুষ্ঠান শেষ হতেই আব্বা এসে বসলেন খবর দেখবেন বলে। আম্মা বাকি পড়া করতে বলে রঙিন কাঁথায় ফুল তোলায় মগ্ন হলেন। আর আমি সেই ফাঁকে সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ের অভিকর্ষ মহাকর্ষের সংজ্ঞা মুখস্ত করার বদলে, বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে কপোট্রনের সুখ দুঃখের বুলা আর টোপনের গল্পে বুঁদ হয়ে গেলাম। ফাহিম হাতে গোনা গুটি কয়েক যোগ বিয়োগ করতে করতেই ঘুমে ঢুলতে আরম্ভ করলো। ততক্ষণে আম্মা ভাত বেড়ে ডাকছে সবাইকে।
-আম্মা কাল কিন্তু টিফিনে ভাত ভাজি দেবেনা। মুরগীর মাংস দিয়ে নুডুলস দিও কেমন।
– সেটা কাল দেখা যাবে। এখন তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়। সকালে তো আবার কামান দাগিয়েও তোলা যাবেনা একটাকেও।
আমি খাবার শেষ করে শুতে গিয়ে দেখলাম আম্মা নীল দিয়ে আমার ধবধবে সাদা স্কুল ড্রেস হাল্কা নীল বানিয়ে রেখে দিয়েছে। আম্মাকে এত করে বলি নীল দেবে না। সবাই হাসাহাসি করে এই নিয়ে। একদিন যদি ঠিকঠাক শুনতো। ধুর ভালো লাগেনা! কবে যে বড় হবো আর ঘোর বর্ষায় স্যারের বকুনির তোয়াক্কা না করেই স্কুলমাঠে প্যাঁক কাঁদায় লাফ ঝাপ দিয়ে খেলতে পারবো। কবে যে টিফিনে আম্মার কাছ থেকে দশ টাকা নিয়ে ইচ্ছেমতো বড়ই চালতার টক মিষ্টি আঁচার চেঁটে খেয়ে জিভ লাল করতে পারবো। কবে যে সন্ধ্যা গড়ালেও ফুলটোকা বউ ছি খেলায় আর কেউ বাধ সাঁধবেনা। বাড়ি ফেরার একশতবার তাড়া দিবেনা। কেউ আঙুল তুলে শাসনের কন্ঠে বলবেনা, তুমি ছোট মানুষ, আগে বড় হও। তিন গোয়েন্দার সমস্ত বই নিঃসংকোচে কিনে দিনের পর দিন পড়তে পারবো বিরামহীন। কবে যে বড় হবো?
কবে?
বৃষ্টিটা আবার বেড়েছে। এবছর ফের বন্যা হবে হয়তো। বড় হবার আগাম দিনগুলো কথা ভাবতেই বৃষ্টি মেদুর শীতল আবহাওয়ায় আমার চোখ মুদে আসে রাজ্যের ঘুম। এভাবেই একদিন ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টাতে উল্টাতে সেই ছোট্ট আমিটা অনায়াসে বড় হয়ে গেলাম। বুঝতে শিখলাম কখনো বড় হতে চাইতেই নেই। এই চাওয়াটা না চাইলেও ঠিক পুর্ণ হয়ে যায়। তখন আবার প্রিয় শৈশবে ফিরতে মনটা বড় উদগ্রীব হয়। কিন্তু তা আর কোনোদিন সম্ভব হয় না ! আসলে, বড় হতে চাওয়াটা একটা বহু আকাংখিত স্বপ্নের মতো। আর শৈশবে ফিরতে চাওয়ার অনুভূতি সেই স্বপ্ন ভাঙার কষ্টের মতই তীব্র।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত