শাশুড়ি আম্মা খুব জ্বালাচ্ছে ওনাকে একটা আইডি খুলে দিতে।আমি তো সেই বিরক্ত।এইতো এক সপ্তাহ আগে একটা স্মার্টফোন কিনে দিলাম।এটা কিনে দেওয়ার জন্য আমাকে বারবার বললো।একপ্রকার বাধ্য হয়ে কিনে দেওয়া।ওনার ছেলে শুনে আমাকে দিলো বকা।
আর বললো,
” আম্মার সব কথা শুনার কি দরকার।ওনি না বুঝে তোমার কাছে বায়না করে। আর তুমি সব পূরণ করো।”
আমি মনে মনে হাসি।ঔ একটাই শাশুড়ি আম্মা।আমাকে ভালোবেসে আমার কাছে আবদার করে।কি করে না রাখি?আর আমার মা নেই বলে ওনার প্রতি ভালোবাসা বরাবরই একটু বেশি। ওনিও আমাকে খুব ভালোবাসে।আমার অন্য জা থেকেও।
তারপর সেই কথা শাশুড়ি আম্মার,
” ঔ যে তোমরা কি যেন চালাও ফেসবুক না কি। আমাকে একটু এটা করে দিবে।আমার সাথে সবার ফেসবুক আছে, শুধু আমার নেই।”
আমি শুনে বেকুব হয়ে গেলাম।তারপর কি আর করা।খুলে দিলাম আইডি।সেই থেকে শুরু ওনার কান্ড কারখানা।আমাকে এড করে দিলাম।সাথে ওনার ছেলেকেও।
একদিন সকালে অফিস যাওয়ার আগে আমার আইডি তে ডুকলাম।আর দেখি আমার শাশুড়ি আম্মার স্ট্যাটাস।
” শুভ সকাল ” সাথে আমি সহ ২০ জনকে ট্যাগ।কিছু আর বললাম না।সেইদিন বিকেলে শাশুড়ি আম্মা ওনার একটা ছবি আপলোড করে, আর ক্যাপশন লেখে।
” আমাকে দেখতে কেমন লাগছে?লাইক হবে সাথে কমেন্ট। ”
সাথে আবারও ২০ জনকে ট্যাগ।আমি পুরাই টাসকি খেয়ে গেলাম।ভাগ্যিস ওনার ছেলে ব্যস্ত তাই ফেসবুকে ডুকে এসব কান্ড দেখছে না।
আামার শাশুড়ি আম্মা কিন্তু থেমে নেই।ওনি ওনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে সেখানে লাইক, কমেন্ট, না বুঝে হাহা রিয়েক্ট।আর ফ্রেন্ড রিকু তো আছেই।সাথে সাথে যাই করে স্ট্যাটাস দেয়।কখন খাচ্ছে, কখন ঘুমাচ্ছে, কোথায় ঘুরতে যাচ্ছে সব টাইমলাইনে শোভা পাচ্ছে।
এইত সেইদিন আমার আত্মীয় আমাকে ফোন দিয়ে যা তা বললো।
” তোমার শাশুড়ির কি বিবেক নাই?আমার বাবা মারা গেলো ওনি তাতে হাহা রিয়েক্ট দিলো।তাছাড়া যখন তখন ট্যাগ করে, এসব কি।”
আমি তো লজ্জায় শেষ।ওনার এসব আর বেশিদিন চললে তো আমি কেস খেয়ে যাবো।এবার তো ওনাকে থামাতে হবে।
এর কয়েকদিন পর,
আমার শাশুড়ি আম্মা এমন একটা ছবি আপলোড করলো, যা ওনার ছেলের চোখে পড়লো।আর সে বাসায় এসে উড়াধুনা বকা আমাকে।আমি কেন শাশুড়ি আম্মার কাজে সায় দিয়ে চলছি।ও তো আম্মাকে কিছু বলতে পারছে না।তাই আমার উপর দিয়ে সব চালালো।আমি নীরবে সব সহ্য করে নিলাম।
তারপর দিন আমি শাশুড়ি আম্মাকে সব বুঝিয়ে বললাম। ওনি আসলে ওতোকিছু ভাবেনি।মনের আনন্দে ফেসবুক চালাতো।ওনার সাথের অন্যেদের দেখে দেখে।
আমি সবকিছু বলার পর ওনি খুব লজ্জা পেলেন।আর বললেন, কখনো ছবি দিবেন না।যেখানে সেখানে লাইক কমেন্ট দিবে না।এরপর শাশুড়ি আম্মা ফেসবুক চালানোটা বন্ধ করে দিলো।
আসলে বয়স্ক মানুষেরা চায় মনের আনন্দ। সবার সাথে মিলিয়ে চলতে।আমরা অনেকে বিষয়টাকে খারাপ ভাবে দেখি।তবে একটু বুঝিয়ে আর মানিয়ে নিলে ব্যপারটা ভালো হয়।