মিম:আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানিনা।
আমি:কেন???
মিম: কারন আমি একজনকে ভালোবাসি।
মিমের কথায় যেন আমি আকাশ থেকে বল্লাম।
আমি:তাহলে আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন কেন???
মিম:আমার আব্বু আম্মুর কথা রাখতে আমি আপনাকে বিয়ে করেছি।আপনি আমাকে কয়েকদিনের মধ্যে ডিভোর্জ দিবেন।আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানতে পারব না।
আমি:কিন্তু ছয়মাস আগে তো ডিভোর্জ পেপার হাতে আসেনা।আপনি এই ছয়মাস এখানে থাকতে হবে।
মিম:আপনি আমাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডিভোর্স দিবেন।আর আপনি আমাকে কোনো রকম ভাবে টার্চ করবেন না।
আমি:এটা নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না।কিন্তু অনুগ্রহ করে আমার মা-বাবার সামনে স্বামী-স্ত্রী অভিনয় করতে হবে।যাতে উনারা না বুঝতে পারে আপনি আমাকে স্বামী হিসেবে মানেন না।
মিম:আচ্ছা ঠিক আছে আমি চেষ্টা করব।
আমি:আপনি এখন ফ্রেশ হয়ে ঘাটে শুয়ে পড়েন।আমি সোফায় শুয়ে পড়ব নে।
আমি বালিশ কাথা নিয়ে সোফায় শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম আমার সাথে কেন শুধু এইরকম হয়।আমার কি দোষ ছিল।আমিও একটা মেয়েকে ভালোবাসতাম।কিন্তু সে আমাকে ধোকা দিয়ে চলে গেছে।
এইজন্যে আমি বিয়েদে রাজি হচ্ছিলাম না।কিন্তু কপালই খারাপ আমার বিয়ের করা বউ অন্য কাউকে ভালোবাসে।
ভাবতে ভাবতে রাতে কখন ঘুমিয়েছিলাম মনে নেই,, সকাল এ মীম এর ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো,,,ঘুম ঘুম চোঁখে মীমের দিকে তাকিয়ে আমিতো ক্রাস খাইলাম।।
নীল শাড়ি পরেছে ও চুল গুলো ভিজা।।
মনে হয় মাত্র গোসল করেছে।।
দেখতে এতো সুন্দর লাগছে যে আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।
ইচ্ছে করছে কাছে টেনে একটু আদর করে দি।।
কিন্তু তা কোন ভাবে সম্ভব না,,,কারন মীম এর নিষেধ আছে ওকে যেন টাচ না করি।তাই নিজের ইচ্ছাটাকে মাটি চাপা দিলাম।
আমি:কি হয়েছে ডাকছেন কেন??
মিম:আসলে আম্মু আপনাকে ডাকছে ব্রেকফাস্ট করার জন্য।
আমি:আচ্ছা আপনি যান আমি আসছি।
কি আর করার তাই বাধ্য হয়ে উঠতে হলো। ফ্রেস হয়ে ওয়াসরুমের দিকে যাচ্ছিলাম,,হঠাৎ একটা কথা মনে হলো তাই আবার ফিরে এসে মীমকে
বললাম—
আমাদের মধ্যে কাল রাতে যা হয়েছে তা যেন আমার পরিবারের কেউ না জানে।আমি আবার বল্লাম কথাটা।
কারন আমি চাই না আমার পরিবারের কেউ এসব জেনে কষ্ট পাক।।।
পরিবারের সবাই আমাকে খুব ভালোবাসে।।
মীম বললো- আচ্ছা ঠিক আছে কেউ জানতে পারবে না। আর আমাদের ডিভোর্স এর কি হবে।।
আমি- ওটা নিয়ে টেনশন করবেন না।। ঠিক সময় মতো পেয়ে যাবেন।
আর কথা না বাড়িয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলাম। ফ্রেস হয়ে এসে সরাসরি খাবার টেবিলে চলে গেলাম।
চুপ করে মাথা নিচু করে খাবার খাচ্ছি।আর মিম খাবার সবাইকে বেড়ে দিচ্ছে।
আম্মু:তুমিও বসে পড় মা।সবাই একসাথে খাই।
মিম:না মা আপনারা সবাই খেয়ে নেন।তারপরে আমি খাব নে।
আম্মু:কি বলো এইগুলো তুমি এই ঘরের বউ। তুমি কেন পরে খাবে।বস তুমি আমাদের সাথে।
আব্বু:বসে পড় মা।
নিশি:ভাবি বসে পড়েন তো।
খাবার খাচ্ছিলাম হঠাৎ আব্বু বল্ল,,,,
আব্বু:আজকে দুপুরে তোমার শশুর বাড়ির থেকে লোক আসবে তোমাদেরকে নিতে।দুপুরে যাতে তোমাকে।ঘরে দেখি।
আমি:ঠিক আছে আব্বু।
খাওয়া দাওয়া করে ঘরে এসে বন্ধুদেরকে ফোন দিলাম।
আমি:হ্যালো ইশান তোরা সবাই এখন করিম চাচার দোকানে আয়।আমি আসতেছি তোদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
ইশান:আমরা তো সবাই করিম চাচার দোকানে আড্ডা দিতাছি।
আমি:তাহলে তোরা দাড়া আমি পাচঁ মিনিটের মধ্যেই আসতেছি।
ইশান:আরে মাম্মা বস বস।তা কি মনে করে এতো জরুরী তলব কেন জানতে পারি।
রাতের ঘটনা সব ওদেরকে খুলে বল্লাম।
ইশান:দোস্ত চিন্তা করিস না ভাবি তোকে দেখিস একদিন না একদিন ভালোবাসবে।
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল।ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি আব্বু ফোন দিয়েছে।ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথে বলা শুরু করল
আব্বু:ওই হারামজাদা কই তুই???
আমি:আব্বু আমি তো করিম চাচার দোকানে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি।
আব্বু:তরেনা বলছিলাম দুপুরে বাসায় থাকতে।
আমি:কেন????
আব্বু:কেন মানে তোর না আজকে দুপুরে শশুর বাড়ির থেকে লোক আসবে।তোকে আর মিমকে নিতে।
এইরে সব তো ভূলে গেছি।(মনে মনে)
আব্বু:কিরে কথা বলছিস না কেন??তুই পাচঁ মিনিটের মধ্যে বাসায় আসবি। না হলে তোর খবর আছে।
আমি:আব্বু আমি এখনই আসছি।ফোন কেটে হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১:৩০মি বেজে গেছে।বন্ধুদেরকে বলে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
কলিংবেল বাজানোর সাথে সাথে ছোট বোন দরজা খুলে দিল।ঘরের ভেতরে টুকে দেখি শশুর বাড়ির লোক আসছে।তাদেরকে সালাম করে নিচে ঘরে চলে যাই রেডি হওয়ার জন্য।
ঘরের ভেতরে টুকে দেখি মিম শাড়ি পাল্ঠাচ্ছে।মিমকে এই অবস্থায় দেখে নিজেকে কন্টোল করতে পারলাম না।সাথে সাথে পিছন থেকে জরিয়ে ধরেছি।
আমার আচমকা পিছন থেকে জরিয়ে ধরার কারনে মিম ভয় পেয়ে যায়।ঠাসসসস….
মিম:কুওার বা…..তোকে আমি ভালো মনে করেছিলাম।আর তুই আমাকে জরিয়ে ধরেছিস।কুওা,বান্দর।
আমি:সরি আমি ইচ্ছা করে এইরকম করেনি।বিশ্বাস করুন।আপনাকে এই অবস্থায় থেকে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি।
মিম:তোদের মত থার্টক্লাস পোলাদেরকে আমার ভালো করে জানা আছে।এই পরে যদি কোনো সময় যদি আমাকে টাচ করার চেষ্টা করিস।তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবেনা।
এইগুলো বলে মিম চলে গেল।আর আমার চোখ থেকে কয়েক ফোটা নোনা জল গড়িয়ে পড়ল।ভাই আপনারই বলেন নিজের বউকে কি জরিয়ে ধরতে পারিনা।বুকে কষ্ট নিয়ে ফ্রেশ হতে ওয়াসরুমে চলে গেলাম।
ফ্রেশ হয়ে হালকা নাস্তা করে গাড়িতে করে শশুর বাড়িতে চলে গেলাম।গাড়িতে কেউ কারও সাথে কথা বলিনি।
শশুর বাড়ি পৌছাতে পৌছাতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।মিম আর আমাকে সাদরে বরন করলেন।শশুর বাড়ির লোকেরা আমাকে আপ্যায়ন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
চলবে…………