বউয়ের অবহেলা | পর্ব -৩

বউয়ের অবহেলা | পর্ব -৩

তিনদিন পর,,,,,,,,,
সকালে ঘুম ভাঙ্গল গানের আওয়াজে।ঘুম থেকে উঠে ওয়াসরুমে চলে যাই ফ্রেশ হতে।ফ্রেশ হয়ে বিজানায় বসা ছিলাম হঠাৎ দরজায় টুক টুক আওয়াজ।

আম্মু দরজার বাহিরের থেকে চিৎকার করে বলতে লাগল
আম্মু:এই আমির আমির উঠস না কে কত বেলা হয়েছে দেখছস।

আমি:কি হয়েছে এতো সাজ সকালে ডাকাডাকি করো কে।
আম্মু:কি হয়েছে মানে তোর না আজকে গায়ে হলুদ ভূলে গেসছ।

আমি মনে মনে ভাবছি আরেব্বাস আমি তো ভূলেই গেছিলাম যে আজকে আমার গায়ের হলুদ।
আম্মু:কিরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কি ভাবিস।

আমি:না কিছু না।
আম্মু:নে এটা ধর(লুঙ্গি ও গেন্জি হাতে ধরিয়ে দিয়ে)
এইগুলো পড়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়।

রেডি হয়ে বাইরে বের হয়ে দেখি আমার সব হারামি বন্ধুরা এই জায়গায়।মনে হয় আম্মু এদেরকে আসতে বলেছে।

ওরা সবাই আমাকে ধরে নিয়ে একটা জায়গায় বসাল।
সেখানে দেখি আমাদের পাশের বাড়ির ভাবিদের পাশাপাশি কয়েকজন অপরিচিতা মেয়ে আসছে।
মনে হয় এরা মেয়ে বাড়ির থেকে আসছে।

ওরা সবাই আমাকে গায়ে হলুদ দিয়ে গোসল করায়। গোসল করার পর সবাই নিজের গন্তব্যের দিকে চলে যায়।আর মিয়া কুইচ্চা মুরগির মতো ঝিমাতে থাকি।

দুপুরে লান্স সেরে ঘুমাতে চলে যাই।বিকাল বেলা আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গে।তারপরে অযু করে নামাজ পড়তে চলে যাই।নামাজ পড়ে বাসায় এসে বিয়ের সব আয়োজন করতে লাগলাম।

আমার আব্বু ডেকোরেশন পরিচালনা করতাছে।
আর আমি কেচকি মাইরা বইয়া আছি।

আব্বু ডেকোরেশন লোকদেরকে উদ্দেশ্যে বলেন কোন কিছুর যাতে কমতি না থাকে।আমার একমাএ বড় ছেলে বিয়ে বলে কথা খুব জাঁকজমকপূর্নভাবে বিবাহ দিব।

সমস্ত আয়োজন শেষ করার পরে সবাই মিলে খেতে বসলাম।খাওয়ার শেষে আমি ঘুমাতে নিজের ঘরে চলে গেলাম।

সকালে ছোট বোনের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে।
বোনের হাতে তাকিয়ে দেখি একটা নীল কালারের শেওরানী ও একটা পাগড়ি।

নিশি:ভাইয়া তাড়াতাড়ি এইগুলো পড়ে রেডি হয়ে নিচে আয় আব্বু তোর জন্য নিচে ওয়েট করছে।
আমি:আচ্ছা যা তুই আমি আসছি।

শেওরানী ও পাগড়িটা পড়ে আয়নার দিকে থাকিয়ে দেখি আমাকে রাজুকুমারের মতো লাগছে।
রেডি হয়ে নিচে নেমে দেখি আব্বু আর আমার সব বন্ধুরা আমার অপেক্ষায় বসে আছে।

তারপরে আম্মুকে সালাম করে গাড়ির উঠে মেয়ে(মিম) বাড়িতে রওনা দিলাম।
পৌছাতে পৌছাতে দুপুর হয়ে যায়।

সামনে তাকিয়ে বিরাট বড় একটা গেইট সাজানো।সেখানে বিভিন্ন ধরনের ময়দা সুন্দরী বসে আছে।ময়দার সুন্দরীতের সামনে বিভিন্ন কালারের সরবত সাজানো।

ওরা বল্ল এখান থেকে যেকোনো একটা আমাকে খেতে হবে।তারপরে আমার বন্ধু রাজু কমলা কালারে আমার কাছে বাড়িয়ে দিয়ে বল্ল

রাজু:দোস্ত এটা খা।
ওর হাত থেকে এটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম।একটু মুখে দেওয়ার সাথে সাথে মাথা ঘুরতে শুরু করল।

আমি:ওয়াক থুহহ এটা কি ডিমের শরবত।রাজুকে কানে কানে বল্লাম এই তুই আমারে এটা কি খাওয়াইলি।তরে পরে দেইক্কা নিমু নে(রাগে রাগে)
রাজু: সরি দোস্ত আমি কি জানতাম এটা ডিমের সরবত।আমাকে মাফ করে দেয়।

আমি:আচ্ছা ঠিক আছে।এখন ভেতরে চল।
মেয়ে:আপনারাতো দশ হাজার টাকা না দিলে ভেতরে যেতে পারবেন না।

ইশান:কিসের টাকা। আমরা কি টাকা দিতে আসছি নাকি বিয়া করতে আসছি।
আমি ইশানের কানে কানে কই ওই সালা তুই বিয়া করতে আইসছ নাকি আমি বিয়া করতে আইসি।

ইশান:ওই হইলো আরকি।
আরেক মেয়ে:না না আপনারা টাকা না দিলে ভেতরে যেতে পারবেন না।
রাজু:আপনার কি দিনে দুপুরে ডাকাতি শুরু করলেন নাকি।

মেয়ে :আপনারা টাকা না দিলে ভেতরে যেতে পারবেন না ব্যাস।
অনেক অনুনয় বিনয় করতে করতে সাত হাজার টাকা মানানো গেছে।কিন্তু সব টাকা আমার পকেট থেকে দেওয়া হয়েছে।

এতগুলো টাকা হারানোর বিরহ হয়ে মেয়েদের উদ্দেশ্যে মনে মনে বল্লাম,,,,,
ওই মাইয়া,, ও মাইয়া রে
তুই অপরাধী রে,
আমার কষ্টে ভরা মানিব্যাগের টাকাগুলা
দে ফিরাইয়া দে,,,,

মনের দু:খ নিয়া ভেতরে টুকলাম।আমাদের সবাইকে একটা স্টেজে বসালো।
খাওয়ার পর্ব শেষ করে মিমকে নিয়ে গাড়িতে উঠলাম।এই পর্যন্ত এখনো আমি মিমকে দেখি নাই।বাসায় যেতে যেতে রাত ১০টা বেজে যায়।

মিমকে আম্মুর সাথে নিয়ে চলে যায়।আর আমি বন্ধুদের সাথে ছাদে চলে যাই আড্ডা দেবার জন্য।

রাজু:মাম্মা আজকে কিন্তু বিড়াল মারা যাই।বিড়াল যদি না মারতে পার তাহলে তোমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে।
আমি:আব্বে সালা তুই এইগুলো কি কস আমি বিড়াল মারমু কেরে।আমি কোনোদিন মশা-মাছি মারিনাই।আর তুই আমারে বিড়াল মারতে কস।

ইশান:আরে পাগলা এটা ওই বিড়াল নারে।
আমি আশ্চর্য হয়ে বল্লাম তাহলে কোন বিড়াল।

তানভির:এটা তুই এখন বুঝবিনা বাসর ঘরে যেয়ে নেয় ভাবি সব শিখাইয়া দিব।
আমি:জানিনা তোদের মনে কি চলতাসে।

বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে রাত বারটা বেজে যায়।হঠাৎ আব্বু ফোন দেয়।মোবাইল রিসিভ করতেই আব্বু বলতে শুরু করল,,,,,

আব্বু:ওই হারামজাদা তুই কই।
আমি:আব্বু আমিতো ছাদে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি।
আব্বু:কয়টা বাজে দেখসছ বউমা তোর জন্য বসে আছে তাড়াতাড়ি বাসায় আয়।

বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে বন্ধুরা জোড় করে বাসর ঘরে টুকিয়ে দিয়ে বাহিরের থেকে দরজা লাগিয়ে দেয়।

আর আমি ঘামতে লাগলাম।ঘরের দিকে তাকিয়ে দেখি অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।মনেই হচ্ছে না এটা আমার রুম।আর ঠিক খাটের মাঝখানে লালা বেনারসি পড়া জান্নাতের হুর বসে আছে।বুকটা ধুক ধুক করছে।সৃষ্টিকর্ত
াকে স্মরন করতে করতে সামনের দিক আগাচ্ছি।

যখনই খাটে বসব তখনই মিম বলতে শুরু করল
মিম:আপনি আমার কাছে আসবেন না।
আমি:তুমি আমার বিয়ে করা বউ। তোমার কাছে যাওয়ার আমার অধিকার আছে।

মিম:আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানিনা।
আমি:কেন????
মিম:কারন আমি একজনকে ভালোবাসি।

চলবে………

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত